না রে বন্ধু!
হলো না আর আমাকে দিয়ে!
অনেক ভেবে অনেক বিবেচনায়
পরাজয় মানলাম অবশেষে।
ভেবেছিলি তুই পেরে যাব এবার,
পারতেই হবে এবারে আমার।
কিন্তু না রে! পারিনি আমি
কিছুই হলো না ছিল যা হবার।
যখন কিছু দেখি নাকো চোখে
গিয়েছি শেষে চেয়ারম্যানের বাড়ি।
ভেবেছিলাম উনি বুঝবেন
একটু সহায়তা নিব তার কাড়ি।
তা কি আর হয় রে বন্ধু?
হয়নি কিছু মোটে,
সময় আমার বড় খারাপ রে বন্ধু!
সবার কি সব জোটে?
মেনেই নিলাম বন্ধু এবার
মেয়েকে পড়াব না আর।
অন্ন নিয়ে যার এত ভাবনা
পড়াশোনা তার কি বা দরকার!
বিয়েটাই এবার দেব ওকে
বয়সও হয়েছে ওর।
প্রস্তাব চেয়ারম্যানের মেনেই নিলাম
“রাজি” আজ বন্ধু তোর।
মেয়েটা আমার লক্ষ্মী বড়ই
কিছুই বলেনি মুখে
পাষাণের মত স্বপ্ন পুড়িয়ে
ভাবে, বাবা যেন থাকে সুখে !
সুখ কি এতই সোজা রে বন্ধু
চাইলেই হয়ে যাবে!
গাছটা আমার বাঁচাতেই এসব
এখন ও পানি পাবে।
৩৭টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
অনেক কিছু জয় করতে হলে, নিজেকে পরাজয় মানতে হয় কখনো কখনো। কোন কারনে মন খারাপ মনে হচ্ছে আপনার, লেখাটিতে তা স্পষ্ট। মেয়েকে বিয়ে দিলেও মেয়ের চাইতে আপন কেউ হয়না, জানি আদর যত্নেই থাকবে সবসময়। নিজেকে একটু ছাড় দিতেই হয়। আপনার শুভকামনা করছি। আশা করছি সবকিছুতেই সুখ টা খুঁজে নেবার চেস্টা করবেন।
অরণ্য
ভাল বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে। তবে ইদানিং সুখের চেয়ে সাচ্ছন্দ কেন জানি বেশি খুজছি।
আবু জাকারিয়া
একজন বিবাহযোগ্য কন্যার প্রতি একজন বাবার মনের অবস্থার স্পষ্ট প্রতিফলন। ভাল লাগল। আরো লিখুন।
অরণ্য
ধন্যবাদ ভাইয়া। ব্যাপারটা ঠিকই বলেছেন। তবে এখানে আমি ঘটনাটি রূপক হিসাবে ব্যবহার করেছি। আমার অবস্থাটা ঐ বাবার মতই মনে হয়েছে, যে প্রস্তাবে আমাকে শেষে “রাজি” হতে হয়েছে। ভাল থাকবেন।
খেয়ালী মেয়ে
সুখ সেতো সোনার হরিণ, ধরা সেতো দেয় না–তারপরও একটু সুখের জন্য কতোই না আয়োজন আমাদের–
মেয়েটা আমার লক্ষ্মী বড়ই
কিছুই বলেনি মুখে
পাষাণের মত স্বপ্ন পুড়িয়ে
ভাবে, বাবা যেন থাকে সুখে (y)
অরণ্য
খেয়ালী মেয়ে, সোনেলাতে আসার পর আপনার লেখা আমি পড়িই, বেশ ভাল লাগে বলে। আপনার এবারের লেখা আমার পড়া হয়নি। আমিও খেয়াল করলাম এই চারটি লাইনে বেশি কিছু মাখিয়ে ফেলেছি নিজের অজান্তেই। ভাল থাকবেন।
নওশিন মিশু
আমাকে দিয়েও কিছুই হয়…না 🙁
অরণ্য
সবার সবকিছু হতে নেই। আর আপনার জীবনে এতকিছু হতে নেই তাই হয়তো আপনাকে দিয়ে কিছু হয় না। তবে লেখা, আপনার প্রোফাইল পিকচার দেখে কিন্তু তা মনে হয় না।
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো...
