মেয়েটি বললো- আমাদের ভালোবাসা তালা দিয়ে আঁটকে রাখবো, আর তালার চাবি থাকবে আমার কাছে।
আমি- চাবি শুধু তোমার কাছে থাকবে কেন?
মেয়েটি- ভালবাসা দরজা খুলে চলে যেতে না পারে। আমাদের বিয়ের পরে সে যেন চলে যেতে না পারে। ভালোবাসা নিয়ন্ত্রণ করবো কেবল আমিই।
আমি- তুমি যদি চলে যাও? চাবি যদি হারিয়ে ফেলো?
মেয়েটি- আমি চলে যাবো না, আর চাবি কেন হারাবে? হারাতে দেবো না।
আমি- এতটা নিশ্চিত তুমি?
মেয়েটি- হ্যাঁ
একটি মেয়ের ভালোবাসা তালা দিয়ে আঁটকে রাখার দৃশ্যমান প্রতীকী কর্মকাণ্ড একটি। কি পরিমান তালা ঝুলে আছে এখানে তা বলা কঠিন। প্রতিদিন শতশত তালা ঝুলছে এখানে। যারা তালা দিচ্ছে তার প্রায় ৯৫% মেয়ে। মেয়েরা ভালোবাসায় অনেক বেশী নিবেদিত এবং আন্তরিক ছেলেদের তুলনায় এটি এই তালা ঝুলানোতে কি প্রমাণ হয় ?
দূর থেকে ভেবেছিলাম বিভিন্ন রঙের কিছু দিয়ে কৃত্রিম গাছ জাতীয় কিছু একটা। এমন গাছ আছে পাশাপাশি চারটি। কাছে গিয়ে দেখতে তো চোখ ইয়া বড়। হাজার হাজার তালা। একটির সাথে আর একটি তালা দেয়া। তালা ফল যেন। ফটো সেশন করলাম বিভিন্ন ভঙ্গিতে। একজন কোরীয়ান বললো এখানে আর কি দেখো টাওয়ারের অন্য দিকে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখো।
উপরে উঠে তো ভিমরি খাওয়ার মত অবস্থা। এ কোথায় আসলাম? রেলিং এর রডের সাথে প্রথমে কেউ একটি তালা ঝুলিয়েছে। এরপর তালার উপর তালা। কত টন তালা হবে এখানে? হুজুগে লোক শুধু বাংলাদেশেই নেই, পৃথিবীর সব দেশেই আছে। মেলবোর্নে দেখেছি একটি ব্রীজের রেলিং এ এমন তালা ঝুলানো। কিন্তু অন্য সব দেশের ভালোবাসার তালা আটকানো কোরিয়দের কাছে পরাজিত হবে নিশ্চিত।
দক্ষিন কোরিয়ার ‘শিউল টাওয়ার’ এর ভালোবাসার তালার কাহিনী এটি। প্রতিদিন ভালোবাসার তালা আটকানোর জন্য মানুষ আসে এখানে। বিশ্বাস হোক বা ফান হোক মানুষের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা অটুট থাকুক এই কামনা করি। ভালোবাসা আসলেই অনেক কিউট।
শিউল টাওয়ার
দক্ষিন কোরিয়া
৩৬টি মন্তব্য
মিষ্টি জিন
সংস্কার বা কুসংসকার যাই হোক না কেন বিশ্বাস হোল আসল.. এই ভালবাসার তালা অনেকটা সেই রকম.. পৃথিবির সবার ভালবাসা অটুট এবং ভাল থাকুক..
