
স্বপ্নের তীর্থ ভূমি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম প্রথম সুযোগে। মা একমাত্র মেয়ে ভীতু প্রকৃতির আমাকে অভয় দিয়ে বলেছিল মনে সাহস রাখবি। ভয় পেলে হেরে যাবি। এই রক্ষাকবচ তোকে রক্ষা করবে।
ক্লাস শেষে টি এস এসি তে আড্ডা দেয়া একটা রুটিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেদিন কাজিন এসেই বলে কেটে পর।রুপ পাল্টানো ছাত্র অধিকার পরিষদ কর্মী যেটা বলে সেটাই ঘটে। শুনার পর থেকে আমার স্নায়ুচাপ গেল বেড়ে।
যেই বলা সেই কাজ উত্তরা গামী ২ তলা শাটল বাসে চড়ে বসলাম বই পত্র নিয়ে সামনে পরীক্ষা নিকট আত্নীয়ের বাসায় যাব শ্যাওরা। পথ যেন হয় না শেষ। ধুলায় ধুসর ঢাকা উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। রাজপথের বুক ছিড়ে বিশাল বিশাল যন্ত্র অবিরাম লোহা লক্ষর দিয়ে মেট্রো রেল বানাচ্ছে। ভাবতেই অবাক লাগছে ঢাকা শহরটা এখন ও কিভাবে সচল আছে। আবার আনন্দে বুক ভরে যায় যখন ভাবি ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করবে ঢাকার এপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে মাত্র ২০ মিনিটে। ভাবতে ভাবতে ৪৫ মিনিট চলে গেল বিজয় সরণী আসতে গাড়ী আর চলেই না। দুতলা বাসে সুবিধা ২ তলায় বসলেই সব দেখা যায়। বাংলাদেশে কত সুন্দর সুন্দর কত মডেলের গাড়ী যে আছে। সব গাড়ীগুলোই যেতে হয় এক সিগনাল পাড় হতেই ২০ মিনিটলেগে যায়।
মহাখালী ফ্লাইওভারে উঠেই দেখি সামনে শুধু গাড়ী আর গাড়ী চলে শম্ভুক গতিতে। ভাবলাম ইথরো আর জে এফ কে এয়ারপোর্টে পড়ে বিমান জট আমাদের এখানে রাস্তায় পড়ে গাড়ী জট। এ সমস্যার সমাধান কিভাবে মিলবে তা শুধু খোদাই জানে।ভাবতেই ভাবতেই চোখে চলে আসলো ঘুম।
স্বপ্নের ঘোরেই চেচামেছি মামা মামা করেই ডাকে বাস কন্ডাক্টার। চোখ খুলে দেখি মামা চোখে পানি দেন শ্যাওড়া আসছে। রাস্তা অন্ধকার পাড় করে দিই। ধন্যবাদ দিয়েই নেমে গেলাম। গাঢ় অন্ধকারে ভীতু আমি শিহরিয়ে উঠলাম। “আল্লাহ,আল্লাহ” করেওভার ব্রীজ পার হওয়ার সময় মনে হচ্ছে কেউ যেন অনুসরণ করছে। ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে , পা আর চলে না।শ্বাস কষ্টের রোগী দম বন্ধ হয়ে আসছে।
মাকে শরণ করলাম মা বলতেন, “বিপদে ভয় পেতে নেই ভয় পেলে হেরে যাবি ।“ মার রক্ষা কবচ দিয়ে মক্তবে যেভাবে রক্ষা পেলাম সেভাবে রক্ষা কবচ টা হাতে নিতেই আমার ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলছে জানোয়ার
পিছন ফিরে তাকাতেই পোকলা দাতে বিশ্রী এক হাসি। মাথায় গেল রক্ত চড়ে। কষে দিলাম এক ঘা নাকে মুখে মাথা ঘুড়ে পড়েগেল ফুটপাতে। বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার দিতেই লোকজন ছুটে এসে গণপিটুনি শুরু হল। আমি ও মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম যখন জ্ঞান ফিরে তখন হাসপাতালের বেডে। সবাই ফুল আর মাক্রোফোন নিয়ে হাজির।
খবরের কাগজের শিরোনাম ( অবন্তীর সাহসিকতায় হিরোঞ্চি হিরো কুপোকাত )। আমি মনে মনে বললাম মা, তোমার রক্ষা কবচ আমাকে দ্বিতীয় বারের মতো রক্ষা করলো।
(গল্পের চরিত্র গুলো কাল্পনিক )
(ছবি নেট থেকে)
২৭টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
লেখাটা জানি কিরকম হয়ে গেল ?
