৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ ইং….মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল প্রথম রায় দেয় কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে। “যাবজ্জীবন কারাদন্ড”!!! অবাক হয়ে যায় দেশবাসী। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম ” ফাঁসি”র রায় শোনার! বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সবাই। প্রথম মুভমেন্ট করি আমরা ব্লগাররা। এই রায় মানি না! পুনর্বিচার করতে হবে! কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই!!!
অইদিন রাতে আমি এই স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম(ছবি-১)
। তখন আমি এবং আমরা মূলত ফেসবুকার ছিলাম না। ছিলাম ব্লগার। তাই লাইক কমেন্টও তেমন ছিল না। মূলত ১৩ তেই ফেসবুক জমে ওঠে যখন ব্লগাররা ফেসবুকে নিয়মিত হতে শুরু করে। যাই হোক, একটা ইতিহাসের অংশ আমরা! গণজাগরণ ঘটেছিল। যদিও কতিপয় স্বার্থান্বেষীর কারণে সেই জাগরণ পরবর্তীতে স্তিমিত হয়ে যায়। তাদের অদূরদর্শী কিছু কার্যকলাপের কারণে, বিএনপি জামাতের প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্রে, “আমার দেশ” পত্রিকার কূটচালে এবং কৌশলে হেফাজতকে এই আন্দোলনের প্রতিপক্ষ বানিয়ে এই তুমুল গণজাগরণকে বিতর্কিত করতে সফল হয় স্বাধীনতার বিরুদ্ধ অপশক্তি!!!
তবে আমাদের আন্দোলন বৃথা জায়নি। কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় নিয়েই আমরা ঘরে ফিরেছি। তারই ধারাবাহিকতায় পরের রায়গুলোও আমরা ঠিকঠাক পেয়েছি। যদিও একটা আক্ষেপ রয়ে গেছে যে, রাজাকার শিরোমনি, আইকনিক রাজাকার গোলাম আজমের ফাঁসির রায় আমরা পাইনি। শালা জেলের ভিত্রেই মইরা গেছে!!!
এই আন্দোলনের শুরুতে যখন শাহবাগে গণজমায়েত হয় তখন পুরো শাহবাগ নানা রকম স্লোগানে প্রকম্পিত। কিন্তু এত এত স্লোগানের ভীরে খুব সযত্নে ইচ্ছাকৃতভাবে “,জয় বাংলা” স্লোগানটাকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আন্দোলনে যেন আওয়ামী ছাপ না পড়ে তাই এই চেষ্টা! যেই স্লোগান আমাদের মুক্তির প্রেরণা, আমাদের মহান স্বাধীনতার প্রতিক সেই স্লোগান বাদ দিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন হয় কী করে!???
শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের গেটে আমি প্রথম স্লোগান দেই- ” জয় বাংলা”!!! ধমক দেয় কেউ কেউ! আমি দ্বীগুন জোরে চিৎকার করি- “জঅঅঅঅয় বাং….লা!!”
কয়েক সেকেন্ডে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে এই স্লোগান। সবাই যেন এই স্লোগান দিতে পেরে হাফ ছেড়ে বাঁচে!!! হাজার স্লোগান দিলেও কি “জয় বাংলার” অভাব পূরণ হবে!????
১৫টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
জয় বাংলা স্লোগানটিকে যারা একদলীয় করে ফেলেছে তাদের প্রতি আমারও প্রশ্ন, যে স্লোগানে দশ কোটি প্রান প্রকম্পিত হয়েছিলো তা কেন নিরপেক্ষ হবে না? যে স্লোগান আমাদের অস্তিত্ব বহন করে, সেই স্লোগানকে অবরুদ্ধ করবে কিভাবে?
৫ই ফেব্রুয়ারীর ইতিহাস জানলাম। আপনার বর্ণাঢ্য ব্লগিং লাইফ এর বিষয়ে আরও জানতে চাচ্ছি। লিখুন প্লিজ 🙂
শুভ কামনা 🌹🌹
সঞ্জয় মালাকার
দিদি আপনা কায় আমিও একতম।
মোঃ মজিবর রহমান
এই শ্লোগানকে একদল নিজের ভাবে আরেক দল হিন্দু ভাবে দুটাই কলংকিত। দুটাই রাজনিতির স্বার্থে দেশের স্বার্থে নয়।
সুপায়ন বড়ুয়া
জয় বাংলা শ্লোগান দলীয় নয়
তারাই ধারন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে
ফিরে পায় একাত্তরের বাঙ্গালী জাতিসত্তাকে।
সবাইকে ধারন করা উচিত
যা আজ জাতীয় শ্লোগানে পরিনত হয়েছে।
শুভ কামনা।
সঞ্জয় মালাকার
জয় বাংলা স্লোগানটিকে যারা একদলীয় করে ফেলেছে তাদের প্রতি আমারও প্রশ্ন, যে স্লোগানে দশ কোটি প্রান প্রকম্পিত হয়েছিলো তা কেন নিরপেক্ষ হবে না?
