যে ছেলেটা তোমার মন দিনে দিনে জয় করে নিলো। দিনে দিনে একটু একটু করে
তোমার বিশ্বাস অর্জন করলো, একটু একটু করে তোমার সত্ত্বায় মিশে গেলো, একটু একটু করে তোমার মতো করে দুনিয়াটা দেখতে শুরু করলো,
সেই ছেলেটা হঠাৎ করে তোমার থেকে কেনো মুখ ফিরিয়ে নিলো !
তুমি কি শুধু সারাদিন-মান এটাই খেয়াল করেছো যে , সে সব সময়ের মতোই বাবু বাবু করে যায় কিনা বা সব সময়ে একি লেভেলে জান জান করে যাচ্ছে কিনা !
তুমি কি এটা খেয়াল করে দেখছো কখনো যে সে ,কি তোমাকে পাবার জন্য ডাই হার্ড চেষ্টা করে যাচ্ছে কিনা !
তুমি কি এর মাঝে ভণিতা দেখেছো !
কিছু সম্পর্কে একটা পক্ষ খুব সুন্দর করে অপরপক্ষকে জয় বা পাবার জন্য হাঁটু ভেংগে নামে। সেখানে প্রেমের সাথে ভালোবাসা থাকেনা।
যেটা থাকে সেটা হচ্ছে, ” পাইতেই হবে টাইপের একটা জেদ। একটা যুদ্ধ ”
এই যুদ্ধে সে তার ভোল আমূল পাল্টে ফেলে।
তুমি শুইতে বললে সে শুয়। তুমি খাইতে বললে সে খায়। যেভাবে বলো সেভাবেই সব করে। একটা আর্ট ফিল্মের চরিত্রের মতো নিখুদ ভাবে অভিনয়টা করে যায়।
অতঃপর, যুদ্ধে জেতার পর( লিটনের ফ্লেটে দুর্বল মূহুর্তের ভিডিও, বা বিয়ের পর) এতোদিনের খিচ খেয়ে করে যাওয়া কষ্টকর অভিনয়ের শোধটা আসল সহ তুলে।
ঘটণা হচ্ছে, সম্পর্ক চলা কালীন দুই পক্ষই একটা ঘোরের মধ্যে থাকে তখন দুই পক্ষই শুধু এটা নিয়েই ভাবে , যে সে আমায় ভালোবেসে যাচ্ছে কিনা আগের মতো।
লিসেন, মানুষ কিন্তু পাথরের মতো না যে শুধু ক্ষয় হবে পরিবর্তন হবেনা।
মানুষ দিন দিন পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনের সাথে তার রুচি, তার আবেগ, তার ব্যাক্তিত্ব, তার অব্জার্ভেশনের পম্থাও পরিবর্তন হয়।
সেই দুই পক্ষ কি এই সব পরিবর্তনের সাথে তাদের পার্টনারের পরিবর্তন্টা খেয়াল করার সময় পায়! তারা শুদু বাবু বাবু, জান জান জিনিষটা নিয়েই ব্যাতিব্যাস্ত থাকে।
মানুষতো ভাই আর ফেরেশতা না। ফেরেশতা থাকে আসমানে। তাই বাবু বাবু , জান জানের দিকে নজর দেয়ার সাথে সাথে পরিবর্তন গুলাও একটু খেয়াল করে দেখার চেষ্টা করো।
সেই সাথে দুই পক্ষ বসে , সেই জিনিষ্টা রিজেক্ট করো যে জিনিষ্টা তোমাদের আখেরে ভালো হবে না। সেই জিনিষ্টা এক্সেপ্ট করো, যে জিনিষ্টা তোমাদের আখেরে লাভ হবে।
আর পরিবর্তন যদি হয় সন্দেহ ! তবে, সম্পর্ক আগানো আমার মনে হয় ঠিক হবেনা। বা পরিবর্তন যদি হয়, ” শীলা তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে রুম ডেটে গেছে ” টাইপের হয় তবে রিজেক্ট করে দাও।
আর হ্যা, একটা দীর্ঘ সময়ের সম্পর্কে দুই পক্ষের মতে শরীর ব্যাপারটা আস্তে পারে সেটা ডিপেন্ড করে সম্পর্কটা কতো মেচিউর, মানুষ দুটা কতো মেচিউর, সম্পর্কের ব্যাপারে কতোটুকু ডেডিকেটেড।
বিশ্বাসের সাথে যদি শরীর দেয়ার বা একবার ফ্লেটে যাবার কথা আসে তবে রিজেক্টে করে দাও।
একটা সম্পর্কে খারাপ সময় আস্তেই পারে তাই বলে একেবারে আগ পিছু না ভেবে, দুই পক্ষই কাদা ছোরাছুরিতে না নেমে পরাটা ভাল। দু জনের মাঝে স্বাভাবিক বন্ধুত্বের সম্পর্কটা বজায় রেখে, একটা মিউচুয়াল ডিসিশনে আসা জেতে পারে।
আমাদের বাবা মা রা ৩০-৩৫ বছর ধরে একসাথে একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতেছেনা ! তারা কি ঝগড়া ঝাটি করেনা ! তারা কি সবসময় লুতুপুতু জীবন জাপন করে ! করেনা।
আহলে তারা কিভাবে, টেনে নিয়ে যায়! ১। বিশ্বাস ২। ধৈর্য্য ৩। সম্পর্কের প্রতি ডেডিকেশন।
আমাদের বাংগালী সামাজীকতায় এই জিনিশগূলা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার বুনিয়াদ।
এগুলা না থাকলে , ইউরোপ, আমেরিকার মতো প্রতিদিন ডিভোরসের জন্য লাইন লেগে যেতো।
ইউরোপ, আমেরিকা থেকে গবেষণার জন্য আসে যে, একটা সম্পর্ক ৩০-৩৫ বছর ধরে টিকিয়ে রাখার মূল মন্ত্র কি।
মূল মন্ত্র উপরের ঐ তিনটা।
শেষ একটা কথা , সেটা হচ্ছে, ” Love is like a photo negative, it’s need darkness to develop “.
