খুব ছোট বেলা থেকে যেই বেড়াতে আসতো, তাঁদের সাথে বেড়াতে যেতে ভীষণ কান্না জুড়ে দিতাম। মনে পড়লে এখনো বোকা বোকা লাগে। আব্বা বরধরক ধরে মার লাগাতেন, তবে শান্ত হতাম। আম্মা নানা বাড়ি যাবার কথা বললেই আব্বা সহজে রাজি হতে চাইতেন না। আব্বা’র ধারনা ছিলো নানা বাড়ি গেলেই হয়তো কোনো অসুখ বিসুখ করবে। আবার আরো একটা বড় কারণ ছিলো, সেটা না হয় এখানে আজ উল্লেখ না করলাম!
ঘোরা বা বেড়ানো ওই নানা বাড়ি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলো। বাসে করে যখন যেতাম, সবসময় জানালার পাশে’র সিটে বসতাম। একটাই উদ্দেশ্য… চলমান বাস থেকে বাইরের প্রকৃতি দেখতে দেখতে যাওয়া। আব্বা’র একটা ফিলিপস্ ব্রান্ডের রেডিও ছিলো, সবসময় আগলে রাখতেন। রেডিও কলকাতা’র রবীন্দ্র সংগীত বা দেশীয় স্টেশনের যতরকম রবীন্দ্রগীতি’র অন্ধ স্রোতা ছিলেন আব্বা। আব্বা’র অনুপস্থিতিতে রেডিও ছিলো আমার কব্জায়।কেন জানিনা ফরিদা পারভিন, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, আব্দুল হাই আল হাদী, সুবীর নন্দী, এদের দেশাত্মবোধক গান গুলো আমাকে ভীষন টানতো সেই ছোট বেলা থেকেই। বাসের জানালায় ঘাড় ঘুরিয়ে অবারিত সবুজের ঢেউ দেখতে দেখতে আমি মনে মনে গাইতাম ফরিদা পারভিনের বিখ্যাত সেই গান….. “অবারিত সবুজের প্রান্ত ছুঁয়ে
নির্ভয়ে নীলাকাশ রয়েছে নুয়ে ”
নানা বাড়ি ছাড়া বছরে কোথাও কোনোদিন আমার ছোট্ট শহরের বাইরে যাওয়া হতোনা। ক্লাশ সিক্সে ওঠার পরে প্রথম বেড়াতে এবং ছোট খালা’র প্রথম সন্তান জন্ম উপলক্ষে আম্মা যাবেন খুলনা। তখন যাওয়া হয়েছিলো খুলনা। তাঁর কিছু মাস আগে বিয়োগ হলো আমার বোন সুইট’এর। ছোট দু’ভাই আর আমি। আমরা যখন ষ্টিমারে করে যাচ্ছি, আমাদের সাথে ছিলো আমার সাত নম্বর চাচা। রাত নয়টা সাড়ে নয়টার দিকে কাকু এসে খবর বললো আম্মা’কে প্রেসিডেন্ট্ সাত্তার সাহেব’কে হটিয়ে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করে নিয়েছেন। এইসব রাজনীতি’র তখন র জ ন কিছুই বুঝতাম না। গোটা গোটা চোখ করে কাকু’র ভাষ্য শুনছিলাম। ” এবার যে কি হবে আল্লাহ্ ই ভালো জানেন, মহিলারা যারা হাত কাটা ব্লাউজ পড়ে রাস্তায় বেড়োবে, আলকাতরা মেখে অপমান করবে। দেশে চলবে মার্শাল ল আইন। ” কি জানি কি সব বলে!!
নাইন টেনে ওঠার পরে দু’বার গিয়েছি সেই ছোট খালু’র বদলী সুবাদে পটুয়া খালী। ঘোরাঘুরি বা বেড়ানো বলতে এই পর্যন্তই!!
এস এস সি পরীক্ষা শেষ হলো কয়েকদিন হলো মাত্র। ঘরের মধ্যে বসে বসে পাঁচ নম্বার চাচ্চু’র বইএর আলমারি আর পাড়ার বন্ধুদের কাছথেকে ধার করে বই যোগাড় করে করে অফুরন্ত সময় পার করছি। ব্যাবহারিক পরীক্ষার তারিখ সামনে, সেটা শেষ হলেই একেবারে রেজাল্টের অপেক্ষা। প্রায় দুপুর বেলা মেজো চাচা ইত্তেফাকের খবরে চোখ বোলাতে ঘরে আসেন, পাশাপাশি ঘর আমাদের। কাগজের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে বলে উঠলেন….লিপি, যাবি নাকি? হঠাৎ এমন প্রশ্নে প্রথমে হকচকিয়ে গেলাম
–” কোথায় যাবো?
