দুপুর ১ টার দিকে ড্রাইভার আমাদের নামিয়ে দিলো ইন্ডিয়ান মার্কেটে। ওমা এ দেখি আমাদের নিউমার্কেট/চাঁদনি চকের মত। স্যান্ডেল, হিজাব, ব্যাগ, ঘড়ি, জুয়ালরি ইত্যাদি ইত্যাদি জিনিস দিয়ে ছোট ছোট পলিথিন পার্টিশনের দোকান সাজানো। কিন্ত কিছুই ভালো লাগলো না। এর থেকে ঢেড় ভালো জিনিস আরো কম দামে পাওয়া যায় আমাদের নিউমার্কেটে। কর্তাকে বললাম কিছু কিনবো না, চলো খেয়ে নেই। এদিক ওদিক ঘুরতে ঘুরতে ক্ষুধায় অবস্থা খারাপ। কোথায় খাবো বুঝতে পারছি না। কর্তাকে বললাম কাউকে জিজ্ঞেস করতে, সে জিজ্ঞেস করবে না। আমিতো অস্থির। শরীরটাও খারাপ লাগছে। তো আমিই একজন মহিলাকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিলাম আশেপাশে কোনো খাবার হোটেল আছে কি না। উনি পাশে “প্রেসিডেন্ট হোটেল” নামে একটি মুসলিম হোটেলের নাম বললেন। হেটে হেটে চলে গেলাম সেখানে। গিয়ে অর্ডার দিলাম গরুর গোশত, ডাল, সবজি আর ভাত। কিন্ত কি যন্ত্রণা, বসে আছি, বসে আছি, ওয়েটার ভাত দিয়ে গেলো কিন্ত বাকি আইটেম কিছু দেয় না। পরে বুঝলাম বুফের মত নিজে গিয়ে প্লেটে সব উঠিয়ে আনতে হবে। সবকিছু প্লেটে নিয়ে বসার কিছুক্ষণ পর দেখি সেই ওয়েটার এসে উঁকি দিয়ে প্লেট দেখে হাতের চিরকুটে আইটেম টুকে নিচ্ছে। ওমা এ কোন সিস্টেম? খাওয়ার মধ্যে উঁকিঝুঁকি!!! দেখি আমাদেরটা শেষ করে পাশের টেবিলে গেলো। বুঝলাম এই চিরকুট দেখেই এখন সে বিল করবে। ভাবলাম, কত সিস্টেম আছে দুনিয়ায়!!!! এদিকে শুধু খাবার নাড়াচাড়া করছি। শরীর খারাপ লাগায় আর রান্নাটা ঠিক ভালো না লাগায় খেতে পারছি না কিছু। জোর করে একটু খেয়ে পুরো প্লেট রেখে উঠলাম। ওদিকে দেখি কর্তা কঠিন চোখে তাকাচ্ছে আমার দিকে। এ তাকানোর অর্থ “এত্তগুলা খাবার নষ্ট করলা ক্যান?” আমি সেদিকে আর নজর না দিয়ে হাত ধুয়ে এসে বসলাম। ওর খাওয়া শেষে বিল মিটিয়ে বের হলাম সেখান থেকে। উনি জিজ্ঞেস করলেন চায়না টাউন যাবো কি না। মানা করলাম। বললাম চলো মাইদিন মার্কেটে। হেঁটে হেঁটে চলে গেলাম সেখানে। ৪তলা মার্কেট। একেকতলায় একেক ধরণের জিনিসপাতি সাজানো। আমাদের দেশের শপিং মলগুলোর মতই। কাছের কিছু মানুষের জন্য ছোট ছোট কিছু গিফট কিনলাম। এখানেই বিকেল হয়ে গেলো। তাড়া দিলাম যে একুরিয়াম দেখতে যেতে হবে। সেখান থেকে বেড়িয়ে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা চলে গেলাম Aquiaria KLCC তে। দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখি টিকিট কাউন্টারে ৩ সুন্দরি ললনা বসে আছেন মুখে হাসি ঝুলিয়ে। টিকিটের দাম জিজ্ঞেস করতেই গলা শুকিয়ে গেলো। নেটে যা দেখে গিয়েছিলাম, বলছে তার ডাবল। একেকজনের টিকিট বাংলাদেশি টাকায় পড়বে ১৪০০ টাকার মত। কিন্ত কি ব্যাপার? জিজ্ঞেস করতে বললো যে মালয়েশিয়ান নাগরিকদের জন্য কম, বিদেশিদের জন্য বেশি। শুনে আর কি করা, আমি চুপ। দেখি কর্তা টিকিট কাটছে। আমিতো মহা খুশি। কারণ এই একুরিয়াম দেখার খুব শখ ছিলো আমার। কর্তাকে থ্যাংকিউ বলে নির্দেশিত পথে হাটা দিলাম। ভেতরে ঢুকেই একটা ধাক্কা খেলাম। কি রে বাবা, সেই বিশাল এক্যুরিয়াম কই? যার ভেতর দিয়ে মানুষ হাঁটে। এতো দেয়াল কেটে কেটে ছোট ছোট এক্যুরিয়াম বানিয়ে সাজিয়ে রেখেছে।
