
জীবন নাকি চলে হিসেবে,প্যাচে। আর অনেক উপরে উঠতে গেলেও একটু কৌশলী হতে হয়। সময় জ্ঞান থাকতে হয়, জীবন নিয়ে জটিল হিসেব নিকেষ করতে হয়। উপরে ওঠা কাকে বলে,সে ব্যাখ্যায় না যাই, কারণ আমি এটা বুঝি না।
কারও সহযোগীতায় নির্দ্ধিধায় হাত বাড়ানো,পাশে দাঁড়ানো আমার অভ্যাস। আর সেটা যদি সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই। মনপ্রাণ ঢেলে দেবার চেষ্টা করি। যার আগে পিছে কোন প্রশ্নবোধক থাকে না। কিন্তু সমস্যা হল, হিসেব ছাড়া চলি বলেই বোধহয় সবসময় বাঁশের মধ্যেই থাকি! আমার ধারনা আমি মানুষ হিসেবে অতি উচ্চমানের না বলেই এমনটা হয়। কিংবা আমার মধ্যে কোন জটিলতা নেই বলেই এমন হয়।যা ভালো লাগে,ভালোবাসি তা মন দিয়ে করি। তাতেই নিমগ্ন থাকি।
আজকাল সবাই জটিলতা পছন্দ করে। মনের ভেতরে সব রেখেটেখে নিজের প্রয়োজনে স্বার্থপর অভিনয় করে। বেশি কষ্ট হয় যখন এটা বুঝতে পারি।আমি খুব কম মানুষের সাথে মিশি। কারন মিশলে একটু বোধহয় বেশি মিশে ফেলি তখন তার কাছে সেটা বিরক্তিকর কিংবা বাড়াবাড়ি মনে হয় । একসময় সে কেটে পরে, এটা আবার আমি নিতে পারি না।অনেক কষ্ট হয়।
সকল সম্পর্কে ভুল- ত্রুটি থাকেই! আমি শতবার ক্ষমায় বিশ্বাসী। আমি মনে করি ছোট ছোট ভুল থেকে সম্পর্ক আবার নতুনত্ব পায়। এমন ভুলে কেউ কেউ প্রতিজ্ঞা করে বসে আর পুনরুদ্ধার না করার! তবে খুব ইচ্ছে করে একটা শক্ত সম্পর্ক জড়িয়ে বলুক তুমি নিশ্চিন্তে চল আমি তোমার পাশে আছি। শত ভুলেও কখনো ছেড়ে যাব না। মুহুমুহু করতালিতে ভরিয়ে তুলুক আমার চারপাশ।
বাইরে থেকে আমি ভীষন শক্ত-পোক্ত মানুষ এমনটা মনে হলেও আসলে আমি একটা ভীতু, আবেগী, নরম মনের মানুষ। আমার সাথে কেউ অন্যায় করছে জেনেও প্রতিবাদ করার সাহস আমার নেই! বরং লুকিয়ে পরি, বুকফাটা কান্নাটাও বাথরুমের আর্তনাদে পরিনত হয়।
চিন্তাচেতনায় আমি অন্যদের থেকেও অনেক পিছিয়ে। অন্যের মত চলতে চলতে ভাবতে পারি না। তবে কারও সাফল্যে প্রতিহিংসা বা কম্পিটিশন নেই। আমি মনে করি আমরা সবাই সেরা ও শ্রেষ্ঠ।
বুদ্ধিমানেরা কখনো সহজে ভালোবাসি বলে না তেমনি সহজে কোন কমিটমেন্ট বা দায়িত্বও নেয় না। সম্পর্কের পাকাপোক্ত অবস্থায় নিয়ে যায় না। এতে অনেক ত্যাগ থাকে হয়ত তাই তারা এডিয়ে চলতে পছন্দ করে।এজন্যই এদের জীবনে রিস্ক অনেক কম।তবে ভোগ দখলে এগিয়ে থাকে।
এত কথা বলার কারন দায়িত্ব! ঈদানিং দায়িত্ব নিতে ভয় হয়, কারন আমি লুজার টাইপ মানুষ, দায়িত্ব নেবার মত যোগ্যতা নেই আমার। সম্মানিত হবার মত কোন কিছু গ্রহণে ভীষন ভয় পাই। ভালোবাসা নিতেও ভয় পাই। কারন ‘ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘে ভয়ই পায়”। বেছে বেছে ধুলো মারিয়ে চলতে চলতেই কোন কারন ছাড়াই পিছলে গেলে ক্ষমা পাবার অযোগ্য হব। তখন পিছল অপরাধে একা পুডে মরার যন্ত্রনায় এ বয়সে ছটফট হবে বড্ড বেমানান। বালিশের গন্ধ শুকে শুকে নির্ঘুম রাত কাটানোর পর কারও কাছে বলাও অন্যায়।চলবে সুখী সুখী ভাব করে কাটাবার ব্যর্থ প্রয়াস। যেটা বড়ই কষ্টকর! আর বয়স যত বাডে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ- প্রত্যঙ্গের মত মনটাও দূর্বল হয়ে পরে। বেশি কষ্ট নিতে পারে না। শুধু যার যায় সেই বোঝে। ভেতরটা পুডে পুডে কয়লা, গন্ধ নেবার কেউ নেই!
