
মিষ্টান্ন জাত দ্রব্যের প্রতি বাঙ্গালির টান আদিকালের। একেক অঞ্চলে এক এক মিষ্টির জন্য প্রসিদ্ধ। আর তা লাভ করে সেই অঞ্চলের কারিগরদের তৈরির শৈলি, গুণাগুণ, মান আর নৈপুণ্যতার উপর।
উপরের ছবিটি রসমঞ্জরীর। ঘন লালচে দুধ। জমে যেনো ক্ষীর। সাথে ডুবে আছে গোল গোল নরম মিষ্টি। মুখে দিলে এক মিনিট বুঁদ। রসের এমন জাদুর জন্য এর নাম রসমঞ্জরি। গাইবান্ধার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। শুরুটা রমেশ ঘোষের হাত ধরে। এটি ১৯৪৮ সাল থেকে বানানো হচ্ছে।
প্রথমে দুধ ঘন করে ক্ষীর বানানো হয়। এরপর ছানা আর হালকা ময়দা মিশিয়ে তৈরি হয় মিষ্টিগুলো। মিষ্টির বেশির ভাগই ছানা। পরে এগুলো চিনির রসে সেদ্ধ করা হয়। বাদামি রং হলে ছাঁকনি দিয়ে সিরা ঝরিয়ে রসগোল্লার গুটিগুলো আস্তে আস্তে মেশানো হয়। ঘনরসের ব্যবহারের ফলে এটা কম সময়ে নষ্ট হয়। তাই অন্য কোথাও এটা পাঠানো কঠিন হয়ে পরে।
ভোজনরসিকদের যারা এখনও গাইবান্ধার রসমঞ্জরির স্বাদ নেননি ; তারা সত্ত্বর এর স্বাদ গ্রহণ করতে ভুলবেন না।
রসমালাই হচ্ছে কুুুমিল্লার মিষ্টির রাজা। ১৯০০ সাল থেকে এই অঞ্চলে তৈরি হচ্ছে। মনিন্দ্র ও খনিন্দ্র নামে দুুই ভাই এই ব্যবসা শুরু করলে তা দ্রুত ছড়িয়ে খ্যাতি লাভ করে।
দুধ সংগ্রহ করে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ঘণ্টা দুই এক জ্বাল দেয়া হয়। দুধ ঘন হয়ে এলে ছানায় রূপ নেয়। একমণ দুধে ১৪/১৫ কেজি ছানা হয়। এই ছানা কেটে দানাদার মিষ্টির মতো বানানো হয়। পরে এলাচ গুড়া, কনডেন্স মিল্ক ও চিনি মিশিয়ে নিতে হয়। এরপর দানাদার মিষ্টিগুলো এখানে দিতে হয়। কর্নফ্লাওয়ার আলাদা গুলে আস্তে আস্তে নাড়তে হয়, যাতে দুধ ঘন হয়। কর্নফ্লাওয়ার মিশালে মিষ্টির টুকরোগুলো ভাঙ্গে না। এভাবে রসের মধ্য দিয়ে, রসমালাই তৈরি হয়। দুধের ঘনত্ব যতো হবে, রসমালাই ততো সুস্বাদু হয়। কেজি প্রতি ২৮০ টাকায় এটা বিক্রি হয়। আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি গেলে এই জনপদের মানুষ রসমালাইকে গুরুত্ব দেয়।
নাম শুনে অনেকেই একি মনে করে, আসলে দুটার স্বাদ আলাদা। যেহেতু দাদা বাড়ি গাইবান্ধা আর কর্মসুত্রে চট্টগ্রাম থাকায় এর পার্থক্য চোখে পরেছে।
৩৫টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
এমন লোভাতুর করা ঠিক না !!
কুমিল্লার এই মিষ্টি খেয়েছি ,এর ইতিহাস কিছু জেনেছি।
তবে গাইবান্ধা এই প্রথম জানলাম।
কপালে কী আছে কেউ জানে না।
আরজু মুক্তা
একদিন কপাল ঘুরতে ঘুরতে গাইবান্ধা চলে গিয়ে খেয়ে আসিয়েন।
রেজওয়ানা কবির
রসমালাই আমার খুবই পছন্দের।মিষ্টির মধ্যে একমাত্র এটাই আমার প্রিয়।যেখানেই যাই এইটা আর চা টেস্ট করা আমার চিরাচরিত অভ্যাস। যেহেতু কুড়িগ্রাম থাকি তাই এখানকার বগুড়া হোটেলের রসমালাই চালিয়ে দেই,আর রংপুরের জলযোগের রসমালাই খেয়েই আছি আপাতত।গাইবান্দায় গেলে টেস্ট করব ইনশাআল্লাহ। ভালো থাকবেন।
আরজু মুক্তা
আপু, সিঙারা হাউজের রসমঞ্জরি বিখ্যাত। একদিন খাইয়েন।
রেজওয়ানা কবির
হুম ওটাও খেয়েছি।
রেহানা বীথি
প্রিয় মিষ্টি। আহা, কী স্বাদ।
আপনার লেখায় স্বাদের আদিঅন্ত জানলাম।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ আপি
বন্যা লিপি
রসমঞ্জরী আর রসমালাইএর ইতিহাস / রেসিপি সবই বিস্তারিত জানলাম। কুমিল্লার রসমালাই খেয়েছি বা প্রায়ই খাওয়া হয়। গাইবানাধার রসমঞ্জরী পামু কই😓😓😓😓 এমুন লোভ দেহানো ঠিক নন ফু’ম্মা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
কৃপণ তৌহিদ ভাইয়াকে পটাতে হবে আপু। 😋😋😋😋 । আমারতো তর সইছে না।
বন্যা লিপি
ছোটদি, তৌহিদ ভাউ কোসোকিছুতে পটিবার পাত্র নহে। আমি হান্ড্রেট পার্সেন্ট নিশ্চিত। যে উনারে পটাইতে পারবো, আমি নিজে মিষ্টি খাওয়ামু😆😆😆😆
আরজু মুক্তা
ঢাকায় কোথায় জানি পাওয়া যায়। আমি ইনবক্সে ঠিকানা দিবো
বন্যা লিপি
রস মঞ্জরী ঢাকায়? গাইবান্ধাে রসমঞ্জরী? আচ্ছা ঠিকানা দিয়েন তো!
