নাজমুন নাহার দিপা। অনার্স ২য় বর্ষ। সুন্দরী এবং গুনবতী। মফস্বলে থাকে। ঘটনার সূত্রপাত আরো ২ বছর আগে যখন ও ইন্টারমিডিয়েটে পড়তো।
সবার প্রিয় রফিক স্যার। কলেজের বাংলার অধ্যাপক। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি হলেও সুদর্শন, সুবক্তা এবং তার ব্যবহার চমতকার। শান্তিনিকেতন থেকে পি এইচ ডি করে এসে মফস্বলের এই কলেজে অধ্যাপনা করছে। তার স্ত্রীও শিক্ষিকা এবং তাদের একটি পুত্র স্কুলগামী পুত্র সন্তান রয়েছে। অন্যদের মত দিপারও প্রিয় শিক্ষক এই রফিক স্যার। রফিক আহমেদ দিপাকে “মা” বলে সম্বোধন করতো যখন দিপা ঐ কলেজে ইন্টারে পড়তো।
দিপা পাশ করে অনার্সে ভর্তি হয়ে অন্য কলেজে চলে যায় একই এলাকায়। রফিক একদিন দিপাকে ফোন দিয়ে বলেছিলো -“তুই আমার দেবী, আমি তোকে দেবী হিসেবে দেখতে চাই, তুই আমাকে তোর দাস করে নে। তোর চরণের দাস।” রফিক যখন শান্তিনিকেতনে পি এইচ ডি করতে যায় তখন তার কোন এক গুরু নাকি বলেছিল যে – জীবনে কিছু সাধন করতে হলে নাকি কারো চরনের দাস হতে হয়!!!
শিক্ষকের এমন অদ্ভুত কথা শুনে দিপা অপ্রস্তুত বোধ করে। প্রলাপ মনে করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রফিক স্যার নাছোড়বান্দার মত কিশোরী দিপাকে ফোনে বুঝাতো-“আমি তোর চরণের কাছে বসে তোর চরণের সেবা করতে চাই। তুই শুধু আদেশ করবি আমি চরণের সেবা করবো । এছাড়া আর কিছু নয়।” নানা ভাবে যুক্তি দিয়ে একসময় দিপাকে কনভিন্স করে ফেলে। দিপা জবাব দিতে না পেরে সায় দিতো ফোনে বাট মনে মনে ঠিকই অস্বস্তি বোধ করতো। ইচ্ছে করেই স্যারের ফোন রিসিভ করা থেকে বিরত থাকতো। এভাবে ক্রমাগত বিরক্ত করার এক পর্যায়ে রফিক দিপাকে জানায়-“আজ আমি দাস হওয়ার প্রাকটিস করতে চাই, তুই চলে আয়।” কিছুটা হলেও ব্রেন ওয়াশড হওয়ায় এবং “চরণসেবা” নিয়ে দুর্নিবার কৌতুহল থেকে দিপা এবার তার প্রিয় শিক্ষককে ফিরিয়ে দিতে পারেনি। দিপা যায় রফিক স্যারের বাসায়। বাকিটা শুনি দিপার মুখেই-
“তারপর উনি আমাকে একটা চেয়ারে বসালেন আর উনি আমার পায়ের কাছে বসলেন। আমি তো এই বিষয়টা মানতে পারিনি বলে স্যারকে আমার পায়ের কাছে বসতে বাড়ন করলাম কিন্তু তবুও তিনি বসলেন আর বলতে লাগলেন দেবী আপনার পা আমাকে দেন আমি আপনার সেবা করতে চাই, এরকম আরো অনেক কথা।একটা সময় উনি আমার পায়ের পাতায় হাত দিলেন আর মাসাজ করতে লাগলেন। আমি তো ভয়ে লজ্জায় সংকুচিত হয়ে পড়েছিলাম। মাসাজ করতে করতে উনি আমার পা উনার বুকে রাখলেন এরপর আমার ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল উনার মুখে নিয়ে নিলেন। একটা সময় আমার পায়ের তলা চাটতে লাগলেন।আমি অনেক আপত্তি জানানোর পরেও তিনি শোনেন নি। তবে তিনি কিন্তু আমার পায়ের পাতায়েই সীমাবদ্ধ ছিলেন।উনি সেই সময় আমাকে দেবী বলেই সম্বোধন করতেন। আমি পা সড়িয়ে নিলেও বলতো” দেবী আপনার পা আমি চাটতে চাই, আপনার দাসকে দিয়ে আপনার পা চাটিয়ে নেন দেবী” আপনার দাসের এই ইচ্ছা পুরন করুন দেবী।
আমার জন্য ভিষন কষ্টদায়ক ছিল বিষয়টা।আমি বাসায় এসে স্যারকে বলেছিলাম আমার এই বিষয়টা ভাল লাগেনি, আমি দেবী হতে চাই না। তারপর বললো ঠিক আছে এই বিষয়টা নিয়ে পরে কথা বলবো। এরপর আবার স্যার আমার পদসেবা করতে চাচ্ছে কিন্ত আমি নারাজ স্যারও নাছোড় বান্দা। আমি বুঝতে পারছিনা কিভাবে স্যার কে বুঝাবো। আমি কঠিন ভাবে কথাও বলতে পাচ্ছিনা কারণ উনি আমার স্যার!!!”