আর অযথা আবেগী মানুষকে দিয়ে কিছু হয়ও না। সব কিছুতে একটা অতি সিরিয়াস ভাব থাকা জরুরী!!!!
ছবি- নেট থেকে।
১৮টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
“আজকাল সবাই জটিলতা পছন্দ করে।” সবাই নয় কিছু কিছূ মানুষ জটিলতা পছন্দ করে। যেমন আপনিও জটিলতা পছন্দ করেন না। “আমার সাথে কেউ অন্যায় করছে জেনেও প্রতিবাদ করার সাহস আমার নেই! বরং লুকিয়ে পরি, বুকফাটা কান্নাটাও বাথরুমের আর্তনাদে পরিনত হয়।” অন্যায় করা আর অন্যায় মেনে নেওয়া সমান নয় কী? একটা কথা সত্য কিছু কিছু মানুষের কারণে পৃথিবীটা স্বার্থবাজদের চিড়িয়াখানায় পরিনয়ত হয়েছে। তাই আদরের সন্তান মা-বাবাকে বৃদ্ধ আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠায় । আসুন স্বচ্ছ সুন্দর নির্মল ভালোবাসায় জগত গড়ি।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অসাধারন মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। সমান অপরাধ তো বটেই তারপরও হয়ে ওঠে না।
ভালো থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
সোনেলা আপনাকে নিশ্চয়তা দিচ্ছে কিছুতেই কেটে/ফেটে পড়বে না,
আপনি যত খুশি ভালবেসে গড়াগড়ি দিতে থাকুন এই উঠানে, মনের আনন্দ ও বেদনায়।
বহুৎ দিন পর দেখলাম!!
রোকসানা খন্দকার রুকু
হা হা হা। আচ্ছা তাহলে ইচ্ছেমতই চলুক
পরে কিছু বলতে পারবেন না কিন্তু!
ধন্যবাদ ভাইয়া
পপি তালুকদার
আপু সবাই দায়িত্ব নিতে পারে না। আপনি এক কথায় উদার মানসিকতা পোষণ করেন বিধায়, পরোপকারীতায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে এগিয়ে আসেন।আপনার এই আত্নগোপন কথা জেনে ভালো লাগলো।কে কেমন তা না চিন্তা করে আপনি এগিয়ে যান।
শুভ কামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরনা পেলাম। ভালো থাকবেন।
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
হিসেব করে জীবন চলে না। প্রতিমুহূর্তে সময় পালটে যায়, সময়ের সাথে সাথে ভাবনারাও পালটায়। এখন যেমন আছি পরক্ষণে এমনই থাকতে পারবো এই নিশ্চয়তা দেয়া যাবে না। সুন্দর পৃথিবীতে স্বার্থপর মানুষের আধিক্য বেশি। কিন্তু নিজেকে সম্পুর্ন দেখা যাবে এমন আয়নার অভাববোধ করি আমি/আমরা অনেকেই। আমার কথা যদি বলি, আমি নিজেকে দেখতে পাই না। সময় হয়ে উঠে না, নিজেকে দেখতে হলে আত্মমগ্ন হতে হবে, তখন হয়তো অন্যকিছু দেখার মতো চোখই থাকবে না। কারো কারো ক্ষেত্রে ভয়টা জয় করা সব সময় সম্ভব হয় না।
লেখায় সার্বিক আপনাকে ফুটিয়ে তুলেছেন।ভালো লাগছে আপনাকে জানতে পেরে।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
বাপরে এত বিশাল মন্তব্য। হাত ব্যাথা হবে। কম লিখুন তাতেও অনেক খুশি হবো। ভালো থাকবেন।
খাদিজাতুল কুবরা
পৃথিবীতে কোন মানুষ বাধা বিপত্তি ছাড়া ভালো কাজে জয়ী হতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুকে গালি দেওয়ার লোক ও তো বল কম নয়!
