
জ্বালা_
বৈশাখের দুপুরে ভাতঘুমের অলসতা ভেঙে গ্রামের সকল নারী-পুরুষ দলে দলে এসে উপস্থিত হয়েছে গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত একমাত্র বট গাছটার নীচে। একটু পরেই সালিশ শুরু হবে। গ্রামের মাথা কিসমত আলি সাহেব । তিনি প্রতি শুক্রবার গ্রামের মুসল্লিদের জুম্মার নামাজ পড়ানোর কারণে প্রধান ইমাম সাহেবের পদটাও ধরে রেখেছেন, তিনি সালিশ ডেকেছেন। অন্যান্যরা এসেছেন বিষয়টি জানতে ও দেখতে।
অভিযোগ শোনালো কিসমত আলির বডিগার্ড-বার্তাবাহক-একান্ত চামচা নুরু মিয়া। তার ভাষ্যমতে জানা গেলো, প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর ছাত্র-ছাত্রী সব বাড়ি চলে গেলেও স্কুলের গণিত শিক্ষক সাগর ও সহকারি প্রধান শিক্ষিকা লতা বাড়ি যায় না। তারা দুজন সন্ধ্যা পর্যন্ত একসাথে বসে স্কুলের রুমে কি জানি করে। নুরু কয়েকবার উঁকিঝুঁকি দিয়ে দেখতে পেয়েছে তারা চেয়ার টেবিলে বসে হাসা-হাসি করে আর খাতায় কিসব লেখে। তবে গতকাল দেখেছে মারাত্বক ঘটনা। লতা আপাকে সাগর স্যার একটার পর একটা মিষ্টি নিজের হাতে খাওয়াচ্ছিলো। লতা আপা চার নম্বর মিষ্টিটা খেতে চাইছিলো না, তাই সাগর স্যার লতা আপার গাল ধরে জোর করে মুখে ঢুকিয়ে দিয়েছে। লতা আপা সাগর স্যারের উপর রাগ না করে হাসতে হাসতে সাগরের পিঠে দুটো কিল বসিয়ে দিয়েছিলো। এই দৃশ্য নুরু মিয়া আর সহ্য করতে পারেনি। দৌড়ে এসে কিসমত আলিকে সবিস্তারে জানিয়েছে। কিসমত আলি খুবই ধর্ম পরায়ণ ব্যাক্তি। সে সাগর ও লতাকে গ্রাম্য সালিশে ডেকেছেন। এসব নোংরামির বিচার গ্রামবাসীর সামনে করা উচিৎ, গ্রামবাসীদের কেও তিনি ডেকেছেন। বিচার শুরু হলো…
কিসমত আলি – সাগর সাহেব আপনি বিবাহিত মানুষ, ঘর সংসার আছে। তারপরেও এইকামডা ক্যামনে করলেন ! শিক্ষিত মানুষের লজ্জা শরম কম থাকে জানতাম, তাই বইলা এতো অধঃপতন ? ছিঃ ছিঃ পোলাপাইনেরে কি এসব শিখাইতে স্কুলে আসেন !!
