
চুনা পাথরের এ পাহাড় নাকি ৪০ কোটি বছরের পুরোনো। এর গুহাগুলোর বয়স ও নিশ্চয়ই তার কাছাকাছিই হওয়ার কথা। তেমন একটা গুহা দেখতে গেলে রোমাঞ্চিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। মালয়েশিয়ার বাটু কেভের কথাই বলছি আমি। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের বিখ্যাত পেট্রোনাস টুইনটাওয়ার থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। বাটু কেভ নাম করন করা হয়েছে বাটু নদীর নামানুসারে।
গুহার মুখে তামিল হিন্দুদের যুদ্ধ দেবতা মুরুগানের উপস্থিতি যেন অন্য রকম এক আকর্ষণ। গুহামুখের এই দেবতা উচ্চতায় এটি একশত চল্লিশ ফুট। মুরগানের পাশ দিয়ে উঠে গেছে চওড়া সিঁড়ি। ২৭২ ধাপের সেই সিঁড়ি গিয়ে ঠেকেছে অনেক উপরে পাহাড়ের গুহা মুখের ল্যান্ডিয়ে, ওখান থেকে আবার সিড়ি বেয়ে নেমে যেতে হয় গুহা চত্বরে। মরুগানের মন্দির ছাড়াও পাহাড়ের পেটের ভেতর আরো দুটি গুহামন্দির রয়েছে। ঢুকার মুখে মুল ল্যান্ডিয়ের বাম পাশে রয়েছে আরো একটি গুহা ওটার নাম ডার্ক কেভ বা অন্ধকার গুহা। ওখানে আপাতত ঢোকার অনুমতি নাই। তো কি হয়েছে আসুন ঢুকে পড়ি বাটু কেভে।
(২) বাটু পাহাড়, এর ভেতরেই অবস্থান বাটু কেভের।
(৩) বাটু কেভের মূল ফটক (গাড়ি থেকে তোলা বলে পরিস্কার নয়)।
(৪) ২৭২ ধাপের সেই সিঁড়ি ভেঙ্গেই উঠতে হয় গুহায়।\
(৫) একাধারে এতোগুলো সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠা বেশ কঠিন, তাই জিড়িয়ে নেওয়ার ফাঁকে নিজের কিছু স্মৃতি ও ধরে রাখা।
(৬) ২৭২ ধাপের সিঁড়ি এখানে এসে গুহা মুখে ঠেকেছে।
(৭) গুহা মুখ থেকে ভেতরের দিকে এমন আরো কিছু সিঁড়ি বেয়ে নেমে যেতে হয় মুল চত্বরে।
(৮) গুহার উপরের ছাদ বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে অবরত ফোটা ফোটা পানি, যার কারণে সব সময় চত্বরের মেঝে ভেজা থাকে।
(৯/১০) এর ভেতর রয়েছে বেশ কয়েকটা ছোট ছোট মন্দির, এছাড়াও গুহার চতুর্দিকেই ছড়ানো ছিটানো রয়েছে নানা দেব দেবির মুর্তি। সাথে গাইড না থাকায় কোন কি মন্দির সব জানা সম্ভব হয়নি।
(১১) মূল গুহার ভেতরে বিভিন্ন ফাঁক ফোকর দিয়া ক্ষীন আলো পরবেশ করলেও সেই আলোতে গুহার ভেতরটা আলোকিত হয় না, তাই ওখানে ইলেক্ট্রিসিটির ব্যবস্থা রয়েছে।
(১২) পাশের অপেক্ষাকৃত ছোট গুহার ছাদে এমন ফোকর রয়েছে যা দিয়ে আলো আসছে এবং পাহাড়ের উপরের গাছপালা দেখা যাচ্ছে।
(১৩/১৪) গুহার ভতেরে কিছু ছবি।
(১৫) গুহার ভেতরের লাইমষ্টোন শিল্প।
(১৬/১৭) যুদ্ধ দেবতা মুরুগানের সামনে ও পিছন থেকে তোলা ছবি।
(১৮) গুহার ভেতরে বসবাস করা কবুতরগুলো মানুষের হাত থেকেও খাবার খায়।
(১৯) গুহাতে বসবাস করা বানরগুলোর ও খাদ্য সংকট রয়েছে, তাই ওরা নিয়মিত মানুষের কাছে হাত পাতে।
(২০) ওই এলাকার প্রায় পুরোটা জুড়েই রয়েছে অনেকগুলো মন্দির।
(২১) ফিরে আসার সময় স্যুভেনিরের দোকান থেকে ইচ্ছে করলে মুরুগানকে সাথে করে নিয়েও আসতে পারেন।
৩৪টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
৪০ কোটি বছর। লেখা পড়লাম। ভাল লাগল।
কামাল উদ্দিন
পৃথিবী সৃষ্টি যেহেতু হয়েছে, বছর তো চলেই যাবে, ধন্যবাদ মজিবর ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
এই যে যুবক!
