
হ্যা, আমরা উত্তরবঙ্গের মানুষ মফিজঃ
—————————————————-
উত্তরবঙ্গের মানুষকে মফিজ কেন বলা হয় জানেন কি? তাহলে শুনুন-
গাইবান্ধা জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত অত্যন্ত সৎ একজন ড্রাইভার ছিলেন মফিজ। তাঁর শেষ জীবনের সঞ্চয় এবং বাবার দেয়া সামান্য জমি বিক্রয় করে ঢাকা রুটের একটা পুরাতন বাস ক্রয় করে ঢাকা- গাইবান্ধা রুটে বাসটি চালু করলেন। গরীব দরদী মফিজ সাহেব দিনমজুর লোকদের স্বল্প ভাড়ায় ঢাকা নিয়ে যেতেন।
এক সময় বয়সের ভারে মফিজ সাহেব অন্য ড্রাইভার দিয়ে বাস চালনো শুরু করলেন। কিন্তু দিনমজুর শ্রেনীর লোকেরা ভাড়া সাশ্রয়ের জন্য তাঁর বাড়িতে ধর্না দেয়া শুরু করলো। তাদের উপকারের জন্য সাদা কাগজে মফিজ লিখে সুপারভাইজারকে দিতে বলতেন এবং বাসের ছাদে নামমাত্র ভাড়ায় ঢাকা যাতায়াতের সুবিধা করে দেয়ার ব্যবস্হা করতেন। বাসের সুপারভাইজার “মফিজ” স্বাক্ষরযুক্ত কাগজ সংগ্রহ করে কম ভাড়া আদায় করতেন। তাই বাসের ছাদে উচ্চস্বরে সুপার ভাইজার বলতেন কয়জন মফিজ আছো ছাদে? অথাৎ কয়টা মফিজের স্লিপ আছে? আর এ ভাবে গরীবের উপকারী বন্ধু মফিজ শব্দটি চালু হয়। আজ আমরা ঠাট্টা করে অনেকে ‘মফিজ’ শব্দটি উচ্চারণ করি। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলেন ‘মফিজ’ হওয়ার যোগ্যতা কি আপনার আমার আছে?
এখন আসুন মুল কথায়- ব্যাকডেটেট, পিছিয়ে থাকা জনগনকে ভাইভা বোর্ডে নব্বই ডিগ্রী এ্যাংগেলে ভ্রু-কুঁচকে বলা হয় – ও…! তোমার বাড়ি উত্তর- বঙ্গে?
তারপর রেজাল্ট যা হবার তাই হয়। এটা একটা কমন চিত্র। ব্যাপারটা কি সত্যি এরকম? আসলেই কি এরা ব্যাকডেটেট? যাদের মানসিকতা এমন তারা কি আপডেটেড?
আসুন আমাকে মফিজ বলার আগে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে যান-
আজকের প্রভাবশালী জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হক কোথাকার? সৈয়দ শামসুল হক কোথাকার? কবি শেখ ফজলল করিম কোথাকার ছিলেন? ফকির মজনু শাহ? আব্বাস উদ্দীন? তেভাগা আন্দোলনের সফল নায়ক হাজী দানেশের বাড়ি কোন বঙ্গে ছিল? প্রফুল্ল চক্রবর্তী আর ক্ষুদিরাম বসু কোথাকার ছিল জানেন? পারবেন বলতে?
যে নারী ম্যাডামগন আজকে ভাইভাতে কর্তার চেয়ারে বসে উত্তরবঙ্গকে ব্যাকডেটেট বলে, সে হয়তো ভুলে গেছে মেয়ে মানুষদের পড়াশুনার ইতিহাস- উত্তরবঙ্গের বেগম রোকেয়া না থাকলে দেশের নারী জাগরণ আজ কি হতো? তানিয়া আমিররা আইনজীবী হতে পারতো না, বিমানের পাইলট হতে পারতো না কানিজ ফাতেমারা ; ওয়াসফিয়ার হিমালয় জয় করা লাগতোনা। চুলায় আগুন দিতে দিতে এদের জীবন শেষ করতে হতো।
মৌর্য সেনদের রাজধানী কোথায় ছিল? ঢাকা তো দু- চার’শ বছর আগে রাজধানী হল। ঢাকা অনেক জুনিয়র, সিনিয়র রাজধানী তো মহাস্থানগড়!! নয় বছর দেশ চালানো এরশাদ সাহেব কোথাকার? শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কোন বঙ্গের? বগুরার ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জন্ম দিনাজপুর।
দেশের সংকট সময়ে সাহসী সেনাবাহিনীর প্রধানরা কোন বঙ্গের ছিল? বিখ্যাত সাংবাদিক থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাওয়া মশিউর রহমান যাকে আমরা জাদু মিয়া নামে চিনি তার বাড়িটাও উত্তরবঙ্গের রংপুরে। কি কিংকর্তব্যবিমূঢ় লাগছে? বাংলাদেশের বিপদকালীন সময়ে হাল ধরা রাষ্ট্রপতিরা আর সেনাপ্রধানরা কোন বঙ্গের?