সাগর- এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মাতবর সাহেব। আমাদের নিয়ে আপনারা যা সন্দেহ করেছেন, তা ঠিক নয়। আমাদের স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। অনেকের পর্যাপ্ত বই কেনার টাকাও নেই। কিন্তু তারা ভালো করে পড়াশোনা করতে চায়। এরা যেনো পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারে সেটা ভেবে আমি ও লতা ম্যাডাম এদেরকে বই ও নোট হাতে লিখে কপি করে দেই। অন্যান্য শিক্ষকরাও মাঝে মাঝে এটা করে। লতা ও আমি একে-অপরকে সাহায্য করি। একই স্কুলে কাজ করার সুবাদে আমার ও লতার মাঝে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। আমরা বন্ধু।
কিসমত আলি- তাই বলে স্কুল ছুটির পর মিষ্টি খাওয়া, কিলাকিলি করা, এসব কি সাহায্যে আসে আপনাদের ! আর নারী-পুরুষের মধ্যে বন্ধুত্ব হয় এ্যামুন কথা কেউ কোনোদিন শুনছে ? আমাদের সবাইরে কি বেকুব মনে করেন ? শোনেন, এসব নষ্টামি এই গ্রামে চলবে না। আপনি আজই আপনার বউ-বাচ্চা আর জিনিস পত্র নিয়া গ্রাম ছাড়বেন। লতা এই গ্রামের মাইয়্যা, তার বিয়া-শাদি হয় নাই, বাপ মইরা গেছে। বুড়া মায়ের দেখাশোনা আর ম্যাডাম গিরি করতে করতে নিজেও আধবুড়ো হয়ে গেছে। তাই তারে মাফ করে দেয়া হলো। এই বয়সে এই মাইয়্যারে গ্রাম ছাড়া কইরা আর পাপের ভাগি হইতে চাইনা।
গ্রামের মানুষ সবাই কিসমত আলির রায় মেনে নিলো। দু-চার জন বাপ-মা ,যাদের ছেলেমেয়ে দের সাগর আর লতা নোটবই বানিয়ে দিতো, তারাও কিছু বলার চেষ্টা করলো না। কে চায় এসব নোংরামিতে সমর্থন দিতে !
লতা এতক্ষণ সব শুনছিলো। এমনকি বিচারের রায় দেয়ার পরেও সে কিছু বলেনি। চুপচাপ দাড়িয়ে দেখেছে/শুনেছে। প্রায় সবাই চলে যাওয়ার পর সে সাগরের সামনে এসে বললো-
সাগর তোমাদের সাথে আমার জন্যেও দুটো বাসের টিকিট এনো প্লিজ। নতুন চাকুরীতে এক তারিখে জয়েন করার কথা। এক সপ্তাহ আগেই যেতে চাই। তোমাদের সাথে ঢাকা শহর ঘুরে দেখবো। রেনু , আমাদের নিবি তোদের সাথে ?
রেনু ,সাগরের স্ত্রী প্লাস লতার বাল্য বান্ধবী।
ওদের কথাগুলো একটু দূরে দাঁড়িয়ে শুনছিলো কিসমত আলি, না শোনার ভান করে। তার দিকে তাকিয়ে সাগর-রেনু-লতা তিন জনেই মাটিতে থুথু ফেলে চলে গেলো।
আবার ! উফফ, এই থুথুর জ্বালা যে কত ভয়ংকর তা শুধু কিসমত আলিই জানে। কলা বিক্রেতা বাপের মেয়ে লতা, আজ থেকে দশ বছর আগে এভাবে থুথু দিয়েছিলো তার মুখে। কিশোরী মেয়েটি পড়াশোনা ছেড়ে কিসমত আলির ২য় বউ হতে চায়নি বলে, এক সন্ধ্যায় তাকে জাপটে ধরেছিলো পুকর পাড়ে। লতাকে পায়নি, পেয়েছিলো লতার একদলা থুথু। সেদিনের জ্বালাটা নেভাতে আজকের এতো আয়োজন ছিলো। কাজ হলো না, আজ আবার জ্বলে উঠলো ;
জ্বালা–পোড়া_
নুরুর মনটা বেশিই খারাপ লাগছে। বউটার মুখের দিকে তাকাতে পারে না। বিয়ে করেছে ছয়মাস হতে চলছে, কিন্তু বউয়ের কাছে গুনে গুনে ছয় বারও যেতে পারেনি। বউটা সারাদিন কিসমত আলির তিন বউয়ের ফাই-ফরমাশ খাটে। রাতের বেলায়ও বেচারীর শান্তি নেই। যখন তখন বউটাকে ডেকে পাঠায় তার রুমে। আজ আবার ডাকছে। এবার বউকে না পাঠিয়ে নুরু নিজেই গেলো…
* হুজুর ডেকেছেন ?