ন্যালসন ম্যান্ডেলা জীবনের অধিকাংশ সময় জেলখানায় কাটিয়েছেন। এরকম হাজারটা উদাহরণ আছে যারা জীবন উৎসর্গ করে ও আজও সমালোচিত। তাই আমার মনে হয়, স্বভাববিরুদ্ধ হওয়া বাধা অতিক্রম করার চেয়ে ও কঠিন।
তুমি ভালো লেখক। সবার গল্প লিখ কেননা মানুষের জীবনাচরণ তোমাকে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়।
তোমার জন্য শুভকামনা সবসময়।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমি ভালো লেখক এটা এখন থেকে গুনতে শুরু করলাম। তোমাদের অনুপ্রেরনাতেই বোধহয় হতেই হবে। শুভ কামনা বন্ধু।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
সকল বাঁধা বিপত্তি ডিঙিয়ে চলাই জীবনের ধর্ম
আর চলার পথে ভয়কে জয় করার মাঝেই মিলে মর্ম।
অনেক সুন্দর উপস্থাপনায় মুগ্ধতা একরাশ।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনার মন্তব্যের জন্যও একরাশ মুগ্ধতা রইল। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
কে কি বললো, ওগুলো না শুনে দুঃখগুলো চৌকাঠে রেখে এগিয়ে যাই। সুখ দুঃখ নিয়ে মানুষের বিচরণ। তবে হ্যাঁ কম সংখ্যক এবং নিজের মতো যারা মন মানসিকতার তাদের সাথে চলাই শ্রেয়। আর অন্যদের সাথে কেমন আছেন? ভালো আছেন? এমন হওয়া উচিত। আসলে আমি এমনটাই করি।
শুভ কামনা আপনার জন্য।
রোকসানা খন্দকার রুকু
খুব কাছের মানুষটাকে তো আর বাদ দেয়া যায় না। তখনি ঘটে সকল বিপত্তি।
অসাধারন মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
রেজওয়ানা কবির
আমার মতে তোমার তুমিটা তোমার মত, তাই তোমার তুলনা তুমিইইই।দায়িত্ব নিতে সবাই জানে না, ভালোবাসতেও না, তাই কাউকে আপন করে নেয়া খারাপ না,যে আপন হতে পারে না এটা তার ব্যর্থতা।আর সম্পর্ক যেমনই হোক সেটা ধরে রাখতে জানতে হয়,আবেগ থাকবেই হয়ত কেউ বেশি প্রকাশ করে, কেউ কম,আবার অনেকে মুখে না কাজে তার ভালোবাসা প্রকাশ করে, তবে যে এসবের কোনটাই করে না সে আসলে ভালোই বাসে না দায়িত্ব নেয়াতো দূরে থাক। স্বার্থপরতা দিয়ে আর যাই হোক ভালো বাসা হয় না। আমিও ভালোবাসা কম প্রকাশ করতে পারি তবুও তোমার ভাষায় তোমার মত করেই বলছি,
“খুব ইচ্ছে করে একটা শক্ত সম্পর্ক জড়িয়ে বলুক তুমি নিশ্চিন্তে চল আমি তোমার পাশে আছি। শত ভুলেও কখনো ছেড়ে যাব না। মুহুমুহু করতালিতে ভরিয়ে তুলুক আমার চারপাশ”।২০ বছর পরও একই কথা বলব,শুভকামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
বাবা অসাধারণ কথামালায় আপ্লুত হলাম। যা বলেছ সব ঠিকঠাক। শুভ কামনা রইল।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপু আপনার লেখায় আমার চরিত্রটি ফুটে উঠল। আপনার মতো আমার ও একই অবস্থা। আসুন দু’জনে কোলাকুলি করি। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা অবিরাম
রোকসানা খন্দকার রুকু
তাহলে তো খুব ভালো। কোলাকুলি তো অবশ্যই হবে দিদিভাই। শুভ কামনা।