ভালো থাকোক জগতের সকল কপোতকপোতি। 🙂
https://www.facebook.com/rong.janina/posts/721913354607740
১৬টি মন্তব্য
ব্লগার সজীব
সম্পর্ক নিয়ে দারুণ বিশ্লেষণ করেছেন ইমন ভাই।১। বিশ্বাস ২। ধৈর্য্য ৩। সম্পর্কেকে স্থায়ী করে বছরের পর বছর।
ইমন
সম্পরর্ক আসলে একটা সামাজিক প্রতিষ্ঠান। যেমন: বিয়ে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান তেমনি। আমাদের এই জেনারেশনের মধ্যে প্রচন্ড রকমের অস্থিরতা লক্ষ করা যায় এই সম্পরর্ক নিয়ে। তারা কেমন যেনো এইটা ভালো না ওইটা ভালো দু টানায় ভোগে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
খুবই বাস্তব একটি পোষ্ট। বিশ্লেষণ করেছেন অনেক সুন্দর ভাবেই।
ঠিক বলেছেন যে কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠে প্রথমত বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করেই।
তবে আমি বিশ্বাসের পাশাপাশি আত্মসম্মানকেও প্রাধান্য দেই। বিশ্বাস করলাম অথচ সম্পর্ককে অসম্মানীত করছি,
এমন সম্পর্ককে কিছুতেই টিকিয়ে রাখার পক্ষপাতি আমি নই।
লেখায় + (y)
ইমন
সহমত। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য। 🙂
অরণ্য
“মানুষ দিন দিন পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনের সাথে তার রুচি, তার আবেগ, তার ব্যাক্তিত্ব, তার অব্জার্ভেশনের পম্থাও পরিবর্তন হয়।” (y)
ইমন
অরণ্য ভাই , ধন্যবাদ 🙂
লীলাবতী
খুব ভালো একটি লেখা পড়লাম। এমন লেখার জন্য ধন্যবাদ।
ইমন
আমি কিন্তু ভীষন লাজুক :p আর কিছু কমুনা 😀
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
জীবন বিশ্লেষনধর্মী একটি পোষ্ট এমন ভাবে ভাবতে পারলে জীবন হতো বিপদমুক্ত -{@
ইমন
সেই আশায় আছি। আমাদের জীবন হোক বিপদ মুক্ত। 🙂
জিসান শা ইকরাম
সম্পর্ক একটি জটিল বিষয়
সম্পর্ক হীনতার মাঝেও একই সাথে বসবাস করে বছরের পরে বছর,এমন উদাহরন অনেক
কখন কার সাথে কারো সম্পর্ক হয়ে যায়,আবার ছেড়ে চলে যায়,এটি অনিশ্চিত
মানুষ কি চায় তা সে নিজেও জানেনা।
লেখা ভালো হয়েছে।
ইমন
ওয়াও 😀 জিশান ভাইয়া , সহমত আপনার সাথে। আমার পরিচিত এমন আছে যে তারা তাদের জীবন পার করে দিয়েছে কিন্তু সেখানে ভালোবাসার ছিটেফুটে নাই। ভাবনার বিসয়।
শুন্য শুন্যালয়
ইমন ভাইয়ের লেখা মানেই এখন অন্যকিছু। ভাবায়, ভাবতে শেখায়। প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কে কখন যেন বন্ধুত্ব চলে যায়, স্বার্থপরতা চলে আসে। হয়তো ভালোবাসা থেকেই আসে। বুঝিনা, বড্ড কঠিন এই বিষয়গুলো।
ইমন
জীবন্টা আসলে খুব সহজ যদি সম্পর্কের মাঝে থাকে বিশ্বাস , শ্রদ্ধা, বন্দধুত্বের আবেদন, এক সাথে বুড়ো হয়ে যাবার এডভেঞ্চার তবে আর কিছু লাগে :p
ছাইরাছ হেলাল
আমাদের সম্পর্কের জটিলতা কঠিন। চুড়ান্ত সমাধান আরও কঠিন।
সুন্দর বিশ্লেষণ করেছেন।
ইমন
ধন্যবাদ ছাইরাছ হেলাল ভাইয়া। চুড়ান্ত সমাধান দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমারা প্রতিদিন সুন্দর করে বাচার চেষ্টা করলে দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।
শুভেচ্ছা নিবেন 🙂