আর তাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে রঙ বেরঙের ছোট মাছ। এই দেখানোর জন্য এত্তগুলা টাকা নিলো? ঘুড়ছি আর ভাবছি, এসব গুড়া মাছতো দেশের পুকুরেও আছে, কয়েকটা হয়তো বিদেশি মাছ! কিন্ত তাতে কি? মন খারাপ করে তাই দেখে যেতে লাগলাম। কিছুক্ষণ হেটেই দেখি দরজায় লেখা “KELUAR” মানে EXIT. কিরে বাবা, এত তাড়াতাড়ি শেষ? এই দেখানোর জন্য এত ভঙ্গী? মন আরো খারাপ হচ্ছে টাকার শোকে। কর্তাতো বের হয়ে নিশ্চয়ই একচোট নেবে। দরজা খুলে দেখি, না, এ আরেক রকম এরিয়া। এতে মাছ ছাড়া বিভিন্ন ধরণের জলজপ্রাণী রাখা এক্যুরিয়ামে।
এই এক্যুরিয়ামগুলোর সাইজ আগেরগুলোর থেকে কিছুটা বড়। যাক মনকে স্বান্তনা দিলাম শেষ হয়নি বলে। হাটছি, দেখছি দেয়ালের সব রঙ বেরঙের একুরিয়াম। একটা এক্যুরিয়াম এ এসে চোখ আটকে গেলো। দেখলাম ভেতরে রাখা গাছের ডালে একটা টিয়া রঙের প্লাস্টিকের সাপ বসানো।
যদিও সাপ দেখলে আমার গা ঘিন ঘিন করে তবুও আমি দেখছিলাম। কারণ সাপটা সত্যিই অনেক সুন্দর ছিলো। ওর কিছু ছবি তুললাম। এর মধ্যে আমার কর্তা বলছে, “সাপটা জ্যান্ত।” আমি বলছি, “কিসের জ্যান্ট? এ তো প্লাস্টিকের সাপ।” কথা বলতে বলতে কাঁচের খুব কাছে গিয়ে যেই বুঝার চেষ্টা করছি আসলে ওটা কি, ওমনিই উনি ঘুম ভেঙে নড়ে উঠলেন। আমিতো এক চিৎকার আর লাফ দিয়ে সরে গিয়ে হাঁপাতে থাকলাম। বাপরে বাপ, কি ভয় যে পেয়েছিলাম তখন। এদিকে কর্তার মুখে বিজয়ীর হাসি। যা হোক একটু স্বাভাবিক হয়ে আবার হাটছি। এবার আর কোনো এক্যুরিয়ামের খুব কাছে যাচ্ছি না। এভাবে হেটে হেটে দেখি আবার এক্সিট লেখা। আবার মন খারাপ হলো। শেষ! শেষ ভেবে ঢুকতেই দেখি এই তো আরেক জায়গা! কি বিশাল বিশাল সুইমিংপুল সাইজের এক্যুরিয়াম একেকটা।
কত্ত ধরণের মাছ ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেক পর্যটকেরা একেকটা একুরিয়াম ঘিরে আছে, ছবি তুলছে। আমিও ছবি তোলা শুরু করে দিলাম। একটা ছাদ পর্যন্ত লম্বা এক্যুরিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে ১ টা ছবি তুলতে চাইলাম। কর্তা আর তুলতেই পারলো না। যা তুললো তা দেখে মোবাইল ছুড়ে মারতে ইচ্ছে হয়েছিলো। রাগে, দু:ক্ষে আমরা দুজন আলাদা আলাদা এক্যুরিয়াম দেখা শুরু করলাম।
