
তোমার নিগূঢ় প্রচ্ছায়া ছুঁয়েছিল,
সবুজাভ প্রকৃতির ক্যানভাস
যেখানে কচি সবুজের ডগায়;
শিশির কনা রেখে গেছে হৈমন্তি ডানাকাটা ঝড়
বিশাল দুর্বাঘাসের জমিনে
নুপুর জড়ানো তোমার খালি পা,
ছুঁয়েছিল খানিকটা উর্বর।
কে গো তুমি নারী ?
ভূবন বিহারী;
চেয়ে দেখ আখি মেলি,
ঝনঝন রূপালি ঝংকারের তালে,
শালিকের সুরে মিতালি।
যেন উড়ন্ত বলাকার ঢংয়ে, দু’বাহু মেলে
উড়ে চলা শ্বেত ময়ূরী ।
তোমায় দেখে রোদেলা উষ্ণতায়
শিষ দিয়ে উঠে দোয়েল,
ডানা ঝাপটিয়ে মাঠ জুড়ে ছুটে
জোড়ভাঙ্গা বুনো কোয়েল॥
আমি ঐ দূরে ,
দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের শেষে, পরিশ্রান্ত নিদ্রায়-
যেখানে দখিনা হাওয়ায় পল্লবের ছাঁয়ায়,
হেলে দুলে জল ছুঁয়েছে বটমূল-
যেখানে দুরন্ত নদের বুক পেড়িয়ে
ছুটে আসা ষোড়শী ঢেউ,
তীরের ভেজা বালুতটে আছড়ে পড়ে
নিবিড় মৈথুনে ব্যকূল॥
কেন ছিঁটিলে জল ;
যুগান্তরের তৃষ্ণার্ত চোখের পাতায়,
কেন ভেজালে শুস্ক দু’ঠোট ;
তোমার ঐ অনামিকার শীতল ছোঁয়ায় ?
কে গো তুমি ! সুহাসিনী-
কেন এ মর্ত্যে রেখেছ পা ?
এ কি দেখছি আমি ! স্বপ্ন !
না বাস্তবতা সর্বনাশা ?
তবে, কোন পিপাসায় ছেড়ে এলে তুমি
মেঘের দেশের বাড়ি,
কোন সে কামনায় পাড় হয়ে এলে
পরী রাজ্যের সীমানা ছাড়ি?
তুমি কি জানতে নাহ্ ?
এই দুস্ট প্রকৃতির দিগন্ত ছুঁয়েছে
আমার একান্ত ক্যানভাস;
কেন আবারও তুলেছ ঝড়,
আমিতো প্রকৃতির টানে ঘর ছেড়েছি,
লোকালয় করেছি পর।
এসেছ যখন-
দু দন্ড দাঁড়াবে স্বপ্ন লতা !
এতকাল পরে তন্দ্রা ভেজা নেশাক্ত চোখে
যে প্রতিচ্ছবি পড়েছে তোমার,
আমি ক্যানভাসে আঁকবো তা।
সর্ষে পাতার সবুজ নির্যাসে
মেঘলা হরিণি কেশ,
দুর্বার কালো সবুজ আভায়,
আখিজোড়া মানাবে বেশ।
শ্বেত বলাকার পালকের রংয়ে
আঁকবো নয়ন জোড়া,
হৃদয় পোড়া ছাইরংয়ে মনি-
স্বপ্নে বিভোর দিশেহারা।
বট মূলের রসে, একান্তে বসে;
এঁকে দিবো কয়েক পাপড়ি,
ঠোট কোনে হাসি, তিলক পাশাপাশি
চিরন্তন রূপশী নারী॥
আর একটু দাঁড়াও
সন্ধ্যা হতে দাও-
জোছনার রংয়ে ভরে দিবো ললাট
সন্ধ্যা আসে গো যদি,
পূর্ণিমার ভরা যৌবনে আঁকবো
ষোড়শী স্রোতস্মীনী নদী।
উত্তাল ঢেউয়ের বাঁকে এঁকে দিবো
আমাবস্যার নিগাঢ় ছাঁয়া,
এ যেন অপরূপ কোন সৃস্টি বিধাতার,
জাদুকরণীর মোহ-মায়া॥
কল্পলোকের চাঁদ আঁকবো ললাটে,
হতে দাও খানিক রাত;
ঠোট জুড়ে শিশিরের ঝলকানী দিবো,
হতে দাও যদি প্রভাত।
মালতি ফুলে, নির্যাস তুলে,
আঁকবো বুকের ঢং ,
নিতম্বের পুরুটা জুড়ে মেখে দিবো
সকালের সোনালী রং ।
কে গো তুমি ? পরী ?
উড়ে যাবে ছাড়ি ?
