আজ সকালটা রোজকার মতোই । শুধু আকাশে সূর্য নেই । বাতাসের প্রচন্ড তীব্রতা আর ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি । হাওয়ার দমকে বৃষ্টির গতি বেড়ে যায় , তারপর আবার শান্ত বালিকার মতো টুপটাপ ঝরে পড়ে । এসব দেখে এই চোখ ভুলে যায় না-পাওয়া সব । কাজে যাবার ব্যস্ততায় এমন অনেক সৌন্দর্য চোখের আড়ালে থেকে যায় । কারণ পথে নামতেই দে-ছুট , বাস না মিস হয়ে যায় । যাক এখন আমি বাস স্টপেজে দাঁড়িয়ে আছি । দূর থেকে দেখা যাচ্ছে বাস আসছে । যাক উঠে নেই আগে , পরে আবার গল্প , কেমন ?
বাস ছেড়ে দিলো । এই পাঁচ নম্বর বাসটা আমার খুব প্রিয় । যদিও বাসা থেকে বেড়িয়ে অনেকখানি পথই হাঁটতে হয় । কিন্তু যখন উঠি বাসটাতে , যেনো সবুজের ধারাপাত পড়া শুরু হয়ে যায় । বাসের জানালা দিয়ে দেখছি ধূসর মেঘকে জড়িয়ে নিতে সবুজ তার দু’ বাহুকে প্রসারিত করেছে । ঘন সবুজ এতো রঙ তোলে আমার চোখে , দ্রিম দ্রিম করে কাঁপতে থাকে সমস্তটি মন । ইচ্ছে করে ছুটে যাই সব কাজ ফেলে । গন্তব্যে পৌঁছে যাবার মুহূর্তেই বৃষ্টি থেমে গেলো । আচ্ছা নেমে নেই বাস থেকে । ওমা এভাবে সূর্য আমাকে স্বাগত জানাবে , ভাবিনি । ওর আলোর ঝর্ণাধারায় এই যে আমি ভিঁজে যাচ্ছি ।
কাজ শেষ হলো , এখন ৪১ নম্বর বাসের জন্যে অপেক্ষায় আছি । এই দেখো আবারও বৃষ্টি । বাস স্টপেজে একজন মানুষও নেই । এমন বৃষ্টি দেখে কি চুপ করে থাকা যায় ? তাও চারপাশে কেউ নেই যখন ? গানটা গেয়েই ফেলি । বৃষ্টিকে না শুনিয়ে কি করে থাকি ?
“আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিনে
জানি নে জানি নে
কিছুতে কেন যে মন লাগেনা…।”
একটা গোপন কথা আছে , আমার এই সুর শুনলে মেঘের বারোটা বেজে যায় । এতোটাই অসহ্য আমার বেসুরো কন্ঠ ওর কাছে । বৃষ্টি থেমে গেছে । বৃষ্টি যেনো রাগান্বিত চোখে বলছে , “এই মেয়ে তোর কি সমস্যা ? এতোটা দিন পর এলাম , আর তুই আমায় থামিয়ে দিলি ?”
**না বলে পারছি না , সত্যিই সেদিন অনেক জোরে জোরে সুর তুলেছিলাম । আর বৃষ্টির রিদম ভিডিও করতে গিয়ে আমার বেসুরো কন্ঠও যোগ হয়েছিলো…ভিডিওটায় আমার ক্যাটক্যাটে গলাটা না থাকলে দিতাম । সেদিন ভিডিও একটা কারণেই করেছিলাম , আমার দেশের বৃষ্টির সাথে এতো মিল আমি অনেক বছর পর পেয়েছিলাম ।
বিঃ দ্রঃ – ক্যাটক্যাটে কন্ঠ যারা শুনিতে চাহিয়াছেন , উনাদের জন্য এই প্রীতি উপহার । এই গলা শুনিবার পরেই বৃষ্টি দেবী গালাগাল করিয়া চলিয়া গিয়াছিলেন । আর বৃষ্টি থামিবার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ভাবেই সূর্য উদিত হইয়াছিলো । আর এই সেলফোনের ক্যামেরা ছবিখানাকে তাহার বাক্সে ভরিয়া নিলো ।
হয়তো চলবে
নয়তো না
কি যে হবে
সে জানিনা…
হ্যামিল্টন , কানাডা
২১ সেপ্টেম্বর , ২০১৪ ইং ।
মন্তব্যে বেশ কয়েকজনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ক্যাটক্যাটে কণ্ঠে আমার বুড়োর গান… এর ইউটিউব লিংক দিলাম এখানে।
২৮টি মন্তব্য
মেঘাচ্ছন্ন মেঘকুমারী
আপনার বিকট কন্ঠ্রর গান শুনতে চাই। আকাশকে শুনালেন, আমিও শুনবো।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি পারিনা কি করে ভিডিও থেকে অডিওতে নেয়া যায়…ভিডিও কি এখানে দেয়া যায় ?