আমার মেজাজ খুব খারাপ হয়ে আছে। এমন সময় শুনলা মাইক্রোফোনে কেউ কিছু বলছে আর সাথে উল্লাসধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ফিরে দেখি একটা বড় একুরিয়াম এ মাছেদের খাবার দেয়া হচ্ছে। মাছ কেটে কেটে একটা লাঠির ডগায় পানিতে ধরলে ওরা খেয়ে নিচ্ছে। সবথেকে ইন্টারেস্টিং লাগলো Manta Ray এর খাবার খাওয়া। লাঠি পানিতে ধরলেই ওরা লাফিয়ে এসে খেয়ে নিচ্ছে। এভাবে লবস্টার সহ অন্যান্য মাছেদেরও খাওয়ানো শেষ হলে আবার সবাই যার যার মত এক্যুরিয়াম দেখতে লাগলাম। ঘুরছি, দেখছি, কিন্ত মন আর ভরছে না। হাটতে হাটতে আরেক দরজার সামনে এসে পড়লাম। আবার এক্সিট! উফ! এর মধ্যে ১ ঘন্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্ত দরজায় গিয়েই দেখি এইতো! এইতো সেই টানেল! খুশিতে দাঁত সব বের করে ঢুকে পড়লাম টানেলে। কি সুন্দর! কি সুন্দর! হালকা নীল আলো ঘেরা টানেলে আমি দাঁড়িয়ে আর আমার ডান, বাম মাথার উপর দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে কত রঙ বেরঙের ছোট বড় মাছ।
মেঝেতে আবার পর্যটকদের সুবিধার্থে ফ্লোর এস্কেলেটর লাগানো। পাশে হাটার জন্য জায়গাও আছে। আমই মুগ্ধ হয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছি। গুড়া মাছ, বড় মাছ, বিশাল মাছেরা কি সুন্দর রাজকীয় ভঙ্গিতে আমার চারিদিকে ভেসে বেড়াচ্ছে। বিশাল এক কচ্ছপ দেখলাম মনের সুখে ঘুরছে।
আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছি আর ছবি তুলছি। হঠাৎ খেয়াল করলাম কর্তা নেই। যাক যেদিকে খুশী। আমি আমার মত দেখতে লাগলাম। দেখতে দেখতে টানেলের অন্য পাশে গিয়ে দেখি, সেকি! সেতো পোজ দিয়ে ছবি তুলছে! আর যায় কোথায়, বললাম এখন আমারও একটা ছবি তুলে দাও। এই একখান ছবি সে মনযোগ দিয়ে তুলে দিয়েছিলো। যদিও সেটাও ঝাপসা। থাক আর কিছু বললাম না। আরও প্রায় ১ ঘন্টা লাগলো টানেলটা ঘুরে দেখতে। টানেল থেকে বের হয়ে দেখি পাশের রুমে দোকান সাজানো। বিভিন্ন ধরণের শোপিস। দাম দেখে কিছু আর কিনলাম না। যখন সেখান থেকে বের হলাম, পা আর চলে না। বের হয়ে বুঝলাম আমরা টুইন টাওয়ারের পেছন দিকে আছি। সামনেই এত সুন্দর একটি পার্ক। কত লোক ঘুরছে, কেউ হাটছে, কেউ দৌড়াচ্ছে।
এসব দেখতে দেখতে চলে গেলাম ফোয়ারা এলাকায়। তখনো সন্ধ্যা নামেনি কিন্ত ফোয়ারাগুলো নেচে চলছে। কখনো বন্ধ হচ্ছে। একটি খালি বেঞ্চ দেখে বসলাম আমরা।
বিশ্রাম দরকার। কত কত লোক যে বসে আছে সেই ফোয়ারা ঘিরে। কেউ ঘাসে, কেউ সিঁড়িতে, কেউবা বেঞ্চে। অনেকে দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি তুলছে। আমার যা অবস্থা ছবি তোলার শক্তিই আর নেই যেনো। তবুও দুয়েকটা তুলে নিলাম। সামনেই SURIA KLCC শপিং মল। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়েই হাটা শুরু করলাম সেদিকে। ভেতরে ঢুকেই মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার ভাঙিয়ে নিলাম। একটু এগিয়েই এক জায়গায় দেখলাম এক মেয়ে গান গাচ্ছে। কি যে সুন্দর কণ্ঠ তার! আমার কর্তার মত নিরস মানুষও সেখানে দাঁড়িয়ে গেলো। আমরা দোতলায় উঠার সিঁড়িতেই বসে গান শুনতে লাগলাম।
