একটু দেরীতে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি।
রঙ নিয়ে হোলি খেলা সেই আদিম যুগ থেকে, প্রাগৈতিহাসিক আমল থেকে চলে আসছে।
এই খেলায় মত্ত এখনো উপরওয়ালা
(এই উপরওয়ালা সেই উপরওয়ালা) থেকে শুরু করে নিচের দু-পেয়ে ধ্বজাধারীরা পর্যন্ত।
এটা আমাদের সমাজের, ব্যাক্তি মননের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে আছে ।
এই মূর্খামী ততদিন যাবেনা যতোদিন পর্যন্তনা,
সাদা গাড়ীতে কালো টায়ার ব্যবহৃত হবে;
বর্ণ বিদ্বেষ কখনোই যাবে না যতদিন মানুষ কালোকে অশুভ’র প্রতীক আর সাদাকে শান্তি’র প্রতীক হিসেবে ভাববে,
বর্ণবিদ্বেষ ততদিন দূরীভূত হবে না যতদিন মানুষ বিয়ের অনুষ্ঠানে সাদা পোষাক আর শেষ কৃত্যে কালো পোষাক পরবে;
বর্ণবিদ্বেষ ততদিন নির্মূল হবে না যতদিন মানুষকে যে কোন বিল পরিশোধ না করার জন্য কালোতালিকাভুক্ত করা হবে; সাদা তালিকাভুক্ত করা হবে না;
এমনকি স্নুকার খেলার সময় জিততে গেলে কালো বলটাকে পকেটে ফেলে দিয়ে সাদা বলটি অক্ষত রাখতে হয় স্নুকার টেবিলে;
বর্ণবাদ ততদিন নির্মূল হবেনা যতদিন পর্যন্ত বাসর ঘরের বিছানার চাদর সাদা হবে,
বর্ণবিদ্বেষ ততদিন যাবেনা, যতদিন মা তার শিশুর কপালে কালো টিকা মেরে দিবে,
বর্ণবাদ ততদিন থাকবে, যতদিন লেখার কাগজটা সাদা থাকবে;
বর্ণবাদ ততদিন যাবেনা যতদিন , আমাদের কন্যারা সাদা পাউডারের পিছনে ছুটবে,
বর্ণবাদ ততদিন যাবেনা, যতদিন আশকারা, মাস্কারা,লাইনার,ফাউন্ডেশন দিয়ে ঘষা মাজা চলবে,
বর্ণবাদ ততদিন যাবেনা যতদিন, আমাদের কন্যারা গায়ের রঙ কালো বলে গভীর রাতে কুশন ভিজাবে,
বর্ণবাদ ততদিন যাবেনা যতদিন আমাদের কন্যারা কালো বলে, প্রেম নিবেদন না করে হাত পা ঘুটিয়ে বসে থাকবে,
বর্ণবাদ ততদিন যাবেনা, যতদিন কবিতায় ‘ এক গুচ্ছ লাল গোলাপ ‘ ই বারবার রচিত হবে;
বর্ণবাদ ততদিন যাবেনা , যতদিন লাল গোলাপে প্রেম প্রার্থনা চলবে।
বর্ণবাদ ততদিন যাবেনা যতদিন রক্তের রঙ লাল হবে।
কিন্তু এতে আমার কিছু এসে যায়না; যতদিন পর্যন্ত আমি সাদা টিস্যু পেপার দিয়ে আমার কালো পশ্চাদদেশটি মুছতে পারছি; আমি খুশী ।
৩২টি মন্তব্য
বোকা মানুষ
(y)
ইমন
🙂
অরুনি মায়া
আমি একটা কালো বর চেয়েছিলাম এক সময় (y)
ইমন
সাদা পেয়েছেন নিশ্চই:-)
অরুনি মায়া
পেয়েছিলাম বর্ণহীন
ইমন
পেয়েছিলাম !!!
ব্লগার সজীব
লেখার সাথে সহমত
ইমন
ধন্যবাদ 🙂
ছাইরাছ হেলাল
রেসিজম রয়েই গেল অস্থি-মজ্জায়।
ইমন
হুম। আমরা কাগজে, লেখায়, বক্তৃতায়, পরিসং্খ্যানে মানবিক কিন্তু জীবনে না….
