
অথচ কথা ছিলো এই ফাগুনের প্রথম দিনে আমরা হাত ধরাধরি করে এমন আগুন লাগা শিমুল বাগানে একে অন্যের হবো।
না বলা কথাগুলো যা আমরা উভয়েই জানি কিন্তু প্রকাশ করা হয়নি, তা এদিন প্রকাশ করবো উভয়ের কাছে।
কথা ছিল চাঁদের আলোতে কবিতা আবৃত্তি করবে তুমি, আর আমি মুগ্ধ স্রোতা হয়ে শুনবো।
তোমার জোৎস্না প্রিয়, আর আমার প্রিয় নদী। পদ্মার আকাশে উড়ন্ত গাংচিল দেখার কত ইচ্ছে তোমার।
আমার কত প্লান এই জ্যোৎস্না আর নদী নিয়ে। কুয়াশা মাখা ভোরে আমরা দুজনে একসাথে যাবো বরিশালে গ্রীন লাইনে।
সময়ের সাথে সাথে সূর্য উঠবে আর কুয়াশা অদৃশ্য হবে, নদীর দু’পারের সবুজ গাছ, ধান ক্ষেত, ভাসমান নৌকায়
জেলেদের মাছ ধরা দেখবো আমরা ঝকঝকে আকাশের নীচে গ্রীন লাইনের ছাদে দাঁড়িয়ে।
একদম কাছ দেখে দেখবো লঞ্চের পিছনে ধাবমান শত সহস্র গাংচিল। উড়তে থাকা গাংচিল অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকবে আমাদের দিকে, গাংচিল রা একসময় জেনে যাবে তুমিও একটি পাখি। দুপুরে বরিশালে নেমেই ছুটবো পদ্মপুকুরে।
পুকুর ভরা ফুটে থাকা পদ্ম দেখতে দেখতে পদ্মের মাঝে ডুবে যাবে তুমি। তুলনা করবো আমি, তোমার আনন্দে উদ্ভাসিত
তোমার মুখের সাথে ভেসে থাকা পদ্মের। পদ্ম ম্রিয়মাণ হবে বরাবরের মতই।
সন্ধ্যায় সুন্দরবন লঞ্চে উঠবো আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে। বারান্দায় দুজনে বসে কাটিয়ে দেব সারাটি রাত।
জ্যোৎস্না রাতে আকাশের তারা গুনবো। নদীর পানিতে ছোট ছোট ঢেউ এর মাঝে চাঁদের আলোর ঝিকিমিকি দেখবো,
যেন জল জ্যোৎস্নার সংগম। জেলে নৌকার হারিকেনের মিটিমিটি আলো দেখে উচ্ছসিত হবে তুমি,
আর আমি অপলক মুগ্ধতা নিয়ে দেখব তোমাকে।
এই এক জীবনে আমাদের কত অতৃপ্তি, কত আশা ধুলিস্ম্যাত হয়ে যায়, আশারা এক সময় আশা করতেই ভুলে যায়। তারপরেও বেঁচে থাকি অর্ধ মৃত হয়ে। কেউ কেউ মরে গিয়ে বেঁচে যায়, কেউ কেউ বেঁচে থেকেই মরে যায়।
————————————————–জেগে উঠে ভাবি, এ কেমন স্বপ্ন দেখলাম?
স্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন!
জলের গান।
৩৪টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
স্বপ্ন-বাস্তবতায় লেখাটি অনিন্দ্য সৌন্দর্য গল্পাকারে প্রকাশ করেছে।
সাধ ও সাধ্যের অসময়তা ফুটে উঠেছে সুন্দর ভাবেই।
ফাগুনের পেলব আগুনের উষ্ণতা পাঠকেরাও টের পাচ্ছে।
জল-জ্যোৎস্নার কাব্যময়তা ঝরে ঝরে পড়ছে।
অনেক সুন্দর লেখাটি কে লিখল কে জানে!!
জিসান শা ইকরাম
সাধ ও সাধ্যের মধ্যে ব্যবধান কখনো কমবে না, বৃদ্ধি পাবেই।
কে যে লিখলো, একটি তদন্ত কমিটি করা যায়।
মাহমুদ আল মেহেদী
ভ্রমন পিপাসায় ভরিয়ে দিলেন মনটা।
জিসান শা ইকরাম
চলে আসুন আমাদের বরিশাল আগামী শীতে।
মাত্র ২৪ ঘন্টার ভ্রমন।
মাহমুদ আল মেহেদী
অবশ্যই ভাইয়া নদী যে আমার অনেক পছন্দ।
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা, আগামি শীত কালেই একটি প্রগ্রাম করব তাহলে
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
নিজ জন্ম ভুমি বরিশালকে নিয়ে সুন্দর একটা বসন্তের গদ্য পদ্য লিখলেন।সত্যিই মন ফিরে যায় বার বার সতেজঁ নির্ভেজাল প্রকৃতির মায়াময় কারুকার্যের আহবানে এমনি এক বসন্তে ও’র হাতটি ধরে।জানি সে সময় আসবে না তবে ভাবতে সমস্যা কি!
