সময়ের অসময়ে

জিসান শা ইকরাম ২৬ জানুয়ারি ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ০৯:১৫:০৮অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি, ভ্রমণ ২৫ মন্তব্য

picsart_01-24-12-06-32

বিশাল তোরজোর। ভিয়েতনাম যাবো। আমাশা, ডায়রিয়া প্রটেক্টর হিসেবে ট্যাবলেট, ওরস্যালাইন কিনে হালকা পাতলা একটি ফার্স্ট এইড বক্স সাথে নিয়েছি। ব্যাক পেইন আমার আমৃত্যু সাথী। একারনে খাটি ইন্ডিয়ান মুভ স্থান করে নিল ফার্স্ট এইড বক্সে।
আবহাওয়া অর্থাৎ শীতের কি অবস্থা জানতে গুগল মামুর উপর আস্থা না রেখে কিছুদিন পুর্বে ভিয়েতনাম ভ্রমন করে আসা এক জুনিয়র বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি যে বাংলাদেশের মতই শীত। ঢাকা এবং বরিশালে ভালই শীত তখন। নিজকে মহান হিসেবে নিজের পিঠ থাবরে দেয়ার জন্য কম্বল বিতরন কর্মসূচী গ্রহন করেছি, অতএব শীত কম্বল এর উপযোগি।
ভিয়েতনাম এর প্রকৃতি একদম বাংলাদেশের মত। শীত প্রতিরোধের মাল মসলা যখন আছেই, ঠান্ডা লাগাব কেন বিদেশ বিভূইয়ে? একারনে গায়ে এবং লাগেজ ভালভাবেই পূর্ন করলাম গরম পোষাকে। গায়ে দিলাম স্যান্ডোগেঞ্জী, টি- শার্ট, ফুলহাতা গেঞ্জী এবং সবার উপরে ব্লেজার। লাগেজেও পর্যাপ্ত শীতের কাপড় নিলাম।
২৩ জানুয়ারী সকালে সিংগাপুর থেকে ভিয়েতনাম এসে পৌছালাম। প্লেনের তীব্র এসি কাবু করতে পারেনি। হো চি মিন সিটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামার পরে ভিসা স্ট্যাম্পিং এর জন্য বসে থাকতে থাকতে মনে প্রশ্ন, ঘটনা কি গরম লাগছে কেন? সেন্ট্রাল এসি নস্ট নাকি? চারদিকে তাকিয়ে নিজকেই বেমানান মনে হলো। শীত প্রতিরোধে যা গায়ে দিয়েছি তাতে বরফের দেশে অভিযানে যাবার মত ড্রেস হয়েছে। পাশের চেয়ারে বসা এবং সামনে অনেক ঠ্যাং ঠুং বাইর করা, পাতলা টি- শার্ট গায়ে কত মানুষ। যেন লজ্জা পেয়েছি নিজেই। দ্রুত ব্লেজার খুলে ফেলে হাতে নিয়েছি। স্যান্ডোগেঞ্জি তখন ভিজে চুপচুপ। বিমানবন্দরের বাইরে পা রাখা মাত্র মনে হল আগুনের মধ্যে এসেছি। ট্যাক্সি করে হোটেলের রুমে আসার পরে বুলেটের গতিতে সব কিছু শরীর থেকে খুলে ফেলে হাফ ছেরে বেঁচেছি যেন।
বেডের উপর স্তুপিকৃত গরম কাপড় দেখে গা জ্বলে উঠে এখন। সময়, পরিবেশ, পরিস্থিতি, অবস্থান না জেনে না বুঝে কোন কিছু গ্রহন করা বিপদজনক, তা সে দ্রব্য হোক বা মানুষ। হোক না তা মহা মূল্যবান, পরিত্যাগ করতেই হয়,

******* ভিয়েতনাম ভ্রমনের শুরুটা এভাবেই

৯৬৯জন ৯৬৯জন
0 Shares

২৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