অনেকেই শুনছে, কেউ আবার সামনে রাখা ব্যাগে টাকা দিচ্ছে। ২য় গান শুনে উঠে এলাম। শরীর খারাপ, তার উপর দুপুরে খেতে পারিনি, আর যেন শরীর চলছিলো না। সেখান থেকে বেড়িয়ে আরেক ঝামেলা। বাইরে বৃষ্টি। খালি কোনো ট্যাক্সিই পাচ্ছি না। আমি বললাম, “চলো কিছু খাই, নইলে আর দাঁড়াতে পারছি না।” সে নেটে সার্চ দিয়ে বলে, “চলো সাবওয়ের বার্গার খাই।” কি আর বলবো, জঘন্য লাগলো বার্গারটা। খুব কষ্ট করে খেয়ে বের হয়ে একটা নীল রঙের ট্যাক্সি পেলাম। হোটেলে ফিরে ট্যাক্সির বিল দিতে গিয়ে দেখলাম বিল অনেক বেশি এসেছে। আমরা এ ক’দিন লাল ট্যাক্সিতে চড়েছি, আজই নীল। তারমানে এর ভাড়া বেশি। পরে অবশ্য বের করেছি যে, লাল ট্যাক্সির মিটার শুরু হয় ৩ রিঙ্গিত থেকে আর নীলের শুরু ৬ থেকে। তার উপর সেই ড্রাইভার রাস্তা ভুলে অন্য রাস্তায় ঢুকে কিছুটা ঘুরিয়ে আনায় বিল বেশি এসেছে। কর্তাকে সাবধান করলাম, নীল ট্যাক্সিতে আর নয়। হোটেলে ফিরতে ফিরতে প্ল্যান হলো, কাল বের হবো বাটু কেইভ আর শহর দেখতে। সেই মত কর্তা এজেন্টকে বলে গাড়ি ফিক্সড করে ফেললো। হোটেলে ফিরে ফ্রেস হয়েই ঘুম…..সকালে উঠেই আবার দৌড় শুরু হবে যে।
চলবে……
আগের পর্বগুলো পড়ুন:
মালয়েশিয়া ভ্রমণ কাহিনী ১/ মালয়েশিয়াতে কয়েকদিন -১
মালয়েশিয়া ভ্রমণ কাহিনী ২/ মালয়েশিয়াতে কয়েকদিন ২
মালয়েশিয়া ভ্রমণ কাহিনী ৩/ মালয়েশিয়াতে কয়েকদিন ৩
২২টি মন্তব্য
ইঞ্জা
খুব ভালো উপস্থাপন, ভ্রমন কাহিনী হলে এমনই হয়, দাদী লিখে যান, পাশে আছি।
নীহারিকা
অনেক ধন্যবাদ ভাই। আমি লেখক নই। যা ঘটেছে লিখে যাচ্ছি। কি হচ্ছে, না হচ্ছে জানিনা। 🙂
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
মনে হয় যেন মালেশিয়া ঘুরে এলাম।এর পর টার্গেট করবেন সিঙ্গাপুর।বেশ সুন্দর। -{@
নীহারিকা
অনেক ধন্যবাদ ভাই। দোয়া করবেন।
মিষ্টি জিন
আন্ডার ওয়াটার ওয়াল্ড আমি প্রথম দেখি ইন্দোনেশিয়ায়।অস্ট্রেলিয়ার আন্ডার ওয়াটার ওয়াল্ডের আদলে করা ঐটা। সিংগাপুরেরটা আমার কাছে কিছুই মনে হয়নি। মালেশিয়ারটায় আমি যাইনি। আপনার বর্ননার মাঝেই মালেশিয়ারটা দেখে নিলাম।
ছোট্ট একটা টিপস দেই বিদেশে গেলে ইমারজেন্সি খাবারের জন্য চেইন শপ গুলো বলেছেন নিবেন। বেটার হোল ম্যাগডোনাল্ড এবং কে এফ সি।
কর্তারা এমুনই হয় ছবি তুলে দেয়না হিংসায় তাগো পেট ভরা।
ভাল লিখেছেন আফা।
নীহারিকা
মালয়েশিয়ারটা খুব বড় তা মনে হয় না, তবে বড়। অন্যগুলো যেহেতু দেখিনি তাই তুলনা করতে পারছি না আপা। এবার ম্যাকডোনাল্ডস ও খেয়েছি কিন্ত কেন জানি এর চিজের গন্ধটা ভালো লাগেনি। আসলে শরীর খারাপ ছিলো তাই বোধহয় কিছুই ভালো লাগেনি জ্বীভে। আর সে ভাসুরের কথা কি বলবো। পেট ভরা যে কত হিংসা সেটা না দেখলে কেউ বুঝবে না। একটা ছবি তুলতে বলার চেয়ে মনে হয় পানিতে ঝাপ দেয়া ভালো।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপা।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার স্ট্যামিনা তো মারাত্মক, একদিনে এত ঘুরে ফেলতে পেরেছেন!!
