প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ হবার পর শমশেরনগর এ.এ.টি.এম হাইস্কুলে ভর্তি হলাম। আমাদের শ্রেণী শিক্ষক ছিলেন মওলানা স্যার। আমার জীবনের প্রথম একজন জঘণ্য শিক্ষক। যার প্রতি একফোঁটা সম্মানও নেই আমার। তবে সেদিন আমি জেনেছি পৃথিবীতে এমন টাইপ শিক্ষকও আছে। প্রথম দিন ক্লাশ। তার কিছুদিন আগে আমার মাথায় মারাত্মক এলার্জিতে সব চুল ফেলে দিতে হয়েছিলো। বাগানে রঙ খেলায় কেউ আমার মাথায় রঙ দিয়েছিলো বুঝিনি। স্নানের সময় দেখা যায় প্রচুর রঙ যাচ্ছে। তারপর তো পুরোই এলার্জি। ডাক্তার বললেন চুল ফেলে দিতে হবে। যাক মাথায় স্কার্ফ প্যাঁচিয়ে স্কুলে গেছি। মাওলানা স্যার রোল কল শেষ করেই উঠে আমার সামনে এলেন। মুখ ভরা পান চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন,
—“তুমি নি ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাইছো?”
—জ্বি স্যার।
—আইচ্ছা দেখমুনে পারোনি ক্লাশ এইটোত বৃত্তি আনতে। মাথাত ইতা কিতা?
—স্যার এটা স্কার্ফ।
একটানে স্কার্ফটা খুলে দিলেন। সারা ক্লাশ জুড়ে হাসির রোল। বুকে আমার খুব যন্ত্রণা। চোখের জল পড়েনা কেন? টিফিন পিরিয়ডে টিউবয়েল থেকে জল খেতে গেছি, শ্যামলী নামের মেয়েটি সেদিন আমায় সঙ্গ দিয়েছিলো। সেই স্কুলে যতদিন ছিলাম, ততোদিন আমার পাশে পাশে ছিলো। যেদিন চলে আসি সেদিন খুব কেঁদেছিলো। আরেকদিন বড়ো্মামা আমার জন্য ঢাকা থেকে একটা ক্যাসিও ঘড়ি এনে দিয়েছিলো। স্যার ওটাকে নিয়েও বিদ্রূপ করেছিলেন, খেলনা ঘড়ি পড়ে এসেছি। মামা যখন জানলো ওসব, বাপি সেদিনই স্কুল ছাড়িয়ে নিয়ে এলো আমায়। ওই মাওলানা স্যার অনেক ক্ষতি করেছিলো আমার মনের। সত্যি বলতে কি আমার উচ্চশিক্ষার প্রতি আকাঙ্ক্ষার মৃত্যু ঘটিয়েছিলেন উনিই। তবে ওই স্কুলে স্বল্পদিনের ছাত্রজীবনে কয়েকজন শিক্ষকের কথা না বললেই নয়। শৈলেশ স্যার আমাদের অঙ্ক করাতেন। মুখ ভরা পান, প্রচন্ড কড়া হলেও উনার মধ্যে একটা আবেগ ছিলো। স্যার অন্যায়কারীকে কখনো প্রশ্রয় দিতেন না। সিংহ স্যার আমাদের বিজ্ঞান পড়াতেন। স্যারের হাসি ভালো লাগতো। আর উনার পড়ানো আমার কাছে ভালো লাগতো। হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জ্যোতিষ স্যারকে সেভাবে জানা হয়নি।
হাইস্কুল থেকে সরিয়ে নিয়ে আমায় ভর্তি করানো হয় শমশেরনগর গার্লস হাইস্কুলে। ওই স্কুলে মামনি চাকরী করতো। আমাদের প্রধান শিক্ষক বশির আহমদ স্যার। প্রচন্ড মাত্রায় রাগী এবং যথেষ্ট কড়া। তবে একটা কথা না বললেই নয়, উনার মধ্যে স্বজনপ্রীতি ব্যাপারটা নেই। যদিও এ শব্দটির সাথে পরিচিত হয়েছি অনেক অনেক পরে। মাওলানা স্যারের অমন ব্যবহার মানসিকভাবে আমাকে এতোটাই আতঙ্কিত করে রেখেছিলো যে বার্ষিক পরীক্ষায় অঙ্কে মাত্র তেত্রিশ পাই। হেডস্যার আমায় ডাকলেন, অভিভাবকদেরকেও। তখন সব জানলেন স্যার, বললেন কোনো শিক্ষক যদি এমন ব্যবহার করে কখনো, আমি যেনো প্রতিবাদ করি। তারা শিক্ষক না, শিক্ষকতার কলঙ্ক এরা। আমি যেনো কথাটি মনে রাখি।