মনাঃ(মেজো চাচা’কে সবাই আমরা মনা কাকা বলে ডাকি) ঢাকা যাবি? তোর কাকি’রে আনতে যাবো। তোর পরীক্ষা শ্যাষ না? মনের মধ্যে বানরের মতো কয়েকবার ডিগবাজি দিলাম খুশিতে। সাথে সাথে আবার চিন্তা গ্রাস করলো, আব্বা রাজি হবেতো? কোথাও যেতে দিতে চায়না সহজে! সহজে কেন? বিনা সহজ বলেও কোনো কথা নেই। বলেই ফেললাম অকপটে — “যাইতে তো ইচ্ছা করে!! কিন্তু আব্বা?” তাচ্ছিল্যের সাথে বলে উঠলেন মনা –” হে কি কইবে? প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষার পরে রেডি হইস কাপড় চোপড় গুছাইয়া” কথা তো সত্য! মনা’র সাথে গেলে আবার আব্বা না করবেন কিভাবে? কাকি বাপের বাড়ি গেলে ২/৩ মাস কাটিয়ে দেন গাজিপুরের জয়দেবপুরে। এখন তাঁকে আনতে সময় হয়েছে তো এই সুযোগে এক সপ্তাহ ঘুরিয়ে আনবেন বলে মনা স্থির করলেন। বলা বাহুল্য নিজ আব্বা আম্মা’র পরে চোখে চোখে শাশন করতে ছাড়েননি এই মেজো চাচা ওরফে মনা।
মনে মনে বেজায় খুশি প্রথমবারের মতো ঢাকা যাবো, আব্বা আম্মা ছাড়া মনা’র সাথে! আম্মা’কে বললাম, আম্মা এক লম্বা সুর তুলে বলে উঠলে —-” হহহহহহ তোর বাপে যাইতে দেবেনি?”
মেজাজ গেলো খিচড়ে। সব কিছুতে বাগড়া। বললাম –” আমিই বলবোনে আব্বা’রে।
আম্মাঃ যা কইয়া দ্যাখ।
আব্বা’র মুড বুঝে কথা বলতাম আমি সবসময়। এও জানতাম আব্বা’কে কেমন করে কনভিন্স করতে হয়!
আব্বা যখন লেখালিখি করতেন মোক্ষম সময় তখন! বললাম বিস্তারিত মেজো চাচা’র কথা, ঠিক তখনি দেখি মনা’ও পেছনে এসে হাজির। ব্যাস্, একবার আমার দিকে একবার মনা’র দিকে তাকালেন, পরে আবার লেখায় মনোনিবেশ করলেন। আমি পেছনের রুমে গিয়ে আনন্দে দুইটা গড়ান দিলাম মহা খুশিতে।
আমার সমবয়সী ফুপু আছে একটা। একই ক্লাশে পড়েছি, একসাথে খেলেছি, ঝগড়া করেছি, আবার বান্ধবীর মতো একসাথে চলেছি সবজায়গায়। ওকে কখনো ফুপু মনেই করিনি। আজো করিনা। ওকে নেবে কিনা জানা হয়নিতো মনা’র কাছে!! বলতেও পারছিনা মুক্তি’কে যে… “আমি মনা’র সাথে ঢাকা,গাজিপুর যাচ্ছি “যদি ও মন খারাপ করে!! পেটে কথাও আটকে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। সকাল সন্ধ্যা যার সাথে এত এত সময় কাটাই, তাঁকে কি করে না বলে যাই? সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে রওয়ানা দেবার আগের সন্ধ্যায় রাস্তার ওপারে দাদু’র বাসায় গেলাম। গিয়ে কি দেখছি? ট্রাভেল ব্যাগ গোছাচ্ছে, ইস্ত্রি করা কাপড়চোপড় ব্যাগে ভরছে। বিষ্ময় ভরা কন্ঠে জিজ্ঞেস করলাম —-“কোথাও যাবি নাকি? ব্যাগ গোছাচ্ছিস্? ওর জবাবে ভ্যাবা চ্যাকা খেয়ে গেলাম ( ভ্যাবা চ্যাকা কি জিনিষ জানা নাই, আর তা কেমনে খাওয়া যায় তাও কেউ যেন প্রশ্ন করে বসবেন না। কিছুতো একটা হবে! যা মুহুর্তেই বোকা বানিয়ে দিতে ওস্তাদ! হবে তেমন কিছু একটা!)