** তুই এসেছিস কেন ? বউকে পাঠা, ওকে দরকার। আজ শরীরে অনেক জ্বালা-পোড়া হচ্ছে। মাথা ঠিক নাই।
* কিন্তু হুজুর, আপনারতো তিনটা বউ। তাদের না ডেকে অন্যের বউকে ডাকা কি ঠিক ? অন্য মানুষের বউরে ডাকলে আল্লায় পাপ দিবো না ? লতা আপা আর সাগর ভাইরেতো এই পাপের কারনেই গ্রাম থাইক্যা বাইর করলেন। ইমাম সাবের কাম কইরা এসব পাপ ক্যান করেন ?
** আরে মূর্খ, ধর্মের তুই কি জানিস ? ইমামতি কি তুই করিস না আমি ?
* জ্বি আপনি।
** শোন, আমাদের ধর্মে একজনের বউয়ের সাথে অন্যজনের সম্পর্ক করা নিষেধ। এতে পাপ হয়। কিন্তু চাকর-দাস আর তাগো বউয়ের উপরে মালিকের হক থাকে। মালিক যখন খুশি তখন তাগো ভোগ করতে পারে। এটাও একধরনের খেদমত করা।
* এগুলিতো আগেরদিনে হইতো। তখন কৃতদাস সিস্টেম ছিলো। এখনতো এগুলো ধর্মে নাই হুজুর।
** কে বলছে নাই ! সব আছে। আরবী দেশে আছে, পাকিদের দেশে আছে, আমাদের দেশেও আছে। তয় আমাদের দেশে এগুলো এখন কম প্রকাশ হয়। সাগর লতার মতো মানুষের কারনে লোকজন একটু সজাগ থাকে। অনেক কথা হইছে, এখন গিয়া তোর বউকে পাঠা। তোরা হইলি আমার দাস-দাসি। আমার সেবা করা তোদের জন্যে ফরজ। মালিকের মনে জ্বালা-পোড়া উঠলে, সে তার দাসীকে ব্যবহার করতে পারে। যা, এবার।
সাগর, লতার পরিবারের সাথে আরো দুটো বাসের টিকিট যোগ করা হয়েছে। কোথায় যাবে এখনো ঠিক করতে পারেনি নুরু। তবে সে পালাতে চায়, এই দাষত্ব থেকে মুক্তি চায়। সে অশিক্ষিত চাকর মানুষ। অর্ধেক ইমাম কিসমত আলির ধর্মের ব্যাখ্যা শুনে সে ধর্ম থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মরার পর কি হবে এটা নুরুকে আর ভাবাচ্ছেনা। এতদিন ধরে তার বউটা কিসমত আলির লালসার শিকার হয়েছে, সে কি তাকে ক্ষমা করবে ? ক্ষমাহীন জীবন নুরুকে কি নরক যন্ত্রনায় পোড়াবে না …. ?
৪০টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
গল্পর দুটো অংশই পড়লাম,
লেখার মন্তব্য নিয়ে আসতেছি……..
তৌহিদ
প্রথম অংশ পড়লাম।পরে আসছি
বন্যা লিপি
আমিও পড়ে রাখলাম, পড়ে আসছি,,,,
সাবিনা ইয়াসমিন
তোমার পড়া শেষ হয়েছে বন্যা ?
মনির হোসেন মমি
গল্প পড়া শেষ
আসছি…..