জিসান শা ইকরাম
” সংস্কার বা কুসংসকার যাই হোক না কেন বিশ্বাস হোল আসল.. ” ভালো বলেছেন, একমত আপনার সাথে।
ধন্যবাদ আপনাকে সোনেলায় আপনার প্রথম মন্তব্যের জন্য,
নিজে লেখুন, অন্যের লেখা পড়ুন।
শুভ কামনা ।
আবু খায়ের আনিছ
হুজুগে হোর আর যাইহোক, ভালোবেসেই করছে এই সব। সত্যিই মানুষ ভালোবাসার জন্য কত কিছুই করতে পারে।
শুভ কামনা ভাইয়া, আপনার বিদেশ ভ্রমনের সব জানতে চাই।
জিসান শা ইকরাম
এসব দেখে আনন্দ পেয়েছি খুব, সাথে সাথে ভালোও লেগেছে।
ধীরে ধীরে দিতে হবে ভাবছি 🙂
আবু খায়ের আনিছ
ধীরে ধীরে নিজের ভেতরে সব গুছিয়ে এনে লিখা শুরু করুন। আপনার সাথে সাথে আমরাও লেখা পড়ার মাধ্যমে কোরিয়া ঘুরে আসি।
জিসান শা ইকরাম
হুম, লিখবো যতটা পারা যায়।
ইনজা
দারুণ অভিজ্ঞতা হোল আপনার, কোরিয়া যাওয়ার আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানবেন, শুভ হোক আপনার এই যাত্রা এই কামনা। 🙂
জিসান শা ইকরাম
মানুষের বিনয় কাহাকে বলে তা কোরিয়ায় না আসলে জানা হবেনা কারো।
শুভ কামনা রাশি রাশি।
মৌনতা রিতু
আপনি কি ঝুলিয়েছেন তালা ? এ এক আনন্দের ঝলক। সত্যি ভালোবাসার কি প্রকাশ!
জিসান শা ইকরাম
আমি ঝুলাইনি, তবে মনে মনে বলেছি, এই সব তালা আমার, সবার ভালোবাসার মঙ্গলের জন্য এই তালা আমারই তালা।
রিমি রুম্মান
এই জায়গাটা একবার দেখিবার সাধ ! লেখাটি পড়ে সে সাধ আরও কয়েকগুন বেড়ে গেলো ।
জিসান শা ইকরাম
একবার আসুন, দেখলে মন প্রান জুড়িয়ে যাবে। দুইটা হার্টের ফটো দিয়েছি আগে ফেইসবুকে।
স্থানটি সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ৫০০ মিটার উঁচু, এখান থেকে সিউল শহর দেখা যায়।
এটিই শিউল টাওয়ার।
আরো লেখা দেয়ার ইচ্ছে আছে কিছু ফটো দিয়ে এই স্থানের উপর।
স্বপ্ন নীলা
ভালবাসা তালা হয়ে ঝুলে থাক, ভালবাসার তালাগুলো মানুষের মনে ভালবাসা পরশ বুলিয়ে দিক—– আপনি এত সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন যে যখন পড়ছিলাম তখন মনে হয় তালাগুলো দেখতে পাচ্ছি==== শুভকামনা প্রিয় লেখককে
জিসান শা ইকরাম
আপনি কিন্তু আমার প্রিয় লেখক, লেখা না দিয়ে বঞ্চিত করছেন আমাকে, আমাদেরকে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে, শুভকামনা -{@
ইকবাল কবীর
সব দেশেই হয়ত ভালোবাসার কিছু পাগলামি থাকে, তবে ভালোবাসার পাগলামি যায়েজ বলা যায়। ভাল থাকুন সব সময়।
জিসান শা ইকরাম
এসব পাগলামিই ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
নাসির সারওয়ার
অবাক হবার মতোই কান্ড। তারপরও ভালোবাসা বলে কথা।
অনেক আবেগের ছড়াছড়ি লেখায়। অপূর্নতার লিষ্টে যোগ করলাম।
জিসান শা ইকরাম
আবেগ আর দিতে পারলাম কোথায়? দৌড়ের উপ্রে লেখা, আবেগ নাই 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সত্যিই কি বিচিত্র মানুষের মন। -{@ (y)
জিসান শা ইকরাম
এমন দৃশ্য দেখে আমারই মন ভাল হয়ে গিয়েছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আহা! আমি যদি একখান তালা ঝুলিয়ে দিতে পারতাম!!! হাহাহা…..