বলুন, আমি উত্তর চাই।
একবার বাংলা একাডেমিতে আঞ্চলিক বিতর্ক হচ্ছে। এই বিতর্ক নিজের অঞ্চলের ভাষায় করতে হয়। একটু মজাও করতে হয়। রংপুরের পক্ষে বিতর্কের যে অংশটুকু চ্যানেল আই-এ দেখানো হল সেটি ছিল সংক্ষেপে এরকম- “হামার দ্যাশের জনক বঙ্গবন্ধুর ছাওয়া শেখ হাসিনা। তার বিয়ার জন্যে পাত্র খুঁজিবার নাগচে। কোনোটে ভালো পাত্র পায় নাই। শ্যাষে সবারচাইতে ভালো পাত্র কোটে পাইচে কন তো বাহে? হামার অমপুরত!!”
কি বুঝলেন?
বাদ দেন, সারা দেশে শতসহস্র ছেলে থাকতে বঙ্গবন্ধু ওনার মেয়েকে উত্তরবঙ্গের ছেলের সাথে বিয়ে দিলেন কেন? কারন বঙ্গবন্ধু জানতেন ওয়াজেদ জিনিয়াস, হু ইজ রিয়েলি স্মার্ট!!” দেশ চালায় কোন বঙ্গের মানুষ? কোন বঙ্গের পুত্রবধু? সাবধান!
মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, জাতীয় চার নেতার এক নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর , জেনারেল জে.এন.চৌধুরী (সাবেক ভারতীয় সেনাপ্রধান), সাবেক বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল(অবঃ) এ.কে. খন্দকার, স্যামসন এইচ চৌধুরী যিনি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঔষধ প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লি: এর প্রতিষ্ঠাতা। সঙ্গীতশিল্পী তপন মাহমুদ, বাপ্পী লাহিড়ী, ডলি সায়ন্ত্বনী, বাদশা বুলবুল ,খ্যাতিমান উপস্থাপক ফজলে লোহানী, বাংলা গদ্যরীতির সার্থক রূপকার সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী, কবি বন্দে আলী মিয়া, উপমহাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা সুচিত্রা সেন, টিভি ব্যক্তিত্ব চঞ্চল চৌধুরি, জাহিদ হাসান, তৌকির আহমেদ, নায়ক আলি রাজ, পরিচালক বৃন্দাবন দাস সহ অনেকে- এরা সবাই কিন্তু উত্তরবঙ্গের! জানেনতো?
