-ভাইয়া আপনাকে না কাল শেভ করে আসতে বললাম ?
-তো কি হইছে? করব না আমি শেভ ৷

-আচ্ছা ভাইয়া, আপনি কোন ব্রান্ডের সিগারেট খান? আপনি যে সিগারেট খান আন্টি জানে ?

অনিক ভাবছে সোহানা বুঝি তাকে ব্ল্যাকমেইল
করছে, এইতো সেদিন মেয়েটা ঠিকমত কথাও বলতে পারতোনা , আজ সে কলেজে পড়ছে ৷

অনিককে অনিত ভাইয়া ডাকত, অনিকের মাকে আন্নি ডাকত , আন্টি শব্দটি উচ্চারণ করতে পারতোনা।

সোহানা এখন কলেজে পড়ে । পাশাপাশি ফ্লাটে থাকে বলে সোহানার মায়ের অনুরোধে অনিক
তাকে পড়ানো শুরু করেছে ৷

-কি বললে তুমি ? আমি সিগারেট খাই ? কে বলল তোমাকে?
-আমিতো বলিনি,এই যে দেখেন , আমার ফোনে কিভাবে যেন ছবি চলে আসছে ৷
-ওকে কাল শেভ করে আসবো ! এখন পিকটা ডিলেট কর ৷

-কাল করবোনে ! একটা লাল গোলাপ ও নিয়ে আসবেন। টকটকে লাল গোলাপ । এরপর আমার চুলের খোপায় পরিয়ে দিবেন ৷

মেয়েটা পাগল হয়ে যায়নিতো?
স্কুলশেষ করে সদ্য কলেজে ভর্তি পড়া মেয়েগুলো প্রচন্ড আবেগী হয়। পৃথিবীটাকে তারা আবেগ দিয়ে বিচার করে , বাস্তবতা তাদের কাছে নগন্য ৷

এরপরদিন……

-ভাইয়া , আমার গোলাপ কই?
-কিসের গোলাপ!
-টকটকে লাল গোলাপ। আমার খোপায় পরিয়ে দেবার কথা ছিল ৷

দরজায় দাঁড়িয়ে কথাগুলা শুনছিল সোহানার মা , এরপর যা হবার কথা তাই
হলো । সোহানা শুধু নিশ্চুপে তার মায়ের হাতের মার সহ্য করছিল , অনিকের শিক্ষকতার সমাপ্তি ঘটল ৷

এরপরের মাসেই বাসা ছেড়ে চলে গেল সোহানারা , কোথায় গেল?
কিছুই জানলোনা অনিক। শুধু সোহানার
চোখের ভাষাগুলো বুঝতে পেরেছিল , আর ততক্ষণে অনিক ও একই পথের যাত্রী ৷

৫ বছর পর কোনো এক বিকেলে অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তারহ পাশে রিক্সার জন্য অপেক্ষা করতে দেখতে পায় সোহানাকে ৷

অনিক ভাবে – প্রকৃতি নাকি শূন্যস্থান পছন্দ
করেনা , তাই সোহানার জীবনের শূন্যস্থান পূরণ করে দিয়েছে প্রকৃতি । শুধু একজন নয় , দুজন দিয়ে পূর্ণ
করেছে শূন্যস্থান । সোহানার কোলের সন্তানটি আর
হাতে ধরে রাখা সন্তানের বাবা ৷

আর অনিকের জীবনে কেউ আসেনি , প্রকৃতি হয়তোবা তার জীবনের শূন্যস্থান পূরণ করার প্রয়োজন মনে করেনি , হয়তোবা এটাই তার নিয়তি ৷

৭০৩জন ৭০৩জন
0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