
স্কুল জীবনেই লেখালেখির শুরু। বাবার বইপড়ার নেশা থেকেই আমার মধ্যেও সেই নেশাটা জন্মগতভাবে চলে আসে। বিভিন্ন ধরনের ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে সেবা প্রকাশনীর সব বই, নিউজিপেপার সবকিছুই বাবা আনতো । আমিও পড়ার জন্য ব্যাকুল থাকতাম। ছোটবেলায় সবার মাঝেই কমবেশী যেটা হয় , আমার মধ্যেও সেটা হতো। যখন যে চরিত্র ভালো লাগতো সেটাই হবার ইচ্ছা হতো। সেই সুবাদে লেখালেখিতে আসা।কোনকিছু লিখতে না পেরে মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে কবিতার আশ্রয় নিলাম। এভাবে অনার্স পর্যন্ত লিখেছি। ততোদিনে কবিতা নয় আরো অনেক কিছু লিখে ফেললাম। সেটা শুধু জানতো আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব।কারন আমার পরিবার জানলে বা অন্যরা জানবে এটা ভাবতেই কেমন যেনো লাগতো। কাউকে জানাতে চাইনি।
এরমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে গোপনে কবিতা ছাপানোর জন্য ২/১ জায়গায় কবিতা পাঠালাম। যখন জানলাম তারা আমার কবিতা ছাপানোর জন্য সিলেক্ট করেছে সেদিন মনে হলো আমিও লিখতে পারি। আরো অনেকের মধ্যে আমার একটি কবিতা ছাপাকারে বইটি যখন আমার হাতে এলো আনন্দে আপ্লুত হলাম।তখনও বাসার কাউকে কিছু জানাতে পারিনি লজ্জায়, সঙ্কোচে। অনার্স পর্যন্তই লেখালেখি করেছি আর বইয়ের পোকা ছিলাম। তারপর বিভিন্ন কারনে লেখালেখি, পড়া থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলেছি। আজ প্রায় ১৫/১৬ বছর পর লেখালেখিতে আবার ঢুকে পড়লাম সোনেলার ইকরাম দাদা ভাই আর আরেক শুভাকাঙ্খী বড় ভাইয়ের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায়। স্কুল-বান্ধবী যূথীর অনলাইনে গ্রাফিক্স শিখতে গিয়ে ইকরাম দাদা ভাইয়ের সাথে পরিচয়। এর আগে ব্লগ সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিলোনা , শুধুই বিভিন্ন ব্লগারের মৃত্যুর কারনে যেটুকু জেনেছি। এখানে লিখতে গিয়ে যাদের অনুপ্রেরণা আর আন্তরিকতা পেয়েছি তাতে আমি সত্যিই অভিভূত। কারণ তাদের সবার লেখায় আমি বিমোহিত হয়েছি। তারা যখন আমার লেখার প্রশংসা করেছে, লিখতে উৎসাহ দিয়েছে নতুন করে আমার আমিকে আবিষ্কার করলাম ।
নতুন করে পড়ার নেশা , লেখার নেশা তৈরী হলো। সোনেলার সবার লেখা পড়তে শুরু করলাম, মন্তব্য দিলাম। এর মাঝে ‘পৌষ সংক্রান্তি উৎসব‘ নিয়ে লেখা আহ্বান করা হলো। কি লিখবো বুঝতে পারছিলাম না । হঠাৎ বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো। লিখতে পারলাম না বেধেঁ দেয়া সময়ের মধ্যে, পরে যখন জানলাম সময় বাড়ানো হবে তখন আমিও বললাম সময় বাড়ানোর জন্য ।সোনেলা কর্তৃপক্ষ সময় বাড়ালো আর আমিও ভাবলাম কিছু একটা লিখবোই।এতো বড় বড় লেখকদের মাঝে পুরষ্কার পাবো সেটা ভাবতেই পারিনি। যখন জানলাম আমি প্রথম হয়েছি ‘আমি হতবাক‘, বিশ্বাস করতেই পারছিলাম না। সোনেলার মিলনমেলা হবে, সেখানেই পুরষ্কার দেয়া হবে।সবার ভালোবাসায় এতটাই মুগ্ধ যে খুব ভালোলাগছিল সবার সাথে দেখা হবে।
অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, ‘সোনেলার মিলনমেলা‘।রিক্সা পেতে দেরী, রাস্তার জ্যাম, রিক্সা ধীরগতিতে চালানোর কারণে আমরা দু্ই বান্ধবী সময়মত পৌঁছাতে পারিনি। যখন পৌঁছালাম, দেখলাম সবাই আমাদের আগেই চলে এসেছে। এক এক করে চেনা মুখগুলো দেখে আবেগ আপ্লুত হলাম। এরমাঝে কিছু চেনা মুখের অনুপস্থিতি খুব কষ্ট দিলো। সাবিনা আপু, তৌহিদ ভাই, এস.জেড.বাবু ভাই, কামাল ভাই, শবনম আপু , আরজু আপু সবাইকে মিস করেছি। এই প্রথম সেই বিখ্যাত কবি , যার কবিতার অর্থ বুঝলেও সারমর্ম বুঝতে পারিনা তাকে দেখতে পেয়ে ধন্য হলাম। তার মন্তব্যগুলো সত্যিই মজাদার, অনুপ্রেরণার। ওনার লেখার ভাষাগুলো কঠিন হলেও মন্তব্যগুলো সহজ, সরল, আন্তরিক। সামনাসামনি সবাইকে দেখা, তাদের পরিচয় পাওয়ায় অন্যরকম ভালো লাগলো।