ধৈর্য হারাবেননা, আরও আছে-
স্বপ্নাতুর কবি সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী, ডক্টর আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন, মাওলানা খোন্দকার আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, যাদব চন্দ্র চক্রবর্তী , রজনী কান্ত সেন, ফতেহ লোহানী, কন্ঠ শিল্পি কনকচাঁপা, মুসা ইব্রাহীম একজন বাংলাদেশী পর্বতারোহী এবং সাংবাদিক, যিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের সদ্যবিদায়ী মন্ত্রী জনাব নাসিম এরা সকলেই উত্তরবঙ্গের সন্তান ।
ভুলে যাবেননা সজীব ওয়াজেদ জয় একজন রংপুরের সন্তান। হাঁসের মত প্যাকপ্যাক করে ভাইভা বোর্ডে উত্তরবঙ্গের মফিজ বলে সবাইকে তাড়িয়ে দিলে প্রেসিডেন্ট জিয়া, জেনারেল এরশাদ, খালেদা জিয়া, আনিসুল হকদের পেতোনা এই বাংলাদেশ।
ভারত সহ বিশ্বে ১৫০ টির বেশি দেশে পন্য রপ্তানি করে সারা বিশ্বে দেশের সুনাম আনছে প্রান আর এফ এল গ্রুপ, দু:খিত ভাই এটাও উত্তরবঙ্গের।
সারাবিশ্বে ফ্যাশন দুনিয়ার রানী বলে সমাদৃত বিবি রাসেল, এই মানুষটার বাড়িও রংপুর। অসংখ্য রহিমুদ্দি, করিমুদ্দি ভরসা কিংবা আমজাদ খান চৌধুরি পুরো উত্তরবঙ্গ জুড়ে।
মেধার অভাব উত্তরবঙ্গে নেই তবে কিছু কিছু চেয়ারে বসা কর্তাব্যক্তির “সুস্থ মানসিকতার” অভাব আছে। সেসব কথিত মহান ব্যাক্তিরা উত্তরবঙ্গ বলে উপহাস করে যখন কাউকে পাঠিয়ে দিলেন তারা হয়তো তখন ভাসানী, ক্যাপ্টেন মনসুর, একজন আনিসুল হক কে কিংবা ভবিষ্যত কোন রাষ্ট্রপতিকে হারিয়ে ফেললেন। সাথে সাথে এক ধাপ পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ।
আমি একটা কথা সবসময় বলি- মনে রাখবেন, রাষ্ট্র শাসনের নবাবীত্ব উত্তরবঙ্গ থেকেই এসেছে। তাই উত্তরবঙ্গের মানুষকে মফিজ বলার আগে এই কথাগুলো একবার ভেবে দেখবেন।
আমার কথাঃ
——————
এই যে আমাকে আপনাদের বন্ধু হিসেবে পেয়েছেন সেই আমিও কিন্তু উত্তরবঙ্গের। তাই উত্তরবঙ্গের মানুষকে মফিজ বলার আগে আরো একবার ভেবে বলবেন।
লেখাটি বিভিন্ন পত্রিকা থেকে সংগৃহীত এবং পরিমার্জিত। মফিজ নামের সেই মানুষটির নামের সাথে এই “মফিজ” শব্দটির নামকরনের তেমন কোনো অথেনটিক সোর্স আমি খুঁজে পাইনি, তবে এটি যুক্তিযুক্ত। তথ্যগুলি যাচাইয়ের জন্য নীচের পত্রিকা এবং ওয়েবসাইটগুলির সাহায্য নিয়েছি।
ছবিঃ সংগৃহীত
তথ্যসূত্র-
http://www.bangladeshtimes.net/উত্তরবঙ্গের-মানুষকে-মফিজ/
https://the71age.com/archives/8264
৩৫টি মন্তব্য
আরজু মুক্তা
আমিও উত্তরবঙ্গের!এটা ভাবতেই ভালো লাগে!এখানে সবাই আমাকে বলে,আপনি এতো সহজ সরল,কোন প্যাঁচ নাই!তখন আরও ভালো লাগে!
