
ভেবেছিলাম করোনার ছোবল আমাদেরকে এবার মানুষ বানাবে, মানবিক হতে শিখাবে, অহংকারের সমূলে উৎপাটন হবে, লোভ-লালসা নির্মূল হবে, মৃত্যু-আতঙ্ক পাপ-পূন্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখবে।
অথচ দেখছি ঠিক তার উল্টোটা । আমরা এতোটা অমানবিক,অবিবেচক হলাম কবে,কিভাবে? যেখানে সবার এখন সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার, পরিমিত হবার কথা সেখানে সবকিছুতেই চাকচিক্যের বাহাদুরি, অসংযমের বাড়াবাড়ি দেখছি। সারা বিশ্ব যেখানে খাবি খাচ্ছে, উন্নত দেশগুলো যেখানে থমকে গেছে সেখানে আমরা উৎসবের আমেজে উন্মাতাল।
আমাকে রেগুলার বাজার করতে হয় বা করি নিরুপায় হয়ে। রেগুলার বলতে প্রতিদিন নয় , তিনচার দিন পরপর। করোনার কারনেও সেভাবেই বাজারে যাচ্ছি বাধ্য হয়ে। উন্নত দেশে সরকার ঘরে এসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দিয়ে যায় কিন্তু আমাদের দেশে তো সেটা সম্ভব নয়। যার যার দরকারে তাকে ঘর থেকে বের হতেই হয়।
তো বাজারে যাওয়ার দরুন মানুষের বড়লোকি ঠাঁটবাট গুলো খুব চোখে পড়ে। কিসের লকডাউন, কিসের মরণঘাতী করোনা! আমরা যেখানে থাকি সেখানে সবকিছুই হাতের নাগালে পাওয়া যায়, দু-তিন মিনিটের দূরত্বের ব্যবধান । তারপরও যতক্ষণ দোকান-পাট খোলা থাকে মানুষের গাদাগাদি চোখে পড়ে। এখানে সবকিছু দুপুর দুইটার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। সামনে আসছে রোজা , করোনার এই ক্রান্তিকালে ও কারো বাড়তি বাজার বন্ধ নেই। ফলাফল সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী আর কৃত্রিম সংকট বাজার গুলোতে। কাঁচাবাজার বাদে সবকিছুতেই সংকট । করোনার সাথে যেমন কেউ বাহাদুরি করতে পারছেনা, তেমনি কাঁচাবাজারের সাথেও পারেনা ঘরে বেশীদিন রাখা যায় না বলে।
দেশে লকডাউন নামকাওয়াস্তে । কিসের কি ! যেন ঈদের ছুটিতে বাজার করছে । শুধু মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লাভস এর শোডাউন, দোকানগুলোতে ভিতরে লোকজন যেতে পারছেনা এতটুকুই ব্যতিক্রম। এভাবে আমরা কিভাবে করোনা থেকে মুক্তি পাবো?
লকডাউন করাতে প্রাইভেট কোম্পানির বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। ঘরভাড়া, বাজার সদাই নিয়ে শুধু মধ্যবিত্ত বেসরকারি কর্মচারীরা বেশী ভুক্তভোগী। গরিববা ত্রাণ নিয়ে, এদিক সেদিক থেকে চেয়ে চিন্তে দিন পার করতে পারছে কিন্তু মধ্যবিত্ত দের কথা কেউই ভাবছে না। সরকারের উচিত এদিকটাও ভেবে দেখার। মধ্যবিত্তরা তো কারো কাছে হাত পাততে ও পারছে না এই মহামারীতে। যেভাবে লকডাউনের নামে শোডাউন হচ্ছে তাতে কবে এই বিভীষিকাময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবো জানিনা। কোথায় যাবে মধ্যবিত্তরা? কিভাবে পাড়ি দিবে দূর্যোগের এই অনিশ্চিত , সীমাহীন পথকে?
২৬টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যে দেখছি সেটাই শেষ নয়।
অভাব ছুটে আসছে, ধেয়ে আসছে, জানি না আল্লাহ আমাদের কী ভাবে রক্ষা করবে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ঠিক ভাইয়া। ভয়াবহ অবস্থা ঘনিয়ে আসছে। ধন্যবাদ আপনাকে। ঈশ্বর সহায় হোন সবার
জিসান শা ইকরাম
আমাদের দেশের বেশ কিছু মানুষ এই করোনার ক্রান্তিকাল বুঝতেছেই না। তারা সামাজিক দুরত্ব মানছেনা। বিনা কারনেও অনেকে বাসার বাইরে বেড় হচ্ছে। আর একারনেই দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বেশ কিছু মানুষ আছে যারা এই ছুটিকালিন সময়কে উৎসব হিসেবে ধরে নিয়ে সেই রকম বাজার করছে। যে কারনে মুল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রব্যমুল্যের।
উচ্চবিত্ত এবং গরীবদের সমস্যা নেই। গরীবরা বিভিন্ন সাহায্য পেয়ে বেঁচে থাকবে। সমস্যা হবে, হচ্ছে মধ্যবিত্তের। সামনে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে মধ্যবিত্তদের।
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অনেক ভালো একটি পোস্ট দিলে ছোটদি।
শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা ভাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে গেছে। প্রথম কয়েক দিন ভালোই ছিল কিন্তু সপ্তাহ খানেক এর বেশী হয়েছে এমন গাছাড়া ভাব দেখছি। এখন রোজাকে উছিলা বানিয়ে জমজমাট আসর হচ্ছে বাজারকে ঘিরে। শুভ কামনা রইলো
প্রদীপ চক্রবর্তী
আমরা কঠিন হতে কঠিন সময় পার করছি।
না জানি আমাদের সম্মুখপথ কেমন হতে চলছে।
এখনো অনেক মানুষ এ মহামারি করোনাকে উপেক্ষা করে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মধ্যবিত্তদের জীবন ঝলসানো ময় রুটির মতো আজ।
উচ্চবিত্ত, নিম্নবিত্তরা কিছুটা পার পেয়ে যাবে কিন্তু মধ্যবিত্তরা কঠিন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে চলছে।
সমসাময়িক নিয়ে ভালো লেখনী।
শুভকামনা দিদি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা। একদম ঠিক বলেছেন। মধ্যবিত্তদের জীবন ঝলসানো রুটির মতো। ভালো বলেছেন। শুভ কামনা রইলো
