
শিশুদের জন্য “হাতে খড়ি” উৎসব আগে গ্রাম শহরের সবখানে প্রচলিত থাকলেও, বর্তমানে এর বিন্দুবিসর্গ বলতে নেই বা কারোর চোখেও পড়ে না। আক্ষরিক অর্থে হাতে খড়ি হচ্ছে, লেখাপড়ার সাথে শিশুর প্রথম পরিচয়। শিশু জন্মের তিন থেকে চারবছরের মাথায় এই উৎসবটি পালন করা হতো। তা বেশি প্রচলন দেখা যেত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে। জন্মের পর থেকে জীবনে যতোগুলো উৎসব পালন করা হয়, তারমধ্যে হাতে খড়ি শিশুদের জন্য খুবই একটা গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ছিল।
হাতে খড়ি অর্থ হলো, শিক্ষার সূচনা বা শিক্ষার শুরু। এই উৎসবটি পালন করা হতো, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে, নাহয় সরস্বতী পূজার পরপর এক সপ্তাহের মধ্যে শনিবার বাদে যেকোনো দিন।
অনেকে এই বিশেষ উৎসবটি সরস্বতী পূজার দিনই সেরে ফেলতো। কেননা, সরস্বতী পূজা মানেই বিদ্যাদেবীর পূজা। তাই ওইদিন পুরোহিত সরস্বতী পূজা সম্পাদন করা শেষে, এই হাতে খড়ি উৎসবটির কাজ সম্পন্ন করতো।
যেসব অভিভাবকগণ তাঁদের শিশুকে হাতে খড়ি দিতে ইচ্ছুক থাকতো, সেসব শিশুদের হাতে খড়ি দেওয়ার কাজটি পূজামণ্ডপেই করে ফেলা হতো। যেসব শিশু বাদ পড়তেন, পূজার পর শনিবার বাদে যেকোনো দিন তাঁদের হাতে খড়ি উৎসবের কার্যসম্পাদন করা হতো। আগেকার সময়ে বেশিরভাগ শিশুদেরই হাতে খড়ি দিয়ে লেখাপড়া শুরু করা হতো। তা ধনী আর গরিবদের মধ্যে কোনও ব্যবধান ছিল না। তবে ধনীব্যক্তিদের সন্তানদের একটু জাঁকজমকভাবেই হাতে খড়ি দেওয়া হতো। কেননা, ধনীব্যক্তিদের ধনসম্পদ বেশি বলে, তাঁদের নিয়মনীতিও একটু বেশি থাকতো, তাই। তবে সব পিতা-মাতাই তাঁদের সন্তানকে হাতে খড়ি দেওয়ার নিয়মটা পালন করেই স্কুলে পাঠাতো।
আমারও হাতে খড়ি দেওয়া হয়েছিল। কীভাবে দেওয়া হয়েছিল, তা স্পষ্ট মনে না থাকলেও, একটু বড় হয়ে যাদের হাতে খড়ি উৎসব দেখেছি, তা খুবই মনে আছে। সরস্বতী পূজার আগের দিনই শিশুর অভিভাবক এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পূজা কার্যসম্পাদনকারী পুরোহিতকে অবহিত করে রাখতেন।
সরস্বতী পূজার আগে বা হাতে খড়ি উৎসবের আগের দিন বাঁশের কঞ্চি (ছিপ), কলাপাতা, একটা খালি দোয়াতে গরুর খাটি দুধ, ধান-দূর্বা, ফুল-তুলসী সহ কিছু ফলফলারি সংগ্রহ করে রাখা হতো। হাতে খড়ি উৎসবের দিন ভোর থেকে শিশুকে কিছুই খেতে দিতেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত হাতে খড়ি কার্যসম্পাদন না হতো।
এমনিতেই যেকোনো পূজার আগের দিন সংযম পালন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়মনীতি। তাই ছোটবেলায় শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজায় সংযমের দিন মাছ-মাংস পরিহার করা এমনিতেই ছিল বাধ্যবাধকতা। তারমধ্যে বাড়তি যোগ হচ্ছে হাতে খড়ি উৎসব। শিশুটির নিরামিষ আহার, আতপ চালের ভাত খাওয়া, উপোস থাকা সম্ভব হবে কি-না এসব নিয়ে পূজার আগের দিন শিশুর অভিভাবকগণ খুবই দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো।
সরস্বতী পূজার পুষ্পাঞ্জলি অর্পণে হতো আনন্দঘন এক আয়োজন! পুষ্পাঞ্জলি পর্বের পরপরই একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী তথা কোমলমতি শিক্ষার্থীও ধর্মীয় চেতনায় গ্রহণ করে নিতো হাতে খড়ি।