তৌহিদ
আমাদের প্যাচ নাই, আর যাদের একটু আধটু আছে সেটাও জিলাপি প্যাচ না।
ভালো খারাপ সব খানেই আছে। এসব নিয়েই চলতে হয় আমাদের।
শুভেচ্ছা জানবেন আপু।
বন্যা লিপি
একটাই মাত্র মানচিত্রের দেশ… এ দেশ আপনার আমার সকলের। বিভাগ,জেলা,অঞ্চল, গ্রাম নিয়েই আমরা বাঙালি। যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে এরকম অঞ্চল ভিত্তিক বৈষম্যতা। শুধু উত্তর বঙ্গ কেন? বি,এন,সি,সি, শব্দগুলোর মানে জানেন? একেকটা জেলার আধ্যাক্ষর।
সব অঞ্চলেই বিতর্কিত মানুষ জন আছে। নাম ধরো বলার সময় নির্দিষ্ট জেলা অঞ্চলের নামেই চলে বিতর্ক বা প্রহসন।যাদের বলার তারা আজীবন বলে বলেই নিজেদের বংশ পরিচয় আর রুচি,শিক্ষার প্রমান রেখে যাবেন।
তথ্যভিত্তিক পোষ্টের জন্য সাধুবাদ জানাই। শুভ কামনা আপনার জন্য🌷🌷🌷🌹🌹🌹
তৌহিদ
আমার প্রতিটি পোস্টেই আপনার উপস্থিতি আমাকে অনুপ্রেরণা দেয় আপু। ধন্যবাদ প্রাপ্য আপনার।🌹
আসলেও তাই এই দেশ একটাই সেখানে এসব ভেদাভেদ কেন? যারা করে তারা আসলেই শিক্ষিত মুর্খ।
ভালো খারাপ সবজায়গাতেই আছে। এসব মেনে নিয়েই চলতে হয়। মানুষকে উপেক্ষা না করে ভালোবাসাই পরম ধর্ম।
শুভেচ্ছা জানবেন আপু🌹
মাহমুদ আল মেহেদী
ধন্যবাদ ভাই আপনি যা জানেন আমাদের তা জানাতে চেষ্টা করেন। এটা অনেক মহান ব্যাক্তির পক্ষেই সম্ভব। চমৎকার সব ইতিহাস জানলাম।
তৌহিদ
আমি মহান নই,ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মানব একজন ভাই।
তথ্য সবার সাথে শেয়ার করলে সবাই উপকৃত হয়, এই ক্ষুদ্র প্রয়াস নিয়েই আমার এই ধারাবাহিকের অবতারনা। ভবিষ্যতে আরো কিছু দেয়ার চেষ্টা করবো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই🌹
মনির হোসেন মমি
হ্যা বুঝলাম মফিজের সব লোকায়িত কাহিনী জানতে পারলাম মহান ব্যাক্তিদের নাম তবে দেশ কিন্তু একটাই।আমিও মফিজকে ভালবেসে–একজন মফিজ এর সাক্ষাৎকার’ নামে পোষ্টের সিরিজ চালু করেছি।আমার এই মফিজের জন্য দোয়া করবাইন।
তৌহিদ
আপনাদের জানাতে পেরে আমি নিজেও আনন্দিত ভাই।
দেশ আমাদের একটাই, সেখানে এত বিভেদ কেন? এসব অজ্ঞতার পরিচয় বলেই মনে করি।
আপনার ধারাবাহিকটির একটি পর্ব পড়েছি মনে হয়। পরের পর্ব কবে দিবেন?
শুভেচ্ছা জানবেন।🌹
নাজমুল আহসান
আপনার উদ্দেশ্য ভালো। তবে আমার মনে হচ্ছে, অনেকের মতো আপনিও উত্তরবঙ্গে বাড়ি বলে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। নাহলে উত্তরবঙ্গ কিংবা পশ্চিমবঙ্গকে আলাদা ক’রে “উঁচু” প্রমাণ করতে হবে কেন? কেন অহেতুক নোয়াখালী-কুমিল্লা বিতর্ক?
তখন সবে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি। প্রথম ক্লাসে মহামতি শিক্ষক মহোদয় সবার নাম-পরিচয় শুনছেন। আমি নাম বললাম। স্যার জিজ্ঞেস করলেন- “দেশের বাড়ি” কোথায়?
বললাম, গাইবান্ধা।
স্যার কিছুক্ষণ ঝিম মেরে থেকে বললেন, গাইবান্ধা? এটা যেন কোন দিকে?
