রাজাকারদের প্রধান বিরুদ্ধ ঘটনা মুক্তিযুদ্ধ। তাদের ইচ্ছের প্রধান বাঁধা মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধার বিপরিত শব্দই রাজাকার। ৭১ সনে এই মুক্তিযোদ্ধাদের হাতেই প্যাঁদান খেয়েছে রাজাকাররা। স্বাধীনতার পরে যে অপমান আর নিগ্রহের মাঝে দিন যাপন করেছে রাজাকাররা তা বর্ণনার অতীত। প্রবল প্রতাপশালী রাজাকার গং ৭১ এর ডিসেম্বর হতে ৭৫ এর মধ্য আগস্ট পর্যন্ত উরাশ এর মত জীবন যাপন করেছে। রক্ত না খেয়ে বছরের পর বেঁচে থাকতে সক্ষম এই উড়াশ, এদের সাথে ১০০ ভাগ মিল এই রাজাকারদের। বেঁচে ছিল এরা সমাজের মধ্যে লুকিয়ে মধ্য আগস্ট ৭৫ পর্যন্ত। এরপর তারা আবার লেপ তোষকের মধ্য থেকে বের হয়ে এসেছে। আর লুকাতে হয়নি এদের শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কিছুদিন ব্যাতিত।
বুড়া রাজাকার যেদিন বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে এলো, তখনকার প্রজন্ম তাকে জুতাপেটা করলো। ঘৃণিত একটি শব্দ রাজাকার। কেউ কখনো বলার মত শাহস পায়নি যে সে রাজাকার। জগতের সবচেয়ে নিকৃষ্ট গালিই হয়ে উঠেছিল ‘ রাজাকার ‘।
যে প্রজন্ম বুড়া রাজাকারকে জুতা পেটা করলো সেই প্রজন্মেরই উত্তরসুরী গর্জে উঠলো গণজাগরণ মঞ্চে ” ক তে কাদের মোল্লা – তুই রাজাকার তুই রাজাকার’।
এই অপমান ভুলা যায়? যায় না। শেষ করতে হবে বাংগালীর সবচেয়ে বড় অর্জন মুক্তিযুদ্ধকে, রাজাকারদের প্রধান প্রতিপক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের বিতর্কিত করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মান ধুলায় মিটিয়ে দিতে হবে। তবেই বুড়া রাজাকারের আত্মা এবং মেঝ সেজ ছোট রাজাকারদের বিদেহী আত্মা শান্তি পাবে।
যে প্রজন্ম বুড়া রাজাকারকে জুতাপেটা করেছে, যে প্রজন্ম মা জাহানারা ইমামের সাথে ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাথে কন্ঠ মিলিয়েছে, যে প্রজন্ম শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে ঘৃণার সাথে ‘ তুই রাজাকার তুই রাজাকার’ শ্লোগানে লাখো কন্ঠে গলা মিলিয়েছে, সেই প্রজন্মের উত্তর সুরি আজ ‘ আমি রাজাকার ‘ লেখা গর্বিত রাজাকার ছানার সাথে কন্ঠ মিলায়। এর চেয়ে পরিতাপের বিষয় আর কি হতে পারে!
এই আন্দোলন আসলে ১০০% ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। রাজাকাররা যা চেয়েছে তা সফল ভাবেই সম্পন্ন করেছে, কোটা আন্দোলন বাহানা মাত্র, আসল কাজে তারা সফল হয়েছে, একটি প্রজন্মকে মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রু তারা বানাতে পেরেছে, রাজাকার বান্ধব বানাতে পেরেছে।
যদি তারা বলত ‘ আসো মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মান ধুলায় মিশাই, শ্লোগান দেই ‘ মুক্তিযোদ্ধাদের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, তবে তারা সফল হত না। কৌশলে প্রজন্মের মাঝে স্বার্থ ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, যেমন কৌশল করে সুদ মুক্ত ইসলামী ব্যাংক করা হয়, আর কোটি কোটি গ্রাহক ছোটে ইসলামী ব্যাংকে আমানত রাখতে, তেমনি কৌশল কোটা আন্দোলন।
এতে সফল হলেও রাজাকারদের লাভ, ব্যর্থ হলেও রাজাকারদের লাভ। মুল টার্গেট মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের বিতর্কিত করা, অসম্মান করা।
তাদের মাস্টারমাইন্ডের মাস্টারপ্লান সফল বলেই ধরে নেয়া যায়।
২৩টি মন্তব্য
ইঞ্জা
নাহ, কোন ভাবেই না, দরকার হলে আবার অস্ত্র হাতে নেবো আমার বাপ চাচার মতো, এই দেশ থেকে রাজাকার সমূলে উৎপাটিত করতে হবে, এরা বড়ই বাড় বেড়েছে। :@
জিসান শা ইকরাম
