
জীবনের গল্প-৬-এর শেষাংশ:☛ সেখানেই ওঁরা কাজ করবে।’ এই বলেই কন্ট্রাক্টর সাহেব আমাদের এই নির্মাণাধীন ভবনে রেখে উনার বাসায় চলে যায়। আমারা রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে যাঁর যাঁরমতো ঘুমিয়ে পড়ি। রাত পোহালেই যেতে হবে মহেশখালী।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে আমারা তিনজন একসাথে ম্যানেজার সাহেবের সাথে দেখা করলাম। আমরা তিনজন চলে যাবো বলে ম্যানেজার সাহেব স্বইচ্ছায় আমাদের নিয়ে চলে আসলো টিলার নিচে চায়ের দোকানে। চারজন একসাথে বসে চা-বিস্কুট খেলাম। চা-বিস্কুটের দাম ম্যানেজার সাহেব নিজেই দিয়ে দিলেন, আমাদের কাউকে আর দিতে দিলেন না। তিনি আগেও পকেট খরচ করার জন্য নিজের পকেট থেকে সময় সময় আমাদের এক টাকা দুই টাকা করেও দিতেন। কিছুক্ষণ পর হয়তো কন্ট্রাক্টর সাহেব এসে আমাদের নিয়ে যাবেন। তাই আমাদের জন্য ম্যানেজার সাহেব খুবই আফসোস করলেন। বিশেষ করে আমরা তিনজন ঢাকাইয়া হওয়াতে ম্যানেজার সাহেব আমাদের খুবই পছন্দ করতেন, আদরও করতেন। কাজের ফাঁকে খোঁজখবর রাখতেন। আমাদের পারিবারিক বিষয় নিয়েও আলাপ করতেন। আমাদের কাজ করার সাহস দিতেন। আমরাও ম্যানেজার সাহেবকে সম্মান করতাম। উনার কথা ছাড়া এক পা-ও নড়তাম না। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই হয়তো আমরা আর এখনে থাকছি না। তাই ম্যানেজার সাহেবের মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেলো। মহেশখালী গিয়ে সেখানে ভালোভাবে কাজ করার জন্যও ভালো উপদেশও দিলেন। ভালোভাবে চলার জন্য বললেন। মহেশখালী এলাকার স্থানীয় লোকজনের স্বভাবচরিত্র কেমন এবং তাঁদের সাথে কীভাবে চলাফেরা করবো, সে বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনাও দিলেন।
চায়ের দোকানে ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে বলতেই কন্ট্রাক্টর সাহেব বেবিট্যাক্সি চড়ে আমাদের সামনে এসে হাজির হলেন। আমাদের তাড়াতাড়ি করে টিলায় গিয়ে বেডিংপত্র নিয়ে আসতে বললেন। আমরা টিলার উপরে গিয়ে বেডিংপত্র গোছগাছ করে বেঁধে সবার সাথে দেখা করে টিলার উপর থেকে নিচে নেমে আসলাম। ম্যানেজারের কাছে আশীর্বাদ চেয়ে কন্ট্রাক্টর সাহেবের সাথে মহেশখালীর উদ্দেশে রওনা হলাম। বেবিট্যাক্সি চড়ে আসলাম কক্সবাজার যাওয়ার নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ডে। তখনকার সময়ে চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজারের বাস ভাড়া ছিল জনপ্রতি ১০ টাকা। বাসে ওঠার আগে কন্ট্রাক্টর সাহেব এক হোটেলে নিয়ে আমাদের নাস্তা খাওয়ালেন।