১৯৮৫ সাল, হঠাৎ ক্লাশে আমাদের প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ স্যার নিজে এসে আমায় ডেকে নিলেন উনার রুমে। ক্লাশে ঢুকতেনই একসাথে দুটো বেত নিয়ে। যাক বেশ ভয়, কোনো অন্যায় কি করেছি? খুঁজে পেলাম না। অনেক শান্তশিষ্ট ছিলাম। তার দুটো কারণ সেভাবে কারো সাথে মিশতে পারতাম না, আর মামনি ছিলো আমাদের স্কুলের টিচার। যাক আমি গেলাম, আমাদের দপ্তরী মন্নাফকে ডাকলেন স্যার, “এই যা তো এম.আর.ডি ম্যাডামকে ডেকে নিয়ে আয়।” আমার অবস্থা তো আরোও খারাপ। কি করেছি এমন যে মামনিকেও ডাকছেন স্যার? আবার নিজেকে বলছি কোনো খারাপ কিংবা অন্যায় করিনি, ভয় কিসের? যাক মামনি আসার পর স্যার বললেন, “ম্যাডাম ইসলামিক ফাউন্ডেশন একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। স্কুল থেকে আমি নীলাকে পাঠাতে চাই। আপনার কোনো আপত্তি নেই তো?” মামনি হেসে ফেললো, “স্যার ছাত্রী আপনার, আমি কেন না করবো?” আসলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন তাই নাকি অনুমতি চেয়েছিলেন স্যার। পরে বলেছিলেন আমার স্পষ্ট সব মনে আছে। “ম্যাডাম আমি জানি আপনারা কি মনের, তবু এটা আমার ডিউটি। যে মেয়ে মসজিদ দেখেও সালাম করে, কাদের থেকে এ শিক্ষা পেয়েছে, সেটা জানি আমি।” ওসব শুনে আমার যে কি গর্ব মামনি-বাপিকে নিয়ে! অবশেষে প্রতিযোগিতা প্রথমে থানা পর্যায়ে। আমি প্রথম হলাম বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের “খেয়াপারের তরণী” কবিতা আবৃত্তি করে। এই আবৃত্তি আমায় বাপি শিখিয়েছে। আবৃত্তি আমার ভালো হবার কারণ ছিলো যে শব্দগুলো বুঝতাম না, বাপি সেগুলো বুঝিয়ে দিতো। তাতে আবেগের পূর্ণতা থাকতো। যাক তারপর জেলা পর্যায়ে গিয়েই ঝামেলা হলো। তখন আমাদের জেলা ছিলো সিলেট। ওখানে আবৃত্তি করলাম কবি ফররুখ আহমেদের “পাঞ্জেরী” কবিতা। আমায় বিচারকেরা ডেকে নিয়ে বললেন, “মা তুমি অনেক ভালো আবৃত্তি করেছো। কিন্তু তারপরেও তোমায় প্রথম স্থান দিতে পারছিনা, কিছু সমস্যা আছে।” আমার সাথে ছিলেন আমাদের বশির আহমেদ স্যার। উনি জানতে চাইলেন কারণ কি? একটাই কারণ আমি অন্য ধর্মের। স্যার তো ক্ষেপে একেবারে আগুণ। কোথায় লেখা আছে অন্য ধর্মের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেনা? স্যার বলতে শুরু করলেন “আপনি কি কখনো কোনো মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহকে ভেবেছেন? এই মেয়ে মসজিদ দেখলেই হাত তুলে সালাম করে।” তারপর বাধ্য হয়ে বিচারকমন্ডলী দুটো সনদ দিলেন আমায়। একটি বিশেষ প্রশংসাপত্র, যেখানে লেখা ওইটুকু বয়সে আমি পাঞ্জেরীর মতো কবিতা আবৃত্তি করেছি গভীর আবেগ নিয়ে। আরেকটি সনদ দিলেন দ্বৈতভাবে প্রথম হবার। দ্বৈতভাবে দেয়ার কারণ, বিভাগীয় পর্যায়ে আমায় পাঠানো হবেনা। স্যারকে বোঝালেন উনারা যে ওখানে গেলে আমার মন ভেঙ্গে যাবে। প্রথমেই প্রতিযোগীতা থেকে বের করে দেবে। স্যার কিছুতেই রাজি হলেন না। অবশ্য আমার সাথে বাপিও গিয়েছিলো। বাপিও স্যারকে বোঝালেন। সিলেট থেকে ফিরে এলাম। আমায় নিয়ে স্যারের খুব গর্ব ছিলো। আমি কি না কি জানি হবো!