তবে হ্যাঁ, মানুষের এই আবেগকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু বর্তমানের এই যান্ত্রিক বিশ্বে মানুষগুলো কেমন যেনো যন্ত্রের মতো। প্রেমকে কেন্দ্র করে আবেগ-অনুভূতি এখন গৌণ, জৈবিক চাহিদাটাই যেনো মূখ্য।
জিসান শা ইকরাম
আপনি যে কোন ব্রীজের রেলিং এ প্রথম তালা ঝুলিয়ে এটি শুরু করতে পারেন আমাদের দেশে 🙂
ভালোবাসার আবেগ কমে গিয়েছে আমাদের মাঝ হতে।
মোঃ মজিবর রহমান
বিশ্বাসেই ভালবাসা লুকায়িত হৃদয় গহীনে।
তাই যেভাবেই চাই না কেন ভালবাসা গ্রথিত থাক হৃদয় মন্দিরে।
তাঁদের বিশ্বাসই তাঁদের ভালবাসা
।
মাঝখানে নিয়েছেন যে ঠাই
হারাবে না ভালবাসা সেথাই।
জিসান শা ইকরাম
বাহ!
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
সকাল স্বপ্ন
সকালের সপ্ন সে একটা তালা ঝুলাতে চায় সব বন্ধুদের নাম নিয়ে —-
বন্দুর ভালোবাসা উত্তম ভালোবাসা—-
সেটা যে কারো সাথে হতে পারে ,
তাই সেই তালার ভালোবাসার শুভেচ্ছা জিসান মামাদের
জিসান শা ইকরাম
সকাল স্বপ্ন ঝুলিয়ে দিক সে তালা 🙂
খসড়া
সত্যি কইরা কঞ্চান দেহি আপনে কার লাগি তালা চাবি মারছেন। আমি ভাবিরে কব না।
জিসান শা ইকরাম
মোপাইলের যুগ অহন, কোন মোপাইল দিয়ে আপনার ভাবিকে জানাইয়া দেন, বিশ্বাস নাই।
দেয়ালেরও কান আছে 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
ও নানা আমার হয়ে একটা ভালুবাসার তাল্লা লাগিয়ে এলে না কেন? তুমিও তোমার জন্য একটা তালা মেরে আসতে। ভালুবাসা কতো দামী দেখোনা? ভালুবাসার মানুষের জন্য যে কোনো সম্পর্ক ছিঁড়ে ফেলে, আর তুমি একটা তাল্লা মেরে আসলে না?
তুমি যে কি নানা, ধুত্তোর! :@
জিসান শা ইকরাম
একজনেরটা অন্যে লাগালে হবে না, যার তালা তাঁর নিজে লাগাতে হয়।
আগে জানতামনা যে এখানে তালা মারা হয়, তাহলে ঠিকই তালা নিয়ে যেতাম 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা এতো ব্যস্ততা কি নিয়ে?
ধুত্তোর ভালো লাগে না আসোনা কেন?
শোনো টিকেট পাঠাও তালা মেরে আসি। 😀
জিসান শা ইকরাম
কেনাডার নাগরিকদের দক্ষিন কোরিয়ায় ভিসা কি লাগে?
শুন্য শুন্যালয়
তাও ভালো, প্রেমিক প্রেমিকাকে ধইরা তালা মেরে রাখলে তো মহা মসিবত হইতো। :p
ভালোবাসাকে ঘিরে মানুষের কত পাগলামী। বেঁচে থাকুক ভালোবাসা।
ইয়ে কয়টা তালা ঝুলাইছিলেন?
;?
জিসান শা ইকরাম
মহা মুসিবত কেন? সবাই জানতো যে এরা প্রেমিক প্রেমিকা 🙂
বেঁচে থাকুক ভালবাসা।
একটাও না, আগে জানলে অবশ্যই তালা ঝুলাতাম, যাকে ভালবাসি তাঁর নাম দিয়ে।
শুন্য শুন্যালয়
আহা, বোঝেন নাইতো। ধরেন, আমি যদি আমার ভালোবাসা অই রেলিঙে তালা না মেরে, আমার প্রেমিকরেই আমার সাথে তালা মেরে বেন্ধে রাখি!! দুইদিনেই ভাগবে 🙁 আজকাল সবার মন উড়ূ উড়ূ 🙁
কামাল উদ্দিন
এমনটি আমি মালয়েশিয়ায় দেখেছি, তবে এতো বেশী তালা ওখানে ছিল না