সোফাটিতে বসা হয়না, অনেকদিন অনেকদিন। গিফট পেয়েছি বন্ধুর কাছ থেকে সেও বেশ আগেই। হঠাৎ কী জানি কী হলো বেশ জাঁকিয়ে বসতে চাইল মধ্য রাত্রির মন। একটিতে তিন সিট অন্যটিতে দুই। কোন্টির কোন্ জায়গায় বসি ভাবতে ভাবতে ভাবালুতা নিয়ে তাকালাম। পাঁচটি সিটের একটিতে বেশির ভাগ মোটা ও কিছু চিকন বইয়ের পাহাড়ি সমাহার, এর পাশেরটিতে আধখোলা দৈনিকের লাস্যময়ীরা মুখ ব্যাদান করে আছে। এর পরের তিন ছিট ওয়ালার প্রথমটি যথার্থই খালি, পরে একে একে দলা পাকানো টি-শার্ট, সর্ট প্যান্ট, অনেকগুলি সাদা মোজা(ধোয়া) ও বেশ ক’টি খেলার গেঞ্জি। সোফার দু’হাতল জুড়ে গনি মিয়ার বিশাল গামছা প্রায় মুখ থুবড়ে বেসামাল অবস্থায় অবহেলায় পড়ে আছে। নধর লাস্যময়ীর চোখে চোখ রেখে আলগোছে পত্রিকাটি পাশে রেখে বইপাহাড়ের পাশে কেতাবি ঢংয়ে পদ্মাসনে বসতে যেয়ে বুড়ো হাঁটু কটমট করে উঠলেও ‘ছোরেগা নহি’ কায়দায় দ্বিতীয় নয় তৃতীয় প্রচেষ্টায় তীব্র সাফল্যের মুখ দেখে গ্যাঁট হয়ে বসলাম।
ভাঙ্গা কাচ ছুঁইয়ে চুইয়ে চুইয়ে নির্লিপ্ত ধূসর আধার জড়ো হচ্ছে, হাতের ফাঁক গলে টুপ করে ঠুনকো গড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে পড়া না। “তুমি যে আজ ছড়ি ঘোরানোর কথা ভাবছো ফন্দিতে, আধার রাত্রির এ রূপ দেখনি বলে”। আমি বলি বুক চিতিয়ে ‘ উল্টোর হাঁটার পথের সুড়ঙ্গে, হে রাত বেশি দূর যেতে পারবে না, লোহিত-সোনালীর আগামী সকাল এলো বলে’। রাত্রি তোলপাড় চাক চাক মৌ উৎসবে।
হঠাৎ এ পাওয়া ফুরাবে না, না ফুরানোর দেশে,
আমি ফিরে ফিরে আসবো যাযাবরদের বেশে;
রাত্রির পায়ে নূপুর নাচে, সোনা ভোর এলো বলে,
যন্ত্রণার গাড় বাদামী জীবাশ্মের জলছাপ মুড়িয়ে।
নূপুর রাত্রি পায়ে পায়ে হেঁটে এসে
থৈ থৈ জলের ধারায় মন ভেঁজায়
আধো অন্ধকার সুনসান নীরবতার আলোয়ান জড়িয়ে অপেক্ষা করে একটি নরম-কোমল ভোরের।
৫৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
রাত্রির সাথে সখ্যতা এখনো চালু রেখেছেন দেখে ভালো লাগছে
চলুক -{@
ছাইরাছ হেলাল
রাত্রির সাথে সম্পর্কটি গভীর ও পুরনো, তাই ফিরে আসে ও আসবেই।
চালুও থাকবে।
অরুনি মায়া
এ কি আপনার ঘরের বর্ণনা দিলেন 😮
সাংঘাতিক অবস্থা,,,,,
একটু গুছিয়ে রাখলে কি হয়,,,,
এত আলসে কেন আপনি?????
ছাইরাছ হেলাল
ভাই, বর্ণনা যা দিলাম অবস্থা আরও ভয়াবহ। সে দিকে যাচ্ছি না।
পড়াশোনা ছাড়া আর কিছুই মাথায় থাকে না, আসে ও না। মজার ঘটনা শেয়ার করি এই প্রথম বার।
একদিন গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা ও লেখালেখি করে ক্লান্ত শেষ রাতে পাশের বিছানায় না গিয়ে
ফ্লোরেই ঘুমানোর ইচ্ছে হোল এবং ঘুমালাম। চকিতে জেগে উঠলাম মেয়ের ডাকে ” আব্বু বিছানায় যাও,
আর কক্ষনো জানি এখানে শুতে দেখি না” । অতঃপর চুন মুখে বিছানায় প্রত্যাবর্তন।
কিছু কি বোঝাতে পারলাম?