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এমন লোভ দেখান ক্যান না খাওয়াইয়া? আমার এতো প্রিয় কি বলবো!! বগুড়া, কুমিল্লার টা খেয়ে খেয়ে বড় হয়েছি। গাইবান্ধার টা খাওয়া হয়নি কখনও। আশা করি দেখা হলে খাওয়াবেন, আশায় থাকলাম 😋😋। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো সেই পর্যন্ত
আরজু মুক্তা
দেখা যাক কি হয়?
ভালো থাকবেন।
ফয়জুল মহী
কুমিল্লার রসমালাই এর নাম আছে এখন। ফেনীতে বানিয়ে বলে কুমিল্লার আসল রসমালাই
আরজু মুক্তা
হা হা। ঐটা ব্যবসা!
কুমিল্লারটা বিখ্যাত।
ত্রিস্তান
গাইবান্ধায় অনেকবার গিয়েছিলাম। বিশেষকরে গোবিন্দগঞ্জ আর পলাশবাড়ীতে অনেকবার খেয়েছি। কিন্তু এই রসমঞ্জরী তো কখনো খাওয়া হয় নাই।
আরজু মুক্তা
আরে ঐটাঐ রসমঞ্জরি। আর কুমিল্লারটা রসমালাই।
শুভকামনা
সুপায়ন বড়ুয়া
কুমিল্লার রসমলাই খেয়ে অভ্যস্ত অবশ্য প্রতিমধ্যে পড়ে বলে।
গাইবান্ধা চলুন সবে রসমন্জরী খাওয়ার ছলে।
অবশ্য দাওয়াতটা পাব বলে।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
দেখি, ঢাকায় মিলনমেলা হলে, খাওয়াবো
খাদিজাতুল কুবরা
আহা রসমঞ্জুরি, রসমলাই দুটোই খুব লোভনীয় মিষ্টি।
দুদিন আগেই খেলাম। অবশ্য গাইবান্ধারটা খাওয়া হয়নি।
খাবারের লোভ সামলানো বড় মুশকিল। প্রিয় মিষ্টির ইতিহাস জানা হলো।
রসমালাইয়ের বিষয়েে জানতাম, রসমঞ্জরি সম্পর্কে প্রথম জানলাম
আরজু মুক্তা
শুভকামনা আপি।
তৌহিদ
দুইটাই আমার খুব পছন্দের কিন্তু! জিবে পানি চলে এলো।
তবে ইতিহাস জেনে ভালো লাগলো আপু। শুভকামনা রইলো।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন
শামীম চৌধুরী
আপু এমনিতেই ডায়বেটিস
তারপর মুখরোচক এমন মিষ্টান্ন দেখালেন যে এখন কি করবো ভাবছি।
মিষ্টির ইতিহাস জানতে পেরে ভাল লাগলো্
আরজু মুক্তা
গন্ধনং অর্ধনং ভোজনং।
রোকসানা খন্দকার রুকু
কি অবস্থা॥এমনি বগুড়া দধি ঘরের রসমালাই খেতে খেতে ওজনের বারোটা তারউপর দেখাচ্ছে লোভ।কি যে করি?
শুভ কামনা।আর পাওনা রইলো মিলনমেলায়।
আরজু মুক্তা
হা হা। মিষ্টি কিন্তু প্রথম সারিতেই সবার।
ভালো থাকবেন।
সুরাইয়া পারভীন
ইদানিং মিষ্টির প্রতি ঝোঁক বেড়েছে আমার। ১১টায় ঘুমতে উঠেই মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছিল। ফ্রীজ খুলে দেখি একটায় মাত্র মিষ্টি আছে। কন্যাশীকে বললাম আম্মু তুমি মিষ্টি খাবে? একটায় আছে। সে বুঝে গেলো আমার মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে। তাই বললো তুমি খাও। খেয়ে নিলাম। দুপুরে রসমালাই ওয়ালার হাক ডাক শুনে বের হলাম। বের হয়ে দেখি নেই
এখন আবার ব্লগে এসে এমন পোস্ট। বলি আপনি কী করে জানলেন হ্যাঁ আমার রসমালাই খেতে ইচ্ছে করছে😰😰
আরজু মুক্তা
আত্মার মিল আরকি!
আজ কিন্তু কান পেতে রাখিয়েন কখন মিষ্টিওয়ালা হাঁক দেয়, ” রসমালাই লাগবে?”
সুরাইয়া পারভীন
আজ নিজেই বানাবো হুঁ।
হা হা হা হা হা হা হা
রোকসানা খন্দকার রুকু
বাসায়ও আসে নাকি? দুঃখে মরে যাই আমাদের এলাকায় কেন আসেনা॥
সুরাইয়া পারভীন
জ্বী আপু জয়পুরহাটে বাসায়ও আসে
আর অনেক মজার হয় কিন্তু খেতে।
আলমগীর সরকার লিটন
গাইবান্ধার রসমালাই খুব সুন্দর ——————-সুস্বাদ
আরজু মুক্তা
জি ভাই