দু’হাতে টিপে ধরে আছি কপালটা
গত ক ‘দিন দপদপ করছে
অসহ্য।
হঠাৎ কি হলো পৃথিবীর?
এত অস্হিরতা এত শঙ্কা!
নিঃশ্বাসে রক্তের গন্ধ, মানুষের রক্ত।
নাকি ওরা কেউ মানুষ নয়!
ছিলোনা কখনো!
মানুষ হলেতো এমন হওয়ার কথা না।
কাক কি কখনো খায় কাকের মাংস????
একমুহুর্তও মনোনিবেশ করতে পারছি না
কো………থা…………ও
পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত
সমস্ত সভ্যতা যেন মেতেছে ধ্বংসের নেশায়।
আজ ঢাকা তো কাল নিসে
মিউনিক রুশ মদিনা সর্বত্র।
নিজেই নিজেকে ধ্বংসের অদম্য নেশা।
হয়তো আম্ফিট্যাফিনের উন্মত্ব নেশায়
অস্বীকৃত হয় মাতৃজঠরও।
মায়ের নাভীর টানও টানেনা ওদের।
প্রেমহীন ধোয়াটে চোখে হায়েনার হিংস্রতা
তাই কি ক্যাপ্টাগনের উন্মত্ব ধারালো ছুরি
ছিন্ন করে তারুশীর শরীর
বার -বার -বার -বার।
উফ অসহ্য অসহ্য।
কি করে ভুলে থাকি তিন সপ্তাহেরও বেশী
লাশঘরে পড়ে আছে পাচঁটা তরুন।
উজ্জ্বল তরুন। বেওয়ারিশ না তবুও।
ওদেরতো সারাটা বিকেল- সন্ধা
রাস্তার মোড়ে আড্ডা দেয়ার কথা ছিলো।
গিটার কিম্বা সেক্সোফোনে
সুর তোলার কথা ছিলো।
প্রেম করার কথা,অভিমানী প্রেমে নিঃসঙ্গ –
রাত চাঁদের সাথী হওয়ার কথা।
ভয়ঙ্কর হী…..ম…..ঘ…..র
ওদেরতো ওখানে থাকার কথা না।
কিছুতেই ভুলতে পারছি না।
ওদের মা বাবার কথা।
নাভীমূলে চিনচিন করে ওঠে মাতৃত্ব ব্যাথা।
কপালটা ব্যাথায় ফেটে যাবে বোধহয়।
চোখ দুটো জোর করে বন্ধ করে ফেলি।
ইচ্ছা হয় জোর করে স্বপ্ন দেখি
ভোরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি
নির্ভয় নির্ভার।শঙ্কাহীন বুকে,
বন্দুকের গুলি নয়,
কাছের স্কুল থেকে ভেসে
আসছে জাতীয় সঙ্গীতের সুর।
আমাদের ছেলেরা হাসছে।
ধরনীর এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত জুড়ে
বেঁজে চলুক সেই পুরাতন বানী
“সবার উপরে মানুষ সত্য
তাহার উপরে নাই “।
১৬টি মন্তব্য
ইঞ্জা
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অনুভবের প্রকাশ হলো আপনার লিখণীতে। বিশ্বের জঙ্গিবাদ এতো বেশী ছড়িয়ে পড়ছে যে এ নিয়ে সবাই চিন্তিত কিন্তু সাথে সাথে আমাদের উচিত সচেতন হওয়া এবং নিজ সন্তানদের আচার আচরণ প্রত্যক্ষ করা, অনুধাবন করা, তাদের নিজস্ব মতামত নিয়ে আলোচনা করা সাথে বাচ্চাদের পেম্পার করা।
সালমা আক্তার মনি
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। কবিতা লেখা তো সহজ কিছু না, আমি তাই চেষ্টাও করিনি। আমি আমার একান্ত অনুভূতির কথা লিখতে চেয়েছি !আমিতো ওদের কথায় বলতে চেয়েছি যারা এই অস্থির সমাজের শিকার। নিরন্তর সাফল্যের পিছনে ছুটতে গিয়ে আমরা জানিনা আমাদের সন্তানেরা কোন সর্বনাশের দিকে ধাবিত হচ্ছে, জানিনা জীবনের প্রতি ওদের এই তীব্র ঘৃনা কেন এলো। এখনই সময় আমাদের নিজের দিকে ফিরে তাকানোর। আমি দৃঢ় ভাবে বিঃশ্বাস করি স্নেহ মমতা ভালোবাসার বন্ধনই ফিরিয়ে আনতে পারবে ওদের।
ইঞ্জা
শতভাগ সহমত
নীলাঞ্জনা নীলা
