তিরি-রিনী-অহম-পিউ-প্রিয়-প্রাঞ্জল কথোপকথন :
তিরি – দেখলি কি আবার ভাব নিয়ে বলা একটু হেল্প করতে পারবেন? ডেকে নিয়েও গেলো। উফ!
রিনী – কি হলো?
তিরি – আর কি ছাগলটার ফুলটুসী লাত্থি দিলো।আরে ওটার বিপক্ষে কিছু বললেই হলো।
রিনী – হাহাহাহাহাহা…ও মাই গড।
অহম – মিস পিউ কিছু বুঝছেন?
পিউ – না।
অহম – আমাকে বকতে গেছে ফুলটুসী দিয়েছে লাত্থি। আমি একেবারে সিওর।
পিউ – কি যে সব বলেন না।
অহম – লজ্জ্বা পাচ্ছেন? মাতৃত্ত্বে কখনো কোনোদিন লজ্জ্বা পাবেন না। আপনারা দেবী মিস পিউ।
পিউ – একটু দেখে আসি।
অহম – ফিরে এসে জানান।
তিরি – আর হাসাস না আমায়, প্লিজ।হাঁপিয়ে গেছি।
রিনী – অহমের ভালোই ভক্ত হয়েছে, শুনলে এমন দেয়া দেবে…
পিউ – রিনী আপু রান্না শেষ। কি হয়েছে এতো হাসি?
তিরি – অহম কি তোমায় পাঠিয়েছে খবর নিতে?
পিউ – বুঝলাম না।
রিনী – আর ছাড়ো তো পিউ, তুমি বরং এখানে বসো। আমি দেখে আসছি।
পিউ – তিরি আপু তুমি কি আমার উপর কোনো কারণে বিরক্ত? যদি এমন কিছু করে থাকি, যার জন্যে তোমার মনে কষ্ট হচ্ছে ক্ষমা করে দিও প্লিজ। তিরি – আরে না। এ সময়ে মন অনেক এলোমেলো থাকে।
অহম – কি অবস্থা? তুই কেন, পিউ কোথায়?
রিনী – আর হয়েছে পিউ, পিউ। কি শুরু করেছিস তুই বলতো?
অহম – আমি কি করলাম? তোরা দুজনেই তো পিউ মালা জপে গেছিস প্লেনটা মাটি ছোঁয়ার আগে থেকেই।
রিনী – তা বলে পিউ পিউ। কি ভাববে মেয়েটা তুই একেবারে হাল্কা।
অহম – হাল্কা ভাবলে তো ভালোই, আমায় আর কোলে নিতে হবে না।
রিনী – তুই কি জীবন নিয়ে কখনোই সিরিয়াস হবি না?
অহম – দেখ তোর পায়ে পড়ি(এদিক-ওদিক চেয়ে)…
রিনী – কি খুঁজছিস?
অহম – এই যে মাথা নামিয়ে, হাত জোর করে তোকে প্রণাম করতে যাচ্ছি, পিউ না দেখে ফেলে।
রিনী – হাহাহাহাহাহা। ওমাগো তোর এসব দেখে পিউ কনফার্ম পালিয়ে যাবে।
পিউ – কি হয়েছে?
অহম – কিছু না। বসুন, আমি প্রিয়কে ফোন দিয়ে নেই।
তিরি – কি বললো প্রিয়?
অহম – আধ ঘন্টা লাগবে ফিরতে। ওহ রিনী তোর বর ফোন ওঠাচ্ছে না কেন? বল বেটাকে আসতে।
রিনী – দাঁড়া কল দেই।
অহম – এবার নিশ্চিত ধরবে ফোন। বৌকে অবহেলা করবে, কোন বরের ঘাড়ে দশটি মাথা আছে?
তিরি – দেখ অহম মাথা গরম করাস না আমার।
অহম – ফুলটুসী বলতো তোর মায়ের এতো রাগ বেড়েছে কেন? কই শুধু হাসবে, গাইবে আর নাচবে। তা নয় শুধু মুখ ভার আর রাগ।
রিনী – একটা যাদুকা ঝাপ্পি দিয়ে দে।
অহম – আমার বুড়ী-কুটুসী-পুটুসী তিরি সোনামনি আয় একটা ঝাপ্পি দেই।
তিরি – ইস, হয়েছে। তুই একটা পাগল।
অহম – এইতো ফর্মে এসেছে আমার পাগলীটা। রিনী কি বললো তোর বর?
রিনী – একসাথেই আসছে দুজনে। ওই তো গাড়ীর শব্দ, মনে হয় চলে এসেছে।
প্রাঞ্জল – হ্যাল্লো গর্জিয়াস বিউটি…
তিরি – ইয়েস গ্রেইসিয়াস এন্ড মিউনিফিসেন্ট ম্যান ওয়েলকম। আফটার আ লং টাইম…
প্রাঞ্জল – ওয়াও, আই এপ্রিসিয়েট ইওর ওয়ার্ড। থ্যাঙ্ক্যু।
অহম – ইংরেজ কতো বছর হলো গেছে?