আমিতো আঁকিনি তোমার ডানা ,
তবু যাবে ! বেশ, মেলে দিয়ে কেশ,
রেখে যেও ছবিখানা।
আমি আবারো ঘুমাবো, বটছাঁয়া তলে,
জল ছোঁয়া বটমূলে ,
দিয়ে যেও খানিক সৌরভ তোমার,
যদি ফিরে আস পথ ভুলে ।
হয়ত ! হৃদয় আঁকতে পারেনি শিল্পী,
পারেনি কোন চিত্রকর,
ছাঁয়াখানি তাই, হয়ে যায় আপন,
মোহ-মায়াটুকু হয় পর ॥
-০-
২৯টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
আর একটু দাঁড়াও
সন্ধ্যা হতে দাও
জোছনার রংয়ে ভরিয়ে দেবো ললাট,,,, আহ্
অনুপম প্রকাশ👏👏
এস.জেড বাবু
সারাংশ তুলে দিলেন।
কৃতজ্ঞতা আপু
হালিম নজরুল
সৌন্দর্যময় সুদীর্ঘ স্তবগান
এস.জেড বাবু
আপনার দোয়া প্রার্থী
শুভেচ্ছা নিরন্তর ভাই
ছাইরাছ হেলাল
দাঁড়ান দাঁড়ান!
আপনি তো অনেক সুন্দর কবিতা লেখেন।
আর একবার পড়তে হবে।
এস.জেড বাবু
কি সুন্দর অনুপ্রেরনা দেন আপনি-
আমি মুগ্ধ
কৃতার্থ ভাই
ছাইরাছ হেলাল
আমি তো শুধুই আমার অনুভব বলেছি,
এর বেশি কিছু নয়।
এস.জেড বাবু
কারও অনুভব প্রকাশে কেউ অনুপ্রেরনা পায় ভাই।
আমিও পেলাম
তৌহিদ
বাহ! মনে প্রেম না থাকলে এরকম স্তুতি গাওয়া সম্ভব নয় নিশ্চিত। লেখা সুন্দর হয়েছে বাবু ভাই। লিখুন নিজের মনের মতন করে।
শুভকামনা রইলো ভাই।
এস.জেড বাবু
এমনভাবে মন্তব্য করেন যে আর একটা মন্তব্য পেতে লোভ লেগে যায়।
অনেক বড় মন আপনার।
ধন্যবাদ ভাই
অনন্য অর্ণব
এসেছ যখন-
দু’দন্ড দাঁড়াবে স্বপ্ন লতা !
এতকাল পরে তন্দ্রা ভেজা নেশাক্ত চোখে
যে প্রতিচ্ছবি পড়েছে তোমার,
আমি ক্যানভাসে আঁকবো তা।
ওয়াও কি নিবিড় মমতায় মাখা আল্পনা। প্রেমিকের চোখে প্রিয়ার অপরূপ রূপ- মাধুরী। শুভ কামনা নিরন্তর 😍
এস.জেড বাবু
একরাশি হেমন্তের শুভেচ্ছা আপনাকে।
এবং নিরন্তর কৃতজ্ঞতা ভাই
ছাইরাছ হেলাল
শালিক, উড়ন্ত বলাকা, শ্বেত ময়ূর, বুনো কোয়েল!
এত পাখি এত্ত ফুল আর নদীর ঢেউয়ে নিবিড় মৈথুনে দারুন রোমান্টিকতা।
চালু থাকুক এমন কবিতাঞ্জন।
এস.জেড বাবু
মুগ্ধতা আর লোভনীয় মন্তব্য।
অনুপ্রাণিত, কৃতার্থ
শুভেচ্ছা নিরবধি ভাই
মোহাম্মদ দিদার
ওপ্!
এমন সুমিষ্টতা জড়ানো কাব্য, যে পরতেই পরতেই আর পরতেই মন চায়।
এস.জেড বাবু
মিষ্টি মনের মানুষ আপনি-
কি মিষ্টি কমেন্ট।
মুগ্ধ দিদার ভাই
আরজু মুক্তা
অনুভূতিগুলো চমৎকার।
এস.জেড বাবু
আন্তরিক শুভেচ্ছা আপু
ইঞ্জা
অপূর্ব লিখলেন ভাই, মুগ্ধতা রইলো। 😊
এস.জেড বাবু
আপনার দোয়া
ধন্যবাদ ভাই
ইঞ্জা
ভালোবাসা
মনির হোসেন মমি
কল্পলোকের চাঁদ আঁকবো ললাটে,
হতে দাও খানিক রাত;
ঠোট জুড়ে শিশিরের ঝলকানী দিবো,
হতে দাও যদি প্রভাত।
বাহ্্ বাক্য আর শব্দের কি সুন্দর ব্যাবহার। চমকৃত হলাম আপনার কবিতা পড়ে। আরো আগে কই ছিলেন।
এস.জেড বাবু
এইতো আছি সোনেলার উঠানে, আপনাদের পিছু পিছু ।
অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই,
জিসান শা ইকরাম
কবিতায় একরাশ মুগ্ধতা,
শুভকামনা।
এস.জেড বাবু
আন্তরিক ধন্যবাদ ভাইজান
শামীম চৌধুরী
চয়নগুলি ভাল লেগেছে।
এস.জেড বাবু
কৃতার্থ হলাম ভাইজান
শুভেচ্ছা রইলো
শাহরিন
প্রেয়সীর অনেক সুন্দর বর্ননা পড়লাম। ভালোবাসায় ভরপুর।
এস.জেড বাবু
প্রয়সী’রা এমনি হয়,
কেমন যেন !
যুগ যুগান্তরেও লিখে শেষ হয়না ……হবে না।
অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। কৃতার্থ হলাম।