এখানে এমন একজন মানুষের কবিতা দেবো আজ , যার সাথে নিজকে তুলনা করার মত স্পর্ধা কখনোই হয়নি আমার। আমার চেয়ে তিনি কয়েকযুগ অগ্রসর একজন মানুষ । দীর্ঘদিন একসাথে হাতে হাত রেখে নেট জগতে বিচরন করেছি । বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতে আমার পাশে ছায়া হয়ে দাড়িয়েছেন । অথচ অকৃতজ্ঞ আমি তাঁর পাশে দাড়াতে পারিনি । এজন্য মনোকষ্টে যে ভুগিনি আমি তা নয় । তারপরেও নিজের শিকল দিয়ে নিজকে আটকে রেখেছি ।
শুধু মাত্র একটি বিষয়ে তাঁর আমার অবস্থান ছিলো ভিন্ন মুখি । তবে কেউ কখনো এ নিয়ে একে অন্যের উপর প্রভাব বিস্তারের সামান্য চেষ্টা আমরা করিনি । তিনি কখনো বলেননি – আপনি যা ভাবছেন তা ভুল , আমিও তাঁকে বলিনি – আপনার ভাবনা সঠিক নয় । অদৃশ্যমান হয়ে এভাবে হৃদয়ের নৈকট্য আসলেই অভূতপূর্ব। দীর্ঘ বন্দুর পথ পাড়ি দিয়ে আমরা এখনো আছি যোগাযোগের মাঝে ।
কাজলা দিদি নিয়ে এমন একটা লেখা লেখার ইচ্ছে আমারো ছিলো । কিছুটা লজ্জায় আমি তা বলতে পারিনি। পাছে জুতা আবিস্কারের কাহিনীর কথা আবার মনে করিয়ে দেন 🙂 তাঁর লেখাটি পড়ে আমি কাজলা দিদিকে নিয়ে লেখার আগ্রহ হাড়িয়ে ফেলি । দায়সারা ভাবেই একটি লেখা দেই ফেইবুক স্ট্যাটাস হিসেবে ================================================
নীচে দেয়া হলো জুপিটার জয়প্রকাশ এর লেখার হুবহু কপি । তাঁর অনুমতি নিয়েই প্রকাশ করা হয়েছে।
ছাগুদের দ্বারা কোনো ক্রিয়েটিভ কিছু হওয়া অসম্ভব। তাই বাংলাস্তানের স্কুল বুক লিখতেও আমার মত বেকুবকেই হাত লাগাতে হয়।
——————-
সালমা বহিন (মানে আগে যেটা কাজলা দিদি ছিল)
——————-
খেজুর গাছের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই
আম্মু আমার নামাজ পড়া সালমা বহিন কই?
মসজিদের অই কুয়ার ধারে
হুজুর বুড়ো ওয়াজ পড়ে
সেই আওয়াজে ঘুম আসে না একলা জেগে রই।
আম্মু আমার ক্কোলের কাছে সালমা বহিন কই?
সেদিন হতে আম্মু কেন সালমা নাহি ডাকো
তার কথাতে হিজাব দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো?
নাস্তা খেতে আসি যখন
বহিন বলে ডাকি যখন
ও-ঘর থেকে আম্মু কেন বহিন আসে নাকো?
আমি ডাকি, তুমি কেন খামোশ হয়ে থাকো?
বল না বহিন কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?
কাল যে হুজুর বুড়োর সাথে আমার বিয়ে হবে
হুজুর বুড়োর কোলে চড়ে
যাব যখন শ্বসুরঘরে
তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে?
মোল্লাসাবের সাথেই তখন তোমার নিকা হবে।
ঝরা ফুলে ভরিয়ে গেছে খেজুর তলা খানি
মাড়াস নে তুই আম্মু যখন আনতে যাবি পানি
খেজুর পাতার ফাঁকে ফাঁকে
বুববুলিটা লুকিয়ে থাকে
ডাল ধরে তাই তুই যেন না করিস টানাটানি
বহিন এসে শুনতে পেলে কি বলবে কি জানি!
খেজুর গাছের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই
এমন সময় আম্মু আমার সালমা বহিন কই?
আসতে যেতে কুয়োর পাড়ে
বুড়ো হুজুর তাকায় আড়ে
মনের ধন্দে ঘুম আসে না তাইতো জেগে রই—
রাত্রি হোলো, আম্মু আমার সালমা বহিন কই?