না জিড়িয়ে কিন্তু উপরে উঠেছি!
স্মৃতিময় ভ্রমণ মনে করিয়ে দিলেন, এই তো সামান্য বছর তিনেক আগে।
কামাল উদ্দিন
কথায় আছে, পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে। নতুন চাউল আমরা, আপাদের সাথে আমাদের তুলনা করাটা বোকামী।
মনির হোসেন মমি
মালেশিয়ায় বাটু কেভ এ গুহাটিতে না যেতে পারলেও দেখা হয়ে গেল।সে জন্য ধন্যবাদ। সিঙ্গাপুরের সন্তুসা দ্বীপের কোন ভ্রমণ পোষ্ট থাকলে সেয়ার কইরেন। খুব ভাল হয়েছে ৪০কোটি বছর বেচে থাকুন কামাল ভাইয়া।
কামাল উদ্দিন
ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে চারঘন্টার ট্রানজিটে অবস্থান করেছিলাম মাত্র। দেশটি এখনো ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয়নি মমি ভাই।
মনির হোসেন মমি
হুম নাইট সাফরী সহ খুব সুন্দর সুন্দর দর্শনীয় স্থান আছে। সিঙ্গাপুর সন্তুসায় যে সিংহটা আছে সেটা একটা বড় মিউজিয়াম যার ভিতরে ভার্চুয়াল ভাবে কথপোকথনের মানুষ সহ অনেক কিছুই ছিল তখন ১৯৯৬ সাল।এখনতো মনে হয় আরো অনেক কিছুই আছে।ধন্যবাদ।
কামাল উদ্দিন
এক জীবনে আসলে পৃথিবীর কিছুই দেখা হলো না মমি ভাই।
আলমগীর সরকার লিটন
অসাধারণ কিছু ছবি দেখালেন কামাল দা
অনেক শুভেচ্ছা রইল————–
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও আন্তরিক শুভেচ্ছা লিটন ভাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ওয়াও। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার কষ্ট সার্থক হোক। শুভ কামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, ভালো থাকুন সব সময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
ছবি গুলো দেখে মনে হচ্ছে
মিস করলাম।
খুব ভাল লাগলে ভাইজান।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আপনার জন্যও শুভ কামনা সব সময়।
হালিম নজরুল
অসাধারণ তথ্য ও ছবি
কামাল উদ্দিন
হুমম, ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
ফয়জুল মহী
মনোমুগ্ধকর , অসাধারণ ।
কামাল উদ্দিন
শুভেচ্ছা
ইঞ্জা
মালেশিয়ার কুয়ালালামপুর সিটি, লাঙ্কাভি, গেন্টিং হাইল্যান্ড সহ বেশ কয়েক জায়গাতেই ঘুরেছি, কিন্তু বাটু কেভে যাওয়া হয়নি, আমাদের সাবেক এক ব্লগার বাটু কেভ ঘুরে এসে ফেইসবুকে লিখেছিলেন, কিন্তু এতো ডিটেইলসে নয়, সত্যি আপনার ছবি এবং মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় সত্যি মুগ্ধ হলাম, আগামীতে যাবো এমন পণ করে রাখলাম।
ধন্যবাদ ভাই।
কামাল উদ্দিন
আমিও উপরোক্ত জায়গায়গুলোতে গিয়েছিলাম ভাই, ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