নুরহোসেন
কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়েছে,
ইহা জাতির জন্য আর্শীবাদ।
তবে সরকারী দলের রাজাকারদের বিচার কবে হবে?
সুপর্ণা ফাল্গুনী
জয় বাংলা স্লোগান টা কিভাবে যেন একদলীয় হয়ে গেল! অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় এটাই ছিল একমাত্র স্লোগান আর মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি। ঐসময় সবার মুখে জয়বাংলা ছিল কারন আমরা বাঙালি আর পাকিস্তানিরা ছিল আবাঙ্গালী তাই যুদ্ধে জয় মানে বাংলার জয়। সেটা আজ কিভাবে শুধু আওয়ামী লীগের একার স্লোগান হলো? ৫ই ফেব্রুয়ারী ২০১৩ ছিলো অন্যরকম একটি ব্যর্থতার দায়। সেখান থেকে আপনাদের মতো ব্লগারেরাই সফলতা দেখিয়ে কাদের মোল্লার ফাঁসি আদায় করেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এমন তথ্যপূর্ণ কথাগুলো শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো
রেহানা বীথি
জয় বাংলা….
সুন্দর পোস্ট। সেই সময় টিভিতে দু’চোখ ভরে দেখেছি সেই গণজাগরণ।
ছাইরাছ হেলাল
সেটি ছিল স্বপ্ন-বিজয়।
এটি যেন এমন করে বারে বারে ফিরে আসে।
ফয়জুল মহী
এখন যে তালিকা সরকার প্রকাশ করেছে ওই সব রাজাকারের ফাঁসির জন্য আন্দোলন করা দরকার ।
ত্রিস্তান
ইতিহাস হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরের মতো। ঝড় তুফান তো উঠে নদী সাগর কিংবা উপসাগরে। মহাসাগর তো কেবল জল ধারণ করে, জলের উচ্ছাস ঘটায় না। প্রাদেশিক নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে যদি পূর্ব পাকিস্তানের শাসনভার আওয়ামী লীগের হাতে ন্যস্ত করা হতো তাহলে হয়তো আমরা আজো অবিভক্ত পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্যে হয়েই থাকতাম। বন্ধে মাতারাম স্লোগান আর আমাদের জাতীয় পতাকাটাকে শকুনের মতো খুবলে খুবলে খেতে পারতো না। একটা ফেলানীর লাশের জবাবে দিল্লীর মসনদ গিয়ে হিমালয়ে ঠেকে যেতো। বর্বর পাকিস্তানি কুত্তা গুলো তখন বুঝতেই পারেনি একতার কি শক্তি? যাই হোক, যদি কখনো প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশ প্রকম্পিত হয় তবে যে মহা প্লাবন হবে তাতে অসংখ্য ছোটখাটো নদী সাগর ভেসে যাবে সেই ভয়াবহ প্লাবনে।
স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অর্জন করা কঠিন, আর সেটা রক্ষা করা আরো অনেক বেশি কঠিন। ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
এই আন্দোলনকে আওয়ামীলীগ ভুলে গেছে, এই আন্দলনে আওয়ামীলীগ অস্থির সময়ে স্থির হয়েছে।
কিন্তু জনতাকে ভুলে গেছে, মানুষের মুক্তির পথ রুদ্ধ হয়েছে।
মনির হোসেন মমি
জয় বাংলা
হাজারো শ্লোগানের ভীড়ে এটাই নক্ষত্রের মত জ্বল জ্বল করবে। সেইদিনগুলো এখন অনেকটাই অতীত স্মৃতি।খুব ভাল লিখেছেন।
সুপায়ন বড়ুয়া
“কয়েক সেকেন্ডে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে এই স্লোগান। সবাই যেন এই স্লোগান দিতে পেরে হাফ ছেড়ে বাঁচে!!! হাজার স্লোগান দিলেও কি “জয় বাংলার” অভাব পূরণ হবে!????”
সেই জয় বাংলা শ্লোগানে ফিরে পাই আত্নমর্যদা
আমাকেও করেছিল একাকার শাহবাগ চত্বরে।
ফাঁসির দাবিতে উত্তাল সাগরে।
শুভ কামনা
কামাল উদ্দিন
প্রথম আলো এবং সামুর বেশ কিছু ব্লগারের সাথে দুইদিন শাহবাগে আমিও ছিলাম। খুবই উচ্ছাসিত ছিলাম আমরা, যদিও বিরোধী পক্ষ একে বিতর্কিত করতে হেন কোন অপচেষ্টা ছিলনা যে করে নাই………শুভ কামনা জানবেন।