মনির হোসেন মমি
এ রকম কু-মনভাব চরিত্রের লোক এখনো গ্রামাঞ্চলে আছে যারা কেবল মাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে সহজ সরল লোকদের অত্যাচার করছে দিনের পর দিন তারাও মুখ বন্ধ করে ইমামের মত ছোট লোকদের চামচামি করে যাচ্ছেন।যখন তারা বুঝতে পারেন তখন তার জীবনের অনেক কিছুই ক্ষয় হয়ে যায়।লেখাটা ভাল লাগল।সমাজের এ সামাজিক অবক্ষয় দুর হউক লতাদের হাত ধরে।
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক ধন্যবাদ মমিভাই। যতদিন এসব মতলবি ইমামরা ধর্মের পতাকার নিচে থাকবে, ততোদিন পর্যন্ত সামাজিক মুক্তি মিলবে না। মানুষ যদি ধর্ম থেকে মানুষকে মূল্যায়ন দিতো তাহলে পৃথিবীতে এতো হাজার হাজার ধর্ম আর এতো দুষ্ট ধর্মনেতাদের জন্ম হতো না। ☹
জিসান শা ইকরাম
এমন ভাবে গ্রাম্য সালিশ ডেকে এখনো অনেক গ্রামে অপদস্থ করা হয় মানুষদের,
এই অপদস্থ এর শিকার হন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিরীহ মানুষ। মাতবর/ সালিসদারদের স্বার্থের ব্যাঘাতকারীগন সামান্য অপরাধে বা অপরাধহীনতার জন্য, অবাধ্য হবার কারণে এমন শাস্তি ভোগ করেন। আমার জানা মতেও এমন কিছু ঘটনা আছে।
জ্বালা অংশটা তেমনই এক প্রতিশোধের পর্ব।
জ্বালা পোড়া অংশে শিকারির অংশীদার নিজেই শিকার হয়েছে বড় শিকারীর।
এই জনপদে ধর্ম একটি বিশাল ফ্যাক্টর। ধর্মের অপব্যাখ্যা বা দুর্বলতার সুযোগে এখানে ধর্ম এসে যা দাড়িয়েছে, তাতে প্রকৃত ধর্ম কত টুকু আছে ভাববার বিষয়। এরা স্বার্থ বাজ, ধর্মের লেবাসে এরা যা ইচ্ছে করে। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে এরা ধর্মের বিরুদ্ধে কথা হিসেবে গন্য করে। জ্বালা পোড়ায় কিসমত যে দাসী বাদীর কথা বলেছে, তা কোন সুস্থ্য ধর্মে থাকা উচিৎ না।
আমরা ভুলে যাই, মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়।
উপায়হীন নুরু বিদ্রোহ করেছে অবশেষে…………
এই পাঁচ জনের নতুন উন্মুক্ত জীবন, যেখানে যে কোন ধরনেরই হোক কোন শিকল থাকবে না,
শুভ হোক তাঁদের জীবন।
চমৎকার বর্ণনায় এমন লেখায় অবশ্যই প্লাস আনলিমিটেড,
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনার কমেন্টের প্রতিউত্তরে সহমত জানানো ছাড়া আর কিছু বলার নেই। মানুষের জন্যে ধর্ম, ধর্মের জন্যে মানুষ নয়। এটা সবার অন্তরে বসত করুক।
ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইলো 🌹🌹
মাহমুদ আল মেহেদী
ভক্ত নবীর দল বলে মদীনার পথ আর কত দূর!!!
আমরা মনে করি আরব দেশে যা হয় সব পূর্ণ পাপ বলে কিছু নাই ওদের। আরবদের দোহাই দিয়ে আমাদের হুজুররা অনেক অন্যায়কে ন্যায় বলে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। আর সমাজও তাদের বিরুদ্ধচারণ করে না কেন নিচশ্চুপ কেন কোন জাল হাদিসের ভয়ে তা কে জানে। চমৎকার একটা গল্প পড়লাম। শেষটা যেন শেষ হল একটু চটজলদি। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমাদের দেশের যত উলটা পালটা হাদিসের জন্ম হয়েছে এই আরবদের কারনে। মক্কা–মদিনা আর রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর জন্মভূমি আরবে থাকায় সাধারণ মানুষরা মনে করে আরবরা যা করে যা বলে সবই ঠিক। তাদের অনুসরণ করতে পারলেই সরাসরি বেহেশতে যাওয়া যায়। আর এই বিশ্বাস গুলো ভন্ড বকধার্মিকেরা নিজেদের ফায়দা আদায় করে।