এরপরই কন্ট্রাক্টর সাহেব-সহ চারজন বাসে উঠে বাসলাম। তখন চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে কয় ঘণ্টা সময় যে লেগেছিল, তা বলতে পারবো না। তবে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে প্রায় বিকাল হয়ে গিয়েছিল। বাস থেকে নেমে আবার এক হোটেলে গিয়ে চারজনে ভাত খেয়ে মহেশখালী যাওয়ার ট্রলার ঘাটে আসলাম। তখন কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যেতে ট্রলারে জনপ্রতি ২ টাকা করে ভাড়া ছিল। ট্রলারে চড়ে মহেশখালী যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। ট্রলার থেকে নেমে আবার এক চায়ের দোকানে চা পান করতে করতে কন্ট্রাক্টর সাহেব লোক মারফত উনার ম্যানেজারকে খবর পাঠালেন। ম্যানেজার সাহেব আসলেন। দুইজনে আমাদের থাকার জায়গায় নিয়ে গেলেন।
থাকার জায়গায়টা হলো, মহেশখালী বাজার থেকে নতুন বাজার যাওয়া রাস্তার পাশে থাকা সরকারি খাদ্য গোডাউন। সেই গোডাউনে তখন সরকারি কোনও খাদ্যশস্য মজুদ ছিল না। অনেক বড় পাকা দালানের গোডাউন। সেই গোডাউনেই হলো আমাদের তিনজনের থাকার জায়গা। সাথে নেওয়া বেডিংপত্র গোডাউনের এক কোণে রেখে কন্ট্রাক্টর সাহেবের সাথে বাজারে আসলাম। তিনি আমাদের হাঁড়িপাতিল-সহ ১০-১২ দিনের চাল, ডাল, তেল, লবণ যা লাগে প্রয়োজনীয় সবকিছু কিনে দিলেন। তিনজনকে নগদ ১০০ টাকা করে হাত খরচ দিলেন। সেখানকার কাজের সাইটে থাকা ম্যানেজারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন এবং কবে থেকে কাজ শুরু হবে তা ম্যানেজার সাথে বুঝ পরামর্শ করতে বললেন। আর আমাদের যখন যা দরকার হয়, তা ম্যানেজারকে দিতে বললেন। এরপর তিনি মহেশখালী থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হলেন। আমরা থেকে গেলাম মহেশখালী।
কন্ট্রাক্টর সাহেব আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাবার পর, আমরা তিনজন মহেশখালী বাজার থেকে মাছ-সহ কিছু কাঁচা তরিতরকারি কিনলাম। সাথে রান্না করার জন্য এক গাট্টি লাড়কিও কিনলাম। গোডাউনে এসে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে রান্না করার চুলা তৈরি করলাম। একজন মাছ কাটছে। একজন ভাত রান্না করতে চাল ধুয়ে নিচ্ছে। আমি চুলায় আগুন জ্বালিয়ে দিলাম। এক তরকারি-সহ ভাত রান্না হয়ে গেল। তিনজনে মিলেমিশে খাওয়া-দাওয়া সেরে যাঁর যাঁর বিছানা বিছিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আবার আলুসিদ্ধ ভাত রান্না করে খেয়ে-দেয়ে কাজের ম্যানেজার সাহেবের সাথে দেখা করলাম। ম্যানেজার সাহেব উনার সাথে আমাদের কাজের সাইটে নিয়ে গেলেন। আমাদের যেই কাজের জন্য মহেশখালী নেওয়া হলো, সেই কাজটা হলো মহেশখালী থেকে সোজা পশ্চিমে নতুন বাজার পর্যন্ত মোট ১৩ মাইল সিসি ঢালাই রাস্তা তৈরির কাজ।