সুরাইয়া পারভীন
ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর বিপর্যয় অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।
জানি না কি হবে/হতে চলেছে? করোনাতে কয়জন মরবে জানি না তবে না খেতে পেয়ে অসংখ্য মানুষ মরবে এটা নিশ্চিত।
এতো কিছুর পরেও মানুষের বিন্দুমাত্র ভয়/সংশয়/লজ্জা কাজ করছে না। যেনো ঝড়ে কলা পড়েছে লোকের খাওয়ার মজা হয়েছে
একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ই ভরসা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব ভালো বললেন, ‘ঝড়ে পড়া কলা কুড়াচ্ছে সবাই’। ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
সাবিনা ইয়াসমিন
একই অবস্থা দেশের সব জায়গায়। মানুষজন কারণে / অকারণে বাইরে যাচ্ছেই। তাদের বাহানার শেষ নেই। একটা বড় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আমাদের দেশ, এটাও বুঝতে চাইছেনা। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ শত ছাড়িয়েছে। প্রতি ৬ মিনিটে একজন করে নতুন রোগী সনাক্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকতো যদি মানুষেরা একটু ধৈর্য নিয়ে ঘরে অবস্থান করতো।
জানিনা অদূর ভবিষ্যতে আমাদের কি দেখতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সুবুদ্ধি দিন।
শুভ কামনা 🌹🌹
সুপর্ণা ফাল্গুনী
একদম ঠিক কথা। কারণে অকারণে বের হচ্ছে। আজ কয়েকজনকে দেখলাম চিপস আর বিস্কুট কেনার জন্য বের হয়েছে। ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
সুপায়ন বড়ুয়া
মধ্যবিত্তরা সবসময় ভিকটিম হয়।
করোনা নামক আতঙ্কটা গ্রাস করছে তাও মধ্যবিত্তদের
যারা বেঁচে থেকে প্রতিদিন মরে তাদের আবার কিষের মৃত্যুভয়। তারা উৎসবের মেজাজে ত্রান সংগ্রহ করছে।
উচ্ছবিত্তদের পাইক পেয়ারা আছে বাজার করার জন্য
রমজান সামনে তাই সংগ্রহের পরিমান ও বাড়িয়েছে।
তাই আজ ভয়কে জয় করে এগুতে হবে।
সরকার কি পারবে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে ?
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
জানিনা সরকার কিছু করবে কিনা। এসব আদিখ্যেতা এই সময়ে ভালো লাগছেনা রোজাকে কেন্দ্র করে। ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
ফয়জুল মহী
পুরা দেশকে ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
তাতে লাভ কি হবে! কোথায় মানছে প্রোপার ওয়েতে এই লকডাউন! ধন্যবাদ ভাইয়া শুভ কামনা রইলো
নিতাই বাবু
ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে, যাঁরা লাইন ধরে বা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে পারছে না, প্রশাসন কর্তৃক তাঁদের ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিবেন। এটা আমি আজ বিডিনিউজ২৪-এ দেখলাম। এরমধ্যে ব্লগে প্রবেশ করে আপনার সুলেখিত পোস্টে নজর পড়লো। পুরো লেখা পড়লাম। সত্যি যেকোনো মহামারি বা দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি নিরুপায় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। তাঁরা না পারে চাইতে, না পারে খাইতে। তবে দেখা যাক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা কতটুকু কার্যকর করতে পারে স্থানীয় প্রশাসন।
ধন্যবাদ-সহ প্রার্থনা করছি এই সময়ে সপরিবারে ভালো থাকার।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাকে। জানিনা কতটুকু কার্যকর করতে পারবে সরকার। তবুও আশায় বাণী শোনানোর ্য্্য্য্্্য্্য্য্্য্্য্্্য্য্্্য্্য্য্্য্্য্য্্্য্্য্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময় দাদা। শুভ কামনা রইলো
সঞ্জয় মালাকার
আমরা কঠিন হতে কঠিন সময় পার করছি।
মহান সৃষ্টিকর্তাই আমাদের সহায়।
ভালো থাকবেন দিদি, শুভ কামনা রইলো 🌹🌹
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো
তৌহিদ
মানুষের অসহায়ত্বের কাছে সকল সিস্টেম ব্রেকডাউন হয়েছে। কেউ কিছু মানছেনা। আর বাজারে একেকজনের কেনাকাটা দেখলে মনে হয় উৎসব করতে এসেছে। পিকনিক করছে সবাই। কেউ খেতে পারছে আর কেউ না খেয়ে আছে এটা মেনে নিতে কষ্ট হয় আমার।
সমসাময়িক সুন্দর একটি বিষয়ে লিখেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
নীরা সাদীয়া
দেশে চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে যা বুঝতে পারছি।
তখন পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ঠিক বলেছেন আপু । অবস্থা এমনটির দিকেই যাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকুন
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ আপু হবে সরি।
হালিম নজরুল
সম্ভবত আমাদের সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সম্ভবত নয় ভাইয়া , এটাই হবে। ভাবতেই গা শিউরে ওঠে। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা রইলো