ইঞ্জা ভাই, বর্তমান প্রজন্মকে রাজাকারদের প্রতি সহানুভুতি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ঘৃনা তৈরী করাতে সক্ষম হয়েছে রাজাকাররা। এই পুরো প্রজন্মকেই চাকরী যাতে না পায় তার ব্যাবস্থা করা উভিত বলে আমি মনে করি। যে প্রজন্ম তার উৎসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাদের দিয়ে দেশের কোনো উপকার হবেনা।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সহমত -{@
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ মনির ভাই।
ইঞ্জা
সহমত ভাইজান, ধন্যবাদ
মারজানা ফেরদৌস রুবা
একদম। আমিও তাই মনে করি। রাজাকারের তিন প্রজন্মকে সরকারী চাকুরীতে নিষিদ্ধ করা সময়ের প্রয়োজন। এতোকাল প্রয়োজনীয়তা অনুভূত না হলেও এখন অবস্থার প্রেক্ষাপটে খুব জরুরী হয়ে পড়েছে।
জিসান শা ইকরাম
রাজাকারদের সন্তান এবং পরের প্রজন্মগুলো কখনোই তাদের পরাজয়কে মেনে নেবেনা, ছোবল তারা দিতে চাইবেই, @রুবা
মোঃ মজিবর রহমান
এই রাজাকাররা দলে বেদলে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিশে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভুল করলে চরম মুল্য দিতে হবে দেশটাকে। তবে খুব কৈশলে না এগুলে ভয়াবহ বিপদ। আর এরা সরকারেও মিশে আছে। দেশে কাউয়া আর হাইব্রিড নেতারা দেশ, সরকার, জনগণের দেখে না। স্বারথ দেখে। এরা জামাত বি এন পিরে দলে ভিড়ায় টাকার জন্ মাঝখানে প্রকৃত আওয়ামাঈ বা মুকদিযদ্বারা চলে যাচ্ছে আড়ালে। দেখুন হানিফ সাহেব এলাকায় রাস্তাঘাট ব্যাবহারে একেবারেই অযোগ্য। অথচ ইনু সাহেব যাই হোক কুশটিয়ায় মেডিক্যাল কলেজ, রাস্তা কিছু করছে। তাতেই বাঁধা দিচ্ছে এরা। হানিফ সাহেব লোক হিসেবে বা ভেড়ামারা -মিরপুরে আওয়ামীঈলিগেকে ভালই সংঘঠিত করেছিল, কিন্তু ক্ষমতায় এসে সব পাল্টায়ে গেছে। কিন্তু সে যতবোড় পোষ্ট নিয়ে ছিলো বা পেয়েছিল কুশটিয়াকে নতুন রুপে সাজাতে পারতো।
তারপর দেখুন সাবেক স্বরাস্ট্রমন্ত্রী শামসুল হক, ২০১৪ সালে নির্বাচনের পুরবেই দেশ পালাতে গিয়েছিল কিন্তু বিমান বন্দর থেকে তাঁকে ফেরত এনেছিল সরকার। অথচ প্রয়োজনে হয়ত কিছু সংস্কার চেয়েছিল সেই অধ্যাপক আবু সাঈদ বিটাড়িত। কিন্তু তিনি মন্ত্রী থাকাকালে কোন দুর্নীতি করেননি। হয়তো তাঁর অন্য কোন দোষ থাকতে পারে কিন্তু মানুষ হিসেবে ভালো।
সরপরি মনে করি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না করলে সরকারের সব অর্জন ব্রিথা হবে। অনেক আওয়ামীলিগ ফ্যামিলি মার খাচ্ছে সরকারের কিছু হাইব্রিড নেতার জন্য মার খাওয়া ব্যাক্তিরা ভোট কেন্দ্রে যাবে!!! যাবেনা। আবার জামাত বি এন পির যে হাইব্রিড আওয়ামিইলিগ কিন্তু নৈকায় ভোট দেবেনা।
জিসান শা ইকরাম
একমত আপনার সাথে। যে দলেরই হোক, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধাচরন করলে তার বিরুদ্ধে আছি, থাকব আমি।
মোঃ মজিবর রহমান
হ্যাঁ বিরোধিতা করতে গেলে কছুটা সরকারের সাথেই করা লাগবে। হামীম গ্রুপের আজাদ সাহেব যখন মোসাররফ সাহেব র ইলেকশন করল তখন আজাদ সাহেব ভালো কিন্তু যখন নিজে ইলেকশন করতে যাওয়ার সিরধান্ত নিল তখন লাঠি পেটা করে বের করে দিল। ঢাকা শহরে শুধুমাত্র আজাদ সাহেব র বাড়ীটি নকশ বহির্ভূত তাই ভাঙ্গা হল, হাই সেলুকাশ। জানিনা অনার আর কি কি দোষ আছে।
যে সরষের তেলে ভুত তাড়াবেন সেখানেই গলদ।
আর হ্যাঁ জাহানারা ইমামের মত যদি আলাদা ভাবে লাগেন আছি।
জিসান শা ইকরাম
গলদ তো আছেই সর্বত্র, এর মধ্যে কম গলদ কোথায় তা খুঁজে নিতে হবে।
ছাইরাছ হেলাল
প্রবল ভাবে পরাজিতরা ফিরতে চাইবে যেনতেন প্রকারে এটিই স্বাভাবিক।
আমরা কতটুকু সৎ-সততা রক্ষা করে নিজেদের দুর্ভেদ্য রাখতে পারছি সেটাই আসল প্রশ্ন।
জিসান শা ইকরাম
অস্তিত্ব রক্ষার জন্য তারা ফিরতে চাইবেই, নিশ্চিহ্ন হতে কে চায়?