আপনিও আমার মতো ভ্রমণ প্রিয় মানুষ, শুভেচ্ছা জানবেন ভাই।
কামাল উদ্দিন
ভ্রমণের নেশা ছাড়তে পারিনি বলে আমার জীবনে অর্থনৈতিক উন্নতিটা ভালো করতে পারলাম না ইঞ্জা ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
প্রাচীন গুহা! ইতিহাস, ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে আধো আলো, আধো-অন্ধকারে এক অপার্থিব পরিবেশের চিত্র। সাথে গা ছমছমে অনুভূতি! ২৭২ টা সিঁড়ি তুচ্ছ হয়ে যায় দেখার তীব্র ইচ্ছের সামনে। মনেহয়, থামা যাবে না কিছুতেই।
প্রাকৃতিক গুহাটির প্রাচীনতা নষ্ট হয়ে গেছে অত্যাধুনিক সাজ-সরঞ্জামের কারনে। ছবিগুলো দেখে ভালো লাগছে, কিন্তু রোমাঞ্চকর ফিলিংস টা মিস করেছি।
বিদেশে কিন্তু ঠিকই ঘুরিয়ে আনলেন 😜😜
শুভ কামনা 🌹🌹
কামাল উদ্দিন
আরে তাইতো! আমি তো ভাবছিলাম এই ভাইরাস ময় সময়ে কোথাও যাবোই না, শুভেচ্ছা জানবেন আপু।
তৌহিদ
আপনার লেখা এবং ছবি দেখে বাটু কেভ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম ভাই। অসাধারণ অনুভূত হচ্ছে। যাবার ইচ্ছে রইলো।
ধন্যবাদ এমন পোস্টের জন্য।
কামাল উদ্দিন
ইচ্ছে থাকলে তো যাওয়া হবেই ভাইজান……শুভ কামনা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
কয়েকবার গিয়েছি ওখানে,
প্রতিবারই সিড়ির ধাপ গোনার চেস্টা করেছি, একবারও সফল হইনি।
চেনা স্থানটি মনে করিয়ে দিলেন।
পোস্ট খুব ভালো হয়েছে।
কামাল উদ্দিন
একবারই শুধু গিয়েছি, তাও অনেক যুদ্ধ করে। টিমের বাকীরা মুসলমান ছিল।
নিতাই বাবু
শুনেছি এই জায়গাটার নাম। তবে বিস্তারিত জানা হয়নি কখনো। এবার আপনার ছবি পোস্ট এব সুলেখিত আলোচনায় অনেককিছুই জানা হলো। দেখাও হলো। শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, আমার সব পোষ্টেই সাথে থেকে উৎসাহিত করার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিতাই বাবু
যেকোনো ব্লগ দিনলিপিতে মন্তব্যের মাঝে গড়ে ওঠে ভালোবাসা। সেই ভালোবাসা একসময় অচেনাকেও চেনে নেয়।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় দাদা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, শুভ কামনা সব সময়
রেহানা বীথি
এত প্রাচীন একটি স্থান ঘুরিয়ে আনার জন্য ধন্যবাদ ভাই। কোথাও না যেতে পারার আফসোস কিছুটা হলেও লাঘব হয় আপনার সুন্দর পোস্টগুলোর মাধ্যমে।
ভালো থাকবেন ভাই।
কামাল উদ্দিন
কোথাও যেতে না পারা কারণটা কি আপু? সংসারের জটিলতা? এটা সব সংসারেই বিদ্যমান থাকে। প্রবল ইচ্ছাই এই জটিলতা থেকে আমাদেরকে কিছুটা সময় হলেও নিজের করে নিতে পারে…….শুভ কামনা সব সময়।