খুব নিস্প্রিহ আর গলায় জোড় টেনে বললো —” মেজ’দার সাথে ঢাকা যাচ্ছি কাল সকালের গাড়ি’তে ” এবার আরেকবার বানরের মতো ডিগবাজি দেবার পালা। ততোটাই গলা চড়িয়ে বলে উঠলাম —” তুইও যাবি? ”
কাপড় রেখে আমার দিকে ছোট ছোট চোখ করে প্রশ্ন করলো —” মানে?
—“মানে আমিও তো যাচ্ছি!! মুক্তি’র আকর্ন হাসি ছড়িয়ে পড়লো চোখে মুখে।
আনন্দে কোলাকুলি করে নিলাম দু’জনে। অন্তত বোরিং লাগবেনা কারো একা একা মেজদা অথবা মনা’র সাথে বাস ভ্রমনে।
সারা রাত কি আর ঘুম আছে চোখে? কখন সকাল হবে? কত তারাতারি জাগতে পারবো? আমার আম্মা সেই ফজরের আজানের পরে উঠেই নাস্তা রেডি করে প্রস্তত! কিছু খাওয়ার কি আর মন আছে? কে শুনবে কার কথা? জোড় করে কিছু খাইয়ে ছাড়লেন, সাথে করে কিছু শুকনো খাবার ও ফল দিয়ে দিলেন।
তখন আমাদের শহর থেকে সরাসরি ঢাকাগামী বাস ছিলোনা। বরিশাল থেকে ঢাকাগামী বাসে চড়তে হলে আমার শহর থেকে বাসে করে যেতে হতো। ভালোয় ভালোয় বরিশাল গিয়ে চড়লাম বাসে। মুক্তি আমি দুই সিটে পাশাপাশি মনা অন্য সিটে। বার বার চোখ যায় মনা’র দিকে। জায়গামতো আছেতো?
মনা প্রচন্ড পানখোর তখন। সাথে করে নিয়ে উঠেছেন,কিছুক্ষন পরপর গালে পুরে আয়েশ করে চিবুচ্ছেন। আমরা আমাদের মতো গল্প সল্পে মশগুল। কখনো ঝিমুনি আসে আবার চট করে মাথা তুলে দেখি মনা আছেতো ঠিক জায়গায়? বাস যেখানেই থামে (বিশেষ করে পেট্রল পাম্পে) মনা নেমে যান, কেন নেমে যান? পান কিনতে! আর আমাদের ধুকপুকানি বাড়ে, সময় মতো বাসে এসে উঠতে পারবেতো? যদি মনা’কে রেখেই বাস ছেড়ে দেয়? উৎকন্ঠা চলতে চলতে দিশাহারা অবস্থা! কারন ছিলো, কারনটা হলো আমার মনা একটু এই কিসিমের বটে!! আমরা দু’টো এই বয়সী মেয়ে যদি বাসে একা থেকে যাই?? কি হবে তখন?
দেখতে দেখতে এমন উৎকন্ঠা পার করে তিন ঘন্টা’র ফেরি ঘাটে এসে পৌঁছুলাম। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। মাওয়া থেকে তখন ছোট লঞ্চে করে পারাপার হতে হয়। লঞ্চে ভাত খাবার ব্যাবস্থা আছে। পদ্মা’র ইলিশ আর ডাল চচ্চরি দিয়ে ভাত এনে সামনে দিলো ক্যান্টিনের ছেলে। তরকারির রঙ দেখেই ভয় পেয়ে গেলাম। বাপরে!! কি টকটকা লাল রঙ!! মোটেই ঝাল তরকারি খেতে পারিনা। মাছের ঝোলে’র যা চেহারা!! বিসমিল্লাহ্ বলে শুরু তো করলাম! নাকের পানি চোখের পানি একাকার! ২/৪ লোকমার বেশি আর পারছিলামনা খেতে। মনা তো সেই ধমক! —” কোতায় ঝাল? কি সুন্দর পদ্মার টাটকা তাজা ইলিশ! খেয়ে ফ্যাল! মুক্তি দেখি খাইতেছে!” হাত উঠিয়ে বসে আছি। মুক্তি বুঝতে পেরেছে আমার অবস্থা! বললো —” থাক, খাওয়া লাগবেনা জোড় করে! ” মনা গজ গজ করলেন কতক্ষন! কতগুলো ভাত মাছ তদুপরি টাকা নষ্ট হলো বলে!!
