কিছু লিখতে গেলে নামকরণটাই সবচেয়ে ঝামেলার!
তবু একবার চেষ্টা করি দেখি…
জীবন যাচ্ছে চলে এই ধান সিঁড়িটির তলে
পিওর জীবনানন্দ দাশের নকল হয়ে গেছে। :p
জীবন যাচ্ছে চলে এই গরমে গেছি গলে
ইয়াক থু!! >_<
জীবন যাচ্ছে চলে এই সূর্যে আগুন জ্বলে
মারাত্তক চিপ! জীবন যাচ্ছে চলে- এটা বাদ। বেশি ঢংগিলা লাইন দরকার নাই !!
অনলে দাহিছে প্রভাকর পুড়ে মাঠঘাট শুষে সরোবর
ওয়াহ! ওয়াহ! \|/
.
.
.
টিভিতে গরমের উপর একটা প্রতিবেদন হচ্ছে। কারো সাক্ষাৎকার চলছে। তাদের এলাকায় কি পরিমাণ লোড-শেডিং হচ্ছে তার একেবারে বিস্ময়কর বর্ণনা দিলেন।
ভোর ৫-৩০ থেকে ৬-২৪ পর্যন্ত কারেন্ট থাকে। সকাল ৬-২৫ থেকে সন্ধ্যা ৭-৪৫ পর্যন্ত নাই। আবার সন্ধ্যা ৭-৪৬ থেকে ৭-১৫ পর্যন্ত কারেন্ট থাকে। এরপর ভোর ৫-২৯ পর্যন্ত আবার নাই।
আমি উনার এরকম মারাত্তক টাইমিং-এর বর্ণনা শুনে বিস্মিত। ওনার চেহারা দেখার জন্য পাশের রুম থেকে দৌড় দিলাম আমি। এসে দেখি স্ক্রিন অন্ধকার। হালকা আলোতে কি জানি নড়ছে পর্দায়।
লোকটা যে সত্য বলছে এটা বুঝানোর জন্য ক্যামেরা ম্যান ফ্ল্যাশ লাইট অফ করে অন্ধকারে ভিডিও করেছেন। বড়ই কামেল আদমি। জলদি উপরে যাবে।
একটা মজার ঘটনা বলি,
কয়েকদিন আগে আমাদের মুগদা এলাকায় কয়েকজন সাংবাদিক এলেন, পানির সমস্যা নামক প্রতিবেদন নিয়ে। আমাদের এলাকায় পানির তেমন কোনও সমস্যাই নাই।
তবু সাংবাদিকরা একজন নিরীহ টাইপ লোককে পাকড়াও করে তার দুই পাশ থেকে দুটো ক্যামেরা তাক করলেন। হুস- করে দুই পাশ থেকে দুটো ফ্ল্যাশ জ্বলে উঠল। মুখের সামনে তৎক্ষণাৎ মাইক্রোফোন চলে এল। ডাইরেক্ট অ্যাকশান….
” আপনার এলাকায় পানির যে মারাত্তক সমস্যা তার খবর আমরা জানি, ঝটপট কয়েকটা মর্মস্পর্শী লাইন বলেন। কাল ভোরে টেলিকাস্ট হবে। কুইক!”
ঘটনার আকস্মিকতা সামলাতে কয়েক মুহূর্ত লাগল লোকটার। একটু শান্ত হয়েই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে শুরু করলেন তার জ্বালাময়ী ভাষণ। (চায়ের দোকানে বসা আমি তখন নীরব দর্শক 🙂 )
__” পানির জ্বালায় হাহাকার করে- আকাশ- বাতাস…
এই পল্লীর জনপদে পানির তৃষ্ণায় মরে কাক, কুকুর, মরে মানুষ… আরও…”
__ ” কিয়ের আরো? এই যে ভাই থামেন,… শুনেন আগে….. (ভাষণের টেম্পার দেখে সাংবাদিক নিজেই ঘাবড়ে গেছে) আকাশ বাতাস মরছে নাকি- কুকুর, বিড়াল, হরিয়াল, গরিয়াল হাহাকার করছে সেইটা বলার দরকার নাই। আম্নের এলাকায় ওয়াসার কি সমস্যা সেইটা কন। আসছে -আমার সিরাজউদ্দৌলা!!”
লোকটা একটু কাঁচুমাচু করে আবার শুরু করল।
__” ইয়ে, আমাদের এলাকায় পানি নাই…পানির বড়ই সমস্যা… কি আর বলব…”
লোকটা অসহায় হয়ে এদিক উদিক দেখছেন। কি বলবেন ভেবে পাচ্ছেননা। তার কনফিডেন্স ব্রেক হয়ে গেছে।
পানি নাই………… মানে… নাই পানি। পানির মধ্যে… ইয়ে… উম! পোকা, হ্যাঁ পোকা ( তার মুখ ১০০ ওয়াটের মত জ্বলে উঠল। আমি ইতিমধ্যে গরম চা-এ মুখ পুড়িয়ে ফেলেছি, কিয়ের পোকা!!! :/ ) পোকার জ্বালায় জীবন অতিষ্ঠ। আমরা পানি খাই নাকি পোকা খাই!? খালি কি পোকা!?? আরো আছে…… !”
__” আরোর গুস্টি মারি হালায়! (সাংবাদিক ক্রোধে ফেটে পড়ছেন, পারলে ওনাকেই কচকচ করে খেয়ে ফেলেন) থামেন আপনে।
হালারে দুইটা সুন্দর কথা কইতে দিলাম, হালায় মাইক্রোফোন পাইয়াই ফাল পারা শুরু করছে, গুয়ের ডাবুতে চুবাইয়া ওরেই গুয়ের পোকা খাওয়ায়ে দিমু!
