আজ কিছু লিখতে বড্ড ইচ্ছে করছে। খাতা আর কলম নিয়ে বসেছি। কি লিখবো? কিছুই তো মনে আসছে না! একটা পাখি,সবুজ পাখি কয়েকটা পাতা, না এটা নয় অন্য কিছু। একটা কেল্লাপোকা আর তার অনেক গুলো পা,না এটাও নয় অন্য একটু ভালো লাগার বা মন্দ লাগার কথা একদম অন্য রকম কিছু।আমার রুমের জানালা টা খুলে দিলাম। বিছানায় বসে । একটা পুকুর অনেক গুলো গাছের প্রতিচ্ছবি, একটা আকাশ, একটা রাস্তা উফ হচ্ছে না বড্ড একঘেয়ে। রুমের জানালা মানে তো মনের জানালা। আজ আমি চাইছি মনের জানালার পাল্লাটা মেলে দিতে। কই পারছি না কেনো? নাকি দিয়েই ফেলেছি? ওর বলা কথা গুলো হয়তো প্রতিটি দেওয়ালে বারি খেয়ে কানে আসতে আসতেই বাতাসের ফিসফিসানি তে পরিনত হচ্ছে! হতে পারে তাই! এবার গভীর মনোযোগে কান পেতেছি। হ্যা এই তো শুনতে পাচ্ছি অস্পষ্ট – অস্পষ্ট – সামান্য স্পষ্ট – গোঙ্গানির শব্দ- না আবার ফিসফিসানি। আরো মনোযোগী হতে হবে। একাগ্রচিত্তে শুধু ওর কথায় শুনতে চাই। শুধু তোমার কথায় শুনবো অন্য সব বাদ। কি বলবে? আচ্ছা শুরু কর।
– তুমি……..
//হ্যা বল থেমে গেলে কেনো? শুনবো আমি তোমার কথা, বল।
-তুমি আমার কথা শুনবে?
// হ্যা, বললাম তো।
– অনেকেই তো তা চায় না। তুমি…..
// হ্যা সবটুকু বল।
-ভয় করে বড্ড ভয়।
// ভয়ের কিছু নেই বিনা দ্বিধায় বলে ফেলো।
-তুমি আমায় ভালোবাস?
// বাসি।
– মিথ্যে বল কেনো?
// মিথ্যে বলি? কিভাবে?
– ভালোবাস তো কষ্ট দাও কেনো?
//কষ্ট দেই?! সেটা কিভাবে?
– কাওকে ভালোবাসি বলার আগে আমায় প্রশ্ন কর?
// না। প্রশ্ন করার কি আছে।
– বলেছিলাম……
// কই গেলে? তোমায় পাচ্ছি না কেনো? আচ্ছা যাও আর মিথ্যা বলবো না। ফিরে এসো।
-মি-থ্যা আ-মা-র অ-প-ছ-ন্দ সে-টা তু-মি জা-নো?
//থেমে থেমে বলো না। আমি আর মিথ্যা বলবো না।
– ভেবে বলছো তো? এটা কিন্তু অনেক বড় প্রমিস। অনেকেই আছে বাহিরে সব সত্য বলে কিন্তু আমার কাছে মিথ্যা বলে।
//তাই? কি ভাবে সম্ভব?
– তুমিও বল!
// যেমন?
– তুমি তেলাপোকা ভয় পাও! কি পাও না?
// না পাই না।
– ফের মিথ্যে? চলে যাবো?
// না না যেও না। হ্যা ভয় পাই বড্ড।
– এতোদিন বলনি কেনো? পাছে আমি তোমায় ভিতু ভাবি তাই?
//হ্যা।
– হা হা হা।
// হেসো না। তোমার হাসি আমার অসহ্য লাগে।
– আচ্ছা আর হাসবো না যাও। এবার তোমার ভয় পাওয়ার লিস্টিটা আমায় দাও তো দেখি।
// কেনো তোমায় সেটা দিতে যাবো?
– আমি আগে থেকেই সাবধান হয়ে থাকবো।
// আচ্ছা। আলো আর মানুষ।
– আলো? সে তো তুমি বড্ড ভালোবাস।
// না সে মিথ্যে। আলোয় আমার দম বন্ধ লাগে। আমি অন্ধকার ভালোবাসি।
– সে না হয় বুঝলাম। কিন্তু মানুষ? পাগল?