…………………………………………………………………………………………………
উপরোল্লেখিত ঘটনাটা আমার এক জুনিয়র বান্ধবীর। শিক্ষক হয়ে ছাত্রীর সাথে প্রেম বা এজাতীয় সম্পর্ক স্থাপন খুবই অনৈতিক কাজ হিসেবে বিবেচিত হয় আমাদের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায়। আর রফিক স্যার একজন যৌন বিকারগ্রস্থ মানুষ। এটা একধরণের মানসিক বৈকল্য। পায়ে আদর করে এরা চরম যৌন তৃপ্তি লাভ করে। সে তার কিশোর বয়সী ছাত্রীকে ফুসলিয়ে তার হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে চায়। নিজের বিকৃত লালসার শিকার বানাতে চায় । এরকম বিকৃত মানসিকতার লোক আমাদের সমাজের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে বাট এদের সহজে চেনা যায় না।
৫১টি মন্তব্য
প্রহেলিকা
ঠিকই বলেছেন আপনি, এমন বিকৃত মানুষিকতার লোক আমাদের সমাজের পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকলেও আমরা চিনতে পারি না, বিভিন্ন মুখোশে তারা নিজেদের আড়াল করে রাখে। এমন বিকৃত মানুষিকতা হুমকিসরূপ আর সে যদি হয় মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক তাহলে কেন জানি মনে হয় এর প্রতিরোধ করা না গেলে ক্রমশ অধঃপতনের দিকে ধাবিত হবে।
ভালো একটি বিষয় তুলে এনেছেন সুপ্রিয় শিপু ভাই। আপনার লেখা আগে পড়লেও এই প্রথম আপনার লেখায় কিছু বলার সৌভাগ্য হলো।
শিপু ভাই
অনেক ধন্যবাদ 🙂
অরণ্য
“দিপা জবাব দিতে না পেরে সায় দিতো ফোনে…” – বেশ প্রকাশ করেছেন।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
সোনেলায় প্রথম পোষ্টের জন্য শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।
সোনেলায় তোমার আগমন অনেক পুর্বে
আর সোনেলার জন্মলগ্ন থেকেই চিন্তায় এবং প্রসারে জড়িয়ে আছো তুমি,একারনে আলাদা ভাবে আর স্বাগতম জানালাম না।
পোষ্টের এমন ঘটনা এই প্রথম শুনলাম আমার দীর্ঘ এ জীবনে
এমন হতে পারে,তা আমার কল্পনারও অতীত
মানুষ চেনা আসলে বড়ই কঠিন।
কেস ফাইল চালু থাকুক।
শিপু ভাই
কাউন্সেলিং করতে গিয়ে এমন অনেক বিচিত্র ঘটনা শুনি। কিছু ঘটনা স্তম্ভিত করে দেয়ার মত।
ধন্যবাদ মামা
সঞ্জয় কুমার
মানুষকে চেনা সত্যিই কঠিন ।।
বাস্তবমুখী লেখা ।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ 🙂
মেহেরী তাজ
আপনাকে সোনেলায় স্বাগতম।
একটি জনসচেতনতা মূলক পোষ্ট। একদম একটা নতুন বিষয় যা আমার জানাছিলো না। অনেক ধন্যবাদ এমন পোষ্ট এর জন্য।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ। হ্যাপি ব্লগিং
শাহানা আফরিন স্বর্ণা
স্কুল কলেজ অফিস আদালত পরিবার নামের চার দেয়াল অসহায় চোখ রুদ্ধ কন্ঠ সবখানে বদ্ধ হয়ে আছে কিছু কেস।
যত ভদ্র ভাবে তুলে ধরা যায়। তোলা তো শুরু হল।
ওরা জানে অসম্মান ওদেরই হবে। জানে এখানে আমাদেরই দোষ! জানে আঙূল আমাদের চরিত্রেই ওঠানো হবে।
তাই বদ্ধ ই থাকে একেকটি কেস !