মন্তব্যের উওর দিতে দেরি হওয়ায় দুঃখিত মেহেদী ভাই। ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইলো। 🌹🌹
সাবিনা ইয়াসমিন
এই বিশ্বাস গুলোকে পুঁজি করে ভন্ড বকধার্মিকেরা নিজেদের ফায়দা আদায় করে।
নীলাঞ্জনা নীলা
এমনই এক সমাজে আমাদের বাস যেখানে এসব মোল্লা, ইমাম, পন্ডিতদের জঘন্য নীতি-নিয়মকে ধর্ম বলে মনে করা হয়।
আপু এ তো গল্প নয়, একেবারে বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। খুউব ভালো লেগেছে।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমাদের সমাজ আর সামাজিকতা এই সব নামধারী কাঠ মোল্লা আর ধর্মগুরু দের হাতে বন্ধী আপু। পৃথিবীতে ততো মানুষ নেই, এদের যতো নিয়ম থাকে। এরা প্রতি মিনিটে নিয়ম বানায় আর প্রতি সেকেন্ডে নিয়ম বদলায়।
ভালোবাসা অফুরন্ত রইলো নীলা আপু ❤❤
নীলাঞ্জনা নীলা
অনেক ভালো থাকবেন আপু।
তৌহিদ
সুন্দর লেখার মাধ্যমে সমাজের বাস্তব অন্ধকারের একটি দিক ফুটিয়ে তুলেছে সাবিনা আপু, ধন্যবাদ আপনার প্রাপ্য।
আমাদের গ্রামে একবার এরকম ঘটনা হয়েছিল। নিজের জ্বালা মেটাতে এক লোক অন্যের উপর কুৎসা রটাতে গিয়ে নিজেই এর ফাঁদে পড়েছিলো। পরে ধরা পরেছে অবশ্য।
আর একবার মাদ্রসার প্রধান শিক্ষক এক মেয়ের হিল্লে বিয়ে দিয়েছিলো অপকর্ম ধামাচাপা দেয়ার জন্য। মোল্লাদের কাছে আমাদের সমাজ এখনো নত হয়ে থাকে। তাদের নিয়ম নীতির কাছে বলি হয় সাধারন মানুষ।
অসম্ভব সুন্দর লেখাটি উপহার দেবার জন্য শুভেচ্ছা জানবেন আপু 🌹
সাবিনা ইয়াসমিন
নিজের নোংরা লালসাকে বাস্তবে চরিতার্থ করতে মোল্লাদের সাথে কেউ জিততে পারবেনা। এরা সব সময় একগাদা ধর্মের পট্টি হাতে ঘুরে বেড়ায়। মানুষ বুঝে একেকজনের চোখে একেকটা পড়িয়ে দেয়। হিল্লে বিয়ে হলো যাবতীয় বাজে পক্রিয়ার অন্যতম একটি ধর্মীয় পক্রিয়া। একাধিক মানুষের জীবন নস্ট হয়ে যায় একটা হিল্লে বিয়ের কারনে। খুব কাছ থেকে আমি এমন কিছু ঘটনা।
দেরিতে রিপ্লাই দেয়ার জন্যে দুঃখিত ভাই। অনেক ভালো থাকুন। শুভ কামনা 🌹🌹
সাবিনা ইয়াসমিন
এমন কিছু ঘটনা দেখেছি 😊
তৌহিদ
আপনিও ভালো থাকবেন আপু।
মোঃ মজিবর রহমান
আমি আরব ফেরত একজনের মুখে শুনেছি যে, আরবরা যা করে তা ইসলামএর কিছুই হইনা। আর আমরা আরবদের নিয়ে গর্বিত এটা আমাদএর লজ্জা হওয়া উচিত।
গল্পের মাধ্যমে সুন্দর করে বুঝিয়েছেন ।
সাবিনা ইয়াসমিন
আরব প্রবাসীদের মুখে শোনা যায় আরবরা কতটা বর্বর হয়। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের কথা শুনলে আরবদের মানুষ ভাবার কোনো অবকাশ থাকে না ভাইজান। সব জেনেশুনেও সাধারণ মানুষ ঐ আরবদের কেই অনুসরণ করতে পাগল হয়ে যায়। আর এই সুযোগ নেয় ধর্ম ব্যাবসায়ী সহ আধা শিক্ষিত পীর–ইমামের দল।
