
দিনভর আষাঢ়ের গল্প শেষে,
অগোছালো সন্ধ্যায়,
কলমী ঝোঁপের আড়ালে সদা জাগ্রত কোলাব্যাঙ-
যতটা অধ্যাবসায়ে অপেক্ষায় থাকে;
পঁচা ডোবার জলে,
চাঁদের প্রতিচ্ছবির উজ্জলতায় উড়ে আসা-
ঘাসফড়িং শিকারের নেশায়,
ঠিক ততটা আগ্রহে চারপাশের প্রকৃতির নেশাক্ত চোখ,
ডান কোনের পলকহীন দৃষ্টিতে আজও নিদ্রা যায়,
তোমার আনাগোনার অপেক্ষায়- ।
দেখা পেলেই গ্রহন লাগবে চাঁদে,
যেন নতুন করে কেউ পড়েনা,
কেউ পড়েনা রূপের ফাঁদে।
খুউব জানতে ইচ্ছে করে,
সত্যি ইচ্ছে করে-
তাইতো সময় পেলেই মন,
অতীতের সৌরমণ্ডল চষে বেড়ায়,
সম্পর্ক নামের গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে।
মহাশূণ্যের ভাসমান রত্নভান্ডারের তুলতুলে পৃষ্ঠজুড়ে,
খুঁজে ফিরে তোমার স্বাগতিক পদচিহ্ন।
ছাঁয়াপথের প্রতি বিন্দু উজ্জ্বলতায়,
তোমার সাদৃশ্য খোঁজে হয়রান হৃদয়,
কখনো পিছু নেয় ছুটন্ত ধূমকেতুর।
অজান্তে অনুপ্রবেশ মধ্যাকর্ষণহীন ভিন্ন নিহারিকায়।
যে পথের শুরু আছে, শেষ নেই শেষেও ॥
এ কি অযাচিত উদাসীনতা ?
না শুধুই সস্তা অপেক্ষার অজানা আক্ষেপ ?
আরে নাহ্
এ হলো দীর্ঘ্যশ্বাসের জ্বালানীতে,
প্রতিনিয়ত সেন্ট্রিগ্রেট বাড়তে থাকা-
অত্যাধুনিক সম্পর্কের “মশাল” ॥
একদিন এ আলোর ছিটেফোটা পৌঁছে যাবে ততদুর,
তুমি লুকিয়েছ যে উপগ্রহে-
সোনার মন্দিরে, রূপালী খাঁচায় ।
ভয় পাচ্ছো ?
তবে, কিনে নিও এক টুকরো নিথর জলাধার ।
সমুদ্রচারীদের স্পর্শ সীমার বাইরে
মারিয়ানাট্রেঞ্জ এর মতো,
ধরিত্রীর দ্বিতীয় কোন গভীরতার একাংশ।
অথবা,
ধোঁয়াশা গল্পের আবরণে ঢাকা
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো ;
আরেকটি অজানা কোন রহস্যঘেড়া –
নিষিদ্ধ জলরাশির খানিকটা।
সীমানাহীন জলের গভীর রাজ্যে,
যুগান্তরে একফালি আলোর রশ্মী পেলেই
ভিজিয়ে নিও গা।
যতটা আয়েশে কারো হৃদয়ের চৌবাচ্চায়
সেরেছিলে নগ্ন স্নান।
ভয় নেই !
কৃষ্ণ হয়েছে দেশান্তর, আজকাল চুরি হয়না চুড়িদার,
অন্ধের রাজ্যে, আঁকা হয়না নিষিদ্ধ পোট্রেট,
বধিরের আঙ্গিনায়, হয়না সুরের তান্ডব।
হৃদয়হীন ভূমে, কেউ খুঁজে না কারো গন্ধ।
ওখানকার চির স্থবির গভীরতায়
মস্তিস্কহীন প্রাণ পাবে,
কোটি বছর ধরে একই ছন্দে কেটে যাওয়া
লাখো লাখো ভাবনাহীন
বিচিত্র জীবনের সারাংশ খুঁজে পাবে।
ওরা অনেকটাই তোমার মতো, এলিয়েন।
ওদের মহাজাগতিক হৃদয় আছে,
আলোর নিঃশ্বাস নেয়, অন্ধকার খাবলে খায়।
আর তোমার ও হৃদয় আছে- যান্ত্রিক,
হৃদয় ভাঙ্গার শব্দে নিঃশ্বাস নেয়,
অন্যের হৃদয়ের চর্বি গলিয়ে খায়।
ওরা মরায় কাঁদে না, জন্মে হাসে না।
ওরা অন্ধকারে সাচ্ছন্দে থাকে,
ওরা নিরালায় সুখি !