এবার এলো সেই অনন্য স্বীকৃতির সম্মাননার পুরষ্কার হাতে নেবার পালা। সেই মূহুর্তের অনুভূতির কোনো ভাষা খুজেঁ পাচ্ছি না। পুরষ্কার বিতরনী শেষে খাবারের আয়োজন। খাবারের মাঝেই টুকটাক কথাবার্তা চললো, খাবার শেষে আরো কিছুক্ষণ ব্লগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা চললো। এভাবেই সোনেলার মিলনমেলা -২০২০ প্রাণাঞ্জল, স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাপ্তি হলো। সোনেলার কর্তৃপক্ষকে অশেষ ধন্যবাদ আমাকে এমন একটি প্লাটফর্ম উপহার দেবার জন্য, অনুপ্রাণিত করার জন্য। পুরষ্কার প্রাপ্তদের অভিনন্দন ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিবছর এমন মিলনমেলার আহবান জানাচ্ছি।
৩৪টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
ইচ্ছায় এগিয়ে যাচ্ছেন । আরও সুন্দর সুন্দর লেখা লিখুন। কামনা করি,।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা রইলো। আশীর্বাদ করবেন
এস.জেড বাবু
পরিবারের একজন মুরুব্বীর শারিরীক অবস্থার নিত্য অবনতি মানষিক ভাবে অনেকটা অপদস্থ করে রেখেছে। এরপর ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে একটা অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় মারাত্বক ভাবে অপদস্থ ছিলাম।
অনেক বেশি মিস করেছি আমি আপনাদের।
আপনার জন্য নিরন্তর শুভকামনা রইলো,
দোয়া করি একদিন অনেক বড় মানের লিখক হবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। সবকিছু সুন্দর, ভালো হোক আপনার শুভ কামনা রইলো। ভালো থাকবেন
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন দিদি।
সবাইকে একসাথে দেখে বেশ ভালো লাগছে।
শতশত শুভকামনা প্রিয় সোনেলা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা। সবাই একহতে পারলাম কৈ! অনেকেই আসেননি, আপনিও না। ধন্যবাদ দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
দেখা হলো সবার সাথে
মন খুলে কথা বলা।
মুখরোচক খাবার পাওয়া
সফল ও সার্থক হলো
সোনেলার মিলন মেলা
আপনার জন্য শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা। খুব ভালো লাগলো দেখা পেয়ে। আপনার জন্য ও শুভকামনা রইলো
জিসান শা ইকরাম
অত্যন্ত আন্তরিক ভাবে অনুষ্ঠিত মিলনমেলায় তোমাদের সবাইকে পেয়ে আনন্দে আমার মন কানায় কানায় পুর্ন হয়ে গিয়েছে। অতি অল্প সময় হলো তোমাকে আর যুথীকে চিনেছি। তোমাদের আন্তরিকতায় সময়কে অতিক্রম করে দিয়েছ তোমরা, মনে হয় কত যুগের আত্মীয় তোমরা।
সোনেলা পরিবার ধন্য তোমার মত একজনকে পেয়ে।
শুভ কামনা ছোটদি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমিও ধন্য আপনাদের অনুপ্রেরণা আর আশীর্বাদ পেয়ে। আপনাদের আন্তরিকতায় আমিও বিমোহিত, বিস্মিত। তাইতো সবসময় আপনাদের সাথে পথ চলতে চাই। অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা দাদাভাই
সাবিনা ইয়াসমিন
অল্প সময়ের মাঝে সোনেলায় এসে যেভাবে সবার সাথে মিশে গেছেন তাতে আপনার আন্তরিক মনভাব বুঝতে সময় লাগেনি। আপনার লেখা,এবং মন্তব্য গুলো দুই-ই প্রশংসনীয়। আপনার মতো ব্লগার পেয়ে সোনেলা পরিবার ধন্য হয়েছে। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো আপনার জন্যে, সোনেলা ব্লগের জন্যে 🌹🌹