অরুনি মায়া
হা হা হা এই ব্যাপার নাকি! আসলে মেয়েরা পৃথিবীতে আসেই বাবাদের শাসন করতে। সে ঠিক কাজ টিই করেছে। আমি ভাবছি আপনার সহধর্মিণীর কথা।
বেচারি না জানি কি দূর্দশায় আছে,,,,,,,, 🙂
ছাইরাছ হেলাল
না কেউ ই দুর্দশায় নেই, তবে খবরদারি মা জননী ই করে।
অরুনি মায়া
বাবা মেয়ের সম্পর্ক টাই যে এমন মধুর 🙂 ।
মেয়েটি খবরদারি না করলে আপনি আরও নিয়ন্ত্রনের বাইরে যেতেন। লেখকরা নিজের চুল টা পর্যন্ত আঁচড়াতে আলসেমি বোধ করে,,,,,,, তারা অতিমাত্রায় উদাসীন হয়ে থাকে।
আমি কি ভূল বলেছি ভাইয়া? 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আপনি একদম ঠিক বলেছেন, আর একটি ঘটনা বলছি,
হঠাৎ আমার টেবিলের সামনে এসে হাজির, জামা একটু গুটানো ,
চুল (হাঁটু অব্দি) টাইট করে বাঁধা, হাল্কা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চোখে প্রশ্ন আঁকলাম।
” বাইরে গিয়ে দাঁড়াও ঘর পরিষ্কার করবো” (এ ঘরে কাজের লোকের প্রবেশ নিষেধ)
এভাবেই বেঁচে থাকি।
লেখা কই আপনার?
অরুনি মায়া
সত্যি খুব সুন্দর আপনাদের বাবা মেয়ের সম্পর্ক :)। সব শুনে মেয়েটি কে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। লেখা কি আজ ই দিতে হবে। লিখেছি তবে একটু গোছান বাকি। ভাবছি ছেলে বেলার স্মৃতি টা শেষ করে দিব।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি আপনার সুবিধা মতই দেবেন।
আপনার পাঠক হিসাবে লেখা চাইতেই পারি, পারি না!!
অরুনি মায়া
নিশ্চয় পারেন।
দিচ্ছি ভাইয়া 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
শেষের কবিতার লাইনগুলো দারুন হইছে। রাত্রী কখনও নূপুরের উচ্ছলতা দেখালেও কোথায় যেন তার একটা নিরবতা বিরাজ করে।
অনেক অনেক ভাললাগা রেখে গেলাম। শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই নিরবতা সে ধারণ করে রাখে নিজের মত করেই।
আপনি দারুণ পাঠক।
আপনাকেও শুভেচ্ছা।
মরুভূমির জলদস্যু
-{@ হঠাৎ এ পাওয়া ফুরাবে না, না ফুরানোর দেশে, -{@
আহ, এমনটা কিছু কিছু সময় হয় বটে।
ছাইরাছ হেলাল
হ্যা কিছু কিছু সময় ভিন্ন রূপে ভিন্ন ভাবে আমাদের সামনে আসে।
ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
এক আন্ধার রাত্রির রূপ দেখার জন্য এমন পদ্মাসনে বসতে হয় বুঝি? আর বসতে গিয়ে তিনবারের প্রচেষ্টা? সব্বোনাশ অবস্থা। আপনি খুবই গোছালো স্বিকার করতেই হচ্ছে।
মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে যন্ত্রণা জমাচ্ছেন জীবাশ্ম তো হবেই, তবে এ যন্ত্রণা কবিদের খেয়ালী মনের। লেখা খুবই ভালু হইছে, তয় আমি কিন্তু আমার পোস্টে আল্টিমেটাম দিছি, ভোর বলছে সব লেখা থেকে হাওয়া হয়ে যাবে সে 🙂
রাত্রি নূপুর পড়লেই আমি কেমন অশরীরী ভাব পাই। বুড়ো হাটুর যত্ন নিন।
ছাইরাছ হেলাল
খোঁটা দিচ্ছেন!! দিন, দেওয়াই তো উচিৎ। বরাবর ই অগোছালো।
পদ্মাসনে বসে ভাব নেয়ার ভুয়ো প্রচেষ্টা বলাই যায়।
সত্যিই আমাদের মনের মন বিচিত্র খেয়ালের বশীভূত, কখন কোথায় ডানা মেলে বা ডানা গুটিয়ে
লুকিয়ে পড়ে আমরা তা জানতেও পারি না।
বললেই হাওয়া হওয়া যায় না, ভোরকে হির হির করে টেনে নিয়ে আসবো।
অশরীরী হলে হোক, মুক্তি দিচ্ছি না কিছুতেই রাত্রিকে।
আপনি তো দাঁতের ডাক্তার!!!