স্যারকে নিয়ে আরোও অনেক গল্প আছে যা পরের পর্বে বলবো। এই স্কুলেই আমি পেয়েছি আত্তর আলী স্যার, মুকুল স্যার, আপামনি, ইমাম স্যার, সায়েক আহমদ হিমু স্যার। আত্তর আলী স্যারের কাছে আমি ঋণী, যা শোধ হবে না কখনো।
ক্রমশ
হ্যামিল্টন, কানাডা
৯ জুলাই, ২০১৬ ইং।
৩৬টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
সব কেমন জমিয়ে রেখেছ, যা কোনদিন মুছবেনা। মহান এই বশির স্যারের প্রতি অনেক সম্মান রইলো। আর মাওলানা স্যারের প্রতি ধিক্। এমন খারাপ মানুষ আছে বলেই কিন্তু ভালোরা মনের মধ্যে টিকে আছে। ধর্মের বিভক্তি আমাদের মধ্যে প্রবল। মনে পড়ে ক্লাসের একমাত্র খৃষ্টান মেয়েটি আমাদের ইসলাম ধর্ম পড়েছিল, আর সবাইকে টপকে সবচাইতে বেশি নাম্বার পেয়েছিল।
চমৎকার একটি সংগ্রহ হবে এই লেখাটি। নিজের জন্যে, আমাদের সবার জন্য। ভালো রেখো আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু সেদিন কাকে জানি বলেছিলাম, আমাদের প্রত্যেকের জীবনে খারাপ মানুষের প্রয়োজন আছে। তা নইলে ভালোদের তো চেনা যাবেনা। হুম হেডস্যার মনের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন। জানিনা কেন কড়া শিক্ষকেরাই আমায় বেশী ভালোবাসতেন।
তুমিও ভালো রেখো। -{@
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
খুব ভাল হয়েছে এই পর্বটাও
ওই শিক্ষকের প্রতি ধিক্কার জানাই। এমন শিক্ষক যাতে সমাজে বিস্তার না ঘটে।
নীলাঞ্জনা নীলা
এমন শিক্ষকই আজকাল নাকি বেশী।
কিন্তু কথায় আছে না, ভালোটুকুই টিকে থাকে সম্মানীয় স্থানে।
আমাদের এ সমাজে ডিগ্রীধারী শিক্ষকের পাশাপাশি মননশীল শিক্ষকেরও প্রয়োজন।
ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটির পাশে থাকার জন্যে।
ছাইরাছ হেলাল
দুম করে বলে দিলেন ক্রমশ! আজব!
এ অন্যায্য অন্যায় মেনে নিতে বলছেন!
বশির স্যারেরা কালে-ভাদ্রে আসে,
ভাল! স্যারদের অপেক্ষায় আছি!
নীলাঞ্জনা নীলা
কবিভাই কোনো কিছু লুকোনোর নেই। তাই দুম করেই বলে যাচ্ছি।
ভালো লাগছে এভাবে লেখাটিকে যত্নসহকারে পড়ছেন।
ভালো স্যার আরোও আসছেন। 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আপনাকে যত্নেই পড়ি,
ভালু! স্যারের গল্প যেন বাদ পড়ে না যায়!