সুন্দর অনুভুতি।
জিসান শা ইকরাম
আসুন একবার আমাদের বরিশাল।
ইঞ্জা
বাহব্বা, ভাইজানে এমন লেখা লিখেন জানা, লেখাটি পড়ে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেলাম।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ ভাইজান।
ইঞ্জা
আরো লিখবেন ভাইজান, পড়তে এবং শিখতে চাই।
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা ভাইজান, দেখা যাক,
মোঃ মজিবর রহমান
শব্দের ভান্ডার নাহি মোর, লিখতেও পারিনা। পড়ি মুগ্ধতা পাই, এমন ভ্রমন প্রিয়া মোর সাথে ! ফাগুন আগুন রঙ্গে, মন মাতিয়ে, আকাশ-পাতাল ভেবে, কল্পনা জগতে ভাসিয়ে আকাশ কুসুম আমাকে মুগ্ধতায় ভরালেন।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ মজিবর ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
এটি গল্প নাকি ভ্রমন কাহিনী? নাকি গল্পের মাঝে নদী পথে বরিশাল ভ্রমন লিখলেন? আবার শেষে লিখলেন স্বপ্ন! তাহলে কি দাড়াচ্ছে? স্বপ্নে দেখলেন বরিশাল ভ্রমন, আর তা গল্পের মাধ্যমে প্রকাশ করলেন। লেখা এবং ছবি দুটোই ভাল লেখেছে। বসন্ত সিরিজে আপনিও অংশ নিলেন 🙂
জিসান শা ইকরাম
গল্পের ছলে ভ্রমন বলা যায় একে,
মানুষের জীবনও আসলে একটি বিশাল ভ্রমন।
রিতু জাহান
অসম্ভব সুন্দর প্রকাশ। মনে হলো পুরোটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
পদ্মাবতী, তুলনা করতে পারছি না কে বেশি নির্মল!
জলের গান অসাধারণ লেগেছে।
এতো আবেগ!
জিসান শা ইকরাম
মাঝে মাঝে আবেগ এসে ভর করে, কি আর করা!
শাহরিন আক্তার মুক্তা
দাদা লেখা পড়ে মনে হয় আমি লেখককে চিনিই না, কিভাবে লেখ এত সুন্দর করে!
জিসান শা ইকরাম
দাদাকে চিনতে সমস্যা হলে এমন লেখা বাদ এরপর থেকে 🙂
শাহরিন আক্তার মুক্তা
ঠিক ঠিক।
জিসান শা ইকরাম
আপনি আমাকে এই ধরনের লেখা বাদ দিতে বলছেন? 🙁
অপার্থিব
দারুণ লিখছেন…বিশেষ মুডে থাকলে মনে হয় এই ধরনের লেখা আসে… হা হা হা……
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা, ভালোই বলেছেন।
নতুন লেখা দিচ্ছেন না অনেকদিন,
আপনার লেখা মিস করি।
সাবিনা ইয়াসমিন
টেস্ট কমেন্ট
জিসান শা ইকরাম
টেস্টের ফলাফল সফল?
সাবিনা ইয়াসমিন
হ্যা।
শুন্য শুন্যালয়
আগুন তো দেখি ভালোভাবেই ছড়িয়েছে। 🙂
অপার্থিব বলেছে বিশেষ মুডে থাকলে নাকি এমন লেখা আসে। 🙂 ইয়ে মানে ছ্যাঁকা খেয়েছেন নাকি?
হ্যাঁ, এগুলোকেই লেখা বলে, আর আপনি এমনই লেখক। থামা যাবেনা। এরপর বৈশাখে কি কি কথা ছিলো সেই স্বপ্নও চটজলদি দেখে ফেলতে হবে।
আপনি বেঁচে আছেন তো?
জিসান শা ইকরাম
সোনেলায় ফাগুণের আগুন বাতাস বইছে,
কিছুটা গায়ে এসে বিঁধেছে
আপনিও কিছুটা উত্তপ্ত হাওয়া ছড়িয়ে দিন না ফাগুন থাকতে থাকতে।
অপার্থিব ঠিকই বলেছে,
তবে বিশেষ মুড সব সময় আসে না,
কখন আসে কখন যায়, তার ঠিক ঠিকানা নাই।
ছ্যাকা! এই বয়সে! নাউজুবিল্লাহ 🙂
এমন লেখা আর স্বপ্নর কথা বলি, কি না কি মন্তব্যে লেখেন তার ঠিক ঠিকানা নেই।
শেষে বুড়া বয়সে মান ইজ্জত নিয়ে টানাটানি।
ধন্যবাদ, বেঁচে আছি।
তৌহিদ
এত সুন্দর লেখাটি আগে পড়িনি বলে আফসোস হচ্ছে। পড়ার পর মন ভরে গেলো।
তবে আগুন কিন্তু ভালোই ছড়িয়েছেন ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
অপার্থিব বলেছেন ‘ বিশেষ মুডে থাকলে মনে হয় এই ধরনের লেখা আসে… হা হা হা…… ”
অপার্থিব সত্য বলেছেন তৌহিদ ভাই।
বিশেষ মুড শেষ, আগুনের উত্তাপ নিরুদ্দেশ 🙂
তৌহিদ
আগুন আবার আসিবে ফিরে…
জিসান শা ইকরাম
কি জানি কবে আবার ফিরে আসবে আগুন!
কামাল উদ্দিন
মনটা যেন কোথায় হারিয়ে গেল ভাই, এখন আমারো ইচ্ছে করছে যাদুকাটার সনে ঐ শিমুলের বনে কোন এক ফাগুনে…………..