ম্যানেজারের সাথে কাজের সাইটে গিয়ে দেখা গেল, সেখানকার স্থানীয় লেবাররা সেদিন তখনো কেউ সাইটে আসেনি। ম্যানেজার সাহেব কাজের সাইটে কোথায় কী কী মাল আছে তা দেখিয়ে দিলেন। সেদিন সেখানে ম্যানেজার-সহ আমরা সেখানকার স্থানীয় লেবারদের জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু কারোর কোনও খবর হচ্ছিল না দেখে ম্যানেজার সাহেব সেদিনের জন্য কাজ পুরোপুরি বন্ধ করে আমাদের নিয়ে সোজা মহেশখালী বাজারে চলে আসে। সেদিনের জন্য আমরা পুরোপুরি ফ্রি হয়ে গেলাম। আমাদের কাছ থেকে ম্যানেজার বিদায় হবার পর, আমরা মহেশখালী পুরো বাজারটা ঘুরে-ফিরে দেখে চা-বিস্কুট খেয়ে দুপুরের আগে আমাদের গোডাউনে চলে আসি। নিজেরা রান্নাবান্না করে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে আবার তিনজনে মহেশখালী বাজারের দক্ষিণ পাশে সাগর পাড়ে ঘুরা-ঘুরি করে করে সন্ধ্যাবেলা চলে আসলাম নিজেদের থাকার জায়গা গোডাউনে।
পরদিন সকাল হতে-না-হতেই সেখানকার স্থানীয় লেবাররা গোডাউনে এসে আমাদের ঘুম থেকে ডেকে ওঠালো। তাড়াতাড়ি ভাত রান্না না করেই মহেশখালী বাজারে গিয়ে নাস্তা করে তাঁদের সাথে কাজে যোগদান করি। সেদিন কাজ করে স্থানীয় লেবারদের সাথে পরিচিত হলাম। পরদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি আর থামছিল না। সারাদিন গোডাউনে আর বাজারে ঘুরা-ঘুরি করে সময় শেষ করলাম। এভাবে সেখানে প্রতিদিন হাঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টির কারণে সেই কাজ আর আমরা বেশিদিন করতে পারিনি। প্রতিদিন সারাদিনের মধ্যে একবেলাও ঠিকমতো কাজ চলছিল না। ম্যানেজার সাহেবও আমাদের ঠিকমতো বাজার সাদাই করার খরচ দিচ্ছিল না। কন্ট্রাক্টর সাহেবেরও খবর ছিল না। তখনকার সময়ে এখনকার মতো হাতে হাতে মোবাইল ফোনও ছিল না। কন্ট্রাক্টর সাহেবের ডাক ঠিকানাও আমাদের জানা ছিল না। তাই নিজেদের পকেট খরচের কথা চিন্তা করে গোডাউনে থেকেই কাজ না থাকলে অন্য কাজ খুঁজতে থাকি।
একসময় বাজারে আসা-যাওয়ার মাঝেই এক লোকের সাথে আমাদের পরিচয় হয়ে গেল। লোকটির নাম মোহাম্মদ ইসমাইল মিয়া । তিনি মহেশখালী বাজারের উত্তরে জাকিরিয়া সল্ট নামে এক লবণের মিলে কাজ করতো। তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি আমাদের সব বিষয়-আশয় জানলেন, শুনলেন। আমাদের কোনপ্রকার চিন্তা না করার পরামর্শ দিলেন এবং জাকিরিয়া সল্টে তাঁদের সাথে কাজ করার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করলেন। তিনি জাকিরিয়া সল্টে গিয়ে উনার আরও তিন ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে আমাদের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করলেন। এরপর দুইদিন যেতে-না-যেতেই তিনি ইসমাইল মিয়া আমাদের কাজ রেডি করেছেন বলে জানালেন। কিন্তু আমরা গোডাউন খালি রেখে তিনজন একসাথে যেতে রাজি হচ্ছিলাম না। কারণ এরমধ্যেই যদি কন্ট্রাক্টর সাহেব চট্টগ্রাম থেকে এখানে এসে আমাদের খুঁজে না পায়, তাহলে হয়তো আমাদের গার্ডিয়ানের ভয়ে মহেশখালী বাজারে থাকা থানায় জিডিও করতে পারে। সেজন্য আমরা তিনজন একসাথে এখান থেকে সরাসরি লবণের মিলে কাজে যোগদান করতে রাজি হয়েছিলাম না।