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বেশ ভাল লাগল।একটি অডিও প্রকাশ করে সোনেলায় উৎসর্গ করুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
কিভাবে করে সেটা ?
সায়ন্তনু
শুনতে চাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভিডিও কিভাবে আপলোড করা যায় এখানে ? জানিনা তো ! 🙁
খেয়ালী মেয়ে
ছবিটা দারুন 🙂
আপনার ক্যাটক্যাটে গলাটা একবার শোনা দরকার..আমি জীবনেও ক্যাটক্যাটে গলা শুনি নাই :p
নীলাঞ্জনা নীলা
ঠিক আছে…কিন্তু কিভাবে দেবো ?
ছাইরাছ হেলাল
পিলিগ লাগে , ক্যাটক্যাটে দিয়েই শুরু করি আমরা।
কী করে লেখেন! সুন্দর করে এত্ত এত্ত ।
নীলাঞ্জনা নীলা
ক্যাটক্যাটে গলা শোনার জন্যে এতো অস্থির ! আমি তো ভিডিও আপলোড করতে পারিনা…
জিসান শা ইকরাম
ভিডিও আগে ইউ টিউবে আপলোড কর। এরপর লিংক দে এখানে।
নীলাঞ্জনা নীলা
মহামান্য নানা নেও দিলাম…এই কন্ঠ শুনিয়া অসুস্থ হইলে সেই দায় গায়িকার নহে…
নীলাঞ্জনা নীলা
https://www.youtube.com/watch?v=LMKPP23z5jY&feature=youtu.be
জিসান শা ইকরাম
ভালোই গাইছো 🙂
স্বপ্ন নীলা
আপনার নামের সাথে সুন্দর রোদ, সাদা মেঘ আর নীলের ছড়াছড়ি করা আকাশের দারুন একটি মিল খুঁজে পেলাম ——ছবিটি দারুন হয়েছে সেইসাথে লেখা —- আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম
শুভকামনা
নীলাঞ্জনা নীলা
ছবিখানা এই ছোট্ট সেলফোন দিয়ে তুলেছিলাম , বৃষ্টি থেমে যাবার পর পরেই…
“কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা…মনে মনে…” 🙂
ভোরের শিশির নীতেশ
বেশ দুলিয়ে গেলো বৃষ্টিস্নাত বাতাস 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
তাই নাকি ? বৃষ্টি মানে অপরূপ সৃষ্টি যে…
জিসান শা ইকরাম
ভালো লিখেছো।
নীলাঞ্জনা নীলা
সত্যি ????????????????? নানা আমার যে এখন নাচিতে মুন চাহিতেছে…কি করিবো কহিয়া দাও… \|/
মোঃ মজিবর রহমান
আপু,
গেয়েই ফেলুন স্রতা আমরাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
শ্রোতা আমার খুব কাছের আপনারাই…তাই দিয়েই দিলাম…তবে যদি কানের সমস্যা হয় , কন্ঠশিল্পী দায়ী থাকিবে না কিন্তু… 😀
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
এই যদি হয় ক্যাটক্যাটে হোক না। পুরোটা শুনতে চায় এ মন।
নীলাঞ্জনা নীলা
লজ্জ্বা পাচ্ছি… 🙂
নুসরাত মৌরিন
লেখার মত আপনার গানও যে খুব ভাল লাগলো।
এটা যদি ক্যাটক্যাটে গলা-আমিও অভি আপুর মত সেই গলার গানই আরো বেশি বেশি শুনতে চাই,আর কোন কথা নাই।
😀
নীলাঞ্জনা নীলা
কি যে করি ! “বিপদে মোরে রক্ষা করো…এ নহে মোর প্রার্থনা…বিপদে আমি না যেনো করি ভয়…” লজ্জ্বা এবং ভয় দুটোই সমান তালে…গান গেয়েও কমলো না… ;(
শুন্য শুন্যালয়
এই আপনার ক্যাটক্যাটে গলা? আর এই গলা শুনে বৃষ্টি পালিয়েছে এতো কিছুতেই বিশ্বাস করলাম না, বরং সূর্য তেড়ে ফুড়ে বের হয়ে এসেছিল এই গান শুনেই আমার যা মনে হয়।
এবার পুরো গান শুনিতে চাহি। কোন বাহানা গ্রান্টেড নয়।
নীলাঞ্জনা নীলা
আচ্ছা শুনাবো…আগে আবার বৃষ্টি তো আসুক…আজ থেকে স্নো পড়া শুরু হয়েছে… 🙁 ;(