জিসান শা ইকরাম
ঠিক হয়ে গিয়েছে 🙂
সুপায়ন বড়ুয়া
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইজান।
আপনাকে বিরক্ত করা আরকি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দারুন লাগলো লেখাটা। এমন সাহস নিয়েই এই শহরে বেঁচে থাকতে হয় । প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে থাকতে হয়। ভালো থাকবেন দাদা। শুভ কামনা রইলো
সুপায়ন বড়ুয়া
ঠিক তাই দিদি
সাহসের সাথে মোকাবেলা করলে জিতা যায়
আতঙ্কিত হলে বিপদ চেপে বসবে।
আপনি ও ভাল থাকবেন।শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
গল্পটা অসাধারন লাগছে,অবন্তীর শাহসীকতা দারুন হয়েছে।
এই শহরে বেঁচে থাকতে হলে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বাঁচত হয়,নিজেকে কঠিন ভাবে তৈরি করতে হয়।
ভয়কে জয় করে বাঁচার নামই জীবন।
ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
আপনাদের মতো চেষ্টা করলাম একটি বিয়োগান্তক ঘটনাকে পজেটিভ ভাবে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
মায়ের রক্ষা কবচ আবার রক্ষা করলো মেয়ের প্রাণ।
এমন দুঃসাহসিক কাজের জন্য অবশ্যই বাহ্বা প্রাপ্য।
চমৎকার লিখেছেন দাদা
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ আপু সাথে থাকার জন্য।
মনোবল থাকলে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়
মায়ের রক্ষা কবচে এটাই শিক্ষা।
মনোবল অটুট রেখে করোনা যুদ্ধে ও জিতব।
শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
এতোদিন দেখেছি কবিতাতে,
এবার গল্পেতেও পাকা-হাত।
সাথে আছি ভাই, সাহস নিয়েই।
সুপায়ন বড়ুয়া
বাসায় বসে বসে আর কি করা
চেষ্টা করে যাই। আপুদের দেখে
সাহস খুঁজে পাই।
ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
যে রান্ধে সে চুলও বান্ধে 😀
সুপায়ন বড়ুয়া
হা হা হা। চেষ্টা করলাম ঘটনাটা পজেটিভ মোর দিতে।
ধন্যবাদ।
কামাল উদ্দিন
হিরোঞ্চি হিরো কুপোকাত, দূর্দান্ত লিখেছেন। মনে পড়ে গেল কেক দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর কথা। ঐ ধ্ষক ব্যাটাই হিরোঞ্চি ছিল, কষে একটা তখন থাপ্পর লাগাতে পারলেই হতো। গল্পের ভুবনে স্বাগতম দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
আপনার স্মৃতিশক্তির প্রশংষা করতেই হয়।
ঠিক ধরেছেন। আতঙ্কিত না হয়ে কষে একটা চড় লাগাতে পারলেই কেল্লা ফতে। ঘটনাটা অন্য রকম হতো। তাই আজ এই দুর্যোগের দিনে মনোবল হারানো যাবে না। আতঙ্কিত হলেই রোগে শোগে গ্রাস করবে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আপনার জন্যও শুভ কামনা সব সময়
জিসান শা ইকরাম
আমিও সুযোগ পেলে দোতলা বাসে চড়ি মাঝে মাঝে, ভালো লাগে খুব দোতলায় বসে সব দেখতে।
মায়ের দেয়া রক্ষা কবজ এ হিরোঞ্চি কুপোকাত,
ভালোই লাগলো এমন গল্প।
শুভ কামনা দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ ভাইজান ভালো লাগার জন্য
