
প্রতিদিনকার মত আজও বাসা থেকে আকাশ ধানমন্ডি লেকের এই নিরিবিলি জায়গায় এসে বিকেলের দিকে বসে আছে। ধানমণ্ডি পনের নম্বর থেকে এই স্থানটি বেশ কাছেই, তাই হেঁটেই আসে। এখানে এসে বসলেই সে তন্দ্রার স্পর্শ পায় যেন হৃদয়ে। স্বচ্ছ টলটলে পানিকেই মনে হয় তন্দ্রা। যে পানিতে অবিকল প্রতিবিম্ব পড়ে আকাশের। আকাশটা দেখা যায় পানির সাথে মিশে আছে। শান্ত, স্থির, স্বচ্ছ পানিই তো তার তন্দ্রা। মনে হয় তন্দ্রার মাঝে দ্রবীভূত হয়ে আছে সে। মনে হয় তন্দ্রা যেন তারই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুজন মিলে পূর্ণতা পায়।
এইতো দুদিন আগে কোন কারণ ছাড়াই সন্ধ্যা হতে আকাশের খুব মন খারাপ। চরম একাকী মনে হচ্ছিল নিজেকে। যেন কেউ নেই এ জগতে তার আর। বুকের উপর দমবদ্ধ একটা অবস্থা, ভারী কোনো কিছু যেন চাপিয়ে রাখা হয়েছে বুকের উপর। নিশ্বাস নিতেও কেমন হাসফাস লাগছে। রাতে তন্দ্রার সাথে অনলাইনে কথা বলার সময় আকাশ অবাক। তন্দ্রাও কোনো কারন ছাড়াই বিষণ্ন হয়ে আছে সন্ধ্যা থেকেই। একজনের মন খারাপ হলে কি ভালোবাসার জনের মনের উপর প্রভাব পড়ে? মনের হাসি, কান্না কিভাবে একই সময় ছুঁয়ে যায় দুজনকে! শুধু যে গতকালই এমন হয়েছে তা নয়, এমনি হয়েছে বহুবার, বহুদিন। এতে দুজনার এমনই ধারণা হয়েছে যে উভয়ে উভয়ের অংশ হিসেবেই বিধাতা দুজনকে সৃস্টি করেছেন। যে কারণে এক অংশের অনুভব, অনুভুতি অন্য অংশকে স্পর্শ করে।
পানিতে আলোড়ন হয় আকাশ যেন তন্দ্রার কথা শুনতে পায় ” আমাদের মন , আমাদের রং, আমাদের আনন্দ, সুখ দুঃখ সবই মিলে যায়। আমরা দূর থেকে বুঝিনি, কেউ কাউকে বলিনি। অথচ আমাদের মন একে অপরকে স্পর্শ করে গেছে। বলতেও হয়না। নিরবে পাশে এসে থাকো। আজও মন খারাপের সময় নিজেকে যখন একা ভাবছিলাম, তুমি দূর-দূরত্বে থেকেই আমার সংগী হয়ে ছিলে। আমার আত্মার সাথী হয়ে গিয়েছ তুমি। ”
লেকের পারে এসে বসলেই তন্দ্রার কথা ভেসে আসে কানে স্পস্ট ভাবে ” আমাদের ভালোবাসার গল্প গুলো কোথাও লেখা থাকবে না। নয়তো আমাদের প্রেমের গল্পের মতো এতো সত্যি প্রেম আর একটাও হতো না। আমাদের ভালোবাসা স্বয়ং বিধাতার হাতে গড়া। এতে এক বিন্দু মিথ্যা নেই। ”
তারা উভয়েই ভাবে, কেমন করে তাদের সুখ দুঃখ, চাওয়া পাওয়া মিলে যায়!! কিভাবে তন্দ্রার জীবনের স্মরণীয় দিনগুলোতে আকাশের আবির্ভাব হয়? তারা দুজনের কাউই মিলাতে পারে না এসব। দুজনের ভাবনার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েও তাদের সম্পর্কের মূলে পৌঁছাতে পারেনা। স্বয়ং বিধাতাই যেন তাদের দুজনকে এক করে দিয়েছেন।
আজ দুজনের জীবনের এক বিশেষ দিন। কয়েকবছর আগে তাদের দুজনের ভালোবাসার পথের শুরু হয়েছিল এখান থেকেই। যে পথের নেই শেষ। বৈরী সময়ে উত্তরা থেকে তন্দ্রা আসতে পারবে না বলেই আকাশ একা এসেছে উদযাপনে। একদিন আবার ঠিকই মিলিত হবে দুজনে এখানে একদিন, যখন খুশী তখন। সেই আলোকিত দিনের অপেক্ষায় দুজনে-
*ছবি : নিজের তোলা
৩৩টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
ভালোমতো পড়ে নিই। আগে প্রথম হওয়ার খবরটা জানিয়ে রাখলাম 🙂
জিসান শা ইকরাম
সব কিছুতে প্রথম হওয়ার আনন্দই আলাদা।
ফয়জুল মহী
ভালোবাসায় জেগে উঠবে একদিন সারা পৃথিবী
জিসান শা ইকরাম
আলো আসুক আবার আমাদের সুন্দর ভুবনে।
নাজমুল আহসান
আহা! কতো স্মৃতিময় এই জায়গাটা। এই ছবিটা যেখান থেকে তোলা, ঠিক সেখানটায় কতো শত বিকেল কেটেছে আমার। নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
সবার ভালোবাসায় আলোকিত দিন আসুক।
জিসান শা ইকরাম
আমি মাত্র একদিন গিয়েছি এখানে। সবকিছু মিলিয়ে ভিউটা এত সুন্দর আসে যা বলার মত নয়। বেশ কিছু ছবিও তুলেছি এখানের।
আলো আসুক ফিরে আমাদের সবার মাঝে।
সঞ্জয় মালাকার
ভালোবাসায় জেগে উঠুক প্রতিদিন, প্রতিমুহুর্থ।
এখানে একদিন, যখন খুশী তখন। সেই আলোকিত দিনের অপেক্ষায় দুজন –
শুভ কামনা
জিসান শা ইকরাম
অন্ধকার চলে গিয়ে আলো আসুক সবার মাঝে।
শুভ কামনা দাদা।
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
তন্দ্রা আর আকাশের মতো আমরা থাকলাম আলোকিত দিনের অপেক্ষায়……..শুভ সকাল
জিসান শা ইকরাম
আলোকিত দিনের অপেক্ষায় থাকি আমরা।
শুভ কামনা কামাল ভাই।
প্রদীপ চক্রবর্তী
একদিন আবার ঠিকই মিলিত হবে দুজনে এখানে একদিন, যখন খুশী তখন। সেই আলোকিত দিনের অপেক্ষায় দুজনে-
পূর্ণ প্রেমে মধুময় স্মৃতিতে ভরে উঠুক পুনরায় সে ভালোবাসা। দেখা হউক আবার দুজনের প্রশান্তির সবুজাভদ্বীপে।
.