শুন্য শুন্যালয়
হাতের ফাঁক গলে টুপ করে ঠুনকো গড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে পড়া না… সত্যি বলছি এমন লাইন আমার মাথা হাজারবার ঠুকলেও বের হবেনা।
না ফুরানোর দেশের সন্ধান আমাদের একটু দিলেও পারেন, একটু ঘুইরা দেখতাম মন চায়।
ছাইরাছ হেলাল
ধুর, ও লাইন ব্লগ গুরুর কাছ থেকে চুরি করা।
অমন লেখার সাধ্য এ শর্মার কোন কালে ছিল না হবেও না।
তাও গুরুরা সাথে রাখেন সাথে থাকেন এই অনেক পাওয়া।
দেখবেন দেখবেন সবই দেখতে পাবেন, ক্রমান্বয়ে।
নুসরাত মৌরিন
হুম ওই লাইন টা নিয়ে বেশ কতক্ষন পড়ে রইছি!! এমন ঠুনকো দেয়া লাইন!!এতো আমার সাতবার জন্মাইলেও আসবে।
দারুন লিখছেন হেলাল ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
ভাই সবই নকল। গুরুর আশির্বাদ আছে তা বলতে পারেন।
মোঃ মজিবর রহমান
বস্তেই তিনবার চেষ্টা কত আরাম রে ভাই।
কি শান্তিতেই না বস্লে তিনবার বসার জন্য আরাম লাগে।
তাও নির্জীব ভরাট রাত্রি।
খুব ভাল লাগলো ভাইয়া।
লেখুন লিখতে পারেন
ভালবাসা অবিরত। -{@
ছাইরাছ হেলাল
আপনি শত ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের মনে রেখে এখানে আসেন দেখেই
ভালোই লাগে।
ধন্যবাদ।
লীলাবতী
কবি মনে কত কথা বলেরেএএএএএএএএএ 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আপনার সাথে কথা নেই, ভত্তাবতি।
খেয়ালি মনে কত কী ভাবনা আসে,
লেখা দিয়ে দিন।
নুসরাত মৌরিন
আজ সোনেলায় এসেই মন ভাল হয়ে গেল।
আজ সোনেলার ঘর ভরভরান্ত।ভোর ফিরেছে,রাত ফিরেছে। বাহ, কী দারুন!!! 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আপনি ফিরেছেন তা ও যোগ করে দিলাম।
সবাই এলে অবশ্যই আনন্দ।
মেহেরী তাজ
ঘরের সাথে সাথে হাটুর অবস্থার বারো টাও বাজিয়ে রেখেছেন?? ;?
এতো অগোছালো? যান হাটুতে গরম সরিষার তেল মেখে ঘরটা একটু গুছিয়ে আসুন….!!!
ছাইরাছ হেলাল
আপনিও বুঝি দাক্তার!!
মাথা কাকে দিয়ে ধরালেন জাতি জানতে চায়?
মেহেরী তাজ
হ্যা হাতুড়ে দাক্তার।
ঠুক ঠুক করে বারি দিয়েঈ সব ঠিক।
প্যারার উপরে আরো প্যারা দিয়েছি বেটা মাথা ব্যথা দৌড়ে পালিয়েছে।
ছাইরাছ হেলাল
লেখা-লুখা দিতে শুরু করুণ
মেহেরী তাজ
লিখবো ভাইয়া লিখবো। যদিও এই মুহূর্তে মাথা ফাঁকা।
অরুনি মায়া
ভাইয়া খালি লেখে দিতে বলে। বঝেনা খালি মাথায় লেখা উৎপাদন করতে কত্ত কষ্ট হয় আমাদের 🙁
ছাইরাছ হেলাল
লেখাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
আমরা তো ডায়েরি লিখি, এমন কিছু লেখা মোটেই কঠিন কিছু নয়।
কোন রোমিও ফোন দিল কিনা বা আড় চোখে কেউ তাকিয়ে কিছু বলতে চাইলো কিনা
তাও আমরা লিখতে পারি। এতো ভেবে-ভুবে লেখার দরকারটা কি?