স্বাগত জানাই এই মেয়েটিকে 🙂
শিপু ভাই
ঘটনাগুলো আড়ালে থাকায় এসব অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
ধন্যবাদ স্বর্ণা
মোঃ মজিবর রহমান
কি মন্তব্য করব বুঝতে পারছিনা।
মানুষ সবই পারে।
এরা সখ্যায় নগন্য।
ধিক্কার ছাড়া কি দেব তারে।
শিপু ভাই
এরা সংখ্যায় নগণ্য হলেও খুব ক্ষতিকর।
ছাইরাছ হেলাল
মনোবিকলনের এ ও একটি রূপ যা এই লেখায় উঠে এসেছে।
আমাদের সাবধানী সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।
এখানে প্রথম লেখার জন্য ধন্যবাদ দেব না।বরং এতদিন না লেখার জন্য মৃদু তিরস্কার।
শিপু ভাই
মৃদু তিরস্কারের জন্য অনেক ধন্যবাদ মামা।
আমার তীব্র তিরস্কার প্রাপ্য!!! 😛
নুসরাত মৌরিন
ভাইয়া প্রথম লেখায় আপনাকে জানাই অভিনন্দন। -{@
এমন বিকৃত রূচির মানুষ গুলো সভ্য চেহারা নিয়ে আমাদের আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে!!শিউড়ে উঠলাম লেখাটা পড়ে!!
ধন্যবাদ এভাবে সবাইকে সচেতন করার জন্য।আরো আরো লেখা চাই। 🙂
শিপু ভাই
জ্বী। ব্লগিং এ আবারো নিয়মিত হবো আশা করি।
ধন্যবাদ 🙂
হৃদয়ের স্পন্দন
এমনো হয় নাকি!!!
শিপু ভাই
এর চেয়েও ভয়াবহ অনেক কিছু হয়।
নীলাঞ্জনা নীলা
কি ভয়াবহ অবস্থা !কল্পনা করতেও ভয় লাগে।কত বিচিত্র মানুষের আচরন,মন।
শিপু ভাই
হ্যা, পৃথিবীর সবচেয়ে বিচিত্র জিনিসই হল মানুষের মন।
হৃদয়ের স্পন্দন
আমার ভাবনা চিন্তায় ছিলোনা এতটা বিকৃতি মানুষের হয়
শিপু ভাই
এটা এক ধরণের মানসিক রোগ বলতে পারেন।
বৃষ্টিহত ফাহিম
কত যে অদ্ভূত মানুষ আছে পৃথিবীতে, বিকৃতির শেষ নেই। শুনেছি মেয়েদের পোশাকের প্রতিও লোকের আশক্তি থাকে।
শিপু ভাই
শুধু পোষাক না এরকম আরো কিছু বৈকল্য আছে। মৃতের প্রতি যৌনাকাংখা যাকে নেক্রোফিলিয়া বলে তেমন ঘটনাও ঘটছে। এমনকি বিষ্ঠার প্রতিও কেউ কেউ আকর্ষন বোধ করে।
স্বপ্ন নীলা
সে তার কিশোর বয়সী ছাত্রীকে ফুসলিয়ে তার হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে চায়। নিজের বিকৃত লালসার শিকার বানাতে চায় । এরকম বিকৃত মানসিকতার লোক আমাদের সমাজের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে বাট এদের সহজে চেনা যায় না।’’——– অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন— এ ধরণের লোক আমাদের সমাজেই বাস করে-উপর হতে বোঝা যায় না—–
সময় উপযোগী সুন্দর পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
শিপু ভাই
আপনাকেও ধন্যবাদ
বনলতা সেন
এ অজানা বার্তা আমাদের সাবধান হতে অনেক সাহায্য করবে। প্রথম লেখার জন্য অভিনন্দন আপনাকে।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ বনলতা সেন
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অভিনন্দন এমন একটি বিষয় তুলে আনার জন্য।
এমন অজানা বার্তা আসলেই আমাদের সাবধান হতে সাহায্য করবে।