এপারে এসে আবার বাসে চড়া। এবং যথারীতি সেই একই হাল হলো যখন বাস সন্ধা পার করে ষ্টেশনে এসে থামলো। আমাদের দাঁড় করিয়ে রেখে মনা চলে গেলেন পানের দোকান খুঁজতে! দু’জনে সিঁটিয়ে আছি কতদুর গেলেন কতক্ষন লাগবে ফিরে আসতে! ঢাকা শহর বলতে আমাদের কাছে সবটাই আতঙ্কের জায়গা। এখানে দিনে দুপুরে ছিনতাই হয়। মেয়েরা সহজে রাস্তায় অপদস্ত হয়!কত কত খবর তো কাগজে পড়ি, পড়েছি!!
গাজিপুরের বাস ধরে চড়ে বসতেই কিছুটা হাফ ছাড়া। শুনেছি মাত্র ৪০ মিনিটের মতো লাগে পৌঁছুতে। যখন বাস থেকে নামলাম, একেবারেই বাড়ির কাছে। হেঁটেই পাড় হচ্ছি বাড়ির দিকে। আবছায়া আলো চারিদিকে। এবড়োখেবড়ো পথ। বৃটিশ আমলে এ জায়গা গুলো নাকি চা’বাগান ছিলো। কাকি’র বাবা স্বাধীনতার আগে এখানে এসে জমি কিনেছিলেন তখনকার টাকার হিসেবে নাম মাত্র মূল্যে। কাকি’র ফুপু অর্থাৎ নানা আর তাঁর বোন পাশাপাশি জমি কিনে বাড়ি করেছিলেন।
কাছাকাছি থাকবেন বলে।
বাড়ির কাছে পৌঁছে গেছি, মনা দেখিয়ে বললেন —“ওই দেখ বিপু বসে আছে জানলায়। (বিপু মনা’র বড় মেয়ে, মাত্র তখন সিক্সে পড়ে)”
আমি বললাম —-“মনা এখান থেকে ডাক দেই? মনাঃ “দে, অবাক হইয়া যাইবে। ওরা তো কেউ জানেনা তোরা আসবি?
গলা ছেড়ে হাঁক দিলাম বিপুউউউউ!!!!!!
২৯টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
এত চমৎকার বর্ননায় কোন ভ্রমন কাহিনী এই প্রথম পড়লাম।
কোন সহজ সরল বিষয় কেবল উপস্থাপনার গুনে অসাধারন হয়ে যায়, তোমার এই লেখা তার প্রমান।
লেখা চালু থাকুক। শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
আপনার প্রতিটি মন্তব্য আমাকে লিখতে উৎসাহ যোগায়, যেমনটি আব্বা থাকলে হতো। ভুল ত্রুটি গুলো ধরিয়ে দিলে আরো উপকৃত হবো। শেখা শেষ হবেনা কখনো।
কৃতজ্ঞতা সহ শ্রদ্ধা।
শাহরিন
“হে কি কইবে’ খুবই মজা পেলাম এই লাইনটা পড়ে আর আপনার চাচা আর বাবার মুখ টা বার বার আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। অনেক ভাল লেগেছে পড়ে লিপি আপু।
বন্যা লিপি
আমার খুব কাছের স্বজনেরা কেউ আমাকে বন্যা বলে সম্বোধন করেনা। তাঁদের তালিকায় আপনি অনায়াসে দস্তখত করে ফেললেন ❤❤ভীষণ ভালো লাগলো শাহরিন আপু, আপনার “লিপি আপু” সম্বোধনে। কোনো একদিন সুযোগ পেলে আমার বাবা চাচা’র ছবি দেখাবো। আব্বা খুবই রাশভারী রাগী মানুষ ছিলেন। আব্বা’র হাসি ছিলো দুনিয়ার সবচেয়ে দুর্মূল্য এক বস্ত। যখন হাসতেন কোনো কারনে, আমি শুধু তাকিয়ে থাকতাম আব্বা’র মুখপানে। যেন চোখফ্রেমে বন্দী করে রাখতাম ওই হাসিটুকু। আপনাকে অকৃত্রিম ভালোবাসা 💓💓
আরজু মুক্তা
আপনার বলার সাথে সাথে মনে হচ্ছে আমিও যাচ্ছি
বন্যা লিপি
অনেক লিখে ফেলেছি, অথচ মনে হলো কিছুই লিখা হয়নি। তাইনা? তবুও পড়েছেন ধৈর্য ধরে অনেক কৃতজ্ঞতা শুভেচ্ছা।