তখন ইসমাইল মিয়া আমাদের বুদ্ধি দিলেন সপ্তাহে একজন করে রাস্তার কজা ছেড়ে লবণের মিলে কাজে যোগদান করতে। আমরা তা-ই রাজি হয়ে আগে আমাদের সাথে থাকা লোকমান নামে লোকটিকে জাকিরিয়া সল্ট মিলে কাজ করার জন্য সুপারিশ করি। প্রতিদিন কাজের মজুরি ২৫ টাকা। আহা্! শুধু টাকা আর টাকা! এতো টাকা খরচ করেও শেষ করা যাবে বলে আমারা তিনজনই মনে মনে হিসাব কষতে ছিলাম। পরদিন সকালে লোকমান নামে বন্ধুটিকে জাকিরিয়া সল্ট মিলে পাঠালাম। লোকমান লবণের মিলে কাজে লেগে গেলেন। আমরা দুইজন রাস্তার কাজেই থেকে গেলাম কন্ট্রাক্টর সাহেবের আগমণের আশায়। কিন্তু না, বেশকিছু দিন গত হয়ে গেলেও যখন আর কন্ট্রাক্টর সাহেব আসছিলেন না, তখন একদিন জাকিরিয়া সল্ট মিলের ইসমাইল মিয়ার শরণাপন্ন হলাম। ওই রাস্তার কাজ থেকে সরিয়ে আনতে আমাদের পক্ষ হয়ে ওই কাজের ম্যানেজারের সাথে আলাপ করার জন্য অনুরোধ করালাম।
তখন ইসমাইল মিয়া তাঁর আরও দুইতিন জন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে নিয়ে একদিন বিকালবেলা ম্যানেজারের সাথে আলোচনা করে আমাদের দুইজনকে জাকিরিয়া সল্ট মিলে কাজে লাগিয়ে দেয়। আমরাও জাকিরিয়া সল্ট মিলে নিয়মিত কাজ করতে থাকি, দৈনিক মজুরি ২৫ টাকায়। এটাই ছিল আমার কোনও এক মিল ইন্ডাস্ট্রিতে জীবনের প্রথম চাকরি। হোক সেটা লবণের মিল। তাই এই চাকরি নিয়ে চার-পাঁচ বছর আগে এক অনলাইন দিনলিপিতে “জীবনের প্রথম চাকরি” শিরোনামে আমার একটা লেখা প্রকাশ হয়েছিল। সেই সাইটের লিংক লেখার মাঝে দেওয়া হলো।
চলবে…
২৮টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
জীবন চলমান চলে যাবে তবে সুখ আর দুখ জীবনকে অর্থবহ করে
নিতাই বাবু
আমার দুই নাতিনের অনুরোধেই “জীবনের গল্প” শিরোনামে আমার জন্ম থেকে বেঁচে আছি এপর্যন্ত জীবনের খুঁটিনাটি সবকিছু সোনেলার সোনালি পাতায় তুলে ধরতে চাচ্ছি, দাদা। এই লেখা শুধু পাঠকদের জন্য আর আপনাদের জন্যই নয়, এই লেখা আমার নাতি-নাত্নিদের জন্যও। ওঁরা বড় হয়ে পড়বে। আমার সম্বন্ধে জানবে। এই উদ্দেশ্যেই আমার এই উদ্যোগ। আশা করি সাথে থাকবেন। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ছাইরাছ হেলাল
কঠিন সংগ্রামের জীবন, কল্প কথাকেও হার মানায়।
নিতাই বাবু
আমার দুই নাতিনের অনুরোধেই “জীবনের গল্প” শিরোনামে আমার জন্ম থেকে বেঁচে আছি এপর্যন্ত জীবনের খুঁটিনাটি সবকিছু সোনেলার সোনালি পাতায় তুলে ধরতে চাচ্ছি, শ্রদ্ধেয় কবি মহারাজ। এই লেখা শুধু পাঠকদের জন্য আর আপনাদের জন্যই নয়, এই লেখা আমার নাতি-নাত্নিদের জন্যও। ওঁরা বড় হয়ে পড়বে। আমার সম্বন্ধে জানবে। এই উদ্দেশ্যেই আমার এই উদ্যোগ। আশা করি সাথে থাকবেন। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ইঞ্জা
জীবনের এক কঠিন সময়ের গল্প শুনছি, এইসব শুনলেও মনে উৎসাহ জাগে দাদা, এগিয়ে যান আমি সব পড়ছি।
নিতাই বাবু