দারুণ লিখেছেন। বিশ্বায়নের জোয়ারে ভেসে এসেছে জঙ্গীবাদ। আমরা এখন মানুষ হিসেবে পরিচয় দেয়ার আগে কোন ধর্ম, সেই প্রশ্ন করি। একসময় সঠিক শিক্ষা পাওয়া যাতো শিক্ষকদের থেকে। এখন মার্কশিটে উচ্চ নম্বরের জন্য স্কুল-কলেজ নয়, কোচিং সেন্টার। আর বাবা-মা খেয়াল করে সন্তান কতো পেলো পরীক্ষায়? ঠিকমতো ধর্মপালন করছে তো? কলকাতার কোনো এক ম্যাগাজিনে বহু বছর আগে পড়েছিলাম আমেরিকায় ছেলে-মেয়েরা কথায় কথায় পিস্তল দিয়ে মেরে দেয়, তারপর আত্মহত্যা করে। তার কারণ বাবা-মায়েরা সেই সব সন্তানদের আমাদের মতো লালন-পালন করেনা। স্ট্রেস থেকে এদের মধ্যে ক্রাইমের জন্ম হয়। কেউ ড্রাগ নেয়, কেউ পিস্তল নেয় আর কেউ মেরে নিজেকে মারে। আর আমাদের দেশে এখন যা হচ্ছে অতি-আধুনিকতা থেকে পাওয়া। কয়টা পরিবার আছে পরিবারের সকলে মিলে রাতের খাবার খায়? “কোথায় যাচ্ছিস, কখন ফিরবি” এসব জিজ্ঞাসা করে? এসব একেবারেই নেই।
আমরা শিক্ষা পাই প্রথমে পরিবার থেকে, তারপর শিক্ষকের থেকে তারপর না জীবনের হাল ধরি। গোড়াতেই যদি গলদ থাকে, পরিণতি তো এমনই হবে আপু। আপনি খুবই সুন্দর এবং সময়োণুযোগী একটি পোষ্ট দিয়েছেন। (y)
সালমা আক্তার মনি
নীলাপু কি সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন আমাদের অক্ষমতা গুলো। অনেক ধন্যবাদ আপু।
আবু খায়ের আনিছ
“সবার উপরে মানুষ সত্য
তাহার উপরে নাই “।
কথাটা পুস্তকে আর আমাদের মস্তিস্কে সংরক্ষণ হয়েছে কিন্তু কার্য সাধন করতে পারে নি। মানুষকে মানুষ না বলে মুসলিম, হিন্দু বৌদ্ধ, খীষ্টান বলা হচ্ছে।
সালমা আক্তার মনি
আনিছ ভাইয়া সবচেয়ে এটাই বেশী ভয়ঙ্কর যে ওরা আমাদের সবচেয়ে দুর্বল ইস্যু ধর্মকে পুঁজি করেছে। এখানে খুব বেশী কঠোর হতেও তো নানা বিষয় ভাবতে হয়।
আবু খায়ের আনিছ
কি বলেছেন আপু, কি যে হচ্ছে……………………
ছাইরাছ হেলাল
অনেক দিন পর লিখলেও সমসাময়িক বিষয় তুলে ধরে পুষিয়ে দিয়েছে,
আসলে আমরা ক্রান্তিকাল পাড় করছি,
প্রাকৃতিক স্বাভাবিকতা হারিয়ে ক্যাপ্টাগনের খপ্পরে পড়ে হাঁসফাঁস করছি।
সালমা আক্তার মনি
হেলাল ভাইয়া সত্যিই বড় দুঃসময় পার করছি আমরা। এ থেকে উত্তরণের পথ আমাদেরই বের করতে হবে। আল্লাহ সহায়।
শামীম
দারুন একটি কবিতা , একটি কবিতার মাঝে পুরো পৃথিবীর বর্তমান তুলে ধরেছেন। (y)
রিমি রুম্মান
অনেকদিন পর এলে বেশ সুন্দর লেখা নিয়ে…
ভাল থাকো, নিরাপদ থাকো
সালমা আক্তার মনি
ধন্যবাদ আপু, দোয়া করবেন সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
আপনার যত লেখা পড়েছি, আমার বিবেচনায় এটিই সেরা লেখা মনে হয়।
সমসাময়িক বিষয়ের উপর এত শক্তিশালী লেখা আমার নজরে আসেনি।
এমন লেখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার লেখা থেকে আমাদের বঞ্চিত করা কি ঠিক হচ্ছে?
“” ইচ্ছা হয় জোর করে স্বপ্ন দেখি
ভোরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি
নির্ভয় নির্ভার “”
সালমা আক্তার মনি
জিসান ভাইয়া অ…নে…..ক ধন্যবাদ ,লেখাটা ভালো লেগেছে বলে ভালো লাগছে। আমিতো লেখক না যে নিয়মিত লিখবো! কত কষ্ট করে কিছু একটা লিখতে পারলেই তো চলে আসি সোনেলায়। ভালো থাকবেন সবসময়।
মৌনতা রিতু
সমসাময়ীক চমৎকার একটা লেখা। ছোট একটা লেখায় হাজারটা শব্দের মিলন। সত্যি মাতৃত্ব আজ ব্যাথায় কাতর। ভেসে আসুক কানে জাতীয় সংগিতের সুর।
অনেক ভাললাগল। শুভকামনা।
আমি ভাবছি, আমিও এমন ডুব দিয়ে দিয়ে লিখব, তাইলে আমার ভিতর যদি কিছু ভাল বের হয়ে আসে।