// না। পাগলে আমার ভয় নেই। আমার ভয় সব ভালো মানুষের। এরা ভালোর অভিনয় করে মাত্র।
– হুম জানলাম। তুমি একাকীত্ব ভালোবাস কেনো?
// তা না হলে তোমায় পেতাম কিভাবে? 🙂
– হা হা হা পাগল! এতো গেলো তোমার ভয়। এবার ভালোলাগা বল!
// উমমম সমুদ্র।
– ভেবে বলো।
// হ্যা ঠিক আছে।
– না তুমি আকাশ ভালোবাস সাথে পাহাড়। আকাশের বিশালতা তোমায় মুব্ধ করে দেয়, নেশা ধরায়ে দেয় আমি দেখেছি।
// সে না হয় ঠিক আছে। কিন্তু পাহাড়? সে কি ভাবে?
– সমুদ্রের ঢেউ যখন পাহাড়ের বুকে ধাক্কা খেয়ে ফিরে যায় তখন তুমি ঘোর লাগা চোখে পাহাড় দেখো,ঢেউ নয়।
// কিন্তু সমুদ্রের ঐ বিশাল ঢেউ আমায় কাছে টানে। কি যেনো মনে করিয়ে দেয়। এই আছে বিশাল আকারে পরক্ষনেই শেষ।
//হু ঠিক আছে সমুদ্র হয়তো তোমায় তোমার ভবিষ্যত মনে করিয়ে দেয় এটা প্রেম না, ভয়। কিন্তু সব কিছুতেই দৃঢ়চিত্তে দাড়িয়ে থাকার প্রবনতা আছে পাহাড়ের সেই থেকেই পাহাড়ের প্রতি তোমার প্রেম। তুমি অনেকটা পাহাড়ের মত।
// কি যেনো!! আমার হয়তো সমুদ্র ভালো লাগা উচিৎ ছিলো। সমুদ্র ঢেউ এর মতই তো আমাদের জীবন।
– না তুমি যেমন আছো তেমনই থাকবে। অনেক কথা হয়েছে আজ যাই। আর একদিন আসবো।
// আর একটু থাকো দুচারটা কথা আরো বলি।
– উহম আজই সব কথা ফুরিয়ে গেলে পরে কি বলবে?
//আচ্ছা তবে যাও। ভালো থেকো প্রিয় “মন” 🙂
– নিজেকে বদলিওনা। তুমিও ভালো থাকো 🙂
৩১টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
কল্পনায় একটি চরিত্র সৃষ্টি করে আমরা অনেক সময় মনে মনে কথা বলি
সে চরিত্রকে লেখায় প্রকাশ করাটা অনেক কঠিন
কঠিন কাজটি বেশ সফলভাবেই করতে পেরেছ তুমি।
কথোপকথন (y) ++++++
সমুদ্র ঢেউ পাহাড় এর তুলনা বেশ ভালো লাগলো
মুখোশ আমরা সবাই ব্যবহার করি।
মেহেরী তাজ
ধন্যবাদ দাদা। চেষ্টা করেছি। 🙂
হ্যা মুখোশ আমরা সবায় ব্যবহার করি কিন্তু কারোরটা খুলে যায় আর কারর টা যায় না।
ছাইরাছ হেলাল
উদ্ভুত কথোপকথনে সাজিয়ে ভাবনা প্রকাশ করেছেন, এজন্যই বলেছিলাম আপনাকে পিচ্চি
বলা ঠিক না, পুর্ণেন্দু পাত্রির ‘কথোপকথন’ পড়ে দেখতে পারেন। আপনার কাজে দেবে।
আকাশ সমুদ্রের বর্ণনায় লেখার সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভালো তো, আরও মন দিয়ে লিখুন,আমরা পড়ার অপেক্ষায় থাকব।
মেহেরী তাজ
হ্যা ছাইরাছ ভাইয়া বলেছেন আমাকে পিচ্চি বলা ঠিক না। কিন্তু সবায় সেটা মনবে না। 🙁
এখন তো সমস্যা হয়ে গেলো আপনার বলা কথোপকথন টা এখন আমি পাবো কই??
অবশ্যই লেখবো আপনার ভালো লেগেছে বলে কথা। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
পিচ্চি আপুউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউ…………………
আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আচ্ছা এতো মিল কি করে হয়!!!