ইঞ্জা
বেশ সাবলীল বর্ণনা, আপনার লেখা পড়ে নিজেরই প্রথম ঢাকায় আসা মনে পড়ে গেল আপু।
বন্যা লিপি
ইঞ্জা ভাই লিখে ফেলুন তারাতারি। আমরাও পড়ি। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
ইঞ্জা
আপু গতকাল পোস্ট দিয়েছি, দেখবেন প্লিজ।
সাবিনা ইয়াসমিন
চলন্ত গাড়িতে জানালার পাশে বসে প্রকৃতি দেখার মাঝে আসলেই অনেক আনন্দ থাকে। মনে হয়, আমি ছুটে চলেছি আর সামনের পথটা নিজেকে মেলে ধরছে তার অবারিত সৌন্দর্যের ডালা। তোমার সাথে আমিও দেখছিলাম সেই চলমান পথ।
বাবাদের কিভাবে কনভিন্স করতে হয় তা কিন্তু মেয়েরাই ভালো জানে, মায়েরা বুঝেনা ;
মাওয়া ঘাট দেখার খুব শখ আছে। তবে ঐদিকটায় যাওয়া হয়নি কোনোদিন। দেখি, সুযোগ পেলে যাবো। ঝাল তরকারির কথা বলে ভালো করেছো। আমি যাওয়ার সময় খাবার সাথে নিয়ে যাবো। ঘুরতে গিয়ে ঝালে কান্নাকাটি শুরু হলে আমার ঘোরাটাই বৃথা হয়ে যাবে। ভ্রমন কাহিনীর সাথে আমাদের দেশের অস্থির সময়ে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক সময়ের বিবরন রেখেছো, যা লেখার মান বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঢাকা ভ্রমন ভালো হয়েছে বন্যা। এভাবে নিমিত লেখো। আরও কতকিছু জানার আছে তোমার কাছ থেকে। একটার পর একটা লিখে যাবে, নিজের জন্যে-আমাদের জন্যে। ভালো থেকো, শুভ কামনা ও ভালোবাসা ❤❤
বন্যা লিপি
বাবা’র বাড়ি থেকে শ্বশুড়বাড়ি যাবার পথে প্রতিবার জানালার পাশে বসে কাল্পনিকতায় একা একা কথা বলে যাই খাল,বিল,ছোট ছোট নালা’র পানির সাথে প্রকৃতির সাথে। এই যাহ্….. গোপন কথা ফাঁস করে দিলাম তো!
চলো একদিন সময় করে ঘুরতে বেরোই মাওয়া ঘাটে। তোমার সাথে সাক্ষাতটাও হয়ে যাবে আর বন্ধুত্ত পাকাপাকি করা যাবে। তোমার প্রতি ভালোসা ফুরাবার নয় ❤❤❤
সাবিনা ইয়াসমিন
বন্ধুত্ব এখনো পাঁকাতে হবে? কি বলো! এই গরমে সব পেঁকে যাচ্ছে আর আমাদের বন্ধুত্বটাই পাঁকানো গেলো না ? আচ্ছা, দেখা হবে একদিন। তবে ভয় হয়, আমাকে দেখার পর যদি ভয় পেয়ে তোমার রাতের ঘুম চলে যায় তখন কি হবে ? 😰😰
বন্যা লিপি
উল্টোটাই হবে দেখে নিও,পাঁকাপাকি বাদ দেই, চলো ঘুরতে বের হই। ভয় পাওয়া পাওয়া বোঝা যাবে তখন!!
সাবিনা ইয়াসমিন
নতুন লেখা দাও। কি জানি একটা লিখতে বলেছিলাম? মনে আছে?
সিকদার সাদ রহমান
আমি গাড়িতে চোখ বন্ধ করে রাখি। মাথা ঘুরায়! তবে মাওয়া ঘাটের ইলিশ বেশ পছন্দ! 🙂
বন্যা লিপি
আহারে কবি!! চোখ বন্ধ করে রাখো? তুমি তো তোমার পখ্খীরাজে চইড়া অভ্যস্ত তাই! মাওয়া ঘাটের ইলিশ আলাদা কি মজা তাইতো আজো বুঝলামনা।
ছাইরাছ হেলাল
সচ্ছন্দ নিয়ে তর-তরিয়ে উপযুক্ত বর্ণনায় ভ্রমন কাহিনী এগিয়ে চলেছে।
ভালই লেগেছে পড়তে!!
