ভ্রমণ কথকতা…………৩

ছাইরাছ হেলাল ২৬ মে ২০১৭, শুক্রবার, ০৮:৩৪:৪৬পূর্বাহ্ন ভ্রমণ ২০ মন্তব্য

স্মোকিং রুম থেকে তিন জনে-ই বের হলাম, কৌল করেই, আমি/আমরা তাঁর ছবি তুলতে পারব-না,
যা-কিছু করার তিঁনি-ই করবেন;

পর্যবেক্ষণ ‘ঘুমুদের’;

রাতের শেষ প্রহরে প্রায় সবাই ঘুমুচ্ছে, যে যার সুবিধে জনক স্থানে সুবিধে জনক উপায়ে,
একাকী, জোড়ায় ও গুচ্ছে গুচ্ছে। গুট গুট করে হাঁটছি আর দেখছি, জিসান সাহেব-কে একটু আনমনা মনে হচ্ছে, লক্ষ্য করছি, ডাল মে কুছ সাদা হ্যায়, অপেক্ষা করছি, সে থেমে দাঁড়িয়ে আমাদের যেতে বলল, সে এখানে একটু বসবে, বলেই যথারীতি মোবাইলের উপর রুদ্ধশ্বাসে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমরা দ্রুত স্থান পরিত্যাগ পূর্বক টুপ করে সামান্য দূরে একটু চিপা-মত জায়গা দেখে দাঁড়িয়ে অটুট লক্ষ্যে অপেক্ষমান , আমার ত্বদীয় সঙ্গিনীর মুখ চেপে ধরে, সে খালি ফিক-ফিকায়, আমার এহেন কর্ম-কান্ডে!! না চাইতেই মেঘ না শুধু তার থেকেও বেশি কিছু, একটু পরেই, একখানি ঝকঝকে ধারালো মনোহর ঝা-চকচকে ব্লাক ডায়মন্ড হাজির!! কখন! কেমতে কী, কিছুই বুঝলাম না!! আমরাও কালক্ষেপ না করে হাল্কা-চালে ল্মফ দিয়ে উপস্থিত হলাম, হকচকিয়ে গেলেও ধরা না দিয়ে দাঁত মেলে দিলেন বাহান্ন খানা, নিশ্চয়ই তিনি হটেনটট নন;
যা জানালেন;

সাদা-কালো উঁচা-লম্বা-মোটা
সব-ই বাইরে,
সবার-ই লাল রক্ত! ভিত্রে;
আহা, সাধু সাধু
মরি এবার সবাই, একত্রে!!

অংশগ্রহণের আহ্বান উপেক্ষিত!! টি-শার্টে টান পড়ছে, যথাবিহিত স্থান পরিত্যাগ পূর্বক ঘুমু-দেখা-কাজে ফিরে গেলাম, তাদের গুজুর-গুজুর ফুসুর-ফুসুরের চান্স দিয়ে।

মানুষের ঘুমোনের যে কত-কত রকম-সকম তা এত্ত মানুষের একত্রে ঘুমুতে না দেখলে বুঝতে পাড়ার উপায় ছিল না, কেউ বসে বসে ঘুমুচ্ছে, হেলে পড়ে-পড়ে, কেউ চেয়ারে বসে শক্ত হয়ে ঘুমুচ্ছে, কেউ নীচে বসে চেয়ারে মাথা রেখেছে, একজনকে দেখলাম বই মেলে পড়ছে, আসলে সে ঘুমুচ্ছে হাতে বই খুলে রেখেই।
কাউকে কাউকে দেখলাম ঘুম-টুম ফেলে মহানন্দে কৃত্রিম লেক-ঝর্ণা সবুজ গাছপালার গভীর সান্নিধ্যে উপভোগ করছে সেধিয়ে গিয়ে, সেলফি চালু রেখেই!!

এক গুচ্ছ বিপুল আখাম্বা টাইপ বিশাল উরু মেলে/বুজিয়ে চিৎ-কাত হয়ে ঘুমুচ্ছে, স্বল্প বসনা থেকে পুরোটাই ঢেকে ঢুকে, কেউ গায়ের জ্যাকেট খুলে গায়ে-মাথায় দিয়ে রেখেছে, কেউ বা জুতো/স্যান্ডেলে মাথা রাখছে, কেউ ব্যাগপ্যাকটি মাথায়, কেউ পরম মমতায় সেটি কোলে নিয়ে ঘুমুচ্ছে, ভাগ্যিস চিকন-গুনিয়া নেই, তাজা উরু কী করে উন্মুক্ত রাখে ভাল ভাবেই বুঝতে পারত, বেঁচে গেলে এ-যাত্রা। একজনকে দেখলাম হঠাৎ ঘুম থেকে উঠেই পড়ি-মরি করে ভোঁ দৌড়।

হঠাৎ আমার মুখ ধরে ঘুরিয়ে অন্য দিকে আমার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়ে দেখতে বলল, সাবধানে পা ফেলে-ফেলে একটু কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম আমরা, সুন্দরী স্বাস্থ্যবতী ফাইন যুবতীটি কমপ্লিটলি সেজদা দিয়ে আছে, আমি তো হা!! ধুম্র-সুন্দরী বলল সে নাকি ঘুমুচ্ছে এমন করে, ভাল করে লক্ষ্য করলাম, কালো আঁটসাঁট জিন্স (কেটে কামড়ে বসে আছে), ততোধিক ঢিলেঢালা গোলাপি খাট টি-শার্ট, পিঠ-কোমর বেশ উন্মুক্ত, এই-যে দেখছি প্রায় কাছে থেকে, তাও বিশ্বাস হচ্ছে না, কেউ এমন করে ঘুমুতে পারে! এই ভঙ্গিতে!!
কী-জানি কেমন করে যেন তার ঘুম ভেঙ্গে গেল, উঠে বসে চোখ কচলে একটু হেসে আমাদের দিকে তাকাল, আমাদের অবাক-পনা মনে হচ্ছে বুঝতে পেরেছে। তার সামনের দিকের ঢোলা পোশাকের ফাঁকে উঁকি দেয়া শরীরের দারুণ বিচ্ছুরণে লা-জবাব অবস্থা,

হ্যাঁচকা টান খেয়ে চোখ-মন সরিয়ে অন্য দিকে হাঁটা শুরু করলাম এক্ত্রে, মনে মনে ‘এ আমি কী-সুন্দর হেরিলাম দু’নয়নে’ ভাবিতে ভাবিতে,

দূরত্ব বাড়িয়ে হন-হনিয়ে হেঁটে ধুম-রুমে নিষ্ক্রান্ত হলেন, সবিনয় অনুসরণে চুন-মুখে আমিও!!

ধরা পড়ছি, (যদিও কোন দোষ না করেই!!)
মানভঞ্জনে কী কী গান গাইতে হবে বা কী কী করা লাগবে/করতে হবে কে জানে!!

৬৬১জন ৬৬১জন

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