আমার দুই নাতিনের অনুরোধেই “জীবনের গল্প” শিরোনামে আমার জন্ম থেকে বেঁচে আছি এপর্যন্ত জীবনের খুঁটিনাটি সবকিছু সোনেলার সোনালি পাতায় তুলে ধরতে চাচ্ছি, দাদা। এই লেখা শুধু পাঠকদের জন্য আর আপনাদের জন্যই নয়, এই লেখা আমার নাতি-নাত্নিদের জন্যও। ওঁরা বড় হয়ে পড়বে। আমার সম্বন্ধে জানবে। এই উদ্দেশ্যেই আমার এই উদ্যোগ। আশা করি সাথে থাকবেন। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ইঞ্জা
খুব ভালো চিন্তা ভাবনা দাদা, সাথেই আছি। 😊
সুরাইয়া নার্গিস
শ্রদ্ধেয় বেঁচে থাকার জন্য কতটা সংগ্রাম করতে হয় আপনার লেখায় জানছি।
আপনার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, আপনার ধৈর্য,নিষ্ঠাকে আমি স্যালুট জানাই।
মনযোগ দিয়ে নিয়মিত পড়ছি, পরের পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
ভালো থাকুন,
শুভ কামনা রইল।
নিতাই বাবু
আমার দুই নাতিনের অনুরোধেই “জীবনের গল্প” শিরোনামে আমার জন্ম থেকে বেঁচে আছি এপর্যন্ত জীবনের খুঁটিনাটি সবকিছু সোনেলার সোনালি পাতায় তুলে ধরতে চাচ্ছি, দিদি। এই লেখা শুধু পাঠকদের জন্যই নয়, এই লেখা আমার নাতি-নাত্নিদের জন্যও। ওঁরা বড় হয়ে পড়বে। আমার সম্বন্ধে জানবে। এই উদ্দেশ্যেই আমার এই উদ্যোগ। আশা করি সাথে থাকবেন। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সুপায়ন বড়ুয়া
দাদা এখনো কিভাবে প্রতিদিন কার ঘটনাগুলো মনে রেখে লিখছেন ?
ভাল লাগলো লবন মিলের প্রথম চাকরী হওয়ার জন্য।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
নিতাই বাবু
হ্যাঁ, শ্রদ্ধেয় কবি দাদা। প্রথমে সুন্দর “দাদা এখনো কিভাবে প্রতিদিন কার ঘটনাগুলো মনে রেখে লিখছেন ?”এরকম মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এরপর বলতে চাই, কারোর জীবনের ঘটনা নিজের জীবনে টেনে আনা যায় না। যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জীবনের ঘটনা কি আমার জীবনীতে লাখা সম্ভব হবে, দাদা? আমি আমার লেখা জীবনের গল্পতে যা যা উল্লেখ বা তুলে ধরেছি, তা একচুল পরিমাণও মিথ্যে নয়। যা লিখেছি তা শুধু আমার কষ্টের জীবনের ঘটনাগুলোই লিখতে চাচ্ছি। তা হবে জন্ম থেকে এ-পর্যন্ত। চার থেকে পাঁচ বছর আগেও ব্লগ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে “জীবনের প্রথম চাকরি” শিরোনামে একটা পোস্ট করেছিলাম। তা এখানে দেখুন! আবার সোনেলা ব্লগেও একবার “মায়ের কাছে ছেলের চিঠি” শিরোনামে একটা ব্লগ লিখেছিলাম। তা href=”https://sonelablog.com/মহেশখালী-থেকে-মায়ের-কাছে/”>এখানে দেখুন!
আমার জীবনের ঘটনা নিয়ে আরও এরকম লেখা দেখতে চাইলে মন্তব্যে লিখে জানাবেন, দাদা। তখন আমি আরও অনেক সাইটের লিংক দিয়ে দিবো, আপনি পড়ে নিবেন। আপনার মন্তব্যে ব্যথিত হলাম, শ্রদ্ধেয় দাদা। সত্যি ব্যথিত হলাম। ধন্যবাদ-সহ শুভকামনা থাকলো।
নিতাই বাবু
সোনেলা ব্লগে যেটা লিখেছিলাম দাদা সেটা এখানে দেখুন! আগে মন্তব্যে ঠিকমতো লিংক সংযোজন হয়েছিল না। তাই আবার দিলাম। আবারও ধন্যবাদ!
