এলোমেলো কিছু কথা : চার

নীলাঞ্জনা নীলা ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪, সোমবার, ১০:০৩:৫২পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৩ মন্তব্য

চলে যায় সময়। ঋতুর পরিবর্তন হয়, দিন-মাস-বছর চলে যায় তাদের তৈরী নিয়মে। আর মানুষের বাড়ে বয়স। ছোট থেকে বড়ো হয়, তারপর বার্ধক্য। ঋতু থেকে যায়। ঋতুর সাথে থেকে যায় স্মৃতি। চলে যায় কেবল মানুষ।

অনেক ভারী কথা মাথার ভেতর কিলবিল করে বিষাক্ত সাপের বাচ্চাগুলোর মতো। এ জীবনে সাপ দেখেছি, আবার মানুষও। বড়ো বেশী বিষাক্ত হয় মানুষ। খেলে আবার পোড়ায়, ফোস্কা ফেলে আবার ঔষধও মাখিয়ে দেয়। খেলা নয়তো কি!

এক একটি দিন দেখে এই চোখ, কতো কিছুর পরিবর্তন হয়। সকালে যখন কাজের উদ্দেশ্যে বের হই বাসা থেকে ঝকঝকে মন নিয়ে, ফিরে আসি ধূসর ক্লান্তি নিয়ে। এই যাওয়া-আসার মধ্যে একা একা হাসি, কথা বলি, মনের ভেতরে কান্নাও জমে। কিন্তু কাঁদতে যাওয়ার আগেই জীবনের সবগুলো আনন্দকে উথাল-পাথাল করে তুলে আনি। অমনি কান্না উধাও। কষ্ট কার থাকেনা? কিন্তু আমরা কষ্ট পাই এমন কিছু নিয়ে যার কোনো মানেই হয়না। অভাববোধ কি জিনিস, যারা ইন্টারনেটে বসে ব্লগে/ফেসবুকে বসে, তারা সেটা জানেনা। হুম মধ্যবিত্ত অভাব আছে, ওটা স্বাভাবিক। বিদেশে থেকে অনেকেই অভাবে থাকে, কিন্তু দেশের মানুষ জীবনেও বিশ্বাস করবে না। আমিও করতাম না। যাক এলোমেলো কথায় আজ সত্যিই এলোমেলো। অনেক পাওয়া হয়ে গেছে এই ২০১৪ সালে। চাকরী পেলাম। আর এমন চাকরী জীবনে কখনো পাবো ভাবিনি। স্বপ্ন দেখার মতো এতো স্বস্তিদায়ক মন শুকিয়ে গেছিলো অনেক আগেই। কিছু মানুষ আমাকে আবার স্বপ্ন দিয়েছে। চাওয়ার পরিধি বেড়েছে, কিন্তু পাওয়ার সীমা পার করে যেতে পারেনি।

ভালোবাসা অনেক বড়ো অসুখ, তার কোনো ভ্যাকসিন নেই, ঔষধ নেই। যাকে ভালোবাসা যায়, সে অবহেলা দেবেই। আর অবহেলা তার কপালে জোটে, যে ভালোবেসে যায়। একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। অনেক অনেক বছর আগে একটা কবিতা লিখেছিলাম মনে নেই। ব্লগে হয়তা আছে, নাম “মূল্য।” ভালোবাসো এবং ভালোবাসতে শেখাও।

একটা কবিতা দিয়ে যদি পথ চলা শুরু করি,
কেমন হয়?
রইবে কাছে? নাকি যাবে সরে?
পাচ্ছি ভেবে ভীষণ ভয়।

সাঁতার কাটছি হাওয়া সরিয়ে
আসতে তোমার কাছে
যতোই আসছি কাছে তোমার
যাচ্ছো ততো দূরে।

তরী আমার দাঁড়িয়ে কূলে
নদী যাচ্ছে শুকিয়ে
এলোমেলো আস্ত আমি
বৃষ্টি ভেঁজা আদ্যোপান্ত।


আজ খ্রীষ্টমাস। মানে বড়দিন। সারারাত চলেছে অনেক সুর-বাহার-আড্ডা। সকালে কাজে বেড়িয়ে দেখি পথ-ঘাট সব ফাঁকা। আকাশের উপর থেকে মেঘের কান্না। তবে এবার আর শুভ্রতা ছড়ানো নেই বড়দিনের দিন। সব পাল্টে যাচ্ছে। হঠাৎ শোনা যাবে আমাদের দেশটায় ছোট্ট শিশুরা স্নোবল বানাচ্ছে। তবে আজকালকার বাচ্চাদের বুঝিনা আমি। ওদের কাছে ভিডিও গেম ছাড়া আর কিছু আছে নাকি? যাক সেদিন স্নো পেয়ে হাতের মুঠোয় ভরলাম।

সবাই বলে বয়স বাড়ছে, এখন তো কিছুটা বয়সাণুযায়ী চলি। এখনও স্বপ্ন দেখি যা দেখেনা এই বয়স। আমরা মানুষেরা সবকিছুতেই নিয়ম-নীতি দিয়ে বসিয়ে দিয়েছি কি কি করতে হবে। আমিও বুড়ো আঙুল(কাঁচকলার অনেক দাম এখানে) দেখাই। আর কাঁচকলা জিনিসিটা আমার কাছে অখাদ্য লাগে। কিভাবে যে সবাই খায়। নাহ এসব হচ্ছেটা কি! শেষকালে এসে কাঁচকলা? আজ তাহলে এটুকুই থাক।

হয়তো চলবে
নয়তো না
কি যে হবে
সে জানিনা…

হ্যামিল্টন, কানাডা
২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪ ইং।

৭৫৯জন ৭৫৬জন
0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