
প্রিয় সেকুল 💗
অনেক দিন পর হেমন্তের আহ্বানে জেগে উঠেছে আমার অন্তরাত্মা । হেমন্তের গোধুলীর রঙ, চার পাশ থেকে কুয়াশায় আচ্ছন্ন করা মাঠ ঘাট প্রান্তর, শীত শীত অনুভুতি, নবান্নের উৎসব, কুয়াশা বেঁধ করা চাঁদের মিষ্টি আলো, সব শেষে তিতাসের কুলে তোমার পাশে বসে ভালবাসার স্মৃতি গুলো সারা জাগিয়ে গেছে সংগোপনে ।
পেরিয়ে গেছে প্রায় দুই যুগ, সময়ের হাত ধরে, বাস্তবতার স্রোতে ভেসে ভেসে চলে এসেছি দূর বহুদূর । জীবনের স্বপ্ন গুলো পিছনে ফেলে অনাকাঙ্গিত বাসনা, কামনার পিছু ছুটে চলেছি সুতা কাটা ঘুড়ির মতো ।
জীবনের যে টুকু সময় তুমি পাশে ছিলে, সে সময় টুকুই ছিল কাব্যময়, স্বপ্নময়, অন্তিম সুখের ।
যে মুখের হাঁসির প্রশংসায় তুমি পঞ্চমুখ ছিলে, ভাগ্যের বিড়ম্বনায় সেই মুখে হাসি নেই দুই যুগ ।
তুমিই বলতে, “ফুলের বুকে যদি দোল না লাগে, ফুল হেঁসেছে কবে “।
তোমার কথাই ঠিক, এখনো ফুলটা আছি, দোল টা নেই, তাই হাঁসিও নেই ।
জানি না, কতোটা অভিশাপ আর ভৎসনা তুমি আমায় দিয়েছো, বা কতোটা প্রার্থনা ই আমার জন্য করেছো ?
তোমার ভালবাসার কাছে আমি হেরেছি, এটাই আমার নারী জন্ম সার্থক, ও জীবনের চরম ও পরম প্রাপ্তি, অন্তিম জয় ।
শত জনমের সৌভাগ্য আমার, তোমার নবীণা হতে পেরেছি ।
তোমাকে এতো কথা লিখছি, অথচ সাহস পাচ্ছি না জিজ্ঞাসা করতে, তুমি কেমন আছ ?
এখনো কি তুমি বৃষ্টিতে ভিজো,? সারা রাত জেগে জোছনা মাখো, ? তিতাসের ঐ বাঁকে বসে গোধুলীর সূরর্যাস্ত দেখো ?
শুনেছি, আজ কাল তুমি সবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রেখেছো নিজেকে, কেউ তোমার সঠিক খবর দিতে পারছে না ।
যে জীবনে আমি নাই, সে জীবনে তুমি আর কাকেই বা গেঁথে রাখবে । এ দায় আমার । আমি তোমাকে যা দিয়েছি, কেড়ে নিয়েছি তার ও বেশি ।
তুমিই সে দিন বলেছিলে, ” তোমার ঈশ্বর হয়তো চাননি “।
হ্যা, ঠিক ই বলেছিলে, সব বঞ্চিতদের ভরসা একমাত্র ঈশ্বর ই ।
অনেক টা ক্লান্ত আমি, প্রতিটা রজনী জানে, কতটা ক্ষতের আলপনা এঁকে আমি ভোরের আলো দেখি । বারো হাত শাড়িতে আব্রু ঢাকতে পারি, কিন্তু মন ঢাকি কি দিয়ে ?
খুব জানতে ইচ্ছে করে, কেমন আছো, কোথায় আছো, কিভাবে আছো ?
আকাশের মেঘের কাছে খবর পাঠাই, ” আমি ভাল নেই “।
তোমায় না পেয়ে তারা ফিরে এসে কেঁদে ভিজায় আমার বুক ।
জানি ভাল নেই, আমার ই মতো হয়ত ভাল থাকার অভিনয়টা করে বেড়াচ্ছো ।
এখনো কি কবিতা লিখো ?
” আমি যদি পাখি হই
তুমি হবে ডানা
যেথা খুশি উড়ে যাবো
নেই কোন মানা “।
কালের বিবর্তনে, তোমার সেই কাব্যময় স্বপ্ন আজ বেঁধে দিয়েছে পৃথক সীমানা ।
আমি আর পারছি না, অনুভুতির স্তরে স্তরে আঘাত হেঁনেছে বুলবুল ।
ক্ষমা করো, ক্ষমা করো, ক্ষমা করো
ঠিক যতটা ভাল থাকা যায়, ঠিক ততোটাই ভাল থাকার চেস্টা করো ।
আজ আর নয় ।
শেষান্তে
তোমার নবীণা
১৬টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
এক হাতে খনতা অন্য হাতে ফোনে চিঠি পড়ছি। ব্যাপারটা দারুণ। হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে গেল চিঠি কথাগুলোতে। সব বঞ্চিতদের ভরসা ঈশ্বর দারুন ছিল কথাটা। চিঠি মানেই অন্যরকম ভালোলাগা। আর বিরহের লেখা চিঠি হলে তো কথাই নেই।
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ আপু,
অনেক শুভ কামনা
সুন্দর মন্তব্য করেছে,
খনতা কি ?
রান্নার ছ্যানি?
আকবর হোসেন রবিন
খুব আবেগ দিয়ে লেখা চিঠি। আশাকরি ‘চিঠি পোঁছে যাবে রঙ্গিন খামে’ তার গন্তব্যে
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ,
সুন্দর মন্তব্য করেছেন
এস.জেড বাবু
কালের বিবর্তনে, তোমার সেই কাব্যময় স্বপ্ন আজ বেঁধে দিয়েছে পৃথক সীমানা ।
বিরহের চিঠি মানেই ভিন্ন রকম অনুভুতি
ভাললেগেছে ভাই।
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ
শুভ কামনা রইলো
নিতাই বাবু
আপনার লেখনীয় বরহের চিঠিখানা পড়ে নিজেই ভাবতে বসেছি, জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া এভাবে একজনকে লিখি। কিন্তু সে আজও আমার কাছে ঠিকানাবিহীন। তাই আর হচ্ছে না লেখা। শুধু আকাশ আর বাতাসের সাথেই কথা বলি।
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ
মনির হোসেন মমি
মুগ্ধ ভাইজান চিঠি পড়ে।
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ ভাই
ছাইরাছ হেলাল
স্মৃতির রোমন্থনে আবেগপূর্ণ চিঠি।
পাল্টে যাওয়া সময়ে কত কিছুই পাল্টে যায়, স্মৃতি রয়ে যায় অম্লান।
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ
বন্যা লিপি
চিঠি ভরা আবেগ আর বিরহ….তবু সময়ের কাছে স্মৃতীময় রোমন্থণ। ভালো লেগেছে।
শুভ কামনা।
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ,
শুভ কামনা অনেক
সাবিনা ইয়াসমিন
বিরহের চিঠিতে যেমন আবেগ ভালোবাসা আসে, তেমনি যদি মানুষটা পাশে থাকার সময় আসতো, তাহলে হয়তো এই চিঠি লেখার দরকারই হতো না। কিন্তু হারিয়ে যাবার পর উপলব্ধ হয় সে কি ছিলো, কোথায় ছিলো,,,
চিঠি পৌছে যাক কাঙখিত গন্তব্যে,,
শুভ কামনা 🌹🌹
কামরুল ইসলাম
ধন্যবাদ