২০টি মন্তব্য
অপরাজিতা সারাহ
হা হা হা…সালমা বহিন পড়ে তো আমি পুরাই টাস্কিত!মাই গড!যেন চোখে ঠিক আঙ্গুল নয়,পুরা হাতে এক রাম চটকানা দিয়ে উনি বুঝিয়ে দিলেন বাঙ্গালীকে যে আমরা কোথায় যাচ্ছি।যেভাবে মাদ্রাসাতে বইয়ের হিজাব পরানো হচ্ছে,তাতে করে যে ক’দিন পরে হিন্দু কবিতাগুলোকেও ইসলামী পোশাক পড়ানো হবে না,তার গ্যারান্টি দেখছি না।সৌদি মরুকরন তো শুরুই হয়ে গেছে,বাকি আছে এখন শুধু খেজুর গাছের চাষ।তারপর মক্কার ঘরে ঘরে শুরু হবে সালমা বহিন কবিতা আবৃত্তি! 😉 😛
আপনার স্ট্যাটাস আগেই পড়েছিলাম।আবার পড়লাম।আসলেই,আমাদের যা যা ছিল সব বেদখল হয়ে যাচ্ছে সাইদি,গোলামের অত্যাচারে।এমনকি চাঁদ টাও! ;(
জিসান শা ইকরাম
ঠিক বলেছেন সব কিছুতে ইসলামী করন ।
আচ্ছা অপরাজিতা নাম কি ইসলামী নাম ?
ইসলামী না হলে আপনার খবর আছে —
লীলাবতী
এই প্রথম আপনি কারো কথা লিখলেন। জুপিটার জয়প্রকাশ ভাইকে যথাযথ ভাবেই সন্মান দিলেন। তিনি যে মেধাবী একজন মানুষ তা তার কবিতা দেখেই বুঝেছি।
সালমা বহিন, খেজুর বাগানের দিকেই ধাবিত হচ্ছে দেশ। কবে যে জাতীয় সংগীত পাল্টে যায়, সে আতংকে আছি।
জিসান শা ইকরাম
সন্মান তাঁর প্রাপ্য ।
জাতীয় সংগীত পালটে যেতে পারে , অস্বাভাবিক কিছুই নেই এখন আর ।
ব্লগার সজীব
সালমা বহিন – অসাধারন হয়েছে । দারুন ওনার হিউমার যা বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন । এমনটা আমি প্রথম পড়লাম । জুপিটার ভাইয়ের প্রতি শুভেচ্ছা এমন কবিতা লেখার জন্য ।
জিসান শা ইকরাম
কবিতায় ফান প্রতিবাদ দুটোই আছে ।
ছাইরাছ হেলাল
মনে পড়ে আজ অনেক কিছুই । কত না উথাল- পাথাল সেই সব দিন ।
প্রচণ্ড পার্থক্য থাকা সত্বেও কোথায় যেন টান অনুভব করি । হৃদয়ের এ ডাক অনন্য ।
আমি এটি পড়েছি সাথে সাথেই । ভালো লাগা , ভালোবাসা জানাতে পারিনি ,পারিনা ।
যেখানে থাকুন যেমন থাকুন ভাল থাকবেন।
হোক না তা কাশ্মীরে ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , কত না উথাল- পাথাল সেই সব দিন । -{@
প্রজন্ম ৭১
সালমা বহিন পড়ে হাহাপগে । । তবে হতাশাও কম নয়। কোথায় যাচ্ছি আমরা?
প্রিয় মানুষটি যে আমারো প্রিয়। মনে পরে গেলো সেইসব দিনের কথা।
জিসান শা ইকরাম
অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছি আমরা ।
শুন্য শুন্যালয়
কবিতাটি বেশ হয়েছে 😀
বুকের মধ্যে কস্টও যে খচখচ করছেনা তা নয়, কিভাবে সব পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে আমরা নির্বিকার.
জিসান ভাইকে অনেক ধন্যবাদ শেয়ার দেয়ার জন্য, আপনার স্ট্যাটাস টাও সেইরাম হইছে, এক্কেরে হাছা কথা.
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , বুকের মাঝে কষ্টরা তাগাদা দেয় বলেই এমন কবিতা সৃষ্টি ।
বনলতা সেন
সহজ নয় এমন লিখতে পারা।
জিসান শা ইকরাম
এমন লেখা তাঁর আরো আছে ।
স্বপ্ন নীলা
দারুন হয়েছে——-কবিতাটা কিন্তু খুবই ভাল লাগলো———–যদিও প্যারোডী—তারপরও তো বাস্তবতায় ভরপুর—————-
জিসান শা ইকরাম
এদিকেই ধাবিত হচ্ছে দেশ সমাজ ।
সীমান্ত উন্মাদ
অনেক চমৎকার একটা লিখা। কাজলা দিদি আমার খুব প্রিয় একটা কবিতা।
জিসান শা ইকরাম
ছোট বেলা থেকে এই কবিতা আবৃত্তি করে আসছে
কল্পনায় কাজলা দিদির একটি অবয়বও তৈরী করেছি –
কিন্তু তা এখন হুমকির সম্মুখিন ।
খসড়া
না দিদিরা আছেন। আছেন থাকবে।
জিসান শা ইকরাম
থাকতে আসলে পারবেন না , সব ধ্বংস করে দিবে এরা ।