আমরা নিজেদের দুর্ভেদ্য রাখতে পারছি না বলেই সমস্যাটার মূল উৎপাটন করা সম্ভব হচ্ছে না।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
তাদের মাষ্টারমাইন প্লান মুক্তিযুদ্ধের পর পরই শুরু হয় যা বঙ্গবন্ধুর সপরিবারকে হত্যার মাধ্যমে শুরু করে এরপরই বন্ধ করে কোটা পদ্ধতি যা বঙ্গবন্ধু তৈরী করেছিলেন।মুক্তিযুদ্ধারাই মুক্তিযুদ্ধদের শত্রু হয় যেখানে থাকে ক্ষমতার লোভ।লোভী ক্ষমতাবানরা রাজাকারদের রাজনিতী করার সুযোগ দেন এ সুযোগে তারা তাদের বীজ বপণ করতে থাকে যা খালেদার আমলে তাদের রাষ্ট্রীয় সিংহাসনে বসান।তাদের ভীত আরো মজবুত হয়।বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং রাজাকারদের বিচার না হওয়া এ দীর্ঘকালে তাদের নাতিপুতিও এ দেশের জন্মগত নাগরিক হয়।রাজাকারদের বংশ বৃদ্ধি হয় পক্ষান্তরে জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রীয় অবহেলায় পথে ঘাটে মাইর খায়।সুতরাং এ দেশে প্রকাশ্যের চেয়ে গোপনে রাজাকারী মনোভাবটাই বেশী।বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা দেখছি তাতে আরেকটি রাজাকার বংশ নিধন সংগ্রামের কার্যকারীতা না হলে আমাদের ভবিষৎ অন্ধকার।আর এ কাজটি এ সরকারকেই করতে হবে কেননা এ সরকার ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বান্ধব আর কোন রাজনৈতীক দলকেতো তেমন দেখছি না।
ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
খুব সংক্ষেপে আপনি মন্তব্যের মাধ্যমে সমস্যার মূল দেখিয়ে দিয়েছেন,
ধন্যবাদ মনির ভাই।
মৌনতা রিতু
বিভৎস যা তা সব সময়ই বিভৎস।
আমি অনেক কিছু আসলে বুঝে উঠতে পারি না। আমার মাথায় অনেক কিছু আসে না।
জিসান শা ইকরাম
বুঝে যাবে খুব দ্রুত, সময় আসতেছে।
শুন্য শুন্যালয়
এ দেশের স্বাধীনতার আসলে দরকারই ছিলোনা।
রাজাকারের উত্তরাধিকারীরা শক্তিশালী হয়েছে অথচ আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের আদর্শ ঠিক রাখতে পারিনি। সবটাই ফেইলড..
জিসান শা ইকরাম
একমত আপনার সাথে।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি বহুধাবিভক্ত,
দেশের ভবিস্যৎ নিতে চিন্তিত চিন্তাশীল মানুষ।
তৌহিদ ইসলাম
রাজাকারদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা সেদিনই বন্ধ হয়ে যেত যদি তাদের ক্ষমা না করা হত। তাদের চিহ্নিত করে তাদের উত্তরসূরিদের সরকারি সুযোগ সুবিধা চাকরী সব বন্ধ করা হোক। আমরা যদি তাদের ক্ষমতায় না বসাতাম এসব কিছুই হতোনা। দেশের পতাকাবাহী গাড়ি নিয়ে দাপটে চলাচল করেছে রাস্তায়। তাদেরকে নিজের স্বার্থের জন্য বুকে টেনে নিয়েছিল বা নিয়েছে যারা তাদেরকেও অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা উচিত। এরা এখন নাম ভোল সব পাল্টিয়ে অন্য নামে সংগঠন চালু করে সাধারন মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। এর কুফল জাতি অচিরেই দেখতে পারবে।
জিসান শা ইকরাম
সঠিক মতামত প্রদানের জন্য ধন্যবাদ ভাই
নীলাঞ্জনা নীলা
আমরা স্বাধীনতা খুব সহজে পেয়েছি। নয় মাসের জায়গায় যদি ১৯ বছর লাগতো, তাহলেই স্বাধীনতার মর্ম বুঝতাম।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা খুব অল্প সময়ে স্বাধীনতা পাওয়ায় এর মর্ম বুঝিনি আমরা।