
“বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর”- কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন যথার্থ। এমন বলে নিজের ঢোল নিজেই পেটাচ্ছি কি? ঢোল নয়, হয়ত আমি পারিনি কিন্তু কেউ তো পেরেছেন অবদান রাখতে।
শরীরে এতটুকু মাংস নেই। তাঁকে দেখলে মনে হয়, কিশোরী মেয়েটি ব্যাগ কাঁধে তুলে এখুনি স্কুলে যাবার জন্য দৌড় দেবে। মা পিছু পিছু ফেলে যাওয়া টিফিনের বাক্স হাতে দৌড়াবে। কিন্তু বিশ্বয়কর হলেও সত্যি, তিনি নাকি একজন বিজ্ঞানী। তাও বিজ্ঞানের অতি জটিল বিষয় কৃষ্ণগহ্বরের নিয়ে সফল গবেষণা করেছেন। নাসার মত জায়গায় কাজ করেছেন। বিশ্বের তরুণ দশজন বিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনি একজন। মাত্র ঊনত্রিশ বছর বয়স তাঁর। তিনি একজন বাংলাদেশী, আমাদের গর্ব, অহংকার।
তনিমা তাসনিম একজন জ্যোতির্পদার্থবিদ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ডার্টমাউথ কলেজের সঙ্গে তিনি যুক্ত আছেন। তনিমা কৃষ্ণগহ্বরের পূর্ণাঙ্গ চিত্র এঁকেছেন। তাতে তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে কৃষ্ণগহ্বরগুলো বেড়ে ওঠে এবং পরিবেশে কী প্রভাব রাখে।
মনের ভেতর আমরা যে স্বপ্ন লালন করি, তা ছোটবেলায় কাউকে দেখে-দেখে কিংবা গল্প শুনে-শুনে। বাবা-মায়ের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি পেয়ে থাকি। তিনি নাকি তার মায়ের কাছে গল্প শুনেই এমন স্বপ্ন লালন করেছিলেন। এটাই সত্যি। আমরা সন্তানদের লালন করব এমন কিছু সুন্দর গুন দিয়ে; যেগুলো সৃষ্টিশীল, সৃজনশীল এবং মহৎ।
একজন অনন্যার সময়ে এসেও আমি, তুমি, সে, আমরা মেয়েরা কি সেই একই থাকব? লালন করব প্রাচীনকে।আজও আমাদের প্রতিবাদে গলা কাঁপে, লিখতে হাত কাঁপে, স্বাধীনতায় ভয় হয়, আলোচনা-সমালোচনায় কুকরে যাই। মনকে লালন করাই তুমি কেবলি নারী, জন্ম তোমার সন্তান সৃষ্টিতে। হাতের চুড়ি তোমার বেড়ি, পায়ের নুপুর শেকল, শাড়ি তোমার লাজ। ঠোঁটে লিপস্টিক, পায়ে আলতা মেখে তৈরি কারও সামনে নিজেকে সপে দেবার। আমরা আর কত সময় গেলে সচেতন হব। বেড়িয়ে আসব সেই বাক্সবন্দী প্রাচীন থেকে। সেই হাঁড়ি, কড়াই, খুন্তি, নেইলপলিশ, লিপস্টিক, মেকআপ, ম্যাচিং শাড়ি ব্লাউজ কিংবা কারও ভালো যেন লাগে এমন সাজ থেকে। বয়ফ্রেন্ড এখনো হলনা এ চিন্তায় রাতের পর রাত কাতর। ফোন হাতে রাতের পর রাত কারও রাতের সঙ্গী। একজন টাকাপয়সা অলা পাওয়ার আজন্ম প্রত্যাশা। বাবার মাথায় চিন্তা হয়ে থাকব। মেয়ে জন্মের চিন্তায় তার শরীরে হবে হাজারো রোগের আনাগোনা!
