
ঐশী-যখন ওর বাবা মারা যায় তখন ওর বয়স ৬/৭।পিতৃবিয়োগ বা মৃত্যুর মর্মার্থ কিছুই তেমন বুঝতোনা বা বোঝার কথাও না। চার বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বাবার মৃত্যুর পর সবাই যে যার মতো করে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে,আবার অতি আপনজনকেও কাছে পায়নি বাবার অভাব পূরণের জন্য।
জমিজমা যা ছিল ঐশীর মা এদিক ওদিক করে, টুকটাক কাজ করে জীবনের বাস্তবতা মেনে নিয়ে ওদের মানুষ করছিল। বড় বোন ছোটো বেলা থেকেই মেধাবী। সবার আশা,স্বপ্ন বড় বোন নিজের পায়ে দাঁড়াবে-সেইসাথে ওদের ও আস্থা, ভরসার অবলম্বন হবে। বড় বোন বি.এস.সি নার্সিং এ চান্স পেল সরকারীভাবে। স্বপ্ন পূরণের পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেল ওদের সবার জীবন। পাশ করলেই ভালো বেতনের একটা চাকরি আর অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তো ছিলই। এভাবেই সুন্দর করে ওদের জীবনচাকা ঘুরছিল।
ঐশী খুব গুছানো পরিপাটি একজন হয়ে উঠলো। সংসারের সব কাজ বলতে গেলে সে একাই করতো। ওর মনে যে কখন কষ্টেরা বাসা বেঁধেছে , ঘুণপোকা জীবনের রং খেয়ে গেছে কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি। পরিপাটি, নিশ্চুপ ঐশী কখন যে এতোটা অভিমানী আর একরোখা হয়ে উঠলো কেউ বুঝতে পারেনি।
বোনের বি.এস.সি নার্সিং শেষ হতে আর মাত্র দুটো বছর। এর মধ্যেই ঘটে গেল লোমহর্ষক সেই অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা। অভিমানী আর একরোখা মেয়েটি মায়ের বকুনি খেয়ে মাত্র ১২/১৩ বছরের জীবনটা এক নিমেষেই নিজেকে আত্মহত্যায় বিলিয়ে দিলো। সেই সাথে মৃত্যু হলো অনেকগুলো জীবনের , একটি সংসারের আনন্দের,একটি জীবনের চাওয়া পাওয়ার। এভাবেই একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটলো।
২৭টি মন্তব্য
রেহানা বীথি
বারো তেরো বছরের একটা শিশুর মনে কী এমন প্রতিক্রিয়া হলো যে সে আত্মহত্যার মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো, সে বিষয়টা স্পষ্ট হল না কেন যেন। পরিবারে অশান্তি কিংবা মানসিক সমস্যা থাকলেই এমনটা করা সম্ভব। কিন্তু লেখায় সেটাও স্পষ্ট নয়। সুস্থ স্বাভাবিক কোমলমতি একটা শিশু শুধুমাত্র একদিন মায়ের কাছে বকা খেয়েই আত্মহত্যা করে ফেললো? মেনে নেয়া যায় না।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হুম কেউই বুঝতে পারছি না
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হুম আরো বিশদ ভাবে লেখা যেত কিন্তু আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছি এটা। আমরা সবাই হতবাক এমন ঘটনায়। মৃত্যু মেনে নেয়া কঠিন তারচেয়ে ও বেশী কঠিন এমন অপমৃত্যু।
এস.জেড বাবু
কমেন্ট পড়ে যতটা বুঝলাম, বাস্তব কোন ঘটনা হবে।
তৌহিদ
লেখা পড়ে মর্মাহত হলাম। একটি ছোট্ট মেয়ে হয়তো অনাদরে, অতিশাসনে এমন একরোখা হয়েছে। আসলে পরিবারে মায়ের অভাব অন্য কেউ পূরণ করতে পারেনা। এসবক্ষেত্রে এক্সট্রা কেয়ার দরকার যা ঐশী পায়নি বোঝা যাছে।
গল্পের বিষয়টি চমৎকার তবে আরো একটি বিস্তারিত লিখলে দারুণ হতো।
শুভকামনা রইলো।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এটি গল্প নয়, সত্যি ঘটনা। আমার ই চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে
তৌহিদ
বাস্তব জেনে আরো খারাপ লাগছে। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
সুরাইয়া পারভিন
আত্মা কেঁপে উঠলো এমন পোস্ট পড়ে। ১২/১৩ মেয়ে আত্মহত্যা করলো!
হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো ছোট্ট মেয়েটির এমন পরিণতিতে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সত্যি ই এমন মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না
জিসান শা ইকরাম
১২/১৩ বছরের বয়সটা অত্যন্ত অভিমানের বয়স,
এই বয়সে সামান্য মন খারাপও অনেক সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার জন্ম দেয়।
এখানে তো আত্মহত্যাই করে ফেললো।
এমন মৃত্যু মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়।
ঠিকই লিখেছেন, এমন মৃত্যুর পরে ‘ মৃত্যু হলো অনেকগুলো জীবনের , একটি সংসারের আনন্দের,একটি জীবনের চাওয়া পাওয়ার। এভাবেই একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটলো।’
সৃষ্টিকর্তা মেয়েটির আত্মাকে শান্তি দিক।
আপনি তো নিজেই গ্রাফিক্স পারেন,
আপনার লেখার বিষয় বস্তুর সাথে মিল রেখে ছবি বানিয়ে দিবেন এরপর থেকে।
শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া
সঞ্জয় মালাকার
আত্মা কেঁপে উঠলো । ১২/১৩ মেয়ে আত্মহত্যা করলো!লেখা পড়ে মর্মাহত হলাম।
এভাবেই একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে।
চমৎকার লিখেছেন দিদি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা
নিতাই বাবু
এসবের কারণে আমি সময় সময় অন্যকেও আদেশ উপদেশ দিয়ে থাকি। যাতে কেউ কারোর সান্তানদের সাথে খুব বেশি রাগারাগি না করে। আমি নিজেও একজন অভিমানপুত্র হারা, তাই। আপনার পোস্ট পড়ে নিজের সন্তানের কথা মনে পড়ে গেল! তবে হ্যাঁ, দোহাই আপনার, প্রশ্ন করবেন না!
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সমবেদনা জ্ঞাপন করছি
নিতাই বাবু
প্রত্যুত্তরের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!
এস.জেড বাবু
বারো বছরের একটা মেয়ের আত্মহত্যার পিছনে অবশ্যই জটিল কোন কারণ থাকবে,
পরিবারের পক্ষ থেকে বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে এই বয়সের একজন।
মর্মাহত হলাম।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ
মোহাম্মদ দিদার
লেখাটা পরে স্থব্ধ হয়ে গেলাম।
আসলেই বোকামী করার বয়স টাই হলো বারো তেরো। এসময়টা অভিমান অভিজোগ মনে বেশী হয়। আর পরিবারের মানুষগুলোর উচিৎ এ বয়সের সদস্যদের প্রতি বেশী কেয়ার ফুল হওয়া।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ
নুর হোসেন
আমাদের অধিকাংশ পরিবারের অশান্তির রেষ শাসনের নামে সন্তানের উপর বর্তায়,
শাসন যেন মানুষিক পর্যায়ে না যায় পিতা মাতার উচিত সেদিকে নজর রাখা।
ভালো লিখেছেন, শুভ কামনা রইলো।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ আপনাকে
জাকিয়া জেসমিন যূথী
এরকম মৃত্যুর আসলে কারণ থাকে না সেভাবে। অজানা কারণে অজানার পথে পা বাড়ায়। ভালোই একটা অনুগল্প লিখে ফেলেছো।
নিয়মিত লেখা আশা করছি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ । চেষ্টা করবো নিয়মিত লেখার
জাকিয়া জেসমিন যূথী
তুমি যেরকম এক্টিভ। চেষ্টা করলেই নিয়মিত লেখায় যুক্ত থাকতে পারবা। থেকো। আমরা একদিন তোমার লেখা প্রকাশনায় দেখতে চাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ওয়াও । ধন্যবাদ ধন্যবাদ