পুরাই নস্টালজিক দাদা।
অনেক ভালো লাগলো।
জিসান শা ইকরাম
অন্ধকার কেটে গিয়ে আলো আসুক আবার এই সুন্দর ভুবনে।
শুভকামনা প্রদীপ।
ছাইরাছ হেলাল
আকাশ নামটি চলন সই হলেও এই কড়কড়া প্রেমে তন্দ্রা নামটি বড়ই সেকেলে।
অবশ্য পেম(প্রেম) বলে কথা! নামে কি আসে-যায়!!
জিসান শা ইকরাম
নামে কিছুই আসে না, তন্দ্রা না হয়ে জুলেখা হলেও বা কি?
আঁধার কেটে যাক।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব সুন্দর হয়েছে। ভালোবাসলে বুঝি এমন করেই একে অন্যের অনেককিছুই টের পাওয়া যায়। এই ছবির জায়গার সাথে আমার অনেক স্মৃতি, আড্ডা আছে। এই মহামারী শেষে দুজনের আবার দেখা হবে, ভালোবাসা বিনিময় হবে এই আশায় রইলাম। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো দাদা ভাই
জিসান শা ইকরাম
আমি একবারই মাত্র গিয়েছিলাম এক বন্ধুর সাথে।
আঁধার কেটে যাক আমাদের সবার জীবন থেকে।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
একেই বলে সত্যিকারের ভালোবাসা। আকাশ তন্দ্রার অপেক্ষা অবসান ঘটবে শীঘ্রই। আবার তারা একসাথে সেখানে বসবে যেখান থেকে শুরু করেছিল অন্তহীন পথে চলা। যে পথ চলার শেষ হয় না কখনো
জিসান শা ইকরাম
বৈরী সময় কেটে গিয়ে আলোকিত সময় আসবে সবার মাঝে।
শুভ কামনা।
সুপায়ন বড়ুয়া
করোনাকাল যাক কেটে
তারপর না হয় মিলন হবে
আবার দুজনে ততক্ষন পর্যন্ত
থাকি প্রতীক্ষায়।
দুজনের শুভ কামনায়।
ভাল লাগলো। ভাল থাকবেন।
জিসান শা ইকরাম
করোনা কাল কেটে যাক, আলো ফিরে আসুক এই ভুবনে।
শুভ কামনা দাদা।
হালিম নজরুল
চমৎকার। সবচেয়ে বেশি ভাল লাগল গল্পের চরিত্রগুলোর নাম নির্বাচন।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ ভাই।
সব আঁধার কেটে যাক, আলো আসুক।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
লেকের পারে এসে বসলেই তন্দ্রার কথা ভেসে আসে কানে স্পস্ট ভাবে ” আমাদের ভালোবাসার গল্প গুলো কোথাও লেখা থাকবে না। নয়তো আমাদের প্রেমের গল্পের মতো এতো সত্যি প্রেম আর একটাও হতো না। আমাদের ভালোবাসা স্বয়ং বিধাতার হাতে গড়া। এতে এক বিন্দু মিথ্যা নেই। ”
তন্দ্রা লেগে রইলো চোখে।
চমৎকার লিখেছেন ভাইজান।
জিসান শা ইকরাম
বৈরী সময় চলছে সবার জীবনে,
আলো ফিরে আসুক আবার।
শুভ কামনা ভাইজান।
ইঞ্জা
সত্যি তাই ভাইজান, আলো ফিরে আসুক আবার।
শুভকামনা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
আলো আসবেই ভাইজান।
ইঞ্জা
ইনশা আল্লাহ
তৌহিদ
লেকের এই জায়গাটিতে অনেক স্মৃতি আছে আমার। আপনার লেখা পড়ছি আর সেসব মনে পড়ছে।
অনেকদিন পরে আপনার লেখা পড়লাম ভাই। ভালো থাকুন।
জিসান শা ইকরাম
তাই নাকি? অনেক সুন্দর এই স্থানটি।
ভাবছি যে সমস্ত স্থানে গিয়েছি, তার কিছু ছবি দিয়ে দিয়ে এমন গল্প লিখবো।
শুভ কামনা ভাই।
তৌহিদ
আমার ১২ বছরের স্মৃতি যে!! সে সময় ধানমন্ডিতেই থাকতাম আমি।
জিসান শা ইকরাম
কিছু স্মৃতি লিখতে তো পারেন আমাদের জন্য 🙂
আরজু মুক্তা
অন্ধকার চলে গিয়ে আলো আসুক।
ভালো লাগলো