“কিছু কিছু নাম্বার থেকে,
আর আসবেনা কোন ফোন।
কিছু কিছু এস এম এস পড়ে,
আর হাসবে না এই মন।
কোন কোন ঠিকানায়,
লিখবোনা কোন চিঠি
কোন কোন গলি তে,
করবে না মন হাটা হাঁটি।
কিছু কিছু নাম্বার থেকে,
আর আসবেনা কোন ফোন”।
গানটি প্রথম শুনি প্রায় ১০ বছর আগে। প্রথম যখন শুনেছিলাম তখন যে অসাধারণ ভালো লাগা কাজ করেছিল আজও সেই ভালো লাগাই আছে এক কিঞ্চিৎ ভালোলাগার পরিমান কমেনি। ঘড়িতে এখন রাত ১.৩৩। ফেসবুকিং করতে করতে ভাবলাম ঘুমাবো তাই ফোনে ঠান্ডা গান দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করি। যেই ভাবা সেই কাজ, দিলাম গান,,প্রথম গানটাই কানে করুন সুরে বেঁজে উঠল।
সেই গান,,,,,,,,,
গানটির কথাগুলো বুকের ভিতর মোচড় দেয়, ভিতরটা খুব ফাঁকা হয়ে যায়, মনে হয় কি যেন নাই আমার?
কয়েকদিন থেকে এত লেখার চেষ্টা করছি কিছুতেই লিখতে পারছি না। ভিতর থেকে কে যেন আমার কলমটাই থামিয়ে দিচ্ছে। কে সে?
যে আমার সবকিছু থামিয়ে দিচ্ছে। সেটা জানতে হলে গল্পের শুরু জানতে হবে। চলুন তবে শুরু করি,,,,
কোন এক কাটফাটা রোদে তার সাথে ছাঁয়ার দেখা কোন এক অনুস্ঠানে। ছাঁয়ার তার সাথে দেখা প্রায়ই হয় কিন্তু তার সাথে ছাঁয়ার কোন মিল নেই। ছাঁয়া অনেক চঞ্চল, দুরন্ত, আদুরেপনা আর আহ্লাদী টাইপের। আর সে রাগী, শান্ত, নম্র আর অনেকটা চাঁপা স্বভাবের। ছাঁয়া এক্সট্রোভার্ট আর সে ইন্ট্রোভার্ট। দুজন দুই মেরুর বাসিন্দা। যেদিন প্রথম দেখা হয়েছিল সেদিনও ছাঁয়া তার দিকে ভালোভাবে তাকায় নি। সবাই অনেক মজা করছিল। ছাঁয়াও অনেক মজা করছিল। যাইহোক সেদিনের সময়টা অনেক ভালোই কেটেছিল। তার কিছুদিন পর সে ছাঁয়াকে এফ বি তে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠায়। ছাঁয়া ফ্রেন্ড এক্সসেপ্টের ব্যাপারে ভীষন চুজি মেয়ে। সে কিছুদিন তাকে এক্সসেপ্ট করে না। পরে চলতে ফিরতে ছাঁয়া ভাবে যদিও তার সাথে সব ব্যাপারে মিলে না তবুও কথা বললে দোষ কি? তাই সে রিকুয়েষ্ট এক্সসেপ্ট করে। তারপর শুরু হয় ছাঁয়ার পথ চলা,এস এম এস,ফোনে কথা বলা। এভাবে কবে যে ছাঁয়ার তার প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয় তা সে নিজেও জানে না। প্রেমের প্রথম দিকে সবারই অনেক ভালো সময় কাটে এবং একজন আরেকজনের বিষয়ে জানতে অনেক উদগ্রীব থাকে। ছায়াঁর ক্ষেত্রে ও তার ব্যতিক্রম হয় নি। তারা দুজন দুজনকে জানছে, বুঝছে, সাথে সাথে ছাঁয়ার তার প্রতি অগাধ প্রত্যাশাও বেড়ে উঠছে। কিন্তু যত প্রত্যাশা বাড়ছে তত তাদের মাঝে ঝগড়া বাড়ছে। ছাঁয়া ভাবে প্রেমে ঝগড়া হওয়া অস্বাভাবিক নয়। যত ঝগড়া তত ভালোবাসা, এই ভেবেই ছাঁয়া সেই মানুষটিকে আকড়ে ধরে রাখার চেষ্টায় প্রতিনিয়ত। কিন্তু হঠাৎ কি হল,ছেলেটা ছাঁয়ার কোনকিছুই আর স্বাভাবিক নিতে পারে না, সব কিছুতে শুধু ভুল খোঁজে,অকারনে প্রচুর অপমান করে, ছাঁয়া নক দিলে বিরক্ত হয়, ব্লক করে, গালীগালাজ করে, এক পর্যায়ে ছাঁয়া সহ্য করতে না পেরে তার কাছে জানতে চায় তার অপরাধ কি?