ছড়ার খোলসে কবিতা, তাও বিষাদের!! ছড়ার মত ছন্দে বিষাদ মাখালে তা হাহাকার হয়ে উঠতে বাধ্য হয়।
ভালোলাগা কন্সেপ্টে।
অরণ্য
“ছড়ার মত ছন্দে বিষাদ মাখালে তা হাহাকার হয়ে উঠতে বাধ্য হয়।” – এভাবে আমি ভাবিনি। ছড়া বা কবিতার তফাৎ কতটুকু তা আমি জানিনা। ও জ্ঞানের দৌড় আমার খুবই কম। মনের ভাল লাগা বা খারাপ লাগা কিংবা কোন ভাবনা মাঝে মাঝে লিখে হালকা হই, বা বলতে পারেন ভাল লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাল থাকবেন।
জিসান শা ইকরাম
আমরা যা চাই তা কিছুটা পাই,
অনেকটাই পাইনা
এটিই নিয়ম।
অতৃপ্তি আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।
যা চাই সব পাওয়া হয়ে গেলে বেঁচে থাকার আগ্রহ কমে যাবে।
তখন হাহাকার এসে বলবে ‘ কেন পাই যা চাই ? ‘
ভালো থাকুন সারাক্ষণ।
ছন্দের কবিতা ভালো লাগে আমার 🙂
অরণ্য
জিসান ভাই, আজ আপনাকে কিছুই লিখব না। শুধু জানবেন আপনার মন্তব্যে আমি বাড়তি কিছু পাই বা খুঁজি, যা এবারেও পেয়েছি। শুধু গায়েবি ভাবে জানিয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে আপনাকে, আমার গাছটি আবার তুলে লাগিয়েছি নতুন জায়গায় সারাক্ষণ পানি পাবে বলে।
শুভ কামনা আপনার জন্যে। ভাল থাকবেন।
জিসান শা ইকরাম
সারাক্ষন পানি পাক আপনার গাছ।
সবুজ পাতা ফলে পরিপুর্ন হোক আপনার গাছ।
অরণ্য
থ্যাঙ্কস্ জিসান ভাই। আজ আমি অনেক স্বাভাবিক। 🙂 গাছ মাটিতে লেগে যাচ্ছে মনে হয়। একটু সময় লাগবে আমি জানি। আমি আবার স্বপ্ন দেখছি আমার সবুজ পাতায় ভরা গাছ, ফুল, ফল – সাথে পাখির কুজনও।
জিসান শা ইকরাম
আমার প্রিয় বাক্য ‘ সপ্নকে বাস্তব রুপ দিন ‘ 🙂
অরণ্য
🙂 নিলাম। (y)
বনলতা সেন
কিছু পরাজয়ের মধ্যে জয় গাথাও লেখা থাকে।
টিকে থাকলেই অনেক পাওয়া।
অনেক যন্ত্রণা নিয়ে লেখা লেখাটি পড়লাম।
অরণ্য
আসলে যুদ্ধ আমার এখন টিকে থাকা নিয়েই। তবে টিকে গেলে এ পরাজয়ও আমাকে জয় গাথা এনে দিতে পারে, তা আমি জানি। আপনার জন্য শুভ কামনা।
ব্লগার সজীব
বুক জুড়ে শুধুই হু হু বাতাস 🙁 (y)
অরণ্য
লেখার সময় আসলেই আমার হু হু বাতাস ছিল। আজ একটু কমেছে।
প্রহেলিকা
চেয়ারম্যান জনগনের ভোটেই নির্বাচিত হলেও, নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত জনগনের থাকে, আর নির্বাচিত হওয়ার পর সে নিজেই নিজের হয়ে যায়। দারিদ্রতার সাথে শত লড়াই করেও বাবা কখনোই চায় না, টাকার অভাবে মেয়েটির লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যাক, আর মেয়েদের লেখা পড়া বন্ধ হলেই নাকি তাদের বিয়ে দিয়ে দিতে হবে এমন একটি ধারা এখনো আমাদের সমাজে দেখা যায়। মেয়েটির লেখা পড়া বন্ধ করে যে বিয়ে দেয়া হয় সেই বিয়েতে সুখের চেয়ে দুখের ছায়াই বেশি পড়ে।