আমি উত্তর দিলাম না দিয়েই বসে পড়লাম। স্যারও ব্যাপারটা খেয়াল করলেন না। পরবর্তীজনের পরিচয় শুনতে গেলেন।
ক্লাস শেষে সহপাঠীরা কেউ কেউ জিজ্ঞেস করল, কেন আমি স্যারের প্রশ্নের উত্তর দিলাম না। আমি বললাম, আমার বাড়ি যদি চট্টগ্রাম কিংবা বরিশাল বলতাম, তাহলে কি স্যার এই প্রশ্নটা করতেন? করতেন না। গাইবান্ধা বলায় জিজ্ঞেস করেছেন, কারণ তিনি জানেন না গাইবান্ধা কোথায়। এটা তাঁর ব্যর্থতা। আমি তো কোনো অজপাড়া কিংবা চিপাগলির নাম বলিনি। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যদি আর পাঁচটা লোকের মতো হন, একটা জেলা কোথায় এটা না জানেন, তাচ্ছিল্যের সুরে প্রশ্ন করেন – আমি সজ্ঞানে তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া অপ্রয়োজনীয় মনে করি।
তৌহিদ
আমি জন্মস্থান নিয়ে গর্বিত, হীনমন্যতায় ভোগার প্রশ্নই আসেনা ভাই।
আমার উদ্দেশ্য যারা উত্তরবঙ্গকে মফিজ হিসেবে চিহ্নিত করেন তাদের চক্ষু খুলে দেয়া।
আপনার শিক্ষকের কথা পড়ে মর্মাহত হলাম, আসলে এটাই হয়।
এদেশকে মফিজ, নোয়াখালী কুমিল্লা এসবে যারা বিভক্ত কিরেছে তারা হচ্ছে হেপোক্রেট টাইপ মানুষ। হয়তো তারা নিজেরাও জানেনা কেন এই বিভক্তি করে তারা।
অপ্রয়োজনীয় কথা এড়িয়ে যাওয়াই উচিত বলে মনে করি। অন্তঃতত যেখানে নিজের শেকড় ছোট হতে দেখি সেখানে আমিও এড়িয়ে যাই।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
তৌহিদ
করেছে হবে, দুঃখিত
শুন্য শুন্যালয়
জীবন যদি একটাই হয় আর পৃথিবীও একটাই, তাহলে এই পুরো পৃথিবীই আমার। পৃথিবী ভেঙে টুকরো করা, দেশকে বিভক্ত করা আমি মানিনা।
আমাদের দেশে যেভাবে অঞ্চল নিয়ে ক্রিটিসাইজ করে দেখলেই মেজাজ খারাপ হয়, আমরা বাংলাদেশীরা বেশিই রেসিস্ট মনেপ্রাণে।
আপনি যেভাবে পড়াশোনা করে উত্তরাঞ্চল নিয়ে এলেন, তাতে তো অবাকই হচ্ছি। বাই দ্যা ওয়ে, আমিও উত্তরাঞ্চলের, তবে আমি কোন অঞ্চলের না এইটা জিজ্ঞেস করলে বিপদে পড়বো। :p
খুব মজা করে উপস্থাপন করেছেন। 🙂
তৌহিদ
কোন জেলায় বাড়ি আগে এইটা কন?
তাইতো বলি মাথার উপ্রে ছড়ি ঘোড়ানো শিখলেন ক্যামতে??
উত্তরাঞ্চলের নারীরা নাকি দুই ক্যাটাগরিতেই ফাস্টু?
সহজ সরল লাজুক অথবা ড্যাশিং আর ডেয়ারিং হয়, বেগম রোকেয়ার পরশ নাকি!☺
শুন্য শুন্যালয়
কোন জেলায় বাড়ি? আচ্ছা খাতাকলম নেন।
দাদার বাড়ি বিক্রমপুর, বাবা-মা সেটেলড নওগাঁ জেলা, আমার জন্ম, বাড়িঘর সব নওগাঁ। ক্লাস নাইনে বরিশাল পদার্পন পড়াশোনার উদ্দেশ্যে। এস,এস,সি ও এইচ,এস,সি বরিশাল। এরপর ঢাকায় কোচিং, ফরিদপুর মেডিকেল এ পড়াশোনা, বিয়ে হইছিলো যশোর। চাকরির সুবাদে টাংগাইল, যশোর। এরপর অস্ট্রেলিয়া আইসা মরতাছি। 🙁