নুসরাত মৌরিন
বর্নবাদ রয়ে গেছে আমাদের অস্থিমজ্জায়।যতই আমরা বলি না কেন আধুনিকতা,আর মানবিকতার কথা…। 🙁
ইমন
তারপরেও আমাদের বড়াই আমরা শিক্ষিত, সুশিল এবং আধুনিক বলে। 🙂
কৃন্তনিকা
হুম…
ইমন
হুম:-)
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অবশ্যই সহমত -{@ তবে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনকে,ভিতরের আমিটাকে পরিষ্কার করা -{@ (y)
ইমন
সেটাই পরিষ্কার রাখা 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
কাল মানেই অশুভ, অন্ধকার, ভয়, আর অশুদ্ধতা। সৃষ্টির এই এক রহস্য। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ‘কালো’র অস্তিত্ব না থাকলে সাদা কিন্তু মূল্যহীন। কালো হচ্ছে শুরুর জন্য আর সাদা হচ্ছে কালো আছে বলেই।
খুব সম্ভবত এই জন্য মানুষের মনে ‘কালো’ নিয়ে বিরুপ মনোভাব কারণ একটাই যে সাদাকে বাদ দিয়ে যদি কালোতে ডুবে যায় তো নিজেকেই সেই শুরুর শুরুতেই অর্থাৎ মূল্যহীন অবস্থায় আবিষ্কার করবে।
:D)
ইমন
খুব সুন্দর বলেছেন নীতেশ ভাইয়া। ঘটণা হচ্ছে সাদা ছাড়া কালো বা কালো ছাড়া সদা মূল্যহীন। তারমানেই কিন্তু দুটারই মূল্য সমান। দুটাই সমান কার্যকরী। ধন্যবাদ আপনাকে 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
গাছের ছায়া কালো, নিজেরটাও কালো
চাঁদ আনে কালো, সূর্যের আশাতেও কালো
সব কিছুতেই কালো যদি
সাদাকেই নিয়ে কেন থাকো!
ইমন
অহ আল্লাহ ! কি সুন্দর পদ্য দাদা। (y) ধন্যবাদ 😀
শুন্য শুন্যালয়
সুমাইয়া সিমুর ব্যাপারটা কি? জানা নেই অবশ্য তবে বুঝতে পারছি লেখা পড়ে। এরাই আবার বিদেশে এসে রেসিষ্ট রেসিষ্ট বলে গলায় ফেনা তুলে ফেলবে।
আক্রমণ যথার্থ এবং দারুন হয়েছে 🙂
ইমন
সুমাইয়া শিমু বিয়া করেছে গতো মাসে। তার বরের গায়ের রঙ ভীষণ কালো। তো এটা নিয়ে অনলাইনে , অফলাইনে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। যে সে কিভাবে এমিন একটা কালো ছেলেকে বিয়ে করলো, ছেলেটা শিমু কে ডিজার্ভ করেনা, শিমু টাকা , ক্যারিয়ার বিয়ে করেছে ব্লা ব্লা ব্লা 🙂 ধন্যবাদ আপু আপনাকে 🙂
লীলাবতী
এই মানসিকতা ঘৃণা করি খুব।ভালো লিখেছেন ভাইয়া।
ইমন
ঘৃণা করার পাশাপাশি সচেতনতার জন্য কাজ করা উচিত। ধন্যবাদ 🙂
মিথুন
যারা সমালোচনা করেন,তাদের তো মরে যাওয়া উচিত,কালো জামাই বেঁছে নিয়েছেন উনি একারণে।
ইমন
মরে যাওয়ায় কি সমস্যার সমাধান আছে? বা হবে?
নীলাঞ্জনা নীলা
আমার বর তরুণ কালো। গায়ের রঙ খেয়াল করিনা। আমার মামনি কালো। যাক কালো নিয়ে আমার কোনো সমস্যা কিংবা আফসোস নেই। সমস্যা হলো ব্যবহারে।
রেসিজম সব জায়গাতেই আছে, বর্ণ নিয়ে তো আছেই, এমনই আরোও অনেক বিষয় নিয়েও। আমি দেখি রোজ। এমন অনেক কিছু দেখা হয়, কিন্তু অফিসিয়াল কারণে লেখা হয়ে ওঠেনা। তবে প্রচুর পয়েন্ট লিখে রেখেছি জমিয়ে, চাকরী শেষ তখন শুরু করবো লেখা।
লেখায় (y)
ভাবনার জন্যে -{@
ইমন
শালার আপু চিন্তা করো ঘটণা, বিশাল বড় চাঁদ। কিন্তু মানুষের চোখে কেবল কলংকের দাগ-ই পরে। আপনার লেখার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ 🙂
মেহেরী তাজ
আসোলে বর্ণবাদ কোন দিনঈ যাবে না কারন এটা মানুষের নয় সয়ং সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি ।
ইমন
” এই খেলায় মত্ত এখনো উপরওয়ালা “।
যাবেনা বলে কি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবো। সমাধানের জন্য চেষ্টা করা উচিত না !
মোঃ মজিবর রহমান
এই বর্ণবাদ সবার মাঝেই আছে কম্বেশি
এখান থেকেই আমিও বাদ না। স্বীকার করি আর না করি।
দূর করা আদৈ সম্ভব কি?
ইমন
সম্ভব। একটা সিংহ কে ত্রেইন্ড করলে সে সার্কাসে খেলা দেখায়। আর আমরা সৃষ্টির সেড়া জীব । আমাদের না পারাটা বরং অস্বাভাবিক। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। 🙂