নীলাঞ্জনা নীলা
কোনো স্যারের গল্পই বাদ পড়বে না। নিশ্চিন্তে থাকুন।
আমাকে যত্নে পড়েন!!! 😮
আমি তো পড়ার বই নই।
মৌনতা রিতু
এমন একটা পাগলা টিচার আমিও পাইছি। ৮৮ তে যখন গার্লস্ স্কুলে ভর্তি হতে যাই। মা বাড়িতেই আমাকে ওয়ান টুর বই পুরোটাই মুখস্ত করাইছিল। নামতা পাঁচ ঘর পর্যন্ত। তাই একেবারে ক্লাস থ্রীতেই ভর্তি হই। লিখেছিলাম ম্যাডামের সামনে গটগট করে।
তো ক্লাসে আয়শা ম্যাডাম আসত একটু ভাব নিয়ে। খুবই খাটো ছিল ম্যাডামটা। ব্যাঞ্চের উপর উঠে চিপের চুল ধরে টেনে তুলত। কবিতা যেতাম ভুলে ঐ ম্যাডামকে দেখলে। একদিন আমার চুল ধরে টেনে তুলল। স্বাস্থ খুব ভাল ছিল আমার। মোটাসোটা যাকে বলে। চিপের চুল ছিড়ে ম্যাডামের হাতে। পরদিন স্কুলে উপস্থিত আব্বা। তবুও সে ঐ কাজ প্রায়ই করত।
তারপর একাই ক্লাস ফোরে সেন্ট পলস্ স্কুলের ভর্তি ফরম তুলে পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হলাম। পেলাম মায়ের মতো শুক্লা দিদিমনিকে। কালিপদ স্যার অংক না পারলে হাত দিয়ে ধাম করে পিঠে লাগাত। আমরা ব্যাঞ্চে শুয়ে পড়তাম। স্যার হাসতে হাসতে বলত,” দাঁড়া আমিও ঢুকছি ব্যাঞ্চের ভিতর”। কি যে আদর স্নেহ, ভালবাসা ছিল সেই আলত মারে। বয়স হয়েছিল স্যারের অনেক। হাত কিছুটা কাঁপত। আর ছিল হরিপদ স্যার। বারান্দায় দেখা হলেও ডাস্টার দেখা। ওমা পড়া কি হইছে”? জিজ্ঞেস করত। আমার যেদিন পড়া হত না। স্যার, ম্যাডামকে বলতাম,” ধরতে ধরতে হয়ে যাবে”। বলত” তোর দুষ্টামি কবে সারবে বলত”? বড় হবি না?
আমাদের এক সিস্টার ছিল, সিস্টার আগাথা। ওরে আল্লাহ্ কি যে কড়া ! হাতের নক সামান্য বড় হইছে কি খবর আছে। বলত ” মা জননি যতক্ষন হাতের নখ পরিষ্কার করেন, ততক্ষন যদি একটু পড়তেন রেজাল্টটা আরো ভাল হতো। কবিতা আবৃত্তি শিখেছি শুক্লা দিদিমনির কাছ থেকে। আমি এখনো দিদিমনির গায়ের সেই মিষ্টি গন্ধ চিনতে পারব।
নীলাঞ্জনা নীলা
পিচ্চি মেয়ে দেখি!