আমাদের সমাজের বাস্তবিক চিত্র একেছেন, খুব ভালো লাগলো আমার কাছে প্রিয় অরণ্য ভাইয়া, ভালো থাকুন সবসময়।
অরণ্য
ধন্যবাদ স্যার। ভাল থাকবেন। আমি ভাল থাকার চেষ্টা করছি।
প্রহেলিকা
আমার জানামতে আমি আপনার সাথে এমন কোনো ব্যাবহার করিনি যেখানে আমার সাথে স্যার শব্দটি প্রযোজ্য ভাইয়া, যদি অজান্তে কোনো ভুল করে থাকি ক্ষমা করবেন তারপরও স্যার বলবেন না।
অরণ্য
আপনাকে ভালবাসা আমার অন্যায় নয়, নিশ্চয়ই? সম্ভাষণটি ও সময় করেছিলাম ভালবাসা থেকেই। ঠিক আছে বলব না। 🙂
লীলাবতী
মন খারাপের লেখা দিয়ে কোথায় গেলেন ভাইয়া?আমাদের সাথে থাকুন।আমরা আছি আপনার সাথেই।
অরণ্য
লীলাবতী আপনাকেই আগে লিখছি আপনার মন্তব্যে জিজ্ঞাসা আছে বলে। বুড়ো গাছটাকে বরেন্দ্র অঞ্চলের শুকনো মাটি থেকে তুলে চলনবিলের ধারে ফের লাগাতে হলো। তাই একটু বেশি সময় লাগলো আপনাদের মন্তব্যের জবাব দিতে। বুড়ো গাছে নতুন শিকড় গজাতে একটু সময় লাগবে। কিছু পাতা নুইয়েও পড়েছে, আমি দেখলাম। কিন্তু আমি জানি ও গাছে আবার নতুন পাতা আসবে। শিকড় গজাবে তাড়াতাড়িই, মাটিতে পানি আছে বেশ। এখন অপেক্ষা সময়ের, ধর্য্যের আর একটু দেখে রাখা কেউ যেন গাছের গোড়াটা নাড়িয়ে না দেয়।
আপনারা সাথে আছেন, সে আমার অনেক পাওয়া। আমিও আছি আপনাদের সাথে। 🙂
ভাল থাকবেন।
নুসরাত মৌরিন
কবিতাটার ভিতরে দুঃখ মোড়া।
তবু বলি লক্ষী মেয়েটা ভালই থাকবে। 🙂
সুন্দর লেখা…।
অরণ্য
নুসরাত মৌরিন, আমিও সেই ভেবেই “রাজি” হয়েছি। চেয়ারম্যানের ঘরে ওর ভাল থাকারই কথা, ও যে লক্ষ্মী।
ভাল থাকবেন।
নুসরাত মৌরিন
নিশ্চয়ই সে ভাল থাকবে।
আমাদের সবার শুভকামনা তাকে পৌঁছে দেবেন…।
লক্ষী মেয়ের জন্য এক আকাশ শুভকামনা। 🙂
অরণ্য
থ্যাঙ্কস্। 🙂
ছাইরাছ হেলাল
‘রাজি’ হয়ে ভালই করেছেন।
এ যাত্রা বেঁচে গেল সবাই।
বেশ ছন্দবদ্ধ লেখাটি।
অরণ্য
ছাইরাছ ভাই, আপনি ঠিকই বলেছেন। আজ দু’দিন পরে আমার তাই মনে হচ্ছে। আসলেই এ যাত্রায় মনে হয় বেঁচে গেলাম সবাই। ভাল থাকবেন ভাইয়া।
শিশির কনা
সামনেই আলো,হতাস হওয়া ঠিক না।
অরণ্য
ধন্যবাদ আপনাকে। কিছু কিছু সময় মানুষকে হতাশ করে ফেলে আলো-ছায়া কিংবা ঘটনার তীব্রতায়। ছাইরাছ ভাইকে যেমনটি লিকেছি, আসলে এত হতাশ হবার কিছু নেই। হাইপোগ্লাইসেমিক শকে মানুষ অনেক কিছু এমনিতেই গুলিয়ে ফেলে। শকটা একটু বেশিই ছিল আসলে ঐ সময়ে, ঐ দিনে। আমিও একটু আলো আঁকছি ফের।
শিশির কনা
আলোর মাঝে থাকুন সারাক্ষন ভাইয়া।
ইমন
অহ!
অরণ্য
আপনাকে ধন্যবাদ।