বিশেষ করে কিশোরী বয়সে মেয়েরা সমাজের কণ্টকাকীর্ণ পথ সম্মন্ধে ধারনা না থাকায় বিপদে জড়িয়ে যায়। এই লেখাটি সেসব কিশোরীর মা-বাবাকে সাবধান করবে।
এরুপ বিকৃত মানুষিকতার লোক বিভিন্ন মুখোশের আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে রাখে, আমরা তাদের চিনতে পারি না।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ। শুভকামনা।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সোনেলায় পোষ্ট সম্ভবত এই প্রথম দিলেন আমরা ধন্য হলাম।আপনাকে আমরা আর ছাড়ছি না আশা কবর মাঝে মধ্যে হলেও আমাদের সাথে কথার আদান প্রদান হবে।আপনার এই ভক্তকে নিরাশ করবেন না।হ্যা ঠিকই বলেছেন তা এক প্রকার যৌন অপরাধ এ থেকে মেয়েদের সাবধান থাকতে হবে। -{@
শিপু ভাই
অনেক ধন্যবাদ মনির ভাই 🙂
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো...
Bhoy paisi. Ato jos akta manuser kotha jante pariya bakruddho hoilam…
শিপু ভাই
আমি খুশি হইছি অনেক অনেকদিন পর আপনাকে দেখে।
🙂
খেয়ালী মেয়ে
রফিক স্যারের মতো শিক্ষক জাতির কলঙ্ক–এই বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে, সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে-খুব সুন্দরভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ–সেই সাথে শুভকামনা রইলো 🙂
শিপু ভাই
আপনার জন্যও শুভকামনা 🙂
সাইদ মিলটন
শিক্ষকের সাথে ছাত্রীর যৌনতা হয়তো অনৈতিক , কিন্ত ফুট ফ্যাটিশ কোন ক্রমেই বিকৃতি নয়।
শিপু ভাই
এই লোকের আচরণ নিঃসন্দেহে বিকৃতি। সে রেপ করলে তারে বিকৃতি ভাবতাম না।
শুন্য শুন্যালয়
এধরনের কেস আছে বলেই এগুলো নিয়ে লেখা এসেছে বই এ.। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা আমাদের অজানার বাইরেই থেকে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ারের জন্য। প্রথম পোস্টের অভিনন্দন গ্রহণ করুন।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ শুন্য শুণ্যালয় 🙂
নাইস টু সি হিয়ার
স্বপ্ন
কত ধরনের বিকারগ্রস্থ মানুষ আছে আমাদের সমাজে।এমন ঘটনা আমি এই প্রথম শুনলাম।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ 🙂 🙂
প্রজন্ম ৭১
জানার আছে কত কিছু।
শিপু ভাই
হ্যা, জানার শেষ নাই। 🙂
মাহামুদ
স্তম্ভিত হয়ে গেলাম।
আনন্দ পাওয়ার কি বিকট উপায়রে বাবা!
শিপু ভাই
একজন স্বামী বা পার্টনার এরকম কিছু করলে সেটাকে হয়তো বিকৃত মনে হত না। বরং যৌন মিলনের পূর্বে এধরনের ফোরপ্লে ভালো ভূমিকা রাখে। বাট এই ক্ষেত্রে একজন শিক্ষক তার সন্তানতুল্য ছাত্রীকে ভুলিয়ে ভালিয়ে উদ্ভট “সাধনা”র নাম করে নিজের “যৌন লালসা” মেটানোর চেষ্টা করেছে যা বিকৃতির পরিচায়ক!!!
অরুণিমা
এরকম লোকের অভাব নেই। সমাজ দূষিত গোলা?
শিপু ভাই
চোখ কান খোলা রেখে চলতে হবে
অরুণিমা মন্ডল দাস
:p