আমিও লিখি এভাবে। তবে সে আমার ল্যাপটপের ডায়েরীতে।
তোমার পাহাড়, আমারও পাহাড়
আকাশ আমাদের
আঁধার আমার, আলো তোমার
আলো-ছায়া আমাদের।
অনেক অনেক ভালোবাসা। অনেক আদর। -{@ (3
মেহেরী তাজ
আপুউউউউউউউউউউউউউ
তাহলে আস্তে করে একটা চিমটি হ্যা…..? 🙂
আধার আপনার একার??
আমারও সেখানে ভাগ চাই। :/
ভালোবাস গুলো নিজের কাছে জমা রেখে দিলাম আর আদর গায়ে মেখে নিলাম। \|/
আপনার জন্যও অনেক অনেক ভালোবাসা। (3 (3 (3
অরুনি মায়া
মনের কথা কেও জানেনা সেও জানেনা যে ধারণ করে।
গান টির কথা মনে পড়ে গেল,,,,,,,, চলতে থাক মনের মাঝের জানা অজানার যুদ্ধ,,,,,,
মেহেরী তাজ
হুমম্মম আমি গানটা শুনি নি। 🙁
গানের লিঙ্কটা কি আছে???
অরুনি মায়া
দু:খিত লিংক টা নেই
মেহেরী তাজ
আচ্ছা থাক খুজে নেবো। 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
এই ধরনের লিখাগুলো আমার খুবই ভাললাগে, কারন এগুলো অবচেতন মনের কথা বলে এর মধ্যে মেকি থাকেনা, শব্দগুলো হয় একেবারেই সাদামাটা, এবং সবচেয়ে বড় কথা হল একজনের মনের বর্তমান অবস্থাটা সহজে বুঝতে পারা যায়, এগিয়ে চলুক এলোমেলো।
শুভকামনা নিরন্তর।
মেহেরী তাজ
ভাইয়া আমও যে উন্মাদ তারই বহিঃপ্রকাশ এটা।
চেষ্টা করবো ভাইয়া চালিয়ে যাওয়ার। 🙂
ব্লগার সজীব
লেখাটা উস্তাদী লেখা হইছে 🙂 এমন লেখা আরো চাই।
মেহেরী তাজ
মানুষ ওস্তাদের কাছ থেকে শিখে আমি আমার শিষ্যের কাছে শিখতেছি। ব্যাপার না আমরা আমরাই তো তাই না। 🙂
ঠিক আছে লেখবো। কিন্তু তোমার নতুন লেখা কই??
ইমন
🙂 এক সত্তা অপর সত্তার সাথে আলাপ করছে। দুজনের মাঝে অম্ল মধুর সম্পরর্ক। দেখা যাক কয়দিন থাকে। 🙂
মেহেরী তাজ
আচ্ছা ঠিক আছে দেখা যাক। 🙂
লীলাবতী
সজু সঠিক মানুষকেই ওস্তাদ মেনেছে,আমিও স্বীকার করলাম 🙂 -{@
মেহেরী তাজ
আচ্ছা তাপমাত্রা কি অনেক নেমে গেছে না কি বেড়ে গেছে নাকি লীলাবতী আপুর আইডি অন্য কেউ ব্যবহার করছে???? আমি ভিশন চিন্তিত। মন্তব্য টা ঠিক “লীলাবতী” টাইপ হলো না! ;? :p
লীলাবতী
খুব ভালো লিখেছো তাজ।লেখাটাই আসল,বয়স না।
মেহেরী তাজ
লীলা আপু থাংকু। 🙂 হঠাৎ সিরিয়াস হলে গেলেন কেনো? আমি তো মজা করছিলাম।
আর সত্যি কথা বলি আপু আমিই এখন এ লেখা চিনতে পারছি না। এটা আমার লেখা বিশ্বাস হচ্ছে না 🙁
রাসেল হাসান
খুব সুন্দর লিখেছেন। ভাবনা গুলো ভালো লাগলো।
মেহেরী তাজ
ধন্যবাদ ভাইয়া। 🙂
খুব ব্যস্ত নাকি? ব্লগে কম দেখি।
অনিকেত নন্দিনী
আরে! আজকাল পিচ্চি দেখি উস্তাদিও করে!!