আমি খিল খিল করে হাসতে হাসতে বাড়ির পথে পা দিলাম। যেমন বাদর, তেমন ত্যাদর!!
বড় একটা বিল্ডিং-এর দিকে তাকিয়ে থেমে গেলাম। পৃথিবী যদি নিজ অক্ষের চারপাশে সমবেগে না ঘুরত তাহলে কি এই বিল্ডিং-গুলোকে বামে-ডানে বা চারপাশে নড়তে দেখতে পেতাম না !!!? তাতে কি, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়!
আমি মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বামে ডানে হেলে দুলে হেটে চললাম বাড়ির পথে! আমার সাথে সাথে বিল্ডিংগুলোও ব্রেক ড্যান্স দিতে দিতে এগিয়ে চলল!!
__ 😀
২৮টি মন্তব্য
ইলিয়াস মাসুদ
হাসিতে হাসিতে দম ফাটিয়ে মরিয়ে যাইবেক!!
চরম বিনোদন হলো শিরনামহীনতায়
শাওন এরিক
হাহাহা! শুনে মজা পেলাম! 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
:D) :D)
সাংবাদিকরা এভাবেই তাহলে বানিয়ে বানিয়ে নিউজ বানায়? জনগণও নিজের মুখ টিভি পর্দায় দেখানোর জন্য কতো যে ঢং দেখায়!
শিরোনামটা বাংলায় দিলে ভালো হয়।
শাওন এরিক
এতো চিন্তায় চিন্তায়, নাম ছাড়াই ছাপিয়ে দিয়েছিলাম! 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
এতো চিন্তা করলে মাথার চুল পেকে যাবে।
শাওন এরিক
hahaha…
ইকরাম মাহমুদ
বিনুদন পাইলাম খুব। আজকের দিনের মৌলিক মানবিক চাহিদা ১টা পূরণ হল। 😀 :D)
শাওন এরিক
ওয়াও! তাহলে বাকি দিনটাও অসম্ভব ভালো কাটুক এই প্রার্থনা করছি! 😀
মোঃ মজিবর রহমান
শাওনে রাতে যদি এরিক আসত তেড়ে
উঠতাম আমি তাকেই তেড়ে হু হু \|/
শাওন এরিক
হেহেহেহে!!! :D) কবিতাটা মজার ছিলো!!
মোঃ মজিবর রহমান
-{@ \|/
শাওন এরিক
😀 -{@
ক্রিস্টাল শামীম
কেমেরা পাইলে একটু হিরো হিরো ভাব না নিলে হয়নাকি। আর সাংবাদিকদের কথা আর কি বলবো ,
পোস্ট খুব ভালছিলো সকাল সকাল মনটাকে সতেজ করেদিল।
শাওন এরিক
কথাটা একদম খাঁটি বলেছেন, ” ক্যামেরার সামনে সবাই হিরো!! :D)
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অনেক গুলো বিষয় তুলে ধরেছেন -{@ (y)
শাওন এরিক
😀 -{@
মিষ্টি জিন
সাংবাদিক আর তার সাংবাদিকতা.. :D)
জ্বালাময়ি ভাষনটা বেশী ভাল হয়েছে।
শাওন এরিক
😀 😀
মৌনতা রিতু
ক্যামেরা পাইলে পাবলিকের মাথা ঠিক থাকে না।
তা দোকান থেকে বিল্ডিং মাথা ঘুরাইতে ঘুরাইতে আসলে বিল্ডিংও ঘোরে !
খুব ভাল একটা এলোমেলো হাসির পোষ্ট। তয় ভাই পানির সমস্যা আছে এইডা ঠিক।
শাওন এরিক
বেশি নাই!! 😀
বিশুদ্ধ পানির জন্য পাম্প ব্যাবস্থা আছে!!
আবু খায়ের আনিছ
ব্যাপক বিনোদন। :D)
তবে কথা সত্য ইদানিং সাংবাদিক আগে থেকে বলে দেয় কি বলতে হবে।
শাওন এরিক
একমত!!! :D)
ব্লগার সজীব
জ্বালাময়ী ভাষন আর একটু চললে ভালই হত 🙂 :D) :D)
শাওন এরিক
তা ঠিক! সাংবাদিক মাঝখানে পা ঢুকায়ে ভণ্ডুল করে দিয়েছে প্রতিবার! 😀
শুন্য শুন্যালয়
হা হা ত্যাঁদড় লেখক দেখছি আপনি, পুরাই হলুদ, বেগুনী, আসমানি সাংবাদিকতা। :D)
মাথা এমন হেলেদুলে বিল্ডিং গুলোকে ডানে-বামে নড়ানো যায়? আগে জানতাম না তো 😀
ইকরাম ভাই বলেছেন, দিনের একটা মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরন হইলো। 😀
চলুক চলুক।
শাওন এরিক
😊😊😊
😀
শুন্য শুন্যালয়
অন্যরে হাসাইবেন, নিজে হাসবেন না, তা কেনু? এইটা পড়ুন। 😀
https://sonelablog.com/%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%81-%e0%a6%aa%e0%a6%a5%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a6%be/
শাওন এরিক
মাইয়া ছাড়াই বিয়া? এ কি অবস্থা!!
দুইন্যা গজব হই যাইবো! :p