ধন্যবাদ ভাইজান। ভালো থাকবেন, শুভ কামনা 🌹🌹
মোঃ মজিবর রহমান
তারা বাহিরে যা ভিতরে তাঁর উল্ট।
শুন্য শুন্যালয়
গল্প ভালো লেগেছে সাবিনা আপু, যদিও এটা গল্প নয়।
সাধারণ মানুষগুলোর জন্য মাঝেমাঝে করুনা হয় আমার। ধর্ম যে কী জিনিস! যাতে আঙুল বা প্রশ্ন তোলাই যাবেনা। যে যেরকমভাবে ব্যবহার করবে তাই-ই মেনে নিতে হবে। সবাই নুরুর মতো বুঝতে শিখুক, প্রতিবাদ শিখুক।
ভালো থেকেন আপু।
সাবিনা ইয়াসমিন
করুনা করে কিছুই হয়না শূন্য। যতক্ষন পর্যন্ত নিজের পিঠ দেয়ালে না ঠেকে ততক্ষন পর্যন্ত বেশিরভাগ মানুষেরই হুশ হয়না। কেঁদেকেটে বুক ভাসাবে, অনেকে আত্মহত্যা করে তবুও এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে এরা মুখ খুলবেনা। পরকালে দোযখে যাওয়ার ভয়ে তারা বর্তমান জীবনটাকেই নরক বানিয়ে ফেলে।
ভালোবাসা সব সময়ের জন্যে ❤❤
ছাইরাছ হেলাল
লেখার মুন্সিয়ানা নিয়ে এ পর্যায়ে আপনাকে নুতন করে আর বলার কিচ্ছুটি নেই।
শনৈ শনৈ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি, কবে না জানি আমদের লেখা শিকেয় তুলে নিতে হয়,
অবশ্য তাতেও ‘শান্তি পাইলাম’ বলতেই হবে।
দেখুন, ধর্ম যারা ইজারা নিয়েছে তাদের কী কী যোগ্যতা আছে এবং কিভাবে কোথায় তা অর্জিত
হয়েছে তা জানতে পারিনি, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তবে এটি বুঝতে পারছি, তেঁতুল-মুক্তি এত সহজে পাচ্ছি না,
অতএব ইহা চালু আছে এবং তা থাকবে।
পাঠকদের ফাঁকি দিলে বাড়তি কী কী পাওয়া যায় কে জানে!!
সাবিনা ইয়াসমিন
তেতুল মুক্তি পাওয়া আসলেই বেসম্ভব। এর থেকে মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হওয়া সহজ। ধর্ম ইজারাদার !! শব্দটা পছন্দ হলো মহারাজ।
পাঠকদের ফাঁকি দেয়া শুরু করেছেন নাকি ! কত্তোকিছু যে দেখার বাকি আছে এই সোনেলায়….🤔
ইঞ্জা
ধর্মের লেবাসধারী হাজারো লক্ষ কিসমত আলি এখনো মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তার নিজের স্বার্থ সিদ্ধি, কামনা বাসনা, লোভ সব কিছুই করে বেড়াচ্ছে, কেউ বাধা দিলে তাকে ধর্মের টকটকে লাল চক্ষু দেখিয়ে ভয় দেখায়, আর আমাদের মতো ধর্মান্ধরা তাদের সব কথা মেনে নিই পরকালের কথা ভেবে, দুঃখজনক।
আপু আপনার লেখাটি সম্পূর্ণ বাস্তবিক।
সাবিনা ইয়াসমিন
পরকালের ভয়ে ইহকালের দফা রফা হয়ে যায় এইসব ভন্ডদের ভন্ডামীতে। ধর্মের নামে লালচক্ষু দেখে নিজেদের অন্ধ বানিয়ে রাখে কুসংস্কার প্রিয় আম জনতা।
ভালো থাকবেন ভাইজান। 🌹🌹
ইঞ্জা
হুম সত্যই বলেছেন আপু।
আরজু মুক্তা
ধর্ম আর ধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাস,দুটাই খাইছে!
সাবিনা ইয়াসমিন
পড়ে মন্তব্য দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন। শুভ কামনা রইলো 🌹🌹
শাহরিন আক্তার মুক্তা
অনেক ভাল লেগেছে লেখা।
ছাইরাছ হেলাল
তাই না-কী!!