ছাঁয়ার অপরাধ ঃ
১.তাকে সবসময় ফিল করা
২.তাকে অনেক বেশি বেশি ভালোবাসার এস এম এস দেয়া
৩.তাকে একটি বার দেখতে চাওয়া
৪.মোটকথা তাকে পাগলের মত ভালোবাসে।
তার শুধু একটু ভালো কথা শোনার জন্য অনেক সিনক্রিয়েট করা যাতে সে একটু বোঝে।
কিন্তু ছাঁয়া যত বেশী পাগলামো শুরু করে, ছেলেটা তত বেশী অপমান করে, এভাবেই ধীরে ধীরে তাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়। কেন ছেলেটি এমন করে ছাঁয়া জানতে চাইলেই বলে তাকে ভালো লাগে না, তার আচরন ভালো লাগে না। ছাঁয়া অনেক ক্ষমা চায়, সব ভুল শোধরাতে চায়, নিজের সবকিছু দিয়ে পেতে চায় একটু মানসিক সাপোর্ট।ছাঁয়া নিজেও বুঝতে পারেনি যে সে কবে তাকে এত ভালোবেসে ফেলেছে? তাই শত অবহেলা আর অপমানের পরেও বার বার ফিরে যায় তার কাছে শুধু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।
কিন্তু হয়ত কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা কোন কারন ছাড়াই হয়ত অন্যকে কষ্ট দেয়, অথবা,ভালোবাসা বোঝেই না,অথবা এতবেশি কিছু চায় না, অথবা ভালোবাসে কিন্তু প্রকাশ করবে না তাই দূর থেকেই নিজেও নিছক কষ্ট পায় এবং অন্যকেও কষ্ট দেয়। এই দুনিয়ায় অনেক ধরনের মানুষ আছে, ছাঁয়ার সে যে কোন ক্যাটাগরীর একমাত্র আল্লাহই জানে। ছাঁয়া তার সঙ্গী হতে চেয়েছিল কিন্তু তার সঙ্গী তা চায় নি। তাই ছাঁয়া তার এই এক তরফা ভালোবাসা সারাজীবন বয়ে বেড়াচ্ছে। হয়ত আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু না পাওয়া থাকে। ছাঁয়া এটাই বয়ে বেড়াচ্ছে আজও শুধু একটা আশায় যদি তার সঙ্গী এসে হাতটা ধরে এসে একবার সেই আগের মত বলে,আমি আছি, থাকব, ছিলাম❤️❤️❤️
সময় বদলেছে, ঘড়ির কাঁটাগুলো একইভাবে চলছে, সেই রাস্তাগুলো এখনও একইরকম আছে, চা খাওয়ার অভ্যাস থেকে শুরু করে জীবনের নিত্যদিনের কাজ ঠিক আগের মতই চলছে, শুধু পাল্টেছে ছাঁয়ার সেই মানুষটা। কিন্তু ছাঁয়া একটুও পাল্টাতে পারে নি। সে পিছুটান আঁকরেই পরে আছে তার সেই সঙ্গীর আবার ফিরে আসার অপেক্ষায়। আজও ছাঁয়া বার বার ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকে একটা এস এম এসের আশায়, একটা ফোন কলের আশায়, একটু ভালোবাসা পাওয়ার আশায়। এই পিছুটান নিয়েই ছাঁয়ার এখনকার বসবাস। কেননা তাদের সেই সম্পর্কের নামই ছিল ” ছাঁয়াসঙগী”।
তাই সে আজও ছাঁয়া ছাঁয়ার মত সেই পিছুটান নিয়েই পরে আছে আশায় আশায়।
আসলে আমার মতে ছেলেটার ছাঁয়াকে আর একবার সুযোগ দেয়া উচিৎ কেননা ভালোবাসলে ক্ষমা করাই যায়। ভালোবাসা সবার জীবনে সঠিকভাবে আসে না তবুও এরকম ভালবাসা ধরে রাখতে ছেলেটা নিজের মত তৈরী করে নিতে পারে অথবা যেকোনো সমাধান করে ছাঁয়াকে সারাজীবন সঙ্গী করতে পারে। কেননা তারাতো “ছাঁয়াসঙ্গী”। আশা করি ছাঁয়াসঙ্গী আবার এক হোক,ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হোক,শুভকামনা ❤️❤️❤️
২৪টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
সুন্দর ভাবেই গল্প উপস্থাপন করেছেন, কেন এবং কিভাবে ডেডলক ভেঙে লেখায় ফিরলেন