কলেজে লেখাপড়ায় ভালো করলে স্যারেরা আমারে টানতো, কেউ বলতো আমার নওগাঁরর মেয়ে, কেউ বলতো আমার বিক্রমপুর এর, কেউ বরিশালের। বুঝতেই পারছেন আমি আইডেনটিটি ক্রাইসিসে ভুগি, এজন্যই পুরা দুইন্যা আমার। 🙁
ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ তো এখনো পাইনাই। আমারে সবাই ভয় পায় কিন্তু, সাবধান।
তৌহিদ
আল্লাহরে!! পুরা পিতিবী হাতে লইয়া ঘুরতাসে এই মহান ব্লগার। তারে থিতু হইবার তৌফিক দাও।☺
তৌহিদ
রেসিজম সব দেশেই আছে আপু, তবে আমি এটার ঘোর বিরোধী। অথচ এই রেসিজমের শিকার আমি নিজেই হয়েছি অনেকবার।
যুদ্ধ করেছি, প্রতিবাদ করে টিকে থেকেছি।
ছোট্ট একটি দেশ সেখানেও বিভক্তি! এটা মেনে নেয়া যায়না। যারা করে এদের কমনসেন্স এর অভাব রয়েছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন। বাহের গল্পে উত্তরবঙ্গ নিয়েই লেখা হবে আপু। পাশে থাকবেন।
রিতু জাহান
আমি সাধারণত জেলা নিয়ে কম ভুগি। মানে, আমি বিশ্বাস করি ভালোমন্দ মিলিয়ে সবখানের মানুষ।
কারন, বাবার ও স্বামীর চাকরি সূত্রে বহু জেলা ঘুরেছি। তবে হ্যাঁ, সহজ সরল বলতে যা বোঝায় তা কোনো এলাকার মানুষের একার দলে ভারি খুব একটা হয় না।
আমি উত্তরবঙ্গের বউ। তাই অভিযোগ কম নয় আমার।
বুঝতেই পারছেন,,,,,
তৌহিদ
বুঝতে পারছি আপু।
জেলা নিয়ে আমারও কোন সমস্যা নেই, কিন্তু যখন কেউ অবজ্ঞা করে তখন খারাপ লাগে।
ভালোমন্দ মিলিয়েই মানুষ। মানবপ্রেমই সর্বশ্রেষ্ঠ।
ছাইরাছ হেলাল
‘মফিজ’ জানি, তবে এভাবে এতটা জানা ছিল না।
আর উত্তরঙ্গ দক্ষিণবঙ্গ বলে কিছু নেই, থাকতেও পারে না।
এ ভাবে কেউ কাউকে অবজ্ঞা করতে পারে ভাবাই যায় না।
যে করে সে প্রকৃত শিক্ষার আলো দেখতে পায় নি।
তথ্য সূত্র উল্লেখ করে ভালই করেছেন, যা করা উচিৎ ও।
তৌহিদ
একটাই দেশ, তার মধ্যেও বিভেজন। মোটেও কাম্য নয়।
তথ্যসূত্র উল্লেখ না করে একবার বঞ্চনার শিকার হয়েছিলাম। আচ্ছা শিক্ষা হয়েছে।
ভুল থেকেইতো শিখছি ভাই।
প্রহেলিকা
আমি চট্টগ্রামের ছেলে হলেও চট্টগ্রামের অনেকের মাঝে আমি প্রবণতাটা দেখেছি যে, জীবিকার তাগিদে ভিন্ন জেলা থেকে কেউ এসে বসবাস করলে তাদেরকে নির্মম উপহাসের শিকার হতে হয়। এই অবজ্ঞাকে আমি অপছন্দই করি না কেবল ঘৃণাও করি। একই মানচিত্রের মাঝে বসবাস করে যে বিভেদ আমরা নিজেরাই সৃষ্টি করছি একদিন তা আমাদের ঐক্য ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। খুব সুন্দর!
