মানুষের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই জানি আর তা হলো অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসা কিন্তু এই পাঁচটি অধিকার নিয়ে আমরা কতটুকু সচেতন তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে আর তার কারণ হলো আমরা সব কিছুতেই ভেজালে অভ্যস্ত, আসুন এই বিষয় নিয়ে একটু আলাপ করিঃ
অন্নঃ
প্রথমেই আসি আমাদের মৌলিক অধিকার অন্ন নিয়ে অর্থাৎ খাবার, যা না খেলে আমাদের জীবনধারণ অসম্ভবই। আমরা মানে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষরা যা খাই তা কি যথাযথ ঠিক আছে, না নেই আমরা যা খাই তার প্রতিটিই ভেজালে ভরপুর। চাল কিনবেন, সেখানে ভেজাল, সব পালিস করা আর ইতিমধ্যে চায়নার ভেজাল চালও এসে গেছে যা রান্না করলে সাদা সাদা স্পঞ্জের মতো, এই চাল তো শরীরের জন্য মহা বিপদ সংকেত। ডালেও আছে ভেজাল, লবন, মরিচ, মসলা, চিনি, হলুদ, তেল সব কিছুতেই আছে ভেজাল। ফল মূল, সবজি কিতে নেয় ভেজাল, মাছ, মাংস, মুরগী, পানি, ওরে বাবা এগুলোতো এখন আরো ডেঞ্জারাস, সব ফর্মালিনে ভরা কিন্তু আমরা খাচ্ছি, দেদারচ্ছে খাচ্ছি। আমাদের সরকার পর্যন্ত এদের কিছুই করতে পারেনা, মাঝে মাঝে এদের কিছু চুনোপুঁটি ধরে, ১/২/৬ মাসের জেল জরিমানা করে কিন্তু এইসব চুনোপুঁটিদের দুইদিন পরই জামিন করিয়ে নেন রাঘববোয়ালরা তারপর এনারা রেগেমেগে আরো বেশী করে আমাদের ভেজাল খাওয়াই আর সরকার তা দেখেও না দেখার ভান করেন। ভোটের সময় লম্বা লম্বা কথা বলেন, হাম লোগ হেন কারেংগা তেন কারেংগা কিন্তু ভোটের পর সব লবডঙ্কা।
আমার প্রশ্ন, কেন সরকার এইসব ভেজাল কারবারি, অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠিন আইন করেন না, চাইলে তো দেশে এই আইন হতে পারে, যেমন কেউ যদি খাদ্যে ভেজাল করে, অযথা মূল্য বাড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রমান পেলে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে আর এই আইন হলে আর কড়াকড়ি করলে কারো বাপের সাধ্যি আছে খাদ্যে ভেজাল করে, অযথা মূল্য বাড়ায়?
এখন আসুন গরীব জনগণের কথায়, বাংলাদেশে এখনো কয়েক কোটি মানুষ আছে যারা দুমুঠো অন্ন যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে, আমার প্রশ্ন কেনো ওরা এমন কষ্টে থাকবে? সরকার এবং আমাদের সমাজের বিত্তবান মানুষরা কি চাইলে এই সমস্যার সমাধান করতে পারিনা, অবশ্যই পারি। আমি বলিনা এদের আপনারা ভিক্ষা দিন, আপনারা চাইলেই তাদের হাতের কাজের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন যাতে তারা নিজেরায় খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে, হতে পারে গাড়ী মেরামতের কাজ, ইলেক্ট্রিক আর ইলেক্ট্রনিকসের কাজ, পাইপ ফিটিংসের কাজ, যন্ত্রাংশ বানানোর কাজ, গার্মেন্টস মেসিনারিজের মেরামতি কাজ, ইত্যাদি ইত্যাদি কাজ কি শেখানো যায়না, যা করে ওরা নিজেরা করে খেয়ে বাঁচবে, কি বাঁচবে কিনা?