ভিন্ন বিষয়, আমাকে একটু বুঝিয়ে বলুন, আপনার প্রতি লেখায় উর্ধ্ব কমা তাকে প্রচুর।
বলুন এবার। কেন, কী ভাবে দিচ্ছেন এগুলো।
বন্যা লিপি
আসলে উর্ধকমা বলতে কোনটা বুঝিয়েছেন, বুঝিনি। আর কথোপকথনের জায়গা গুলোতে কমা দিয়ে আটকে দিয়েছি। কিভাবে কি লেখা ভালো হবে শিখিয়ে দেবেন অনুরোধ করছি প্লিজ্। এখনো শেখার অনেক বাকি। সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
ছাইরাছ হেলাল
আসলে এটি বলেছি কিন্তু শিখিয়ে দেয়ার জন্য না, আমরা প্রত্যেকেই কিছু না কিছু শিখছি সারাক্ষণ,
এত্ত সুন্দর একটি লেখা , তার কিছু জায়গায় দিয়ে থমকে যেতে হবে, এটি চাইনি, তাই এমন বলা ।
তাছাড়া সাধারণত এমন করে বলি-না।
আব্বা’র পাশে’র আব্বা’র কলকাতা’র আব্বা’র খালা’র সুইট’এর আম্মা’কে সাহেব’কে রাজনীতি’র কাকু’র খালু’র চাচ্চু’র চাচা’কে কাকি’রে আম্মা’র মনা’র আব্বা’র আব্বা’কে চাচা’র মনা’ও মুক্তি’কে মনা’র ঘন্টা’র মনা’র
এই যে কমা গুলো দিয়েছেন এটি কী তা আগে আমাকে বলেন।
দু’ভাই শুধু এই একটি ঠিক, যদিও এর ব্যবহার এখন আর নেই।
বন্যা লিপি
এবার তো বুঝলাম! এভাবেই বুঝিয়ে দেবেন। সাধারনত কারে কি বলেন না বলেন, তা জানতে চাইনা। আমাকে বলতেই হবে সবসময় সব লেখার ব্যাপারে, এটা মনে রাখবেন। একেকটা নামের পরে কমা ব্যাবহার করে পরের শব্দটা রেখেছি, এটার ব্যবহার যে প্রয়োজন নেই! এখন বুঝলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
আদেশ শিরে ধারণ করা হলো,
যদিও জানার সীমাবদ্ধতা মাথায় রাখছি।
আমরা সবাই ছাত্র।
তৌহিদ
সুন্দর একটা ভ্রমন কাহিনী পড়লাম, আপনি যে এত সুন্দর করে লিখেন!!
কবিতা বাদ, এখন থেকে শুধু গল্প লিখুন আপু।
আসলে কবিতা খুব দুর্ভেদ্য লাগে☺
বন্যা লিপি
দুর্ভেদ্য কবিতা তো ছাড়বোনা!! আবোল তাবোল লেখা আপনার ভালো লাগলো? গল্প লিখতে পারিনা, সবই একান্ত অনূভুতির খসরা। আপনার ভালো লাগলো জেনে আমারো ভালো লাগলো। 🌺🌺
তৌহিদ
শুভ কামনা জানবেন আপু।
শামীম চৌধুরী
আপু আপনার মত ঢাকা ভ্রমনের আনন্দটা পাইনি। কারন ঢাকায় জন্ম হওয়ার সুবাদের এই স্বাদ থেকে আজবধি বঞ্চিত রয়ে গেলাম। চমৎকার বর্ননা করেছেন ভ্রমন কাহিনীতে।
বন্যা লিপি
ঢাকার বাসিন্দাদের প্রথম ঢাকা ভ্রমনের অভিজ্ঞতা না থাকারই কথা! আপনি শেয়ার করবেন প্রথম বিদেশ ভ্রমন নিয়ে।
আপনার প্রতি শুভ কামনা 🌷🌷🌷
শামীম চৌধুরী
আপনার জন্যও রইলো শুভ কামনা।
রাফি আরাফাত
মাসে দুইবার গেলেও এখন আমাকেও ভাবতে ইচ্ছে করছে। ভালো লেগেছে
বন্যা লিপি
আপনার ভালোলাগাটুকু পাথেয় হয়ে থাকলো। শুভ কামনা জানবেন। লিখুন বেশি বেশি।