
ঘটনার প্রথম শুরু আজ থেকে ৩ বছর পুর্বে।
খুব মনযোগ দিয়ে প্রিয় একজনের সাথে আলাপ করছিলাম লেখালেখি প্রসঙ্গে। নারীদের অনেক সমস্যার মধ্যে লেখালেখিও একটা সমস্যা। কল্পনা প্রসূত একই লেখা একজন পুরুষ এবং নারী যদি কিছুদিনের বিরতিতে কোথাও প্রকাশ করে, পুরুষের নামে প্রকাশিত লেখাটি হয় কল্পনা প্রসূত। আর নারী নামে প্রকাশিত লেখাটি হয় নারীর নিজস্ব কাহিনী। মানুষ এমনটাই ভাবতে অভ্যস্থ হয়ে গেছে। যেন নারী কল্পনা করে কিছু লিখতে পারেনা, যা লেখেন তাই হয়ে যায় তার বাস্তব কাহিনী। এ নিয়ে তখন আমি একটি লেখাও দিয়েছিলাম। যেটি সমাদৃত ও হয়েছিল।
* তবে একই সাথে ঘটে যাওয়া একটি সত্যি এবং অভাবনীয় ঘটনা প্রকাশ করিনি, যা আমার জীবন কাহিনীই বদলে দেয়। কথোপকথনের সময় কয়েকটা কুকুর এমন বিকট ডাকছিল যে বার বার আমার মনঃসংযোগে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল। আগের রাতেও এদের অসহ্য ডাকে ঘুমই ভেঙ্গে গিয়েছিল। অসহ্য এই কুকুরগুলো। ইচ্ছে করছিল লাফ দিয়ে বিছানা হতে নেমে দরজা খুলে রাস্তায় বের হই মোটা লাঠি নিয়ে। একটাকে মাথায় বাড়ি দেই। যাতে মাথা থেকে ছিটকে মগজ বের হয়ে আসে, আর ভয় পেয়ে অন্য কুকুরগুলো দৌড়ে পালাক। এই চিন্তা করার কিছুক্ষণ পরে কুকুরের ডাক বন্ধ হয়ে গেলো। মনে হলে কুকুরগুলো কিছু একটা দেখে ভয়ে পালিয়ে গেলো। সুনসান নীরবতায় ঘুম দিলাম। পরদিন সকালে মর্নিং ওয়াকে গেটের বাইরে এলেই দেখতে পেলাম একটি কুকুর মরে পরে আছে। মাথার মগজ অনেকটা রাস্তায় ছড়িয়ে আছে। অবাক হয়ে ভাবছি – এত বীভৎস ভাবে কুকুরটাকে কে মারলো ? চমকে গিয়ে ভাবলাম গতরাতে তো আমি এমনই ভেবেছি।
* ২০১৬ সনে লিগাল ভাবে কেনা আমার একটি জমি নিয়ে মামলায় পরে যাই। মামলাবাজ এক লোভী মানুষ আমাকে বিবাদী করে মামলা করে কোর্টের লোভী স্টাফদের হাত হরে আমাকে কোনো সমন না দিয়েই একতরফা মামলার রায় তার পক্ষে নিয়ে যায়। রায় প্রকাশের প্রায় ছয় মাস পরে আমি এই মামলার কথা জেনে তার রায় বাতিলের জন্য মামলা করি। লোকটির মিথ্যে বয়ান, মিথ্যে সাক্ষীতে হতবাক হয়ে যাই। তার উকিলের জেরায় অপ্রস্তুত আমি। এত খারাপ লাগছিল যে কোর্টে বসেই ইচ্ছে করছিল পিটিয়ে ওর হাত পা ভেঙ্গে মেরে ফেলি ওকে।
কিছুদিন পরে ঐ মামলাবাজ লোকটিকে পাওয়া গেলো সেই জমিতেই হাত পা ভাঙ্গা অবস্থায় মৃত।
* ২০১৭ সনে আমার পার্শ্ববর্তী উপজেলায় একটি বড় ব্রীজের কাজ পাই। কাজের সাইটে গেলে একজনের নেতৃত্ব একদল চাঁদাবাজের পাল্লায় পরি। এমনি ভদ্র ভাবে বললে মিষ্টি খাবার জন্য কিছু দিতাম। কিন্তু এমন ভাবে বললো যে তার অধীনস্ত কোনো লোক আমি, যাকে ঐ মুহূর্তেই দুই লক্ষ টাকা দিতে হবে। কথা বার্তায় আমি একসময় খুব উত্তেজিত হয়ে যাই, এবং চাঁদাবাজ প্রধানকে ধাক্কা দেই। তারা সংখ্যায় ছিল পঁচিশ জনের অধিক, এত লোকের