বেগম রোকেয়া ভগিনীদের জাগানোর গান গেয়েছেন। আমরা আজও ঘুমিয়ে আছি। প্রত্যাশা আমরাও অনন্যা হব আমাদের কর্মে, আমাদের দীক্ষায়, আমাদের যোগ্যতায়। ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, ক্যাডার, বিজ্ঞানীই হতে হবে তা নয়। আমাদের সবার মাঝেই লুকিয়ে আছে কিছু অদম্য মেধা। সবারটাই আলাদা, অন্যরকম। আমরা সেটা খুঁজে বের করব। নিজেকে তৈরি করব সেই প্লাটফর্মে।
অভিনন্দন তনিমা তাসনিম অনন্যা। আপনি মেয়েদের অনুপ্রেরণা। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালবাসা।🌹🌹🌹
১৯টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
কথায় আছে যত গুড় ততো মিষ্টি,
তেমনি, যেমন শিক্ষা তার উপর নির্ভর করে চেষ্টা।
তনিমা তাসনিম অনন্যা আমাদের দেশের গর্ব, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই তাকে। তার মায়ের প্রতি সালাম যিনি তার মেয়েকে এমন কীর্তিমান হতে অনুপ্রানিত করেছেন।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
মিষ্টি তো বটেই কিন্তু অনেক মেধাবীর মেধা অজানাই থেকে যায়। তার জন্য দরকার কারও পাশে থাকা॥ প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। শুভ কামনা রইলো।🥰🥰
আলমগীর সরকার লিটন
অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা রইল
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
নারী জাগরণে অনন্য লেখা।
একটা অমিয় বাণী পড়েছিলাম, কার ঠিক মনে পড়ে না
’প্রত্যেক মানুষই মহামানব কিন্তু সে জানে না বলে সাধারণ মানুষের মতো আচরণ করে।’
আমি শতভাগ বিশ্বাস করি বাণীর সত্যতা।
মুগ্ধতায় শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা অন্তহীণ।
রোকসানা খন্দকার রুকু
’প্রত্যেক মানুষই মহামানব কিন্তু সে জানে না বলে সাধারণ মানুষের মতো আচরণ করে।’- এটি অতি সত্য। তাই আবার কপি করতে হল। শুভ কামনা রইলো ভাইয়া। অসাধারণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
মনির হোসেন মমি
আপনার প্রতিটিি কথার সাথেই সহমত । তবে এ সমাজ সমাজপতিরা নারী জাগরণের পদে পদে বাধা সৃষ্টি করে যা একজন প্রতিভাবান নারীকে প্রতিভা প্রকাশের অন্তরায়।আমাদের ব্লগেও একজন নারী ব্লগার ছিলেন-ছিলো সম্ভাবনাময় প্রতিভা।সে এখন সমাজ সংসারের চাপে অনেকটাই নিস্তব্দ নীরব ভুমিকায় সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে সংসারের ঘানি টানছেন। এ ঘূণে ধরা সমাজের পরিবর্তন না হলে নারী জাগরণে ইচ্ছে থাকা সত্বেও সংখ্যায় বাড়বেনা।
চমৎকার উপস্থাপনা।শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
বিবাহিত নারীর জন্য স্বামী আর অবিবাহিতদের জন্য বাবা- মায়ের মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। আজ তিনি নেই তবে আমি আশাবাদী তিনি যদি চান তাহলে বাঁধা পেরিয়ে একদিন অবশ্যই ফিরে আসবেন। অনেক চেষ্টা আর অনেক যুদ্ধ করতে হবে তাকে। শুভ কামনা সবার জন্য।
মনির হোসেন মমি
জ্বী আপু।ধন্যবাদ।
তৌহিদ
কিছুদিন আগে একজন নারী বিজ্ঞানীর কথা আমার লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, তিনি ইনিই। আমি নাম মেনশন করিনি। আমরা গর্বিত হতেই পারি তাকে নিয়ে।
নারীরা এগিয়ে চলুক এটাই কাম্য। শুভকামনা আপনাকেও আপু।
রোকসানা খন্দকার রুকু
শুভ কামনা আপনার জন্যও॥ ভালো থাকবেন।
খাদিজাতুল কুবরা
অনন্যাদের সুযোগ দিলে ওরাও প্রমাণ করতে পারে মেধা মননে ওরা কতোটা যোগ্য।
খুব সুন্দর লিখেছ। মোটিভেশনাল পোস্ট।
নববর্ষের শুভেচ্ছা
রোকসানা খন্দকার রুকু
ঠিক ধরেছো। অনন্যাদের সুযোগ দেয়া হয়না কিংবা পায়না বলেই নিজেকে প্রমান করতে পারেনা। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।🥰🥰
রেজওয়ানা কবির
তনিমা সত্যি আমাদের প্রত্যেকের গর্ব আর অহংকার। দোয়া করি তনিমার মত আরও অনেক প্রতিভাবান নারী যারা আছে তাদের প্রত্যেকেই তাদের যোগ্য স্থানে যাক এই কামনা,তবে সুযোগ, সময়, প্রচেষ্টা, ভাগ্য অবশ্যই দরকার। ভালো বিষয় তুলে ধরেছ আপু,শুভকামনা ।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অতি ভালো লাগলো বলেই লিখে ফেলেছি। তিনি আমাদের সম্পদ। শুভ কামনা রইলো। শুভ সকাল॥🥰🥰
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমরা আর কিছু না পারি তার অনন্য সম্মানে সম্মানিত হতে পারি সেটাও অনেকেই মেনে নিবে না। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে, মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। তার মা যেটা করেছে সেটা আমাদের সমাজের মায়েরা কতটা করছে? উল্টো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় সমাজপতিদের কারণে হোক, পরিবারের কারণে হোক, যুগ যুগ ধরে চলে আসা নিয়মের যাঁতাকলে পড়ে হোক। অফুরন্ত ভালোবাসা ও ভালোলাগা রইল তনিমা তাসনিমের জন্য । তার মায়ের জন্য ও শুভকামনা ও শ্রদ্ধা। আপনি ও ভালো থাকবেন সবসময়
রোকসানা খন্দকার রুকু
বরাবরের মতো অসাধারণ মন্তব্যে একরাশ মুগ্ধতা ও ভালোবাসা দিদিভাই।❤️❤️
আমার লেখার উদ্দেশ্য নারীরা যেন সচেতন হই নিজের ভাগটুকু আদায় করে নিতে শিখি। শুভ কামনা রইলো। শুভ সকাল॥
আরজু মুক্তা
আমরা পাহাড় সমুদ্র গিরি সবকিছুকে ছেড়ে উড়বো ডানা মেলে।
নারীর জয় সবখানে হোক। অভিনন্দন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল।
শুভ কামনা সবসময়🥰🥰