তাও জানলাম। কিছু স্মৃতি কিছু টানাপোড়েন আর কিছু পিছুটান নিয়েই আমাদের জীবের গল্প
ছুটে চলে অলক্ষ্যে আমাদের সাথে।
রেজওয়ানা কবির
হ্যাঁ ভাইয়া 🤪🤪ঠিক ধরেছেন এভাবেই লেখায় ফিরলাম। আমরা সবাই এই পিছুটান নিয়েই আসলে থাকি হয়ত।আপনার মন্তব্য খুব ভালো লাগ ল।ভালো থাকবেন। শুভকামনা ।
আলমগীর সরকার লিটন
পিছুটানটাই গভীর ভালবাসা ভালবাসা না থাকলে পিছুটান থাকবে না যাদের ভালবাসা নেই তাদের পিছুটান নেই ——————–
ভালবাসা মুছা বা ভুলা যায় না যেকোন সময়ে গর্জন করবেই এটাই পিছুটান——- কবির আপু
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া খুব সুন্দর মন্তব্যের জন্য । ভালো থাকবেন। শুভকামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপনার পুরো লেখাটির সাথে একমত পোষণ করছি। এই পিছুটান শব্দ টি আমাদের কে অনেক সময় সামনে আগাতে দেয় না, স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রাখে, মানুষিক ভাবে অসুস্থ করে ফেলে। আশা করি এবার থেকে নিয়মিত কলম লিখবে, পিছু টেনে ধরবে না। রুকু আপুকে অবশ্যই ধন্যবাদ। আপনি ও ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। একরাশ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
রেজওয়ানা কবির
ইনশাআল্লাহ আপু। আপনার মন্তব্য বরাবরের মতই আমার লেখার উৎসাহ আরও বাড়িয়ে দেয়। অনেক অনেক ভালোবাসা আপু। ভালো থাকবেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আগে আমার প্রসংশা করি আমি কি,,,, যাহ্ কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না।
এবার লেখিকা, সেজন্যই আপনি রিপিট শুনতে চাইলেন। আর বলা যাবে না। বাপরে বাপ! কি সাংঘাতিক!
এই অধমের আজাইরা কবিতা শুনে এমন ভাবুক কিছু লিখে ফেললেন এটা ভালো লাগছে। আসলে যে লিখতে জানে তার উপাদান সবখানেই।
শুভ কামনা সবসময়।
রেজওয়ানা কবির
ওহরে! তোমার লেখা কবিতাইতো আজকের এই লেখার উৎস। তুমি যে সত্যি ভালো লেখ এটা আমার চেয়ে কেউ জানে না🤪🤪ধন্যবাদ আপুনি আসলেই আমার লেখার মুল প্রেরনা তুমি।বুক ভরা ভালোবাসা❤️❤️❤️।
সুপায়ন বড়ুয়া
গল্পটির সাথে সহমত পোষণ করছি।
এই পিছুটান অনেক সময় সামনে আগাতে দেয় না,
মানষিক ভাবে অসুস্থ করে ফেলে।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। শুভকামনা রইলো
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ দাদা, এই পিছুটান আমাদের অবদমন করা উচিৎ। ভালো থাকবেন। শুভকামনা ।
আরজু মুক্তা
পিছুটান পড়তে পড়তে “পাছে লোকে কিছু বলে” কবিতার কথা মনে হলো।
পিছুটান রেখে কলম দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলুক।
শুভকামনা
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন।
মনির হোসেন মমি
এই পিছুটান কারো কখনো কাম্য নয় তবুও অচেতন মনে এসে যায়।যখন আসে তখন তখন মনকে নাড়া দিয়ে স্বাভাবীক জীবনকে অস্বাভাবিক করে তুলে। আমি এই পিছুটানের বিপক্ষে এই সব পিছুটানকে অনেকটা ছেলে বেলার নষ্টা সময় ভেবেই ভুলে যাই ভুলে গেছি ভুলছি।