কী সুন্দর করে তরতর করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আত্মীয়কে ভালই ভোগা দিয়েছেন মনে হচ্ছে।
বাতু কেভের অপেক্ষায় রইলাম।
নীহারিকা
ভাই, আমাদের সময় খুব অল্প ছিলো। তাই শপিং/রেস্টের চেয়ে স্পট দেখার দিকেই মনযোগ দিয়েছিলাম। গাইড, ড্রাইভার এবং এজেন্টদের জিজ্ঞেস করে করে স্পট সিলেক্ট করে নিয়েছিলাম। যখনই ফ্রি হয়েছি তখুনি চলে গিয়েছি বিভিন্ন স্পটে। তবে আপনার আত্নীয় যে আমাকে কি জ্বালানো জ্বালাইয়েছে তা বলতে গেলেও কয়েক পর্ব হয়ে যাবে। সে অনেক আরামেই ছিলো।
আচ্ছা, বাটু কেভ নাকি বাতু কেভ? ওরা অবশ্য ‘ট’ কে ‘ত’ উচ্চারণ করে। তাহলে পরের পর্বে কি লিখবো ‘বাতু’ না ‘বাটু’?
ছাইরাছ হেলাল
ভুল বা সঠিক বুঝি না,
আমি লিখলে ‘বাতু’ লিখতেই সাচ্ছন্দ্য বোধ করব।
চালু থাকুক।
নীলাঞ্জনা নীলা
উফ বাটু কেভ! দেখার বড়ো ইচ্ছে।
আপু ভ্রমণ কাহিনী খুউব ভালো লিখছেন আপনি। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো যেনো সবকিছু চোখের সামনেই।
এমন এক্যুরিয়াম দেখেছি জাপান ও দুবাইয়ে। জাপানেরটা কি যে দারুণ! ইয়োকোহামার হাক্কেজিমা সি প্যারাডাইস দেখার মতো। ৩ বার গিয়েছিলাম। আর দুবাইয়েরটাও ফাটাফাটি। মনে হচ্ছিলো মহাসাগরের মধ্যে দিয়ে হেটে যাচ্ছি।
পরের পর্ব তাড়াতাড়ি চাই আপু।
নীহারিকা
বাটু কেভ দেখার ইচ্ছে নিশ্চয়ি একদিন পুরণ হবে। আমার ইচ্ছে ছিলো খুব। আমার উনিতো কিছুই বলেন না। এজেন্ট গাইড যেদিকে বলে সেদিকেই যায়। আমিই জোর করে বলেছিলাম যা এই স্পট দেখতেই হবে। আবার গ্রন্টিং হাইল্যান্ড যাবার পথে দেখলাম শহরের খুব কাছেই, মাত্র ১০ মিনিটের পথ। তখুনি কর্তাকে বলেছিলাম ম্যানেজ করতে। এইতো পরের পর্বেই আসছে সে জায়গার কথা। আশাকরি ভালো লাগবে। আর এক্যুরিয়াম দেখার জেদটাও আমারই ছিলো। ইচ্ছে পুরণ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দিন।
নীহারিকা
তাড়াতাড়িই আসবে 🙂
শুন্য শুন্যালয়
সাবওয়ের বার্গার আমার পছন্দের। আপনি বেশি বেশি ঘুরে ক্লান্ত ছিলেন।
একুরিয়ামের ভেতর ঢুকলে আর বের হতে ইচ্ছে করেনা। মানুষ কতো বিচিত্র মনের হতে পারে, সৌন্দর্য্যের সবটুকু তারা চেটেপুটে নিত্ব জানে।
মালয়েশিয়া গিয়ে আর কী হবে আপু? সবতো আপনি দেখিয়েই দিলেন আমাদের 🙂
ভ্রমণ কাহিনী একেই বলে, সবাই শিখুক।
নীহারিকা
