
জোর মন্ত্রপাঠ আর দুলে ওঠা লেলিহান আগুনে শিখায় ক্রমশ
পুড়ে পুড়ে খাক হতে হতে মিইয়ে যাচ্ছে একান্ত আপনের শব দেহটি ছাইভস্মে,
সন্তান, নিকটাত্মীয় ও স্বজনের আহাজারিতে। একটু পরে-ই নিঃশেষিত হবে
শেষের চিহ্নটুকু, নদী-বুকে; ক্ষত হৃদয়টি থেকে যাবে বহুকাল বহুদিন;
সময় তাকেও হরণে নেবে একটু একটু করে।
বহুদিন পরে এলাম এই প্রিয় স্মৃতির শ্মশানে, ঝকঝকে উজ্জ্বল আলোর বন্যাতে,
দেখা হয়ে গেল কত কতজন স্বজনেই সাথে , করোনায় বিস্মৃত যারা, অকালে;
গুচ্ছের মানুষেরা নীরব অশ্রুতে মুহ্যমান, কেউ মুছছে অশ্রু বারংবার, হাহাকারে হাহাকারে,
কেউ ঝিম মেরে বসে আছে একাকী, কেউ নিচুস্বরে সেরে নিচ্ছে প্রয়োজনীয় অ-প্রয়োজনীয় আলাপন।
খোশগল্প! সেও চালু আছে প্রকারান্তরে।
নদীমুখো-নির্জন-নিরিবিলিতে একাকী দাঁড়িয়ে শ্মাশান ডাইনিকে ভাবি,
দেখা হয়-নি করোনাকালে, সে তো অনেক অনেক দিন। ডাইনি রানী –ই বা কেমন আছে?
আজকালকার শব মিছিলের দিনে! এখানেও আসি-না, আসা-হয়-না, রাত্রি বা কাল-রাত্রিতে;
এসেছি যেমন আগে, আগে;
সহসা যেন একটি শিরশিরে হিমের ফুঁ-বাতাস ছুঁয়ে গেল, যত্ন স্পন্দনের
বিনম্র-উষ্ণতার ঐন্দ্রজালিক আলোক-শিহরণ-বিস্তারে!
স্নিগ্ধতার সৌন্দর্য-মুগ্ধ দু’চোখ শুধু ফ্রেমে-বাঁধা হয়ে ঝুলতে থাকে, তোলপাড় শোকে-ও।
ছবি নেটের।
২১টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার ভাইয়া। শ্মশান ঘাটের চিত্র ফুটে উঠেছে। মরে গেলে আত্নারা কি ওখানেই এমন করে মিলেমিশে একাকার হয়ে রয়? ডাইনিরা বোধহয় ভালোই আছে নিত্যনতুন সঙ্গী নিয়ে। নিরন্তর শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
ছাইরাছ হেলাল
অদৃশ্য তো জানি-না, বুঝতেও পারি-না ;
দিনকাল তো ডাইনিদের ই, নিত্য নুতন কড়কড়ে হাড় !!
আপনিও ভাল থাকবেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ডাইনি বাধ্যতামূলক॥ মরদেহ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তারপরও”
স্নিগ্ধতার সৌন্দর্য-মুগ্ধ দু’চোখ শুধু ফ্রেমে-বাঁধা হয়ে ঝুলতে থাকে, তোলপাড় শোকে-ও।
শুভ কামনা রইলো ভাইয়া।
ছাইরাছ হেলাল
শ্মশান থাকলে ডাইনি মাস্ট;
শোকতাপ শেষেও জীবন তার নিজ সৌন্দর্যে টিকে থাকে।
ভাল থাকুন।
ফয়জুল মহী
অপূর্ব কাব্যিকতার অনন্য প্রকাশ।
শুভকামনা অবিরত।
ছাইরাছ হেলাল
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ ভাবনাপূর্ণ প্রকাশ কবি দা
ছাইরাছ হেলাল
ভাল থাকবেন আপনি।
রেজওয়ানা কবির
শ্মশান শুনলেই আমার কেমন জানি ভয় ভয় লাগে। মনে হয় মৃতদেহ উঠে আসে। আসলেই মানুষ মরে গেলে পচে যায় নাকি ঘুরে বেড়ায় জানি না। ডাইনীরা কেমন আছে জানতে ইচ্ছে করছে। ভালো থাকবেন ভাইয়া, শুভকামনা ।
ছাইরাছ হেলাল
শ্মশান বা গোরস্তান ই আমাদের একমাত্র বা শেষ ঠিকানা, ভয় পাই কী না পাই;
ডাইনি ডাইনিদের মতই, যার সাথে যেমন দেখা হয়!!