আমার ছাত্রী হলে খবর ছিলো তোমার আপু। 😀
হাতের নোখ তো পড়ার ফাঁকেই কাটা হয়ে যেতো। :p
এখনও চিন্তায় বসলে কখন যে নোখের মৃত্যু হয়ে যায়, খেয়ালই করিনা। আগে বাপি এসে হাতে টুকুস করে পিটুনী দিতো। আর মামনি দেখলেই গম্ভীরভাবে এসেই বলতো, “মুখ থেকে আঙুল সরিয়ে নে! 🙁
শামীম আনোয়ার আল- বেপারী
ধন্যবাদ জীবনের কি অংশ আমাদের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য ।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ আপনাকেও এই যে পড়ছেন মন দিয়ে।
ভালো থাকুন।
লীলাবতী
মাওলানা স্যারের মত দু একজন স্যার পেয়েছি আমিও। তাদের কথা ভাবতেই ইচ্ছে করেনা।
লেখার কত বিষয় আছে, আর আমি বিষয় খুজেই পাইনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
লীলাবতীদি এটা কি বললেন! আপনি বিষয় খুঁজে পাননা!!! 😮
বলুন যে আমাদের আপনার লেখা পড়তে দিতে চাননা। 🙁
আবু খায়ের আনিছ
প্রাইমারি স্কুলে কখনো কোন টিচার এর হাতে মার খাইনি, সেই আমি হাইস্কুলের প্রথম দিনেই মার খেয়েছিলাম। একটু দেরিতে ভর্তি হওয়ায় প্রথম ক্লাসের পড়া আমি জানতাম না, অদৃষ্টের লেখন, স্যার আমাকেই পড়া জিজ্ঞেস করল। এমনিতেই হাবলা টাইপের ছিলাম, মুখ দিয়ে একটা কথাও বের হয়নি সেই দিন। প্রথম ক্লাস করতে গিয়েছি সেটাও না, যথারিতি হাত পেতে মার সহ্য করতে হয়েছিল, তবে খারাপ লাগছিল না, আমার চিরদিনের বন্ধু আবার শত্রু হামিদুল ও সেদিন মার খেয়েছিল তাই। হা হা হা
নীলাঞ্জনা নীলা
আনিছ ভাই মার দিয়ে শুরু আপনার আর আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শেষ হয় মার দিয়ে।
আমার বুড়োর গানের সাথে কতো মিল, দেখুন
“তোমার হলো শুরু, আমার হলো সারা।” 😀
আবু খায়ের আনিছ
হা হা হা, সেই স্যারের মার পরে আরো খেয়েছি, একরকম জেদ করেই সেই মার খাওয়া।
নীলাঞ্জনা নীলা
কাহিনীটা বলুন শুনি। কেন জেদ করে মার খেলেন? ;?
মোঃ মজিবর রহমান
এই মওলানা স্যার নামের কলংগ।
হাজার হাজার বশির স্যার জিইয়ে থাকুক মাথা উচু করে মানবতাআর তরে ……………।
নীলাঞ্জনা নীলা
জীবনে এতো ঘেণ্ণা আমার কোনো স্যারকে দিয়ে হয়নি মজিবর ভাই।
উনি যদি জানতেন আজ যে আমি উনার সম্পর্কে কি সত্যিটা লিখছি। তাহলে আমি খুব খুশী হতাম।
লেখাটিকে এভাবে আপন করে নেবেন সকলে সত্যিই ভাবিনি।
ধন্যবাদ।
অপার্থিব
লেখা ভাল লেগেছে। মাওলানা স্যারের মত এক মাওলানা আমার নিজের ক্লাসেও ছিল। ধর্মান্ধতা , সাম্প্রদায়ীকতা চিরকালই সমাজে ছিল , এদেরকে মোকাবেলা করেই সভ্যতা এগিয়েছে, ভবিষ্যতেও এগোবে। শ্রদ্ধা রইলো আপনার বশির স্যারের প্রতি।
নীলাঞ্জনা নীলা
ঠিক বলেছেন ভবিষ্যতেও এগিয়ে যাবে। আর এও জানি প্রত্যেকের জীবনে এক একজন জসিম স্যার, বশির স্যার আছেন।
ধন্যবাদ অপার্থিব।
ভালো থাকুন।
জিসান শা ইকরাম
এমন শিক্ষকদের ভুলে যাওয়া উচিৎ না
কৃতজ্ঞতার সাথে মনে স্থান দেয়া উচিৎ।
ভাল লাগছে 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা কোনোদিন কখনোই ভুলবো না।
উনারা এ জীবনে এসেছিলেন বলেই তো আজকের যা কিছু ভালো আমার সেসব পেয়েছি।
ভালো লাগছে বলে এই ফুল দিলাম তোমাকে। -{@
মামুন
নিজের ও সেই সময়ের অনেক কিছু মনে পড়ল।
লেখাটির সাথেই আছি।
শুভকামনা রইল।
নীলাঞ্জনা নীলা
মনে পড়লো যখন, লিখে ফেলুন। আমরাও জানি।
আপনারা আছেন বলেই লিখতে পারছি।
ভালো থাকুন আপনি।
নাসির সারওয়ার
স্মৃতির ভাণ্ডারে বশির স্যার ই থাকুক!