আর, তোমার সুখ আলোতে, কিন্তু আড়ালে ॥
তবে আর কি !
একদিন প্রত্যাশার মহাকাশযান ভেদ করবে
শতকোটি আলোকবর্ষ দুরে শনির দুর্ভেদ্য বলয়,
আশাটুকু নিরাপদে ল্যান্ড করবে
সেই টিকিট কাউন্টারের সামনে-
যে চিড়িয়াখানায়, তুমি দর্শনার্থীর অপেক্ষায় ॥
আচ্ছাহ্ !
সেই মুক্তমনা ঝিনুকের ভেতরটা কি এতো এতো বড় ?
ঘুমাতে পারো হাত পা মেলে আয়েশে ?
-০-
___২৭/১০/২০১৯
২৬টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
ওরা অনেকটাই তোমার মতো, এলিয়েন।
ওদের মহাজাগতিক হৃদয় আছে,
আলোর নিঃশ্বাস নেয়, অন্ধকার খাবলে খায়।
আর তোমার ও হৃদয় আছে- যান্ত্রিক,
হৃদয় ভাঙ্গার শব্দে নিঃশ্বাস নেয়,
অন্যের হৃদয়ের চর্বি গলিয়ে খায়।
কথাগুলো এসে সরাসরি হৃদয়ে আঘাত হানলো
ওরা মরায় কাঁদে না, জন্মে হাসে না।
ওরা অন্ধকারে সাচ্ছন্দে থাকে,
ওরা নিরালায় সুখি !,,,এটা বেশি চমৎকার
এস.জেড বাবু
হাহাহা
যে কথা বলতে গিয়ে এত কথা বলা, তার সবটুকু নির্যাস বের করে নিলেন।
আপনি যেমন চমৎকার লিখক, তেমন গুণী পাঠক।
অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইলো আপু।
ছাইরাছ হেলাল
নেশাতুর নিদ্রাহীন চোখ অপলক অপেক্ষায়
পাতা ফাঁদে, শিকারের নেশায়, কে আসে কে যায়!
রূপের ফাঁদে গ্রহণ লাগা চাঁদ! ওই তো দেখা যায়;
আপনি খুবই ভাল লেখেন।
এস.জেড বাবু
আর আপনি কত্তো সুন্দর করে বলেন-
কমেন্টের হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরি।
এত সুন্দর করে কমেন্ট করা যায় ?
আমি শিখছি কিন্তু।
শুভেচ্ছা ভাই
নৃ মাসুদ রানা
নেশাতুর নিদ্রাহীন চোখ অপলক অপেক্ষায়
পাতা ফাঁদে, শিকারের নেশায়,
এস.জেড বাবু
এটা কার লিখা
বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে-
ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান
বন্যা লিপি
অক্ষর গুলো দামি হয়ে ওঠে শব্দে পরে শব্দ সাজানো কারিগরি মুনাসিয়ানায়।শব্দগুলো প্রমান করে কারিগর বড্ড সফলতার স্বাক্ষর রাখতে সচেষ্ট। আপনার লেখা অনেক ভালো। জীবনবোধের অনুপম বিন্যাস ঘটিয়েছেন শব্দমাধুর্যে।
শুভ কামনা নিরন্তর।
বন্যা লিপি
এত্ত এত্ত বানান ভুল হচ্ছে ইদানীং আমার!! মুন্সিয়ানা, শব্দের পরে শব্দ।
আমার নিজের লেখাতেও প্রচন্ড ভুল হচ্ছে খেয়াল করলাম। বুঝতে পারছিনা ঘটনাটা কি? ব্লগ কতৃপক্ষ কি কিছু বলতে পারবেন? পরামর্শ চাই। আমার নিজেরও ভুল হতে পারে।
এস.জেড বাবু
আমি অত বুঝিনা- তবে,
