
তমালের ম্যাসেজ পেলো । তন্বীর সাথে কথা বলতে চায়। তন্বী কথা বলার জন্য একটু সময় চাইলো। তন্বীর তখন হৃদয়ে কালবৈশাখী ঝড় উঠেছে। চাকরি করতে এসে এ কোন বিপদ সংকেত পেলো! এভাবে অতীত এর মুখোমুখি হতে হবে , ওর হৃদয়কে তোলপাড় করবে কখনো স্বপ্নেও আসেনি এমন ভাবনা। আকাশ ও তন্বী দু’জনেই এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। কেউ কারো সাথে কথা বলতে চাচ্ছেনা আবার অফিসিয়াল কথাবার্তা বলতেই হবে। উঠতি কলেজ পড়ুয়া, প্রিয়ভাষিণী তন্বীকে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায় আকাশের। আকাশ তখন অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ছে। তন্বীদের কলেজে বিশেষ একটা কাজে গিয়ে আনাড়ি, অসহায় তন্বীকে দেখতে পেল, সাহায্য করতে গিয়ে তন্বীকে ভালো লেগে গেল। তন্বীকে পাবার জন্য মনটা কেমন যেন চঞ্চল হয়ে উঠল। তারপর তন্বীর ঠিকানায় চিঠি লেখা, কলেজের সামনে অপেক্ষা করা , তন্বীর সাথে প্রেম করা সবকিছু ঠিকঠাক মতই হচ্ছিলো।
আকাশের নাটকের গ্রুপের একটা মেয়ে ইদানিং খুব কাছাকাছি ঘেঁষার চেষ্টা করছে। আকাশ তন্বীর ছেলেমানুষী, সদ্য কৈশোর পেরোনো তন্বীকে ভালোবেসেছিল কিন্তু বিয়ে করার জন্য সে নাটকের ঐ মেয়েটাকেই ওর যোগ্য মনে করতে শুরু করলো। ঐ মেয়ের মধ্যে ম্যাচুরিটি দেখতে পেলো যার সাথে বিয়ে করে সংসার করা যায়। কিন্তু তন্বী এখনো বাচ্চা-বিয়ে , সংসার এসব তন্বী অতোটা বুঝেনা। তন্বীর মধ্যে সরলতা, ভালোলাগা সবই আছে কিন্তু বিয়ের জন্য একমাত্র ঐ মেয়েটিই পরিপূর্ণ, দেখতেও ভালো, বড়লোক বাপের একমাত্র মেয়ে। আকাশের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য এমন একজনকেই দরকার। আস্তে আস্তে তন্বীকে সে দূরে সরিয়ে দিলো। একদিন তন্বীকে ওর পথ থেকে সরে যেতে বললো। তন্বী সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলো, অপরাধী আকাশ ওর চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারেনি, শুধু বলেছিল , ‘তুমি আমার চেয়েও ভালো কাউকে পাবে, আমার পক্ষে তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়, আমি স্বাধীন থাকতে চাই ।’
তন্বী চলে আসার পর সেদিনই ঐ মেয়েকে প্রপোজ করলো । ঐ মেয়ে তো খুশিতে টগবগ করে ফুটতে লাগলো যেমন করে জ্বলন্ত উনুনে কিছু দিলে ফুটতে শুরু করে। আকাশ ওকেই বিয়ে করলো , সংসার শুরু করলো। সবই পেলো কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি সন্তানের মুখ দেখতে পেলোনা। ওরা দুজনেই খুব ব্যস্ত থাকে , কেউ কারো সাথে তেমন সময় দিতে পারেনা। দু’জনেই একটি সন্তানের জন্য আক্ষেপ করে। আকাশ সব ভুলে থাকে যতক্ষণ সে কাজের মধ্যে ডুবে থাকে তাই সে কাজ না থাকলেও অফিস ছুটির পরও অফিসে সময় কাটায়। কিন্তু আজ সে তন্বীর মুখোমুখি পড়ে গিয়ে কিছুতেই কাজে মন বসাতে পারছিলো না । তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে বাসায় চলে গেলো ।
অফিসের সবাই আকাশের চলে যাওয়াতে বিস্মিত হলো। বাসায় গিয়ে বৌয়ের মুখোমুখি হলো না, গেস্ট রুমে চলে গেল। আকাশ নিজেকে অপরাধী ভাবতে লাগলো। কেন সে তন্বীকে ফিরিয়ে দিলো, তন্বীর তো কোনো অপরাধ ছিলো না? না পারছে তন্বীর সামনে যেতে , না পারছে বৌয়ের সাথে মুখোমুখি থাকতে। বিষয়টি নজরে গেলো দীনার। এতো দিনের সংসার, একসাথে পথ চলা-সে আকাশকে ভালো করেই বুঝতে পারে। নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে তা না হলে এতো তাড়াতাড়ি কখনো সে বাসায় আসেনি তার উপর ওর সাথে কথা না বলেই মাথা নিচু করে গেস্ট রুমে চলে গেলো। দীনাও চুপচাপ বেডরুমে শুয়ে ভাবতে লাগলো, সেকি আকাশের সাথে কথা বলবে- নাকি সমস্যাটা আকাশ নিজেই বলবে তার জন্য অপেক্ষা করবে?
২৩টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
আকাশ কি তাহলে পরকিয়ায় লিপ্ত হবে ?
চালিয়ে যান। শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দেখি কি হয়? ধন্যবাদ দাদা। শুভ কামনা
আলমগীর সরকার লিটন
বরাবরি চমৎকার লাগল গল্পটি কবি দিদি
অনেক শুভেচ্ছা রইল———————
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা
ফয়জুল মহী
সাবলীল সুন্দর উপস্থাপন ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো
প্রদীপ চক্রবর্তী
আমি কয়েক পর্ব ফাকি দিয়েছি দিদি।
সমাপ্ত কালে প্রথম থেকে পড়ে তারপর পাঠ প্রতিক্রিয়া জানাবো।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আচ্ছা দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার লেখা।
শুভ কামনা রইল আপু
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
নৃ মাসুদ রানা
সেকি আকাশের সাথে কথা বলবে?
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দেখা যাক কি হয়!! ধন্যবাদ ভাইয়া শুভ কামনা রইলো
ছাইরাছ হেলাল
দেখি আকাশ কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেয়,
বল এবার আকাশের পায়ে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হুম দেখা যাক বল কার পায়ে থাকে। ধন্যবাদ ভাইয়া
হালিম নজরুল
গল্প এখন আকাশের উপর নির্ভরশীল
সুপর্ণা ফাল্গুনী
🙄🙄🙄🙄। সাসপেন্স । ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকুন শুভ কামনা রইলো
রেহানা বীথি
কযেকটা পর্ব মিস করেছিলাম, আজ সবগুলো পড়লাম। ভালো এগোচ্ছে, দেখা যাক পরবর্তীতে গল্প কোনদিকে মোড় নেয়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। পাশে থাকুন সবসময়। ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
এখন দেখছি গল্পে অন্য রকম নাটকিয়তায় চলে গেছে। মনে হচ্ছে শেষাংশে ভালো একটা মিলনই হবে। নাকি অন্য কিছু!
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অপেক্ষা করতে হবে আরো। ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা
কামাল উদ্দিন
থাকলাম অপেক্ষায়
জিসান শা ইকরাম
চরিত্র আরো একটি বাড়লো – দীনা।
বুঝতে পারছিনা, গল্প কোন দিকে যাচ্ছে।
অপেক্ষা পরের পর্বের জন্য।
শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হুম দাদা ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য