তাহলে আসুননা আমরা আওয়াজ তুলি, প্রশ্ন তুলি সরকার আর সমাজের উঁচুস্থরের কাছে, তারা কি পারবে আমাদের ভেজাল বিহীন অন্ন খাওয়াতে, মুনাফাখোরদের হাত থেকে বাঁচাতে? আসুন বলি আমাদের ভেজাল মুক্ত অন্ন দাও, সঠিক দামে তা কেনার সামর্থ্য দাও, ভেজালকারি আর মুনাফাখোররা নিপাত যাও, আমাদের বাঁচার অধিকার আছে যা তোমরা কোনভাবেই তোমরা আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবেনা।
___________ ক্রমশ
ছবিঃ কালেক্টেড।
৩১টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
কখনোই না পারবে না যত দিন না নতুন প্রজন্মরা হাল না ধরেন এবং আমরা সচেতন না হই -{@
ইঞ্জা
বুইড়ারাই আসন ছাড়তে চাইনা আবার নতুন প্রজম্ম আসবে কোথা থেকে বলুন, বুইড়ারা মরতে মরতে বাকিরাও বুড়া হবে। :@
মিষ্টি জিন
ভেজাল খেয়ে এমন অবস্হা হঁয়েছে যে এখন বিদেশে ভেজাল মুক্ত খাবার খেলে অসুস্হ হয়ে যাই :p
মুখে আর স্কিনে মাংখ্রার জন্য ফরমালিন থাকলে কত ভালো হোত। মরে গেলেও স্কিনে রিংকেল পডতো না।
:p
গুরুত্ব পূর্ন পোষ্ট পার্টনার
ইঞ্জা
ইশ ব্লগে যদি কপাল চাপড়ানোর ইমো থাকতো তাই দিতাম। :p
মোদ্ধা কথা হলো আমাদের এখনই সচেতন হওয়া উচিত
লীলাবতী
জন সচেতনতা প্রথম প্রয়োজন ভাইয়া। ভাল লিখেছেন।
ইঞ্জা
ওরে বাবা এইটা কে, কোন গর্ত থেকে বেরিয়েছে?
joke apart আপু কেমন আছেন আর মা কেমন আছেন?
আপনাকে আবার আমাদের মাঝে পেয়ে খুব আনন্দ বোধ করছি আর আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। 😀
লীলাবতী
মা বর্তমানে সুস্থ্য ভাইয়া। আমিও ভাল আছি। দোয়া করবেন। এখন আর গর্তে নেই লীলাবতী 🙂
শুন্য শুন্যালয়
ভাইয়া আমাদের এই আওয়াজ যে দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে ফিরে আসে, তাদের যে টনক আর নড়ছেনা 🙁
কিংবা হয়তো আমাদের আওয়াজেই জোর নেই। অনেকদিন পর ভিন্ন টপিক্স নিয়ে লিখলেন, ভালো লিখেছেন ভাইয়া।
ইঞ্জা
ঠিক বলেছেন আপু, আমাদের আওয়াজের জোর নেই, আমরা দিনকে দিন এতো খারাপ হচ্ছি আমাদের প্রতিবাদ ভায়োলেন্ট হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ভায়োলেন্ট প্রতিবাদ কিন্তু আমাদের কিছুই দেয়না বরঞ্চ আরো ক্ষতিগ্রস্ত করে যা আমাদের অনুধাবন করা উচিত, আরো বিপদজনক বিষয় হলো আমরা আমাদের হক বা অধিকার নিয়ে সচেতন নই যার কারণে সরকার থেকে শুরু করে রাস্তার লোক পর্যন্ত আমাদের ঠকিয়ে যাচ্ছে, তাই আমাদের উচিত আগে নিজেদের ও সমাজকে সচেতন করা।
আপনাকে ধন্যবাদ আপু, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ক্রিস্টাল শামীম
যে দেশের খাদ্যমন্ত্রী জেনেশুনে পচাগম আমদানি করে।
যে দেশের সাংবাদিকরা বন্যায় অসহায় মানুষদের কথা না বললে, ভারতের হাতি নিয়ে পরেথাকে সে দেশে এখন কিছুই হবার নাই । এখন দরকার নতুন প্রজন্মের ,,, প্রবীণরা বুদ্ধি দিবেন নবীনরা নিজদক্ষতা কাজকরবেন । তবে আপনার সাথে একমত প্রতিবাদ করতে হবে !!!
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই, আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি। (y)
ছাইরাছ হেলাল
অনেকদিন পড় ভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখলেন,
আওয়াজে কী হয় জানি না,
নুডুলস নিয়ে শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিল আমরা জানতেও পারিনি।
ইঞ্জা
নুডলস নিয়ে কি হয়েছিলো ভাই একটু খুলে বলবেন দয়া করে।
ছাইরাছ হেলাল
নেসলের ম্যাগি নুডুলস ভারতে নিষিদ্ধ হলো প্রাণঘাতি বিষাক্ত কেমিক্যালের উপস্থিতির জন্য।
এখানেও পরীক্ষা হলো, আমরা জানলাম বিষাক্ত পদার্থের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আবার পরীক্ষা করা হলো, অনেক অনেক পরে জানা গেল সব কিছু ঠিক-ঠাক।
ওদের বিষ খাওয়াচ্ছে, আমাদের খাওয়াচ্ছে না।
ইঞ্জা
এখন মনে পড়েছে ভাই, কষ্ট হয় যখন সরকার এই বিষয়ে কানও নাড়েনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভেজালবিহীন খাদ্য? তাও এই পৃথিবীর মানচিত্রে আমাদের দেশে? এ কি সম্ভব!