অটো ক্যাপিটালাইজেশান, অটো কারেকশান এই দুইটা অপশন চালু থাকলে অনেক বাংলা শব্দ টাইপ করার পর পাল্টে যায়। ডিকশনারীর কারণেও অনেক সময় এমন হয়।
বাংলা যারা বেশি লিখি তাদের ক্ষেত্রে- এগুলি বন্ধ রাখা সুবিধাজনক।
অনেক ভুল হয় আমার ও – এমনকি আমি অনেক শুদ্ধ বানান জানি না।
অনিচ্ছাকৃত ভুল, সবাই সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।
শুভ কামনা রইলো।
এস.জেড বাবু
গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য-
আমার বেলায় অবশ্যই “সুবিশাল পাওয়া”
আপু আমি সৌখিন লিখক- সখের বশে লিখি। আমার মতো ক্ষুদ্র ফেইসবুক টাইপের লিখক সোনেলায় লিখছি সে অনেক, তার উপর এমন মন্তব্য আশাতীত।
অনেক অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো আপু।
দীর্ঘজীবন কামনা করছি।
তৌহিদ
বাবু ভাই আপনি সত্যিই চমৎকার উপমায় শব্দ সাজাতে পারেন। মহাকাশের কত কিছু নিয়ে এলেন কবিতায় ভাবতেই অবাক হচ্ছি। শিকারের নেশায় কত কামচোখ অপেক্ষা করে চাঁদের আলোর আলোকিত লাবন্য দেখার জন্য!! অথচ চাঁদেরও কালিমা আছে কিন্তু!
দারুণ লিখেছেন ভাই।
এস.জেড বাবু
তৌহিদ ভাই,
আপনার মন্তব্যের রিপ্লে দিতে গিয়ে আমি প্রতিবার হোঁচট খাই।
এতো সুন্দর করে বলেন- বুক কাঁপে সত্যি।
–
আর তোমার ও হৃদয় আছে- যান্ত্রিক,
হৃদয় ভাঙ্গার শব্দে নিঃশ্বাস নেয়,
অন্যের হৃদয়ের চর্বি গলিয়ে খায়।
–
চাঁদের কালিমা আছে সত্যি-
–
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান।
সুস্বাস্থ কামনা করছি।
হালিম নজরুল
কৃষ্ণ হয়েছে দেশান্তর, আজকাল চুরি হয়না চুড়িদার,
অন্ধের রাজ্যে, আঁকা হয়না নিষিদ্ধ পোট্রেট,
বধিরের আঙ্গিনায়, হয়না সুরের তান্ডব।
হৃদয়হীন ভূমে, কেউ খুঁজে না কারো গন্ধ।
————ভাল লাগলো
এস.জেড বাবু
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান,
আপনার সমৃদ্ধ জীবন কামনা করছি ।
জিসান শা ইকরাম
এত বড় কবিতায় ছন্দ পতন ( ঝুলে যাওয়া ) হয়নি একটুও,
মুগ্ধ হলাম ভাই।
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
আপনাদের দোয়া- আর চমৎকার কমেন্ট, লিখার অনুপ্রেরনা দেবে।
ধন্যবাদ ভাইজান
চাটিগাঁ থেকে বাহার
বাবারে বাবা!
মনে হলো যেন সৌরজগত ভ্রমণ করে আসলাম!
কী কবি তারে বাবা!
টান টান উত্তেজনায় পড়ে ফেললাম!
বুঝি বা না বুঝি ভালো লেগেছে।
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
আর আমি একটা মনমুগ্ধকর চমৎকার কমেন্ট পেয়ে গেলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান
রেহানা বীথি
ভয় পাচ্ছো ?