লেখাটা চমৎকার।তবে লেখার ফন্টগুলো এতো ছোট ছোট কেন আপু?জানেনতো বয়স হয়েছে চোক্ষেও কম দেখি।
রেজওয়ানা কবির
ভাইয়া লেখার ফ্রন্টগুলো কিছুদিন থেকে ঠিক করতে পারছি না।দেখি লেখার ফ্রন্ট বড় করে নিব।আর তারপরেও আপনার কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আজ একটা কথা বলি,আমি যেদিন ” স্বপ্ন” গল্পটি লিখেছিলাম সেদিন আপনার মন্তব্য এত বেশি ভালো লেগেছিল সেদিন থেকেই আপনার সব মন্তব্যই লেখার উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়। পিছুটান ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়াই ভালো ভাইয়া। ভালো থাকবেন সবসময়। শুভকামনা।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ আপু।কিছুটা সমস্যায় আছি তাই ব্লগে আগের মত সময় দিতে পারিনা।আপনার যে কয়টা লেখা পড়েছি সবকটাইতে মুগ্ধ।কিছু লেখা পড়তে পরিনি ।সময় করে পড়ে নিব। শুভ ব্লগিং।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ মমি ভাই।ভালো থাকবেন।
তৌহিদ
পিছুটান শুধু লেখা নয়, অনেক কিছুই থমকে দেয়। লেখায় ফিরতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। তবে গুগোল সার্চ করে রাইটার্স ব্লক সম্পর্কেও জেনে নিতে পারেন। কাজে লাগতে পারে কিন্তু!
গানটি আমি টেলিফিল্মে শুনেছিলাম প্রথম। তাহসান, ইরেশ যাকের অভিনীত ছিলো মনে হচ্ছে।
লেখা ভালো লেগেছে আপু।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া,, রাইটার্স ব্লক সম্পর্কে জেনেছি কয়েক মাস আগে। আসলে আমি সবসময় আমার কল্পনা থেকে লিখি ভাইয়া🥰 আমার কেন জানি বিরহের সবকিছু ভালো লাগে।জোর করে বিরহ নেয়া এটাও ভাল লাগে। সবার হয় কিনা জানি না, আমি লিখতে গেলেই মনে হয় বিরহ নিয়ে লিখি কেন জানি না??আর হ্যাঁ, এই গানটি “আমাদের গল্প” নাটকের গান। খুব সুন্দর একটা নাটক। ভালো থাকবেন সবসময় ভাইয়া।
তৌহিদ
নাটকের নাম মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া,লিংক দেয়ার জন্য। অবশ্যই রাইটার্স ব্লক আজই দেখে নিব। সবসময় শুভকামনা ।
রেজওয়ানা কবির
ভাইয়া আপনি রাইটার্স ব্লক সফটওয়ারের কথা বলেছেন না?
তৌহিদ
রাইটার্স ব্লক-
অনেকসময় আপনার মনে হতে পারে, শব্দগুলি যেন সব মাথার ভেতর ওলট পালট করছে কিন্তু কলম দিয়ে তাকে অলংকৃত করতে পারছেন না। এ কারণে লেখকগন প্রায়শই বলে থাকেন লিখতে পারছি না, লেখা আসছে না। কি লিখবো? একজন লেখকের উপর এ বিষয়টি যখন বিরাজ করে তখন তাকে বলা হয় রাইটার্স ব্লক।
সময় পেলে লেখাটি পড়তে পারেন-
https://sonelablog.com/%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%93-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%8b-%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%96%e0%a6%95-%e0%a6%b9%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%87/
শামীম চৌধুরী
এক কথায় অসাধারন আপু।
মনোমুগ্ধকর।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার কমেন্ট পেয়েও বরাবরের মত মুগ্ধ হই। ভালো থাকবেন, শুভকামনা।