তৌহিদ
আমার মনে হয় এই বিভেদ সৃষ্টি হিংসা মুলক। সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
সাবিনা ইয়াসমিন
বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর পূর্ব বঙ্গ বা পশ্চিম বঙ্গকে ভিন্ন অর্থে বলা হলেও উত্তর বঙ্গ বা দক্ষিন বঙ্গ নিয়ে আলাদা কিছু ভাবার আবশ্যকতা আছে বলে মনে হয় না। অতীতে এলাকা চিহ্নিত করনের জন্যে এমন করে নাম দেয়া হয়েছিলো যা বর্তমানে অধুনালুপ্ত। সোস্যাল মিডিয়ায় পাবলিক সস্তা বিনোদন নেয়ার উদ্যেশ্য নিয়ে জেলা ভিত্তিক কিছু ট্রল করে। কিন্তু যখন গৌরবের প্রয়োজন আসে তখন সমস্ত দেশ ও জাতিকে নিয়েই গর্ব করা হয়। গোটা বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ ও জেলা স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং সব জায়গাতেই বিখ্যাত-কুখ্যাত ব্যাক্তির নাম উজ্বলতা নিয়ে বিরাজ করে।
আপনার লেখার মাঝে আলোচনা-সমালোচনা দুটোই আসে তৌহিদ ভাই। অনেক কিছু জানা গেলো, আবার কিছু বক্তব্য অপ্রাসংগিক মনে হলো। উত্তর-দক্ষিন বিতর্ক বাদে লেখাটি তথ্যপূর্ণ ছিলো।
মফিজ-কাহিনী জানা ছিলো না। আপনার লেখা থেকে জানতে পারলাম।
ভালো থাকবেন, শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
তৌহিদ
আপনি টিভি দেখেন? দেখবেন উত্তরবঙ্গ আর দক্ষিণবঙ্গ শব্দ দুটি কি পরিমানে উচ্চারিত হয়। মিডিয়াতো সেদিন এলো, কিন্তু এই সস্তা ট্রলের জন্ম সেই বহুদিন আগেরকার।
সব জেলাতেই বিখ্যাত অনেক কিছু আছে। আমাদের উচিত নিজের জায়গা নিয়ে পজিটিভলি অন্যের কাছে উপস্থাপন করা, অন্যকে ট্রল করা নয়। যারা করে তাদের সু শিক্ষার অভাব রয়েছে।
লেখাগুলি যেহেতু আমার নয় তাই বিতার্কিক আমি নই।
ধন্যবাদ আপু।
জিসান শা ইকরাম
“মফিজ” শব্দটির নামকরনের ইতিহাস জানলাম, জানা ছিল না আগে।
ধন্যবাদ এটি জানানোর জন্য।
জেলা বা অঞ্চল ভিত্তিক বিভাজন বা বৈষম্য আমার চরম অপছন্দের একটি বিষয়।
আমি বরিশাইল্যা, এটা আমার গর্ব, বুক ফুলিয়েই বলি ‘ আমি বরিশাইল্যা ‘।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
জেলাভিত্তিক এই বৈষম্য আমিও মানতে পারিনা ভাই। কিন্তু যখন দেখি কেউ করছে তার সমুচিত জবাব দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি।
বরিশাল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জেলাগুলির অন্যতম। অবশ্যই গর্ব করবেন।
শুভকামনা রইলো ভাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
“মফিজ” কাহিনী জানা ছিলোনা। তবে হ্যাঁ তপন মাহমুদ কিন্তু বরিশালের।
যাক এতো ক্ষোভ শুধু মফিজ বলার জন্য? আমি সিলেটের, এজন্যও হাসাহাসি করা হয়। তাতে কি! আমি পিতৃসূত্রে সিলোটি, মাতৃসূত্রে বরিশাইল্যা। সর্বোপরি আমার দেশ বাংলাদেশ।
তৌহিদ
মফিজ কাহিনী জানাতে পেরে ভালো লাগছে। আমার ক্ষোভ নয়, তবে জাতি বৈষম্যকে আমি ঘৃণা করি।
কোথায় সিলেট আর কোথায় বরিশাল!! কেমনে যে মিলন হয়েছিল!
আমি গর্বিত বাংলাদেশি বলে। এটাই হওয়া উচিত।
নীলাঞ্জনা নীলা
মামনি-বাপির বিয়ে বিশাল এক অধ্যায়। একদিকে যুদ্ধের দামামা অন্যদিকে ভালোবাসার বন্ধন।
তৌহিদ
কোন একদিন হয়তো পড়বো আপনার স্মৃতিচারণ লেখায়!!
মোঃ মজিবর রহমান
ভাই দেশ স্বাধীনের পর জিয়া থেকে এখন পর্যন্ত উত্তরবঙ্গই শাসন বা চালাচ্ছে করছে।!!!
তৌহিদ
জ্বীভাই, তবে সেই তুলনায় উন্নয়ন হয়নি এদিকটার।
মোঃ মজিবর রহমান
উন্নয়ন কোথায় যে হচ্ছে ভেবে পাইনা। এক মেট্ররেল, পদ্মা ব্রিজ। শিল্প , কলকারখানা, শিক্ষার পরিবেশ, রাজনিতিবিদ্দের মানসিক উন্নতি কিছুই নাই। তবে কিছহু কিছহু হচ্ছে।
জাহিদ হাসান শিশির
এগুলো ফেবুতে পড়েছি।
তৌহিদ
হ্যা অনেক পত্রিকাতেও এসেছে।