রসমঞ্জরি ও রসমালাই

আরজু মুক্তা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার, ০৯:২৩:৩১অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৩৫ মন্তব্য

মিষ্টান্ন জাত দ্রব্যের প্রতি বাঙ্গালির টান আদিকালের। একেক অঞ্চলে এক এক মিষ্টির জন্য প্রসিদ্ধ। আর তা লাভ করে সেই অঞ্চলের কারিগরদের তৈরির শৈলি, গুণাগুণ, মান আর নৈপুণ্যতার উপর।

উপরের ছবিটি রসমঞ্জরীর। ঘন লালচে দুধ। জমে যেনো ক্ষীর। সাথে ডুবে আছে গোল গোল নরম মিষ্টি। মুখে দিলে এক মিনিট বুঁদ। রসের এমন জাদুর জন্য এর নাম রসমঞ্জরি। গাইবান্ধার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। শুরুটা রমেশ ঘোষের হাত ধরে। এটি ১৯৪৮ সাল থেকে বানানো হচ্ছে।

প্রথমে দুধ ঘন করে ক্ষীর বানানো হয়। এরপর ছানা আর হালকা ময়দা মিশিয়ে তৈরি হয় মিষ্টিগুলো। মিষ্টির বেশির ভাগই ছানা। পরে এগুলো চিনির রসে সেদ্ধ করা হয়। বাদামি রং হলে ছাঁকনি দিয়ে সিরা ঝরিয়ে রসগোল্লার গুটিগুলো আস্তে আস্তে মেশানো হয়। ঘনরসের ব্যবহারের ফলে এটা কম সময়ে নষ্ট হয়। তাই অন্য কোথাও এটা পাঠানো কঠিন হয়ে পরে।

ভোজনরসিকদের যারা এখনও গাইবান্ধার রসমঞ্জরির স্বাদ নেননি ; তারা সত্ত্বর এর স্বাদ গ্রহণ করতে ভুলবেন না।

 

রসমালাই হচ্ছে কুুুমিল্লার মিষ্টির রাজা। ১৯০০ সাল থেকে এই অঞ্চলে তৈরি হচ্ছে। মনিন্দ্র ও খনিন্দ্র নামে দুুই ভাই এই ব্যবসা শুরু করলে তা দ্রুত ছড়িয়ে খ্যাতি লাভ করে।

দুধ সংগ্রহ করে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ঘণ্টা দুই এক জ্বাল দেয়া হয়। দুধ ঘন হয়ে এলে ছানায় রূপ নেয়। একমণ দুধে ১৪/১৫ কেজি ছানা হয়। এই ছানা কেটে দানাদার মিষ্টির মতো বানানো হয়। পরে এলাচ গুড়া, কনডেন্স মিল্ক ও চিনি মিশিয়ে নিতে হয়। এরপর দানাদার মিষ্টিগুলো এখানে দিতে হয়। কর্নফ্লাওয়ার আলাদা গুলে আস্তে আস্তে নাড়তে হয়, যাতে দুধ ঘন হয়। কর্নফ্লাওয়ার মিশালে মিষ্টির টুকরোগুলো ভাঙ্গে না। এভাবে রসের মধ্য দিয়ে, রসমালাই তৈরি হয়। দুধের ঘনত্ব যতো হবে, রসমালাই ততো সুস্বাদু হয়। কেজি প্রতি ২৮০ টাকায় এটা বিক্রি হয়। আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি গেলে এই জনপদের মানুষ রসমালাইকে গুরুত্ব দেয়।

নাম শুনে অনেকেই একি মনে করে, আসলে দুটার স্বাদ আলাদা। যেহেতু দাদা বাড়ি গাইবান্ধা আর কর্মসুত্রে চট্টগ্রাম থাকায় এর পার্থক্য চোখে পরেছে।

 

৩৭১৪জন ৩৩৭৩জন
0 Shares

৩৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