
উনচল্লিশ – তিরির প্রতি
এই দেখো , এ সময় এভাবে রাগ-অভিমান করতে নেই । আমার ফুলটুসীটার চরিত্র তোর মতো হোক , চাইনা । একটু হাসি দে না আমার জন্যে ! তুই হাসলে আমার ফুলটাও হাসবে । আচ্ছা ও আমাকে কি বলে ডাকবে রে ? ইস ভেবে পাচ্ছিনা । মায়ের বন্ধুকে কি বলে ? নাহ মাথায় আসছে না কিছু । একটু সাহায্য কর না আমায় ।
ওহ প্রিয়কে বলিস সাইজ তো জানিনা । যাবার পরে অনেক কিছু দেখালো । যা যা ভালো লেগেছে , তা-ই কিনেছি । আরে ওটা তো বড়ো হবে । এখন না হোক পরে পড়তে পারবে । সেলস গার্লটাও অবশ্য অবাক হয়েছিলো । কিন্তু আমার সাথে তো বিরক্তি দেখাতে পারবে না । আমি যে ওর কাষ্টমার । যখন জানলো ফুলমনিটা পাঁচ সপ্তাহের , আর কিছু বললো না । যাক রাগ দেখালে দেখাস । আমার পৃথিবীটা এখন তোর রাগ-ক্ষোভ কিচ্ছুকে পরোয়া করেনা । বুঝলি রে ছাগলী ?
তোর অহম
চল্লিশ – অহমের প্রতি
সত্যি আমার জন্যে আর তোর কোনো টান নেই ? ভালোই হলো । পিছুটান না থাকলে হারানোয় আর কোনো বাধা পড়েনা । যদি হারিয়ে যাই , তোর ফুলটুসীকে দেখে রাখিস । প্রিয়’র খুব পছন্দ হয়েছে তোর দেয়া নাম । আমার কুঁড়ি তো ফুলই হবে একদিন । সেদিন তোর দেয়া নামটা পুরোপুরি সার্থক হবে । তোকে ও কি ডাকবে , সেটা ও নিজেই ঠিক করে নেবে । কিচ্ছু শেখাবো না । তবে ও জানে না এই পৃথিবীতে ওর জন্যে কি সুন্দর দুজন মানুষ প্রতীক্ষা করছে !
অহম আমার না কান্না পাচ্ছে রে । আমি কি খুব বেশী ইমোশনাল হয়ে গেলাম ? কবে আসবি তুই ? আমার জীবন তুই আর প্রিয় ছাড়া অচল । চিঠিটা পড়ে মন খারাপ করিস না ।
তোর তিরি
একচল্লিশ – তিরির প্রতি
আরে ! এটা কি হলো ? এতো ইম্টু হলে চলে নাকি ? এই ছাগলী তুই আছিস বলেই তো আমরা সবাই আছি । ফুলকুঁড়িটা আসুক , তারপর দেখ দুজন মিলে তোকে কেমন জ্বালাই । সবকিছুর প্রতিশোধ নেবো ।
যাক ছুটির জন্যে এপ্লাই করেছি । মারকাটকে বলেছি আমার ছুটি চাই । সেই দৃষ্টিতে চাইলো , এরপর বলে , “কবে ?” বললাম ছুটি চাই ছয় মাসের জন্য । তখন যদি ওর মুখখানা দেখতি । বললো , “সম্ভব না ।” বললাম ঠিক আছে , আমি তাহলে resignation letter দিচ্ছি । হুম চাকরীটা ছেড়ে দিচ্ছি , আমাকে দু’ মাস সময় দিয়েছে । যদিও এখানে এভাবে সুযোগ দেয়না । মারকাট কেন যে হঠাৎ আমাদের বাঙ্গালী মন-মানসিকতার হয়ে গেলো , ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না । তবে ও আমাকে ভালো করেই চেনে , যা বলি তা-ই করে ছাড়ি ।
চিন্তা করিস না । দেশে গেলে চাকরীর অভাব হবে না । তা না হলে তুই তো আছিস । তোর চাকরী আর বেতনটা আমার ।
তোর অহম
বেয়াল্লিশ – অহমের প্রতি