অন্যদের গুলো তিতা তিতা লাগে!!
শাহরিন আক্তার মুক্তা
অন্যদের লেখা ঝালকাঠী যেয়ে লেখকের সামনে পড়বো। পরে লেখক আমাকে মানে বুঝিয়ে দিবেন 😁
ছাইরাছ হেলাল
লেখক নিজের লেখাই নিজে বুঝতে পারে-না,
অন্যের লেখা-তো বহুত দুরস্ত!!
এখানে স্বাগতম আপনি/আপনারা।
সাবিনা ইয়াসমিন
ভালো থাকবেন অবিরত ভালোবাসায়। একটু আধটু লেখা দিলে আমরাও কিছু কমেন্ট দেয়ার সুযোগ পেতাম আপুমনি। 😜😜
ভালো থাকুন ❤❤
শামীম চৌধুরী
ক্ষমাহীন জীবন নুরুকে কি নরক যন্ত্রনায় পোড়াবে না …. ?শেষাক্ত কথাটি ভালো লাগছে।
সাবিনা ইয়াসমিন
কখনো কখনো বর্তমানের অবস্থার উপর নিকট ভবিষ্যত উঁকি দেয়। দূর ভবিষ্যতের নিশ্চিত ব্যবস্থার চেয়েও কঠিন হয়ে পড়ে অদূর ভবিষ্যতের চিন্তামালা।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন। শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
অপার্থিব
গল্প ভাল লেগেছে কিন্ত প্রবলেম হচ্ছে সাগরের সাথে লতার এই তথাকথিত প্রেমের সম্পর্ক বা বিচার সালিসকে রেণু কোন দৃষ্টিতে দেখছে সেটা গল্পে অনুপস্থিত। পুরো ঘটনায় রেণুর ন্যারেটিভ কি সেটা জানার ব্যাপারে পাঠকের আগ্রহ তৈরী হতেপারে। রেণু কি টিপিক্যাল বাঙ্গালী মেয়েদের মত লতা আর সাগরের মধ্যকার সম্পর্ককে সামান্য হলেও সন্দেহের চোখে দেখছে নাকি সে আশ্চর্য ব্যতিক্রম? যদিও দ্বিতীয়টি হয় তবে আমার কাছে রেণু লতার চেয়েও শক্তিশালী ক্যারেক্টার। রেণুর ন্যারেটিভ না থাকায় আমার কাছে গল্পটাকে খানিকটা অপূর্ণাঙ্গ মনে হয়েছে।
সাবিনা ইয়াসমিন
‘ রেনু, আমাদের নিবি তোদের সাথে?’ এই প্রশ্নটিতেই লতা আর রেনুর সম্পর্কের গভীরতা বিশ্বাস জড়িয়ে ছিলো। রেনুর মনে অন্যকিছু থাকলে তার অভিব্যাক্তি তুলে ধরতাম। উন্নত মনের মানুষ উন্মুক্ত মনের সাথেই বন্ধুত্ব রাখে। লতা, সাগর, আর রেনুর মাঝে বন্ধুত্ব প্রবল না হলে গল্পটা অন্যরকম হয়ে যেতো অপার্থিব। আর গল্পের এই অংশটা কিসমত আলির ষড়যন্ত্র ছিলো, যা পরে আমি জ্বালা পর্বের শেষ অংশে উল্যেখ করেছি।
সেদিন বলেছিলাম আপনার কমেন্ট আমাকে উদ্বুদ্ধ করে। এই জন্যেই বলেছিলাম। কারন, বেশিরভাগ পাঠক যখন গল্প পড়ে কাহিনীর প্রতিক্রিয়া জানায়, সেখানে আপনি লেখাটির লাইন বাই লাইন পর্যালোচনা করেন। ভুল অংশ গুলো নিয়ে সরাসরি আলোচনা রাখেন ,যা একজন লেখককে নিজ লেখায় মনোযোগি হতে সাহায্য করে।🙂🙂
অনেক ভালো থাকুন, পাশে থাকুন। শুভ কামনা নিরন্তর থাকবে 🌹🌹