সাথে আমার এমন করা উচিৎ হয়নি। এরা আমাকে আক্রমন করে, সবার মিলিত প্রহারে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। আমার কোমরে থাকা রিভলবারটি এরা নিয়ে নেয়। জ্ঞান ফেরার পরে আমি ব্রীজ নির্মাণ স্থলের কাছেই একটি বাড়ির সামনের রুমের বিছানায় নিজকে আবিষ্কার করি। জ্ঞান ফেরার পরেই প্রথম যে কথাটা ভাবি আমি তা হচ্ছে, ওদের নেতাকে যদি সুযোগ হয় তবে কপালে গুলি করে ব্রীজ যে স্থানে হবে সেই ক্যানেলে ভাসিয়ে দেবো।
ঘটনার ১০ দিন পরেই তাকে কপালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঐ স্থানে ক্যানেলে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেলো, মৃত।
**
এমন কেন হচ্ছে? আমি যেমন ভাবি তেমনই ঘটনা কেন হচ্ছে? আরো অনেক ঘটনা আছে যাতে আমি রাগ করে কিছু ভাবলেই ঠিক তেমনই ঘটে যাচ্ছে! আমি কি দ্বৈতসত্তার কোনো মানুষ? এসব কি আমিই ঘটাচ্ছি? নইলে যেমন ভাবছি তেমনই হয় কিভাবে?
============================
-{@ উত্সর্গ তোমাকে, তুমি তো জানোই, তুমি কে,
২৩টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
একই ঘটনা বা রচনা যখন একজন পুরুষ লেখেন তখন সেটাকে বলা হয় কল্পিত গল্প।কিন্তু নারীর বেলায় সেটা যেন নারীর আত্ম কাহিনী বলেই মনে করা হয়।পাঠক/পাঠিকা ধরেই নেন নারী কখনো বানানো কিছু লিখতে পারেন না।নারীদের কোনো কল্পনা শক্তি নেই।নারীর রচনা মানেই ইনিয়ে বিনিয়ে আত্মকাহিনী বলে যাওয়ার প্রয়াস।
ঘটনা গুলো সত্যি হয়েছে বলে মেনে নিতে চাচ্ছি না।বলা যায়না,,,উল্টা পাল্টা মন্তব্য দেখে রেগে গিয়ে মনে-মনে আবার কি ভেবে বসবেন।আপাতত নিরাপদ দুরত্বেই থাকি।😂
অন্যরকম ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন আর কুকুর হতে সাবধানে থাকুন। -{@
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, নারীদের লেখা অর্থই হচ্ছে তা তাদের সত্যি ঘটনা- এমনই ভাবেন অধিকাংশ মানুষ।
যা ইচ্ছে মন্তব্য করুন, প্রিয় মানুষদের জন্য কেবল শুভ কামনাই থাকে আমার,
ভয়ের কিছু নেই।
হুম, কুকুর থেকে সাবধানেই থাকি। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা দারুণ বলেছো তো! নারীরা যা কিছুই লেখে, সব-ই যেনো নিজের জীবনের ঘটনা। নিজেকে দিয়ে সেটা ভালো বুঝি।
তোমার ঘটনাপূর্ণ গল্পগুলোর বর্ণনা বেশ লাগলো।
এবারে পজিটিভ কিছু ভাবনা(মানে হিংস্রাত্মক ভাবনার কথা বাদ দিয়ে) ভেবে দেখো তো, কী হয়!
ভালো থেকো।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, তোর অভিজ্ঞতা থাকার কথা অনেক, কারন তুই প্রচুর লেখো।
ভালই বলেছ তো, এবার থেকে পজেটিভ ভাববো, লিখবো।
শুভ কামনা -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
Good নানা। 🌺🌺
জিসান শা ইকরাম
গুড নাতনী -{@
ছাইরাছ হেলাল
দেখবেন বেজায়গায় আবার ক্ষেপে বসবেন না যেন!!