তবে, কিনে নিও এক টুকরো নিথর জলাধার ।
সমুদ্রচারীদের স্পর্শ সীমার বাইরে
মারিয়ানাট্রেঞ্জ এর মতো,
ধরিত্রীর দ্বিতীয় কোন গভীরতার একাংশ।
ভীষণ সুন্দর লিখলেন।
এস.জেড বাবু
সম্পর্ক তৈরীর পর যারা ভবিষ্যতের চিন্তায় ভয় পেয়ে যায়- ওরা ভয় পেয়ে পেয়ে গ্রহান্তরিত হতেই থাকে।
ওদের জন্য মস্তিস্কহীন জগত দরকার
ওরা সেখানেই মানান সই।
ধন্যবাদ প্রিয় আপু
শাহরিন
আমি তো সৌরজগতের মধ্যেই আটকে গেলাম। মনে হচ্ছিলো মহাশূন্যে বসে লিখেছেন, শব্দগুলো। পুরো সারমর্ম বুঝতে হয়তো আরো কিছু সময় লেগে যাবে। কবিতা যে একটু কম বুঝি হতে পারে এটাই প্রধান কারণ।
এস.জেড বাবু
প্রাপ্তিটাকে তোলপাড় শেষে, অতি ক্ষুদ্র ভেবে যে জন প্রতিনিয়ত আরও বৃহত্তর কিছু খুঁজতে থাকে, তারা দৌড়ে বেড়ায় চন্দ্র ছেড়ে মঙ্গলের পাণে।
ক্ষুদ্র প্রাপ্তিতে যাদের ভয়, ওরা একবারও ভেবে দেখে না-
চাঁদের নিজের আলো নেই
মঙ্গল গ্রহটাও নিজে জ্বলে না
গ্রহন সূর্যের ও লাগে-
খুব জানতে ইচ্ছে করে- ওরা কি খুঁজে পায় সদা আলোকিত বৃহত্তম বৃহস্পতির দেখা, আলাদা কোন নক্ষত্রের কক্ষপথে ?
কেউ পায়নি কোনদিন, কারণ হৃদয়ের সত্যিই কোন ভৌগলিক সীমারেখা নেই।
দোষে গুনে মানুষ- প্রকৃতির নিয়মেই বদলায়। ভালবাসলে হয়ত সে নিত্য পরিবর্তন মেনে নিতেই হবে-
কেউ তো আর সত্যি সত্যি এলিয়েন নয়।
ধন্যবাদ আপু-
কামাল উদ্দিন
ওদের মহাজাগতিক হৃদয় আছে,
আলোর নিঃশ্বাস নেয়, অন্ধকার খাবলে খায়।
আর তোমার ও হৃদয় আছে- যান্ত্রিক,
হৃদয় ভাঙ্গার শব্দে নিঃশ্বাস নেয়,
অন্যের হৃদয়ের চর্বি গলিয়ে খায়
…………..এমন কঠিন ভাষাগুলো বুঝতে সত্যিই আমার অনেক কষ্ট হ। দোষ তো আমারই, কবিতা কম বুঝি যে সব সময়।
এস.জেড বাবু
শুনেছি বিশ কেজি তিল পিশলে আধা কেজি তেল হয়।
পুরু লিখার নির্যাস বের করে ফেললেন।
আপনি অনেকের চাইতে অনেক বুঝেন প্রিয় ভাই।
অনেক শুভেচ্ছা সহ ধন্যবাদ আপনাকে।
সঞ্জয় মালাকার
বাবু ভাই আপনি সত্যিই চমৎকার উপমায় শব্দ সাজাতে পারেন। ছন্দে মেলানো কবিতা ভালো লাগার ঊর্ধ্বে আত্মা কামনা শব্দে ছন্দে।
ভয় নেই !
কৃষ্ণ হয়েছে দেশান্তর, আজকাল চুরি হয়না চুড়িদার,
অন্ধের রাজ্যে, আঁকা হয়না নিষিদ্ধ পোট্রেট,
বধিরের আঙ্গিনায়, হয়না সুরের তান্ডব।
হৃদয়হীন ভূমে, কেউ খুঁজে না কারো গন্ধ।
ধন্যবাদ বাবু ভাই, শুভ কামনা 💕🌹🌹
এস.জেড বাবু
প্রতি মিষ্টি একটা মন্তব্য জুড়ে দিলেন। অনেকটা আগ্রহ নিয়ে আপনার লিখা পড়ি, বেশ ভালো লিখেন আপনিও।
আপনার সর্বময় মঙ্গল কামনা করি ভাইজান।