প্রাঞ্জল – মিঃ শ্যালক, যতো বছরই হোক না কেন, দেশ ছাড়িনি। শ্রম এখানেই ঢালছি।
অহম – তা ঢালছো, তাইতো এতো উন্নতি। কতোটা ব্যাঙ্কে কয়টা একাউন্ট আছে?
প্রিয় – এই, এই হিসেব পরে হোক। মিঃ শেফ আপনি কি রেডি করেছেন সব? আগুণ জ্বলছে।
পিউ – আপনারা ফ্রেশ হয়ে আসুন, খাবার সব টেবিলে।
অহম – রিনী-তিরি চলে আয়। মিস পিউ আপনিও আসুন, যথেষ্ট করেছেন।
পিউ – আরে না, না। এমন কিছু না।
প্রিয় – আচ্ছা একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছো সবাই? এখানে তিনজনের “প” দিয়ে নামের প্রথম অক্ষর। আর প্রতিটি নামই অনেক মিষ্টি।
তিরি – তাতে কি?
অহম – আরে ফেল তো। “প” দিয়ে পাগলও কিন্তু হয়।
রিনী-তিরি-অহম(একযোগে) – হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা……
প্রাঞ্জল – ওয়াও এ তো দেখছি বহু আইটেম? এই যে মিঃ শেফ বলো আইটেমগুলো।
অহম – খাও খাও উন্নত শ্রমিক। এটি হচ্ছে আলু ভাঁজা-মুশুর ডাল-মাছ ভাঁজা। মাছের নাম জানতে চেওনা, ইলিশ ছাড়া আর কোনো মাছ চিনিনা। এটি হলো ওই যে একটা সব্জী আছে সর্ষে দিয়ে। চিংড়ি দিয়ে ক্যাবেজ। কি হলো খাওয়া যাচ্ছে? মিস পিউ আপনিও বসে পড়ুন।
প্রাঞ্জল – মিঃ শ্যালক কর্মী, রান্না নিন্দিত হবার যোগ্যতা হারিয়েছে।
রিনী – উফ এতো প্যাঁচিও না তো। জিলিপির মতো আড়াই প্যাঁচকানো কথা বলে যাচ্ছো।
অহম – আরে প্যাঁচাতে দে। প্যাঁচিয়ে কতোদূর আর যাবে।
পিউ – আপনি খাবেন না?
তিরি – অহম-পিউ খেয়ে নে তোরা। আর শোন ভালো রেঁধেছিস।
প্রিয় – যাক নিশ্চিন্ত, রোজ ভালোই খাওয়া পাবো।
অহম – আচ্ছা?
পিউ – প্রিয় ভাই, উনি তো চলে যাচ্ছেন পরশু রাতে।
প্রিয় – বলো কি, পরশু!
অহম – কি অবস্থায় যে এসেছি, মাত্র তিন মাস…দেখতে দেখতে কেটে যাবে।
প্রাঞ্জল – আর পিউর কি হবে? কি হলো? তোমাদের ইশারা কম বুঝি, কথা বুঝিয়ে বলো রিনী।
রিনী – খেয়ে নাও, আর বলো কেমন রাধুনে আমার বন্ধু?
তিরি – এই পাগল একটা ঝাপ্পি দে, স্যরি রে।
ক্রমশ প্রকাশ্য
হ্যামিল্টন, কানাডা
১৯ জুন, ২০১৫ ইং।
উত্তর এবং প্রত্যুত্তর : তিরি এবং অহম : দ্বাবিংশ ভাগ
২৪টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
অহম কি কি রেঁধেছে সেইটা কিন্তু মিসিং। টেবিলে শুন্যও মিসিং। এমন আড্ডা আমার একদম সহ্য হয়না 🙁
কিছুটা কন্ট্রাডিকশান চলছে কি তিরির মধ্যে?