শেষে আবার আত্মঘাতী না হয়ে যায়!!
জিসান শা ইকরাম
না, আত্মঘাতী হবেনা।
প্রচন্ড কস্ট এবং রাগ হলে এমন ক্ষেপে যাই 🙂
ইঞ্জা
ওরে বাবা, ভয়ই পেলাম ভাইজান, এতো দেখি আমার চাইতে শত গুণ বাড়া, আমারো আপনার মতোই হয় কিন্তু এমন হিংসাত্মক নয়, আমাকে এক কামেল মানুষ বলেছিলেন সাবধানে চলতে, ফলশ্রুতিতে আমি বিষয়টা যতটুকু পারি এড়িয়ে থাকি, আপনাকেও বলবো, ভাইজান, ও ভাইজান, Cool Cool, Cool.
জিসান শা ইকরাম
আপনার পরামর্শ মেনে চলবো ভাইসাব।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
(3
মাহমুদ আল মেহেদী
ঘটনাগুলো সবসময়ই ঘটেছে । সামনেও ঘটবেই । সত্যের সাথে এমনই হয়। এমনই হবে। দারুন লেগেছে ভাই লেখাটা।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
শুভ কামনা।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এটা একটা বিশেষ গুণ বলা যায় চিন্তাশক্তির প্রখরতা।x-man ছবিতে এমন চিন্তা শক্তির একটি চরিত্র ছিল সে যা ভাবে তাই তৎক্ষনাৎ ঘটে যায়।অবশ্য এর একটি ক্ষতিকর দিকও আছে।আপনার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা আর ভাবনাগুলো এক হয়ে যায় সেখানে আপনাকে মামলাও ফেলাতে পারে বিবাদী যদি আপনার ইচ্ছেগুলো সংশ্লিষ্ট ঘটনার কেউ একজন আপনার মনের ভাব বুঝতে পারেন। -{@ যাক এমন ভাবনা এবং ঘটনা যেন আর না হয়।শুভ কামনা -{@
জিসান শা ইকরাম
আমর জীবনটাই x- Files মনির ভাই।
শুভ কামনা আপনার জন্য।
মায়াবতী
ওরে বাবা ভীষণ রকনম একটা ধাক্কা খেলাম স্যার আপনার লেখা পড়ে, ভয়ে তো কিছুক্ষণ ধরে শুধু ভাবছি কি মন্তব্য করবো পাছে না জানি আপনি রেগে গিয়ে আমার বারোটা তেরো টা বাজায় দেন :D। আচ্ছা আপনার এই লেখা টি কি কল্পনাপ্রসূত নাকি বাস্তব?
জিসান শা ইকরাম
ভয় নেই মায়াবতী। যাদের মায়া খুব বেশি তাদের উপর এটি কার্যকর নয় 🙂
গল্প বিভাগে প্রকাশ করেছি মায়াবতী।
শুভ কামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
হুম ভাল লাগলো ভাইয়া। গল্পটি।
এই রকম সমরেশ মজুমদারের একটি বই পড়েছিলাম। অন্যরা যা ভাবছে নায়ক তা বুঝে ফেলছে। এবং বলে দিচ্ছে।
শুভেচ্ছা রইল।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ ভাই।
শুভ কামনা -{@
রেজওয়ান
ভাইজান কি শুনাইলেন?😰আমার উপর রাগ করবেন না কিন্তু কখনো😍ভাল থাকুন সব সময়🌹
তৌহিদ
জীবনের কিছু ঘটনার কোন অর্থ খুজে পাওয়া যায়না । আপনি রাগি প্রকৃতির মানুষ মনে হচ্ছে। কন্ট্রোল করবেন ভাইজান। সুন্দর সাবলীল লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো।
তৌহিদ
ভাইয়া পোস্টে পুর্বের লেখার লিংক কিভাবে এড করা যায়। যেমন আপনি এই লেখায় ১ ২…..৭ পর্ব এড করেছেন?
চাটিগাঁ থেকে বাহার
গল্পের মাঝে আপনি ভাবুন সোনেলার সব ব্লগার এক একজন সেলিব্রেটি হয়ে যাচ্ছেন!
সিজোফ্রেনিয়া এক ভয়ানক রোগ যেখানে রোগী ছাড়া আর সবাই পাগল!
ভালো ছিল।