পুরোহিত হাতে খড়ি দিতে বা নিতে ইচ্ছুক সব শিশুদের একসারিতে বসাতেন। শিশুর সামনে থাকতো কাগজের মতো কলা-পাতার চিকণ টুকরো, আর গরুর খাটি দুধে জল মিশ্রিত একটা দোয়াত। দোয়াতে থাকতো কলমের মতো চোকা একটা ছোট বাঁশের কঞ্চি(ছিপ)। শিশুর পেছনে থাকতো শিশুর মা, বাবা অথবা বড়দিদি, বড়দাদা।
পুরোহিত মন্ত্রপাঠ করে দোয়াত থেকে কলমের মতন কঞ্চি দিয়ে এক এক করে প্রত্যেক শিশুর সামনে থাকা কলাপাতায় অ-আ ক-খ লিখে দিতেন। এরপর শিশুর পেছনে বসা মা, বাবা অথবা বড়দিদিরা শিশুর হাতে কঞ্চি ধরিয়ে পুরোহিতের অ-আ ক-খ-এর উপর শিশুর হাত ঘোরাতেন। কয়েকবার ঘোরানোর পর পুরোহিত সবার বিদ্যাবুদ্ধি কামনা করে সরস্বতী দেবির নিকট প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শেষ করতেন, হাতে খড়ি উৎসবটি। এরপর থেকেই শিশুর লেখা-পড়ার জন্য চলতো শতরকমের চেষ্টা প্রচেষ্টা।
আগেকার হাতে খড়ি উৎসবটা এখন আর দেখা যায় না।হাতে খড়ি কাকে বলে এবং হাতে খড়ি কী, তাও অনেকে জানেনা। এখন শুধু জানে এবং বুঝে, শিশুর বয়স তিন বছর হয়েছে। শিশুকে ইংলিশস্কুল বা কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করতে হবে। আর শিশুর কাঁধে সুন্দর বেশি দামি বড়সড় একটা স্কুলব্যাগ ঝুলিয়ে দিতে হবে। প্রতিদিন সকাল হতে-না-হতে শিশুর সাথে কিন্ডারগার্টেনে যেতে হবে। স্কুল ছুটি না হওয়া পর্যন্ত স্কুলের সামনে বসে ডিউটি দিতে হবে।

তাই এখন দেখা যায় শিশুর বয়স তিনবছর হলেই, শিশুর কাঁধে বড় একটা স্কুলব্যাগ ঝুলিয়ে দিয়ে নিকটস্থ একটা কিন্ডারগার্টেনে নিয়ে যেতে। এটা একরকম আধুনিক যুগের ফ্যাশনও বলা চলে। এমনও দেখা যায়, শিশু তাঁর হাতের বুড়ো আঙুল চুষতে চুষতে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে যাচ্ছে। সাথে সেজে-গুঁজে যাচ্ছে শিশুর মা অথবা অন্য কেউ। শিশুকে ক্লাসরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে, শিশুর ছুটি না হওয়া পর্যন্ত কিন্ডারগার্টেনের আশেপাশেই বসে বসে ডিউটি দিচ্ছে। গল্প করছে। আড্ডা দিচ্ছে।
স্কুল ছুটির পর আবার বিশাল একটা স্কুলব্যাগ শিশুর পিঠে ঝুলিয়ে দিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। যেসব আঙুল চোষা শিশুরা ব্যাগ বহন করতে অক্ষম, সেসব শিশুদের ব্যাগ শিশুর মা অথবা বাবা অথবা অন্য কেউ বহন করছে। কেউ যাচ্ছে হেঁটে। কেউবা যাচ্ছে গাড়িতে বা ব্যাটারিচালিত রিকশায়। শিশুর স্কুলব্যাগের ভেতরে থাকছে, পানির বোতল, প্লাস্টিকের টিফিন বাটি সহ পড়ার চেয়েও বাড়তি কিছু বই। যা শিশুর অভিভাবকরা খুব সখ করে শিশুর স্কুলব্যাগের ভেতরে ভরে দেয়। যাতে শিশুর কাঁধে ঝুলানো স্কুলব্যাগটি একটু বড় দেখা যায়। যত বড় স্কুলব্যাগ হবে, তত বাড়বে শিশুর অভিভাবকদের প্রশংসা, বাড়বে ছোট শিশুটির সুনাম আর আদর। তাই সময়সময় দেখা যায়, বিশাল স্কুলব্যাগের ভারে শিশু কুঁজো হয়ে যাচ্ছে। তবুও শিশুটিকে স্কুলব্যাগ বহন করতেই হচ্ছে।
৩১টি মন্তব্য
মাহবুবুল আলম