লেখাটা সেই হইছে। সুপার গ্লু মাখাইয়া লাইগা থাকো।
ভাষার ব্যবহার নিয়া কথা বলিয়া লজ্জা দিওনা। উহা আবেগীয় বহিঃপ্রকাশ।
মেহেরী তাজ
ধারে পাশে সব ওস্তাদ মানুষ জন, তাই আর কি ওস্তাদি করবি ফেললাম একটু।
সুপার গ্লুর বরাদ্দ শুধু আপনার জন্য :p
আমি ” ফেবিকল ছে” আটকায়া থাকবো। 😀
আর ভাষার কথা কি বলছেন আপু আমরা আমরাই তো,তাই না???
অনিকেত নন্দিনী
সুপার গ্লুর বরাদ্দ আমার জন্য? ভেবে দেখো কিন্তু! পরে আবার বিরক্ত হয়ে ছুটতে চাইলে উপায় নাই। আজীবন চিপায় পইড়া কান্দিতে হইবেক।
মেহেরী তাজ
হুম ভেবে দেখেছি।
ছুটতে চায় কোন পাগলে?
আমি তো চাই সুপারগ্লু থেকেও শক্ত কিছু দিয়ে আটকাইতে।
আপনার একটুও কষ্ট হবেক না চিপাই রাইখা দিতে??
যাক আপনার ওয়েট জানি কত??? ;?
শুন্য শুন্যালয়
কেল্লাপোকা কি রে ভূত? আর তুই পিচ্চি থেকে এত বড় হয়ে গেলি কবে!! কি দারুন লিখেছিস। সমুদ্র আমাদের ভবিষ্যত মনে করিয়ে দেয়, এটা প্রেম না, ভয়। ঠিক বলেছিস, জীবনে একবারই সমুদ্র দেখেছি কুয়াকাটার, আর দেখেই কেমন ভয় হচ্ছিল। ভয় প্রেমে ট্রান্সফার হবার আগেই ফিরে এসেছি, আমি আবার খুব তাড়াতাড়ি প্রেমে পড়ে যাই কিনা 😀
তুই পাহাড়ের মত নাকি রে? কাতুকুতু দিলেও দৃঢ়চিত্তে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবিতো !! 🙂 তুই পাহাড়, সমুদ্র, আকাশের মিশ্র একজন, আমিতো দেখতে পাই। আবার টাইফুনের মত ঝগড়াটেও। আমিও বলবো এমনই থাকিস।
খুব সুন্দর হয়েছে লেখাটা। ও ভুলেই গেছি লেখাটা পড়ে সবার আগে একটা গান মনে পড়েছিল, ”আমার মনের কোনের বাইরে, আমি জানলা খুলে ক্ষনে ক্ষনে চাইরে”।।
ছাইরাছ ভাইয়ার সাথে একমত, তুই পূর্নেন্দু পত্রীর কথোপকথন পরে নিস, অসাম সবকএকটা ভলিউওম। আমার কাছে বই আর pdf version আছে। ফেসবুক ইনবক্সে মেইল টা দিস, পাঠিয়ে দেব। এক নিঃশ্বাসে পড়া হয়ে যাবে।
মেহেরী তাজ
আপু কেল্লাপোকা হলো অ্যানিলিডা পর্বে প্রাণী। লাল পোকা অনেএএক গুলো পা। কোন কিছুর সাথে ধাক্কা খেলেই গোল হয়ে যায়। আমি খুব বড় হইনি এএকটু বড় হইছি। 🙂 টাইফুন না হলে হবে!? আপনি না হয় খুব সহজেই প্রেমে পরে যান, ভালোবেসে ফেলেন। কিন্তু সবাই তো আর আপনার মত না। কোন কোন সময় ঝগড়া করেই তা আদায় করে নিতে হয়। এই ব্যাক্তি বদলাবার নয়। 🙂
ইইইইইয়াহ পিডিএফ আপনার কাছে আছে???
ঠিক আছে আজ ইনবক্স করবো।
নীতেশ বড়ুয়া
মনের মানুষের জন্য তাজাপু আপিনার বন্দুক তুলে রাখলাম আর -{@ দিলাম 😀
মেহেরী তাজ
ভালো ছেলে। 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
আর তখনি আপনার মনের মানুষ গেয়ে উঠবে ‘ফুল দিবে না বন্দুক দিবে তাজা’ :D)