শরীর খারাপ ছিলো বলেই হয়তো কোনো খাবারই ভালো লাগছিলো না। আর কি বলবো, তাড়াতাড়ি দেখেও দু’ঘন্টা পার। ভালো ভাবে দেখতেই পাররলাম না 🙁 হ্যা, মালয়েশিয়া গিয়ে আর কাজ নেই। নতুন কোথাও গিয়ে লিখে ফেলো তাতে আমাদেরও দেখা হয়ে যাবে।
আরে কি বললা? এইটা আবার শেখার মত কোনো লেখা নাকি? লেখকরা কইলাম সুইসাইড করবে।
মোঃ মজিবর রহমান
খুব গুছিয়ে লিখতে পারেন। ভ্রন করি কম বেশি লিখতে পারিনা।
একুরিয়াম দখলাম।
নীহারিকা
আপনার মত লেখক যদি বলেন পারি না সেটা মোটেই ঠিক না। শুরু করুন দেখি…….
মৌনতা রিতু
আমি তো এতো হাঁটতেই পারি না। কি হবে আমার!
তবে মার্কেট ঘুরতে পারি😝 খাবারের মধ্যে উঁকিঝুকি দিয়ে বিল করে! বলতে পারলেন না, সব খাইনি। যা বেঁচে গেছে নিয়ে যাও।
ছবি তোলার ব্যপারে সবাই আনাড়ি।
আগের পর্বগুলো পড়তে হবে। একুরিয়াম ঘুরে খুব ভাল লাগলো। তবে সত্যি, সাপ দেখলে আমার গা শিরশির করে। দেখতে পারি না। বর্ণনা বেশ লাগছে। চোখের সামনেই মনে হচ্ছে ভেসে উঠছে।
চলুক,,,,,
নীহারিকা
আমি আবার উল্টো, শপিং আমার পছন্দ নয় আর কেনাকাটার জন্য ঘুরাঘুরিও অসহ্য। পারলে ১/২ দোকান থেকে সব নিয়ে চলে আসি। তবে অন্য জায়গায় আমি খুব হাটতে পারি। সেদিন অবশ্য অনেক বেশি টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিলাম। পাশে থাকবেন, আরো মজার মজার পর্ব আসছে।
জিসান শা ইকরাম
মালয়েশিয়ায় অনেক বার গিয়েছি কিন্তু Aquiaria KLCC দেখা হয়নি এখন পর্যন্ত, আর আপনি একবার গিয়েই দেখে ফেললেন?
হোটেলে ওদের খাবার বিলের পদ্ধতিটা আমার বেশ লাগে, যে যতটা নেবে তার উপর বিল। তা বাংলাদেশী, ভারতীয় যে হোটেলই হোক না কেন।
ভ্রমন কাহিনীর লেখা গুলো চমৎকার হচ্ছে। আপনি আগে শেষ করুন, আমি শুরু করবো ভাবছি।
নীহারিকা
মালয়েশিয়ায় একবারই গিয়েছি এবং জীবনে আর কখনো যাওয়া হবে কি না জানিনা। কারণ আমাদের মত স্বল্প আয়ের লোকজনের জন্য বিদেশ ভ্রমণ একরকম বিলাসিতাই বলা যায়। তাই সাধ্যের মধ্যে যা পেয়েছি দেখে এসেছি। আপনি তো যখন ইচ্ছে যেতে পারেন তাই হয়তো তেমন আগ্রহ অনুভব করেননি। এরপর মালয়েশিয়ায় গেলে এই জায়গাটায় গিয়ে দেখতে পারেন, আশাকরি ভালো লাগবে। আপনার মত একজন পরিব্রাজক ও পাকা লেখক যদি ভ্রমণ কাহিনি লিখেন তা নিঃসন্দেহে খুব উঁচুমানের হবে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।