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়ূ হুম স্যার ছিলেন, আছেন, থাকবেনও।
কেমন আছেন আপনি? একটা লেখা দিন না ভাইয়ূ প্লিজ।
ইঞ্জা
আপনার স্কুল জীবনের কথা শুনে আমিও অনুপ্রাণিত হলাম আপু, ভাবছি আগামীতে আমিও লিখবো আমারটা। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
অবশ্যই লিখুন। আমাদের সুশিক্ষকদের সম্পর্কে পড়ে যদি ভালো শিক্ষকদের জন্ম হয়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
স্কুলজীবনে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন। আসলেই সে বয়সে শিক্ষকদের আচরণের উপর ছাত্রছাত্রীদের পরবর্তী জীবনের গতিধারা অনেকখানি নির্ভরশীল।
এক জায়গায় খুব আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলাম, যেখানে বাবা তাঁর মেয়েকে শব্দের ভাব বুঝিয়ে দেয়ার কারণে মেয়ে আবৃত্তি করার সময় উচ্চারণের সাথে সাথে ভাবও প্রকাশ করতে পারতো। এখনকার সময়ের বাবারা কি তেমন করেন? কিভাবে বাচ্চারা আবেগপ্রবণ হবে? কিভাবে দেশ, মানুষের প্রতি মায়া তৈরি হবে। দেশাত্মবোধ জাগ্রত হবে?
ভালো লেগেছে অনুভূতি প্রকাশের এই লিখাটি।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু খুব কম বাবারা এমনটি করেন এখন। ছেলে-মেয়েরা আবৃত্তি হোক আর গান-নাচই হোক, সব অন্যের উপর নির্ভর করেই শেখে।
একসময় বেডমিন্টনে খুব ভালো ছিলাম, শিখিয়েছে আমার মামনি আর বাপি। গানের তাল-লয় বাপির থেকে পাওয়া। কতো ধরণের বোল বাপি বাজাতো একই তালের উপর। যাতে কখনো কোনো তবলচি যেভাবেই বাজাক না কেন আমার তাল কিছুতেই না কাটা যায়। মামনি হারমোনিয়ম যখন শেখায়, বলতো “স্বরলিপি মনে রাখিস, কিন্তু স্বরলিপি দেখে দেখে বাজাস না।” বাবা-মা যদি না করতো এসব, আমিও হয়তো আমার সন্তানের সাথে এমন করতাম না। যদিও ওর গান-লেখালেখি এসবে নেই। কিন্তু ও লিরিক্স বানায় যদিও ইংরেজী র্যাপ গানের। আর এনিম্যাশন কার্টুন বানায়, সাথে কাহিনীও লিখে। কেন এসব বলছি, আমি ওকে বলেছি যা কিছু করবি মনের ভেতর থেকে করিস। ঘর যদি শিক্ষার হাল না ধরে, শিক্ষকেরা কি পারেন কয়েক ঘন্টার ক্লাশে?
কৃতজ্ঞতা আপু এভাবে প্রেরণা দিচ্ছেন।
ব্লগার সজীব
যাদের কাছে আমি ঋণী, শিরোনামটাই অদ্ভুদ মায়াময়। স্কুল জীবনের শিক্ষকদের নিয়ে এমন লেখায় অনুপ্রাণিত হলাম -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাভু বাইয়া এক এক করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব শিক্ষকের কথাই উঠে আসবে। আজকের আমি যা কিছু সুশিক্ষা পেয়েছি, তাঁদেরই দান যে।
মন্তব্য পেয়ে লেখার ইচ্ছে আরোও বেড়ে গেলো। -{@
মেহেরী তাজ
আপু স্কুল নিয়ে আপনার এতো কিছু মনে আছে? আমার তো বাঁদরামি ছাড়া কিচ্ছু মনে পরে না……
নীলাঞ্জনা নীলা
বাঁদরামী করেছি কলেজে এসে। 😀
কি যে দুষ্টুমী করেছি। কিন্তু মজা হলো তারপরেও স্যাররা আমায় ভালোবাসতেন। 🙂
এই পিচ্চি আপু লেখা কোথায়? না লিখলে ফুলসহ হৃদয় কিন্তু দেবো না। 🙁