সেই যুগ আর নেই! আমরাও সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে চলেছি। সমসাময়িক লেখা ভাল লাগলো।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, শিশুদের জন্য অতি মূল্যবান এই হাতে খড়ি উৎসবটি একেবারে হারিয়েই গেল! এখন হিন্দু কি মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিস্টান কারোর ধর্মীয় নিয়মের এই উৎসবটি করে না। এখন শিশুদের জন্য প্রথম উৎসব হলো ভারী একটা স্কুলব্যাগ কাঁধে নেওয়ার উৎসব। যা চলছে তো চলছেই।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তৌহিদ
এখন আর দেখা যায় না এই অনুষ্ঠান দাদা। একটি শিশু যেদিন প্রথম কলম, পেন্সিল হাতে ধরে সেদিন অবশ্যই স্মরণীয় হয়ে থাকে। মুরুব্বী, কিংবা গুরুজনকে আপ্যায়ন করে আশীর্বাদ নেয়া হয়। আমার বেলাতেও হয়েছিলো।
কালের গর্ভে হাড়িয়ে যাচ্ছে এসব। মৌলিক একটি বিষয়ে পোষ্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনার প্রাপ্য।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, শিশুদের জন্য অতি মূল্যবান এই হাতে খড়ি উৎসবটি একেবারে হারিয়েই গেল! এখন হিন্দু কি মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিস্টান কারোর ধর্মীয় নিয়মের এই উৎসবটি করে না। এখন শিশুদের জন্য প্রথম উৎসব হলো ভারী একটা স্কুলব্যাগ কাঁধে নেওয়ার উৎসব। যা চলছে তো চলছেই।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
নৃ মাসুদ রানা
বর্তমান এমন সংকটেই আমরা বসবাস করছি।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, শিশুদের জন্য অতি মূল্যবান এই হাতে খড়ি উৎসবটি একেবারে হারিয়েই গেল! এখন হিন্দু কি মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিস্টান কারোর ধর্মীয় নিয়মের এই উৎসবটি করে না। এখন শিশুদের জন্য প্রথম উৎসব পালিত হয়, ভারী একটা স্কুলব্যাগ কাঁধে নেওয়ার উৎসব। যা চলছে তো চলছেই।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বন্যা লিপি
আমার বচ্চাদের হাতেখড়ি দিয়েছিলাম বাসায় মিলাদের অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে। আমাদের সময়ে এসব দেখিনি করতে। তবে শুনেছি। খুবই ভালো পোস্ট লিখেছেন দাদা।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, শিশুদের জন্য অতি মূল্যবান এই হাতে খড়ি উৎসবটি একেবারে হারিয়েই গেল! এখন হিন্দু কি মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিস্টান কারোর ধর্মীয় নিয়মের এই উৎসবটি করে না। এখন শিশুদের জন্য প্রথম উৎসব পালিত হয় ভারী একটা স্কুলব্যাগ কাঁধে নেওয়ার উৎসব। যা চলছে তো চলছেই।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মোঃ মজিবর রহমান
সময়ের স্রোতে ভেসে গেছে অনেক অতীত বুনিয়াদি শিক্ষাব্যাবস্থা সহ অনেক কিছুই। ভাল লেখা দাদাভাই। কিন্তু অনুতাপ করে কোন লাভ নাই।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, শিশুদের জন্য অতি মূল্যবান এই হাতে খড়ি উৎসবটি একেবারে হারিয়েই গেল! এখন হিন্দু কি মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিস্টান কারোর ধর্মীয় নিয়মের এই উৎসবটি করে না। এখন শিশুদের জন্য প্রথম উৎসব পালিত হয় ভারী একটা স্কুলব্যাগ কাঁধে নেওয়ার উৎসব। যা চলছে তো চলছেই।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মোঃ মজিবর রহমান
সব অতীত ডিজিটাল টাল্মাটাল দেশটা। লিখুন একটি কবিতা ডিজিটালে টাল্মাটাল।
নিতাই বাবু