আমার হাবি, পোলা সব “প” দিয়ে। পুরাই পাগল হি হি হি।
আপু এতো মিস্টি করে লিখছেন, আমাদের চাপাচাপিতে আবার ভর্তা না হয়ে যান। লিখতে থাকুন আপু, এই সিরিজ যেন শেষ না হয়। মন বলছে অহমের বিয়ে হবে। দেখি কি হয়।
নীলাঞ্জনা নীলা
এবার আবার পড়ে দেখুন। খাবার তালিকা পেয়ে যাবেন। আসলে একবার সেল ফোনে লিখি, আর একবার ল্যাপুতে। তাই এতো ঝামেলা।
জানতে চাই “প” দিয়ে নামগুলো। 😀
শুন্য শুন্যালয়
খাবার তালিকা পেয়ে তো এইবার লোভ দিয়ে ফেললাম, ইশ রে এতো আইটেম? অহম কে কোথায় পাওয়া যাবে আপু? 😉
নীলাঞ্জনা নীলা
আমিও খুঁজছি অহমকে। কাল রান্না করতে হবে, ভাবতেই ;( পাচ্ছে
শুন্য শুন্যালয়
আপু রান্নার দায়িত্ব মেয়েদের উপর কে গছাইছে? তারে পাইলে খবর করে দিতাম। কেঁদেও লাভ নাই 🙁
নীলাঞ্জনা নীলা
আমিও কি ছাড়তাম? এমন প্যাঁদানি দিতাম না। :@
ছাইরাছ হেলাল
কী করে এমন গুছিয়ে লিখে আমাদের টেনে নিয়ে যাচ্ছেন কে জানে।
পড়ছি আর পড়ছি।
নীলাঞ্জনা নীলা
এখানে আমার কোনো কৃতিত্ত্ব নেই এখন। আপনাদের উৎসাহই লিখিয়ে নিচ্ছে। এমন সহযোগীতা পেলে সকলেই লিখতে পারে, এটুকু জানি। ধন্যবাদ আপনাকে।
অনিকেত নন্দিনী
শুন্য’র মতো আমিও অহমের মতো একজন রাঁধূনী চাই! খুব বেশি কাজ করাবোনা, কেবল উইকএন্ডে রান্না করে দিলেই খুশি।
খাবার টেবিলে এমন আড্ডা! আহা! ওই টেবিলে হাজির থাকতে পারলে কী মজাটাই না হতো!
আকর্ষণী লেখার স্রোত টেনে নিয়ে যাচ্ছে দিদি। পরের পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।
নীলাঞ্জনা নীলা
অহমকে আমিও খুঁজছি। কোথায় যে পাই তাকে। ;?
মেহেরী তাজ
আপু আমার ও সেই একই কথা আমাদের চাপাচাপিতে ভর্তা হয়ে যাবেন না।
হ্যা রান্না নিয়ে আমার ও সমস্যা আছে। ইয়ে অহম কে কি পাওয়া যাবে??? শুধু আজকের রান্নাটা করে দিতো।।
পরের পর্ব অতিব দ্রুত চাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
একটি নিখোঁজ সংবাদ – অহম নামক একজন রাঁধুনেকে কোথাও খুঁজিয়া পাওয়া যাহিতেছে না। কোনো সহৃদয় ব্যক্তি যদি তাহার সংবাদ আনিয়া দিতে পারেন, উহাকে পুরষ্কৃত করা হইবে।
মেহেরী তাজ
পিউউ কে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে। ওর ঠিকানা টা দেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
পিউ আর একটু চটপটে স্বভাবের হোক, তার পরে ঠিকানা দেয়া যাবে 🙂
জিসান শা ইকরাম
জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে সবাই
খাওয়া দাওয়া হই হুল্লোর ……
পুরো দৃশ্যটা দেখতে পাচ্ছি যেন………
এত প এর আধিক্য কেন?
আমি সহ আমার বাসায় ৪ প 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
ও নানা তুমি “প”?
লীলাবতী
নীলাদি আপনার এই গ্রুপের একজন হতে পারলে নিজকে ধন্য মনে করতাম।কত সুন্দর একটি টীম করেছেন।কথার মাঝেই কাহিনী এগিয়ে চলছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
এই গ্রুপেরই তো সকলে। তা নইলে কি লিখতে পারতাম? -{@
আশা জাগানিয়া
দিদি এমন একটি আড্ডায় একবার আমাদেরকে নিয়ে নিতে পারেন?কল্পনার চরিত্রের মাঝে বাস্তবের সোনেলার কিছু নাম চলে আসলো।কেমন হয় তাহলে? 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
বাহ দারুণ প্রস্তাব। ইস আগে কেন যে মাথায় ঢুকলো না? 🙁
খেয়ালী মেয়ে
এত্তো ভালো লাগা কেনো কাজ করে এই পোস্টটাকে ঘিরে?…
কী সুন্দর করে সবগুলো চরিত্রের সমন্বয় রাখা হয়েছে…একেবারে যাকে বলা যায় পাকা লেখক…
নামগুলো সব সুন্দর, সুন্দর তাদের কথারমালা…তাদের আড্ডা শুনে মজাই লাগছে..আর কেনো জানি মনে হচ্ছে সামনের কোন পর্বে না জানি আবার পাঠকদেরকে কাঁদতে হয়—
নীলাঞ্জনা নীলা
কান্না? মাথার মধ্যে কান্না নেই, শুধু হাসি। দেখি না কান্না ছাড়া জীবন কি চলে নাকি চলেনা? ;?
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বরাবরের মত এই পর্বটিও বেশ ভাল লাগল।
নীলাঞ্জনা নীলা
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