অরুনি মায়া
আচ্ছা ঠিক আছে বুঝেছি । এমন টা হলে আমি দিনে ১০ টা লেখা দিতে পারব। যা ইচ্ছে তাই 🙂
ছাইরাছ হেলাল
দিনে একটি হলেই হবে, মনে থাকে যেন।
অরুনি মায়া
অনেক কঠিন কথা হলেও আমি মনে রাখব ,,,,, 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আহারে, কঠিন করে বলিনি, আব্দার করেছি।
পড়া আমার খুব পছন্দের বিষয়।
আর লেখক যদি পরিবারের এক জন হয়, বুঝতেই পারছেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
এসব হচ্ছেটা কি! কোর্টে কেস করবো, উকিল নোটিশ পাঠাবো। আমার নূপুর রাত্রি কোত্থেকে পেলেন শুনি!!! অবশ্য ঘরের যা বর্ণণা শুনলাম তাতে আগেই বুঝিয়ে দিলেন যেনো কখনো বেড়াতে না যাই।
কি লক্ষ্মী মেয়েটার বাবা এমন!!! 😮
ছাইরাছ হেলাল
নূপুর রাত্রি আপনার কিনে নেয়া বুঝি? আমরাও পাই হাওয়া থেকে পাওয়ায়।
সে আপনি এলে নিমিষেই হবে সব ফকফকা, আসবেন তো?
বাবারা এমন বলেই মেয়েরা লক্ষ্মী হয়।
নীলাঞ্জনা নীলা
এটা কি বললেন! আমি গেলেই সব ফকফকা? তার মানে কি? আমাকে দিয়ে গুছিয়ে নেবেন? 😮
না ভাই ক্ষমা চাই। যা-ও ভেবেছিলাম যাবো, সে চিন্তা মাথা থেকে বের করে দিলাম।
ঠিক, মেয়েরা অনেক লক্ষ্মী। নিজেকে দিয়ে বুঝি এবং জানি। :p
অনেক আদর আপনার মেয়েটির জন্যে। ওর কিছু গল্প বলুন শুনি।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি তো লক্ষ্মী, তাই আপনাকে দিয়েই (আমারা সাথে থাকব) ঝার-পোছটা
করিয়ে নিতে চাই!!
আচ্ছা মেয়ের গল্প পাওনা রইলো।
নীলাঞ্জনা নীলা
নূপুর রাত্রি পায়ে পায়ে হেঁটে এসে
থৈ থৈ জলের ধারায় মন ভেঁজায়
আধো অন্ধকার সুনসান নীরবতার আলোয়ান জড়িয়ে অপেক্ষা করে একটি নরম-কোমল ভোরের।
আপনার কবিতায় এই কয়েকটি লাইন দিয়ে দিলাম। আলাদা করে দিলে উকিল নোটিশ আমাকেই খেতে হবে। রিস্ক নিতে চাইনা। মজা হলো কয়েকটি লাইন লিখেছিলাম, ভাগ্যিস আজ ব্লগে এসেছিলাম নইলে কি যে হতো!!!
ছাইরাছ হেলাল
প্রসাদ টুকু যথা মর্যাদায় সংরক্ষণ করলাম।
না, রিস্ক নেয়া ঠিক না। আসলেই হয় নিয়মিত। আমরা তো অপেক্ষাতেই থাকি।
নীলাঞ্জনা নীলা
প্রসাদ!!! ভাই ঠিক বুঝছিনা এটা প্রশংসা নাকি নিন্দা? ;?
ছাইরাছ হেলাল
আপানার নিন্দে করার সামর্থ নেই। প্রশংসা সবটুকুই আপনার।
নীলাঞ্জনা নীলা
নিন্দে কিংবা প্রশংসা আমার এখন কিছুই মনে লাগেনা। 😀
ছাইরাছ হেলাল
গুরুদের বিশাল ভাবনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভগবান জানেন গুরু নাকি…
ছাইরাছ হেলাল
বলে তো আপনার ‘মানুষেরা’,
আ্মার কী দোষ!
ব্লগার সজীব
সোফা কোন গিফট সামগ্রী এই প্রথম শুনলাম। হঠাৎ পাওয়া না ফুরিয়ে যাক,সোনালী ভোর হাসুক।
ছাইরাছ হেলাল
হাতি ঘোড়া গিফট হোলে সোফা কেন নয়!! প্রাণে প্রাণ থাকলে অনেক কিছু গিফট হতে পারে।
কিছু পাওয়া ফুড়িয়ে যায় না।
ভোর হাসবেই।
ইমন
গোপন অভিসার
ছাইরাছ হেলাল
হুম, গোপন ই।