বর্তমানে এই হাতে খড়ি উৎসটি কোনও ধর্মের লোকই করে না, দাদা। করে শুধু ব্যাগ উৎসব। যত ভারী ব্যাগ তত সুনাম।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সত্যিই এখন আর দেখা যায় না এই অনুষ্ঠান দাদা।
আমার বাবার হাতে আমার হাতেখড়ি। যা এখনো পুরোপুরিভাবে মনে আছে।
আজকাল এসব কালের গর্ভে সকলকিছু হারিয়ে যাচ্ছে।
এখন সবকিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে তাই এমনি হচ্ছে।
ধন্যবাদ দাদা এরূপ পোষ্ট লেখার জন্য।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, শিশুদের জন্য অতি মূল্যবান এই হাতে খড়ি উৎসবটি একেবারে হারিয়েই গেল! এখন হিন্দু কি মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিস্টান কারোর ধর্মীয় নিয়মের এই উৎসবটি করে না। এখন শিশুদের জন্য প্রথম উৎসব পালিত হয় ভারী একটা স্কুলব্যাগ কাঁধে নেওয়ার উৎসব। যা চলছে তো চলছেই।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ছাইরাছ হেলাল
হাতে খড়ির বিষয়টি এমন করে জানা ছিল না।
বিস্তারিত জানলাম।
এখন আমরা ডিজিটাল জামানার মানুষ, পড়ালেখার রকম-সকম ও তেমন।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, শিশুদের জন্য অতি মূল্যবান এই হাতে খড়ি উৎসবটি একেবারে হারিয়েই গেল! এখন হিন্দু কি মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিস্টান কারোর ধর্মীয় নিয়মের এই উৎসবটি করে না। এখন শিশুদের জন্য প্রথম উৎসব পালিত হয় ভারী একটা স্কুলব্যাগ কাঁধে নেওয়ার উৎসব। যা চলছে তো চলছেই।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
নুর হোসেন
ইন্টারেস্টিং একটা তথ্য জানলাম,
কোন এক সময় শিশুদের প্রথম শিক্ষাকে কেন্দ্র করে উৎসব হতো।
আমার বেড়ে উঠা গাজীপুরের হিন্দু পল্লীর পাশাপাশি অঞ্চলে আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে তাদের শতশত অনুষ্ঠান দেখেছি তবে আপনার ঐ অনুষ্ঠানটি দেখেনি।
হতে পারে বিলুপ্ত প্রায়, ইসলাম ধর্মের সুদখোর ঘুষখোরের ইমানের মত অনুষ্ঠানটিও হারিয়ে গেছে।
নিতাই বাবু
বর্তমানে এই হাতে খড়ি উৎসটি কোনও ধর্মের লোকই করে না, দাদা। করে শুধু ব্যাগ উৎসব। যত ভারী ব্যাগ তত সুনাম।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যেরজন্য অসংখ্যধন্যবাদ জানাচ্ছি, শ্রদ্ধেয় দাদা।
জিসান শা ইকরাম
হাতে খড়ি কাকে বলে এবং হাতে খড়ি কী, তা কেহ জানেনা আজকাল।
সবাই ব্যস্ত শিশুকে ইদুর দৌড়ে শামিল করার প্রতিযোগিতায়।
ভালো লেগেছে লেখা দাদা।
নিতাই বাবু
বর্তমানে এই হাতে খড়ি উৎসটি কোনও ধর্মের লোকই করে না, দাদা। করে শুধু ব্যাগ উৎসব। যত ভারী ব্যাগ তত সুনাম।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যেরজন্য অসংখ্যধন্যবাদ জানাচ্ছি, শ্রদ্ধেয় দাদা।
শিরিন হক
মনে আছে তালপাতা আর নারকেল ছোবড়া পুড়িয়ে কালি দিয়ে হাতে খড়ি দেয়া হয়েছিলো আমার। তার পর বাচ্চাকে হুজুর ডেকে নাস্তা পানি খায়িয়ে হাতে খড়ি দেই। এখনকার মায়েরা হাতি খড়ি মানে ব্যাগভর্তি বই নিয়ে কিন্টার গার্টেন এ দৌরানো বোঝেন।
চমৎকার একটি পোষ্ট। পড়ে ভালোলাগল।
নিতাই বাবু
আমার মনে না থাকলেও, আমি আমাদের গ্রামে আরও দশেক শিশুদের হাতে খড়ি উৎসব দেখেছি।
বর্তমানে এই হাতে খড়ি উৎসটি কোনও ধর্মের লোকই করে না, দিদি। করে শুধু ব্যাগ উৎসব। যত ভারী ব্যাগ তত সুনাম।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যেরজন্য অসংখ্যধন্যবাদ জানাচ্ছি, শ্রদ্ধেয় কবি দিদি।