সুপায়ন বড়ুয়া
দাদা প্রশংসাই তো করলাম আপনার স্মৃতির শক্তির জন্য। আমি তো মিথ্যে বলছেন বলিনি।
বরঞ্চ আপনার জন্য গর্ব হয় সুন্দর স্মৃতিশক্তি রোমন্থন করার জন্য। যেটা আমি পারি না।
আর আপনি যে BDNews এ লিখতেন সেটা আমি জানি এ জন্যও গর্ব হও। আপনি ভাল থাকবেন আর ও লিখে যান। আমি আপনার সাথে আছি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এমন সময়ের কথা পড়ে অনেক কিছু জানলাম । দাদা অনেক কষ্টের জীবন পার করেছেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভ কামনা অহর্নিশি
নিতাই বাবু
আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো, শ্রদ্ধেয় দিদি। আশা করি ভালো থাকবেন। সাথে আছেন বলে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তৌহিদ
আপনার সংগ্রামী জীবনকে স্যালুট জানাই দাদা। প্রার্থনা করি সৎপথে থেকে জীবনের সকল বাঁধা অতিক্রম করবেন।
শুভকামনা সবসময়।
নিতাই বাবু
হ্যাঁ, দাদা। জন্ম থেকে বেঁচে আছি এপর্যন্ত জীবনের খুঁটিনাটি সবকিছু “জীবনের গল্প” শিরোনামে নাতিনদের অনুরোধে এখানে তুলে ধরতে চাচ্ছি। ওঁরা আরেকটু বড় হয়ে যাতে এই লেখা পড়ে পারে, তাই।
সাথে আছেন বলে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মোঃ মজিবর রহমান
জিবনের জন্য কাজ, কাজেই জিবন চলে। আর কাজ করেই জিবন বহমান আমৃত্যু।
যাক চলুক জিবনের গল্প।
নিতাই বাবু
সাথে থাকবেন আশা করি। পর্ব কিন্তু অনেক হবে, দাদা।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।
মোঃ মজিবর রহমান
আশা রাখি থাকতে পারব।
সাবিনা ইয়াসমিন
লবনের মিলে চাকরীর ঘটনাটি আরেকবার জেনেছিলাম আপনার লেখায়। সারাজীবনের সমস্ত স্মৃতি লিখতে লিখতে একদিন শেষ হবে। কিন্তু আমি ভাবছি স্মৃতিকাতর দিনগুলোর কথা লিখতে বসে আপনার কেমন লাগছে।
আরও পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
ভালো থাকুন দাদা, শুভ কামনা 🌹🌹
নিতাই বাবু
লিখতে বসে মনে হয় যেন, আমি এখনো সেই দিনগুলোতেই আছি। সবকিছু আমার চোখের সামনে ভাসতে থাকে, দিদি। আর “জীবনের গল্প” লিখছি আমার ছোট দুই নাতিনের অনুরোধে। ওঁরা বলে, ‘দাদু তুমি না বলে লেখক? তাহলে তোমার জীবনকাহিনী কি লিখেছো? না লিখে থাকলে লিখে ফেল!’
আর হ্যাঁ, দিদি। লবণের মিলে চাকরি নিয়ে সোনেলা ব্লগে লিখেছিল। সেটা এখানে দেখুন!
রোকসানা খন্দকার রুকু।
পড়ার অপেক্ষায় রইলাম দাদা।।।।।
নিতাই বাবু
খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব নিয়ে হাজির হচ্ছি। সাথে আছেন দেখে খুশি হলাম। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আলমগীর সরকার লিটন
অনেক লেখছেন নিতাই দা————
নিতাই বাবু
জীবনে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা আমার এই “জীবনের গল্প”তে থাকবে, দাদা। সাথে আছেন বলে খুশি হলাম। শুভকামনা থাকলো।
আরজু মুক্তা
আপনাকে লাল সালাম।
নিতাই বাবু
সাথে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দিদি।