সত্যি!!!
সচেতনতামূলক পোষ্ট দিয়েছেন, কিন্তু কাজে লাগবে না। কারণ আমাদের দেশের জনগণ চোখ খুলে ঘুমিয়ে আছে।
ইঞ্জা
এতো হতাশ হলে কি চলে, জনগণকে বাদ দিন, আমি আপনি কি করতে পারি তা দেখিনা, আমাদের দেখা দেখি বাকিরা ১ ২ ৩ ৪ করে আসবে।
নীলাঞ্জনা নীলা
ইঞ্জা অবশ্যই মানি এটা। (y)
ইঞ্জা
(y)
মৌনতা রিতু
একদম চুপ ! স্পিক্টি নট। বেশী চিল্লাইলে কইব, জামাত শিবির। মোরে সেদিন কইছে একজন এই কথা।
তাই মুখে তালা মারছি।
যা খাই তা চোখ বুজে খাই।
ভাই এই লেখা যাদের দেখার দরকার তারা দদেখে না।
ওরা চোখে কানে ঠুসি পরছে।
ইঞ্জা
খারাপ বলেননি আপু, এরপরেও আমাদের উচিত ওদের পাশে প্যান প্যান করা যদি বিরক্ত হয়ে শুনে।
ব্লগার সজীব
ভাল লিখেছেন ভাইয়া।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই।
প্রহেলিকা
আপনার প্রশ্ন এখন সার্বজনীন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জবাব মিলবে না জেনেও তীর্থের কাক হয়ে আপনার তাকিয়ে আছি। চাতকের চোখে বৃষ্টি যেন নামতেই চায় না।
ইঞ্জা
সার্বজনীন প্রশ্ন নিয়ে আমার দ্বিমত আছে, আমার কথা হলো সব কেন সরকারকে করতে হবে, আমরা কেন শুরু করছিনা, আসুননা আমরা শুরু করি, কত কিছুই না করছি আমরা, এ করলে দোষ কি?
অপার্থিব
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে সুষম উন্নয়ন ঘটে নি ফলে ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে, গরীব আরো গরীব হচ্ছে। পুরো সিষ্টেম যেখানে দুর্নীতি গ্রস্থ সেখানে খাদ্য বা মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্র গুলো দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হওয়াই স্বাভাবিক। পরিবর্তন ঘটাতে হবে সিস্টেমে, এর জন্য আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। আমি নিজে ঘুষ খেয়ে , দুর্নীতি করে বাজার থেকে ফরমালিন মুক্ত মাছ পাওয়ার আশা করতে পারি না। পুরো প্রক্রিয়াটাই একটা চেইন। আর একটা কথা , অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসার বাইরেও আরো একটা মৌলিক চাহিদা আছে, তা হচ্ছে যৌনতা । এটা নিয়ে আমাদের রক্ষণশীল সমাজে কোন আলোচনা হয় না , এটা নিয়েও আলোচনা জরুরী।
ইঞ্জা
আপনার সাথে একটা বিষয় ছাড়া বাকি সবটাতেই সহমত পোষণ করছি কিন্তু যৌনতা কখনোই মৌলিক চাহিদা হতে পারেনা কারণ যৌনতা শারীরিক বিষয় আর এইটি নিবারণের জন্য বয়স ও সামর্থ্য হলেই অবশ্যকার্য হিসাবে যে কেউ সামাজিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।
সকাল স্বপ্ন
তাহলে আসুননা আমরা আওয়াজ তুলি, প্রশ্ন তুলি সরকার আর সমাজের উঁচুস্থরের কাছে, তারা কি পারবে আমাদের ভেজাল বিহীন অন্ন খাওয়াতে, মুনাফাখোরদের হাত থেকে বাঁচাতে? আসুন বলি আমাদের ভেজাল মুক্ত অন্ন দাও, সঠিক দামে তা কেনার সামর্থ্য দাও, ভেজালকারি আর মুনাফাখোররা নিপাত যাও, আমাদের বাঁচার অধিকার আছে যা তোমরা কোনভাবেই তোমরা আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবেনা।_________
একমত আপনার সাথে—— চাই সচেতনতা চাই এই দূষণ থেকে মুক্তি —–
তবেই হবে এই সবের দমন —
ধনবাদ এই সচেতন লেখার জন্য—-
ইঞ্জা
সহমত পোষণ করে ধন্যবাদ জানাচ্ছি সাথে আবারো ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আবু খায়ের আনিছ
প্রথম আলোর স্লোগান, বদলে যাও বদলে দাও। আগে আমাদের বদলাতে হবে, সাথে অন্যদেরও।
ইঞ্জা
শতভাগ সত্য বলেছেন, সবাইকেই বদলাতে হবে।