মনোবল হারালে বিপদ। শক্ত থাকলে
অনেক বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
ফয়জুল মহী
ভালো লাগলো। আল্লাহ আমাদের সুস্থ রাখো।
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
ভাল থাকবেন। সাবধানে থাকবেন।
শুভ কামনা।
হালিম নজরুল
সাহস ও কৌতুহল সত্যিই প্রয়োজনীয়
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ ভাইজান সাথে থাকার জন্য।
ভাল থাকবেন। সাবধানে থাকবেন।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
কিছু সময় সাহস দেখাতে হয় কিন্তু। ভালো লাগলো পড়ে দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
সেটাই ভাইজান। সেদিন ঢাবি মেয়েটি আতঙ্কিত নাহয়ে একটি ঘা লাগাতে পারলে ধর্ষিত হতে হতোনা। যেটা ভিপি নুর হিরোঞ্চি হিরোকে ধর্ষক হিসেবে মেনে নিতে পারছে না।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
মাত্র কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নিয়ে লেখা গল্পটা আমার ভালো লাগেনি। গল্প লেখা ভালো হয়েছে, কিন্তু ঘটনাটি এত জীবন্ত আর বাস্তব যে, পড়ার সময় হুবুহু চোখের সামনে ভাসছিলো। ঐ মেয়েটি সাহসী ছিলো আর অসভ্য শয়তানটাও ধরা পড়েছে। কিন্তু যার সাথে ঘটেছে বা আমরা দেশবাসী যেভাবে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছি তাতে এই গল্পটি সেদিনের কষ্টদায়ক স্মৃতি বাড়িয়ে দিলো দাদা। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি কোনো মেয়ের জীবনে যেন এমন ভীতিকর পরিস্থিতি আর না আসে। মেয়েরা মেয়েদের সম্মান নিয়ে যেন স্বাধীনভাবে চলতে পারে।
আমরা আমাদের দেশকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন দেখতে চাই।
আপনার গল্প লেখার হাত খুবই ভালো। এরপর থেকে প্রতিদিন একটা করে লেখা দিবেন। কবিতা, গল্প, অণুগল্প, সমসাময়ীক সব ধরনের লেখায় আপনি আপনার দক্ষতার পরিচয় দিলেন। এই ধারা অব্যাহত থাকুক সব সময়।
অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো দাদা 🌹🌹
সুপায়ন বড়ুয়া
আপু ঠিক ধরেছেন , ঘটনাটা আমি ও মেনে নিতে পারি নাই বলে এ লেখা।
আতঙ্কিত হলে মানুষ বিচার বুদ্ধি শক্তি হারায়।
সেদিন অবন্তী আতঙ্কিত না হয়ে এক ঘা দিয়ে আওয়াজ করতে পারলেই ঘটনাটা অন্য ভাবে ঘটত।
এজন্য এখনো আতঙ্কিত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারানো যাবে না।
সাবধানে থাকতে হবে। ভাল থাকতে হবে।
শুভ কামনা।
সুপায়ন বড়ুয়া
আপু ঠিক ধরেছেন , ঘটনাটা আমি ও মেনে নিতে পারি নাই বলে এ লেখা।
আতঙ্কিত হলে মানুষ বিচার বুদ্ধি শক্তি হারায়।
সেদিন অবন্তী আতঙ্কিত না হয়ে এক ঘা দিয়ে আওয়াজ করতে পারলেই ঘটনাটা অন্য ভাবে ঘটত।
এজন্য এখনো আতঙ্কিত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারানো যাবে না।
সাবধানে থাকতে হবে। ভাল থাকতে হবে।
শুভ কামনা।