এস.জেড বাবু
আট কেজি বাচ্চার পিঠে ছয় কেজি বই।
এ বিজয়ের ঘোর বিরুধি আমি।
আপনি অসাধারণ লিখেছেন।
একদিন হয়ত টনক নড়বে শিক্ষা পর্যালোকদের।
এস.জেড বাবু
///বিষয়ের
নিতাই বাবু
বর্তমানে এই হাতে খড়ি উৎসটি কোনও ধর্মের লোকই করে না, দাদা। করে শুধু ব্যাগ উৎসব। যত ভারী ব্যাগ তত সুনাম।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যেরজন্য অসংখ্যধন্যবাদ জানাচ্ছি, শ্রদ্ধেয় দাদা।
কামাল উদ্দিন
সুফিয়া কামাল
আজিকার শিশু
আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা
তোমরা এ যুগে সেই বয়সেই লেখাপড়া কর মেল।
আমরা যখন আকাশের তলে ওড়ায়েছি শুধু ঘুড়ি
তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগন জুড়ি।
উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু সব তোমাদের জানা
আমরা শুনেছি সেখানে রয়েছে জিন ,পরী, দেও, দানা।
পাতালপুরীর অজানা কাহিনী তোমরা শোনাও সবে
মেরুতে মেরুতে জানা পরিচয় কেমন করিয়া হবে।
তোমাদের ঘরে আলোর অভাব কভূ নাহি হবে আর
আকাশ-আলোক বাঁধি আনি দূর করিবে অন্ধকার।
শস্য-শ্যামলা এই মাটি মা’র অঙ্গ পুষ্ট করে
কামাল উদ্দিন
সুফিয়া কামাল
আজিকার শিশু
আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা
তোমরা এ যুগে সেই বয়সেই লেখাপড়া কর মেল।
আমরা যখন আকাশের তলে ওড়ায়েছি শুধু ঘুড়ি
তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগন জুড়ি।
উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু সব তোমাদের জানা
আমরা শুনেছি সেখানে রয়েছে জিন ,পরী, দেও, দানা।
পাতালপুরীর অজানা কাহিনী তোমরা শোনাও সবে
মেরুতে মেরুতে জানা পরিচয় কেমন করিয়া হবে।
তোমাদের ঘরে আলোর অভাব কভূ নাহি হবে আর
আকাশ-আলোক বাঁধি আনি দূর করিবে অন্ধকার।
শস্য-শ্যামলা এই মাটি মা’র অঙ্গ পুষ্ট করে
আনিবে অটুট স্বাস্থ্য, সবল দেহ-মন ঘরে ঘরে।
তোমাদের গানে, কল-কলতানে উছসি উঠিবে নদী-
সরস করিয়া তৃণ ও তরুরে বহিবে সে নিরবধি
তোমরা আনিবে ফুল ও ফসল পাখি-ডাকা রাঙা ভোর
জগৎ করিবে মধুময়, প্রাণে প্রাণে বাঁধি প্রীতিডোর।
কয়েকটা লাইন বাদ পড়েছিল বলে আবার দিলাম
নিতাই বাবু
আজকের শিশুদের এখন লাগে না হাতে খড়ি,
এমতেই শিশুরা করে স্কুলব্যাগ নিয়ে হুড়োহুড়ি।
শিশুকে নিয়ে পিতা-মাতা সবাই ব্যস্ত থাকে,
আস্ত একটা ভারী ব্যাগ ঝুলিয়ে দিবে তাকে।
হাতে খড়ি গল্লায় যাক, তা দিয়ে কী হবে?
দশ বছরে মেট্রিক পাশ করতে পারলেই হবে।
কামাল উদ্দিন
দারুণ, তবে এখনকার মায়েরাই শিশুদের জন্য যম বলে আমার মনে হয়। একেবারে পাগল হয়ে থাকে ওদের কাছ থেকে লেখাপড়া আদায় করার জন্য।
সুরাইয়া পারভিন
সত্যিই খুব খারাপ লাগে যখন দেখি ছোট ছোট বাচ্চা গুলো কাঁধে এতো বড়ো বড়ো ব্যাগ টেনে নিয়ে স্কুলে যায়। কিন্তু কি আর করার যুগের সাথে তো তার মিলাতেই হবে।😭😭
হাতে খড়ি অনুষ্ঠান শুধু শোনা গল্প কখনো চোখে দেখিনি।
নিতাই বাবু
তখনকার সময়ে অভাব অনটনের মাঝেও হাতে শিশুদের খড়ি দেওয়া হতো। আমাকেও দেওয়া হয়েছে। আরও দশজন শিশুদের হাতে খড়ি উৎসবও দেখেছি।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি, শ্রদ্ধেয় দিদি।