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই আপু। আমি চেষ্টা করেছি , কতটুকু পেরেছি জানিনা। এখানে এসে অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পেরেছি এটাই আমার অনেক অনেক বড় প্রাপ্তি। আপনাদের আন্তরিকতা আমার জন্য আশীর্বাদ। আপনাকে দেখার খুব ইচ্ছা ছিলো। ☹️☹️☹️ আপনি আর তৌহিদ ভাই যে আসবেন না তা বুঝিনি। ভালো থাকবেন সবসময়
ইসিয়াক
শুভকামনা সবসময় ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার জন্য ও শুভকামনা সবসময়
ফয়জুল মহী
শুভেচ্ছা সতত।♥️
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া
হালিম নজরুল
সোনেলা এগিয়ে যাক সমহিমায়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হুম সোনেলা এগিয়ে যাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া
মাহমুদা মজুমদার
আজ ই যুক্ত হলাম সোনেলা পরিবারের সাথে
আশা ভালো কাটবে সবার সাথে আগামীর দিনগুলো, সবাই কে পাশে চাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
স্বাগতম আপনাকে। অবশ্যই ভালো কাটবে, সবাইকে পাশে পাবেন। ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো
মহানন্দ
যারা সুন্দর করে অক্ষর গুলো সাজিয়ে মনের ভাব , কল্পনা প্রকাশ করতে পারে তাদেরকে সব সময় শ্রদ্ধা করি। অনেক সময় মনে হয় এটা একটা বিধাতা প্রদত্ত গুন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ঠিক বলেছেন দাদা। যারা সুন্দর করে সাজিয়ে লিখতে পারে তাদের মাঝে ঈশ্বরের কৃপা থাকে। আমি সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারিনা মনের শব্দগুলো। এটাই আমার ব্যর্থতা। ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইলো
ছাইরাছ হেলাল
এ পুরস্কার আপনার একান্ত প্রাপ্যই।
আমরা শুধু আপনার হাতে তুলে দিয়েছি মাত্র।
আপনার একান্ত ভালোবাসায় সোনেলা সামনে এগিয়ে যাবে,
এ কামনা আমাদের সবার।
ভাল থেকে আমাদের অনেক পড়ার সুযোগ দেবেন,এমন আশাই রাখি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনাদের উৎসাহ, উদ্দীপনা আমাকে ভালো লিখতে সাহায্য করছে। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
ইঞ্জা
সুন্দর লেখণীর মধ্য দিয়ে আপনার ভালোবাসার কথা জানালেন সোনেলা ব্লগ এবং তার পরিবারকে, খুব ভালো লাগলো আপু, ধন্যবাদ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ আপনাদের সবার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা আপু
কামাল উদ্দিন
আপনার আত্মবিশ্বাসই আপনাকে প্রথম হতে সাহায্য করেছে, অভিনন্দন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা রইলো। শুভ সকাল
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ আপু।
তৌহিদ
আপনার সুন্দর লেখনীতে সোনেলার মিলনমেলা সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। আসলে নিজে উপস্থিত থাকতে না পেরে খুব খারাপ লেগেছে। যারা বিজয়ী হয়েছেন ক্রেস্ট পেয়েছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা।
ব্লগ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মিলনমেলা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য। আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর করে পোস্ট দেয়ার জন্য।
ভালো থাকবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকবেন সবসময়। সোনেলার জন্য শুভ কামনা ও কৃতজ্ঞতা জানাই। শুভ সকাল
মনির হোসেন মমি
খুব সুন্দর স্মৃতিময় মুহুর্ত ছিল। ধন্যবাদ এমন সুন্দর পোষ্টের জন্য। শুভ কামনা রইল দিদি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হুম ভাইয়া। এ মুহুর্ত চির অম্লান হয়ে রবে। তবে দেরীতে পৌঁছানোর কষ্টটা ভুলতে পারছিনা। ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য ও