আর জ্বালাস না আমায় । যদি তুই আমায় সত্যি ভালো দেখতে চাস , আমার হাসি তোকে যদি একটুকুও আনন্দ দেয় । এখুনি গিয়ে তোর resignation letter cancel কর । আমায় একটু বোঝ । তোর সব পাগলামী আমি নেই । ছয় মাসের ছুটি কোনো দেশে কি দেয় ? আমাকেও তো দেবে না । চার মাসের ছুটি পাবো মা হয়েও । কেন এমন করিস ? আমি জানি তুই যেখানেই যাবি , চাকরীর অভাব হবে না । কিন্তু ওখানে তুই আছিস দশটি বছর ধরে । অনেক সুযোগ-সুবিধা । তোর মতামতকে কখনোই বাতিলের ঝুড়িতে ফেলে দেয়া হয়না । অনেক ভালোবাসি তোকে বুঝিস সেটা ? চিঠিটা পেলেই লক্ষ্মী ছেলের মতো কথাটা কাজে লাগাস । আমার ভালো লাগবে অনেক ।
তোর তিরি
ক্রমশ প্রকাশ্য
হ্যামিল্টন , কানাডা
১৬ আগষ্ট , ২০১৪ ইং ।
২৪টি মন্তব্য
খসড়া
ক্রমশ প্রকাশ্য তো ক্রমশ পঠিত।
নীলাঞ্জনা নীলা
ঠিক আছে…খুশী হলাম…
ছাইরাছ হেলাল
নূতন করে লিখলেন ?
নীলাঞ্জনা নীলা
আবার নতূন করে শুরু করেছি…তবে আগেরটায় এমন ঘটনা ছিলো…
নুসরাত মৌরিন
খুব সুন্দর।চলুক… পড়তে খুব ভালো লাগে তিরি আর অহমের এই উত্তর প্রতুত্তর…। (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
তিরি আর অহম তো সবার মধ্যেই আছে…
শুন্য শুন্যালয়
আহ অহম তিরি… !!! আপনার নাম ভুলে গেলেও অহম তিরি মনে থাকবে 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
ওমা এ কি কথা ! তবে এটাই তো চাই…সৃষ্টিটা বাঁচুক আজন্মকাল…
জিসান শা ইকরাম
দারুন আবেগময় চিঠির মাধ্যমে উপলব্দি করছি একটু সুন্দর সম্পর্কের ।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা আমার আর তোমার যে অসাধারণ একটা ঝগড়া ঝগড়া সম্পর্ক , এটার কাছে তিরি আর অহম কিছুই না…
মিথুন
ফুলটুসিটা অহমকে কি বলে ডাকবে? আপু আমার তো ঘুম হারাম হয়ে গেলো। আর এই ফুলটুসি নামটা খুবই পছন্দ হয়েছে, আমার মেয়ে হলে রাখবো ভাবছি।
নীলাঞ্জনা নীলা
আচ্ছা তা-ই রেখো…আমারও ভালো লাগবে…
রিমি রুম্মান
ভিন্ন ধারার লেখা… ভিন্ন রকম ভাল লেগেছে…
নীলাঞ্জনা নীলা
অফুরান ভালোবাসা…
বনলতা সেন
এমন লম্বা সিরিজ লেখা কঠিন। অহম তিরিদের গাল টিপে দিতে ইচ্ছে করছে ।
নীলাঞ্জনা নীলা
তিরি আর অহমকে বলে দেবো গাল ঢেকে আসতে…
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
কাহনি লেখুনি দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে ভাল লাগছে খুব আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
এভাবে প্রেরণা পেলে লেখা তো সেই গতিতেই এগিয়ে যাবে ভাইয়া…
মেঘাচ্ছন্ন মেঘকুমারী
বন্ধু এমনই হওয়া উচিত।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাগ্যক্রমে আমার জীবনেও এমন অনেক ভালো বন্ধু এসেছে আর এখনও আমায় ছুঁয়ে আছে…
লীলাবতী
চিঠির মাধ্যমে গপ্ল। আমার একজন অহমের মত বন্ধু লাগবেই লাগবে।
নীলাঞ্জনা নীলা
মন থেকে চাইলে সেটা পাওয়া যায়-ই যায় কিন্তু…
ব্লগার সজীব
অসাধারন লাগলো। দিদি লেখায় দুটি ছবি। ছোট ছবিটিকে মুছে ফেলা যায় ?
নীলাঞ্জনা নীলা
আমিও দেখলাম দুটো ছবি…আচ্ছা ছোট ছবিটিকে মুঁছে দেবো…