আপনি ভাল থাকবেন।
সুপায়ন বড়ুয়া
নদীমুখো-নির্জন-নিরিবিলিতে
একাকী দাঁড়িয়ে শ্মাশান ডাইনিকে ভাবি,
আগুনে নি:শেষিত শবদাহে প্রিয়তমার মুখ
জ্বলন্ত অনলের শিখায় দাঁড়িয়ে আমার কবি
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
প্রিয়তমা পামু কৈ!!
ডাইনির দেখা পাই, দেখতে চাই।
চিতার আগুনেও।
ভাল থাকবেন ভাই।
সুপায়ন বড়ুয়া
সময়ে প্রিয়তমারা ও ডাইনীর রূপ ধরে।
ভাল থাকবেন ভাই। শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
ভাইয়ের অভিজ্ঞতা বলে কথা, ফেলে তো দিতে পারি না!!
আহা আহা, ডাইনী!!
আরজু মুক্তা
মানুষ মরে গেলে আত্মারও মৃত্যু ও হয়। এখন শ্মশানের ডাইনীর থেকে মানুষরূপী ডাইনী শক্ত অবস্থানে। এরা দৃশ্যমান। তবুও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।
আর আমরা মনের ফ্রেমে ভালোবাসা বেধে রাখি। নীরবে অশ্রু ঝরাই। আমরাও অচল আত্মা হয়ে গেছি।
জীবন তবুও চলে
ছাইরাছ হেলাল
শ্মশান ডাইনির দেখা পেলে সামান্য ছাপোষা ডাইনিদের আর ভয় পাই না।
ডাইনিরা থাকে আলো আর অন্ধকারে আমাদের ঘিরে।
জীবন আমাদের নিয়ে চলে নিজের গতিতে, আমরা শুধুই দর্শক নিরব অশ্রুতে, হাসিতেও।
আপনি ভাল থাকবেন, ডাইনি এড়িয়ে। তাবিজ ফিক্কা দিয়ে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
খুবি ভালো লিখেছেন, দাদা।
মানুষ মরে যায়।
কিন্তু তার আত্মা ছুটে বেড়ায় মুক্তির পূর্ব পর্যন্ত।
ছাইরাছ হেলাল
আত্মারা অমরত্ব চায় বলেই ঘুরে বেড়ায় শেষ অবধি।
ভাল থাকুন।
শামীম চৌধুরী
প্রতিটি মৃত আত্মার জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকে। আপনার শশ্মান ঘাটে না হয় কারো আত্মার স্থান হলো।
দারুন কবিতা।
ছাইরাছ হেলাল
শ্মশান আসলে ভিন্ন ভাবে ভিন্ন কিছু আমাদের দেখায়,
আমরা দেখি বা না দেখি।
ভাল থাকুন ভাই।
জিসান শা ইকরাম
শ্নশানে গেলে আমারও ভিন্ন রকমের এক অনুভুতি আচ্ছন্ন করে দেয়।
ক্রমশ ছাই হয়ে যাচ্ছে প্রিয় মানুষের দেহ,
কত শত পরিচিত শোকাবহ মুখ দেখি,
কোন এক বিচিত্র কারনে কেমন এক ভিন্ন শীতলতার স্পর্শ ছুয়ে যায় মন মাঝে মাঝে।
ভালো থাকুন আপনি, শুভ কামনা।