মাঝেমাঝে মনে হয় জীবনে আর কিছু নেই, সব শেষ। যেনো থেমে গেছি আমি। আর কিছুই করার নেই। কোনো পথ নেই, কেউ কোথাও নেই। একে বলে অসহায়তা। সকালে কাউন্সিলরের কাছে গেলাম হেঁটে হেঁটে। ওখানেই যা একটু মন খুলে কথা বলতে পারি। আলিশা আমাকে যে সাজেশন দেয়, সেসব আমি নিজেই নিজেকে দেই। তারপরেও কেন যাই! আসলে মন খুলে বলার জন্য। “রুদালি” নামে একটা হিন্দী সিনেমা আছে, যেখানে কেউ মারা গেলে কান্না করাবার জন্য টাকা দিয়ে মানুষ কিনে আনা হয়। আর আমি মন খুলে কথা বলার জন্য টাকা দিয়ে সময় কিনি। যদিও ইন্সুরেন্সের টাকা, তাও তো!

প্রচুর টাকা একেকটা কাউন্সিলিং-এ। প্রথম প্রথম ভাবতাম বসে বসে শোনাই তো কাজ, কী আর করে! আস্তে আস্তে বুঝেছি, একজন মানুষ তার মনের কথা বলে যাচ্ছে, তা শোনার ধৈর্য কার থাকে! সাধারণ একজন মানুষের সময় কই, কথা শুনে যাবার, কোনো কথা না বলে! যদিও বা শোনে, তার মধ্যে কতো যে তীক্ষ্ণকণ্টক ছুঁড়ে মারে। আজকাল তাই কারো কথার মধ্যেই তর্ক করিনা। কারণ সবজান্তাদের সংখ্যা এ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি।

যাক যা বলছিলাম, একজন কাউন্সিলর সব কথা শোনার পর সেই ক্লায়েন্টের কথাগুলোকে রেকর্ড করে বা লিখে রাখে। তারপর সেসব থেকে সারাংশ তুলে নিয়ে ইন্সুরেন্স অফিসে জমা দেয়। এভাবে একজন মানুষের মনের সকল কথাকে মনে রেখে, সেই মানুষের মানসিক অবস্থাকে বিশ্লেষণ করে সাজেশন দেয়া খুব কঠিন কাজ। একই সাজেশন একইভাবে বিভিন্ন জনকে দেয়া যায়না। কারো আলু ভর্তা ভালো লাগে, কারো বা আলু ভাঁজি, কেউ ঘি দিয়ে আলু সেদ্ধ, কেউ সরিষা তেল দিয়ে। একই জিনিস বিভিন্ন রকম রেসিপি দিয়ে পরিবেশন করার শিল্পকৌশলতা সবাই পারে না। যখন আমাদের কেউ উপদেশ দেয় মেজাজ বিগড়ে যায়। কিন্তু কাউন্সিলরও ঠিক একই উপদেশ দেয়, আমরা কিন্তু মন থেকে হেসে সেটা মেনে নেই। তার মানে দাঁড়ালো, ফ্রি জিনিসকে আমরা ফালতু বলেই মনে করি। আদতে;

সব ফ্রি, ফ্রি না,
দামী ফ্রিও আছে
ভেবেচিন্তে ভেবে দেখো
ফ্রিতে কি কি আছে! 😃😃

হ্যামিল্টন, কানাডা
৪ জানুয়ারী, ২০১৯ ইং।

৭৮১জন ৭৭৮জন
0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