প্রিয় মৌনতা,
আশা করি ভালোই আছিস। যদিও না থাকার হেতু আজও আমার চোখে পড়েনি। তবে কি জানিস, সব ভালো থাকার মাঝেও এক বিষাদ প্রদীপ জ্বলে। উজ্জ্বল! হ্যাঁ, উজ্জ্বল-ই। কারন সকল উজ্জ্বলই চোখে ধরা পড়ে না। আর তা যদি চোখ বারান্দায় ধরা পড়তো তাহলে, আমরা দুঃখকে সুখ বলতাম আর সুখকে দুঃখ। এসব কথা বাদ-ই দিই। পাঁচ পোঁড়নের প্যাঁচালে লক্ষ্মী দেবীর পাঁচালীও বিশ্বাস জাগায় না প্রাণে।
হঠাৎ করে তোকে চিঠি লিখার কোন উদ্দেশ্য ছিল না তবুও লিখলাম; আর তা তোকে ভাবনার সিন্ধুর বিন্দুতে নামিয়েই তবে ছাড়বে, যুদ্ধ করবে অযথা হৃদপিণ্ডের সাথে। সত্যি বলতে, আমি কি লিখি? কেন লিখি? তার নির্দিষ্ট কোন কারন নেই। আর আমি কলমকে আমার বিবেকের আয়ুধ ভাবি, তাই তাকে বাঁধা দিতে পারি না। আচ্ছা তুই-ই বল একে বেঁধে রাখা কি সম্ভব! বিবেকের সাথে বেইমানি করি কি করে?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে যাবার আগ মূহুর্তে সব সময় বলিস ‘তুমিও ভালো থেকো’ লাইনটা দেখে, আমি মনে মনে হেসে উঠি প্রাণবন্ত দীর্ঘশ্বাস চারদিকে ছড়িয়ে। আর ঠিক তখনই মনে হয়, ঝরনার পতনের অবুঝ ঝুম শব্দ করতে করতে কর্ণদ্বারে এসে দাঁড়ালো; আর বলে উঠে, দাদা তুই সত্যিই ভালো আছিস তো! উত্তর……নেই।
আচ্ছা অনু তুই কি কখনো এই ব্যাপারটা ভেবে দেখেছিস আমরা কি? হ্যাঁ বলতেই পারিস ওমা এ আবার ঘটা করে বলার কি আছেরে দাদা! যদিও মানুষ তবুও বলবো;বলার অনেক কিছুই থাকে। আমরা এক এক জন মানুষ রূপে পাখি। জাত পাখি না আবার, ভবের-ভবের পাখি। হুম্ তবে, উট পাখির সাথে ইদানিং আমাদের বিশেষ মিল আছে। যেমনঃ উটপাখি কিছু ঘটনা দেখার আগেই মাথা পুঁতে দেয় বালুর মধ্যে। আমরাও তার ব্যতিক্রম কি? অনেক কিছু দেখেও না দেখার মত করে থাকি, চলি আর খেয়ে-দেয়ে বেড়াই। প্রতিবাদ না করাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানবিক গুণ; আর কয়েক বছর পর প্রতিবাদ শব্দটা-ই বিলুপ্ত হয়ে যাবে দেখছি। দ্রোহ নেই, আবেগ নেই, বাক্য নেই, ভাষা নেই, নেই মানবতার হার। আছে হতাশা, ঘৃণা, নেশা, অশ্লীলতা আর ফুলের তোড়া সমতুল্য হিংসা।
কেন এই কথাগুলো তোকে বললাম তা নিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে থাকবি তা আমি ঢের জানি। তবে এসব বলার বিশেষ একটা কারন আছে, বলতে পারবি কি সেটা? মনে আছে কি? তোকে একদিন আমি মাধবীলতা বলে ডেকেছিলাম। কালবেলা পড়া থাকলে আশা করি তার চরিত্রটা জানা আছে। বিপ্লবের আরেক নাম মাধবীলতা। এমনকি অনিমেষ জেলে যাবার পর মুহূর্তেও অনিমেষকে ছেড়ে যায়নি মাধবীলতা।
অনেক কথা-ই তো বললাম; আর না। বাকিটা বুঝে নিস। ভালো থাকিস। কেন জানি মনে হচ্ছে, এর প্রতিউত্তর আসবে না, তবুও অপেক্ষায় থাকবো।
ইতি
তোর দাদা(দাদা ডেকেছিস বলে মনে হয় না)
২২-০১-১৬ইং
ভোরঃ ৫:৩৮ থেকে সকালঃ৭:৫৪ মিনিট।
৮টি মন্তব্য
শুভ্র রফিক
অনেক সুন্দর একটা লেখা পড়ে সকাল বেলা মন্টা ভাল হয়ে গেল।সাধুবাদ
প্রলয় সাহা
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুভ সকাল
অনিকেত নন্দিনী
“প্রতিবাদ না করাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানবিক গুণ; আর কয়েক বছর পর প্রতিবাদ শব্দটাই বিলুপ্ত হয়ে যাবে দেখছি। দ্রোহ নেই, আবেগ নেই, বাক্য নেই, ভাষা নেই……….. ” (y)
কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি আমরা? পতনের মুখে? নাকি ইতিমধ্যেই পতিত হয়ে গেছিরে দাদা? 🙁
প্রলয় সাহা
দুটোই দিদি
অনিকেত নন্দিনী
🙁 🙁 🙁
প্রলয় সাহা
🙂
অরুনি মায়া
প্রতিউত্তর আসবেনা জেনেও আমরা চিঠি লিখি! কিন্তু কেন? অনেক নামেই ডেকেছেন তাকে |
ভাল লেগেছে |
প্রলয় সাহা
🙂