স্রষ্টার কাছে জীবনের রঙ্গ রসের জন্য কিছুই চাইনি চেয়েছি ধরণীতে সাদামাটা নির্ভেজাল একটি সূখী জীবন।ঘটা করে পাতা ঘর সংসারের দীর্ঘ প্রায় বারটি বছর পর প্রথম বাবা ডাক শুনে নিজেকে আটখুড়া অপয়ার সমাজের কুসংস্কার বদনাম হতে বাচলাম।চলছিল জীবন জীবনের নিয়মে বাধাহীন সুখ আর সুখ কখনো ভাবিনি দুঃখ বলে কিছু একটা আছে।
সংসারে একটি সন্তান মানে না থাকারই মতন তাছাড়া এই সন্তানটির খেলার সাথীর জন্য হলেও আরো একজন নতুন অতিথীর প্র্রয়োজনীয়তা মনে করি।প্রথম সন্তান ছেলে নাম তার মুহিন বেশ এক রুখা টাইপের।পরবর্তী ছেলে মেয়ে যাই হোক কোনটাই মন্দ নয় তবে মায়ের পরলোক গমনে ভাই বোন সবার ইচ্ছে ছিল বেহস্তবাসি মা যেন ফিরে পান।স্রষ্টা সবার ডাকে সাড়া দিয়েছিল।তবে সমস্যা হলো আগত সন্তানের মায়ের ডায়াবেটিস ছিল ৫/৮ ডাক্তারদের পরামর্শে সে প্রতিদিন দুটো ইনজেকসন নিতো যাতে আগত শিশুটি ডায়াবেটিস মুক্ত হন।খুবই ভালই ভাল নয়টি মাস অতিবাহিত হলো, এলো স্বপ্ন পূরণের দিন…..
প্রথম মেয়ের বাপ ভাবতেই গা শির শির করে উঠে অজানা এক বিশেষ সুখায়িত অনুভূতি নাড়া দিল মন।তাছাড়া সে পরলোক গত তার দাদা দাদীর সব অঙ্গ যেন চুরি করে এনেছে।অপারেসন রুমে দিতে হলো ৫০০ টাকা বকশিস তখনো ডাঃ কিছুই বলেননি শুধু বললেন মুখের জিহবায় সামান্য ত্রুটি আছে যা বাহির থেকে বুঝা যায় না।তবে পাচ ছয় মাস বয়স হলে সার্জারী করতে হবে এখন করা যাবে না।ভাল অবস্থা দেখে চলে এলাম মা’ হাসপাতাল থেকে বাসায় তার পর!!! তার সেই ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া।সেখানে বেবি আই সিও রুমের ডাঃ যা বললেন তাতে ভয় পেয়ে গেলাম।
-{@ ওর জিহবাটা দাতের মাড়ির সাথে জয়েন্ট
দ্বিতীয়ত টাগরার কিছু অংশ কাটা যার কারনে খাবার গলার ভিতরে দিতে না পারলে খাবার লাঞ্চে চলে গিয়ে শ্বাস নিতে বেশ অসুবিদা হয়।
তাকে এক সাইড কাত অথবা পুরোপুরি উপুরমোড়ি হয়ে শোয়াতে হয় নতুবা জিহবা পেচিয়ে সামনে চলে এসে শ্বাস কষ্ট বেড়ে যায়।
প্রথম দিন ওর মায়ের দুধ অজ্ঞতায় ওর মুখে দিলে তা ফুসফুসে সমস্যার সৃ্ষ্টি করে আই সিওতে তাকে ওয়াস করে সার্জারী বিভাগে যেতে বললেন।সেখানে গেলে ডাঃ তাকে দেখে বললেন এটা আমার কাজ হবে বাচ্চার বয়স যখন আট নয় মাস হবে তখন।কি করি বুঝতে পারছিলাম এ দিকে ওকে যদিও আইসিও ডাঃ তাকে ওয়াস করে দিয়েছেন তবুও ওর শ্বাস কষ্ট ক্রমেই বেড়েই চলছে উপায় না পেয়ে আবারও আইসিও রুমে ডাঃদের কাছে এলাম তখন রাত একটা হবে।ফের আসাতে ডাক্তারনি সাহেবা একটু বিরক্তই হলেন…
-কি হলো আপনাকে না বললাম সার্জারিতে যান।
-গিয়েছিলাম ম্যাডাম,সে আবার এখানে পাঠিয়েছেন।
-আমি ম্যাডাম নই,
-ওকে আপা
-আপাও নই
-তাহলে!
-ডাক্তার
-ও..ওকে ডাক্তার সাহেবা গিয়েছিলাম, সে আবার এখানে ভর্তির জন্য পাঠিয়েছেন।সহযোগিতার পাওয়ার জন্য একটু মিথ্যে বললাম।
সে এখন ফ্যাডাপ যেন কাজ করতে করতে হয়রান অবশ্য সেখানে প্রতিমুহুর্তে যে পরিমান রোগী যায় তাতে বিরক্তি আসার কথাই।
-সিটতো নেই,
-একটু চেষ্টা করুন,সার্জন স্যার বড় আশা করে পাঠিয়েছেন।
সে কিছুক্ষণ ভেবে তারপর যা বললেন তা জীবনের প্রথম শুনলাম এবং পালন করলাম।একটি সাদা কাগজে লেখা শিশুটির এখানে অভিবাবক হিসাবে যাই ঘটুক তার সব দায় দায়ীতত্ত্ব আমার ডাক্তারদের প্রতি কোন অভিযোগ থাকবে না আমি তা স্বজ্ঞানে স্বইচ্ছায় সহি করিলাম।প্রথমে মন আতকে উঠলেও পররক্ষণে নিয়তির উপর ছেড়ে দিলাম।দিনের পর দিন গুনতে লাগলাম,মা বিহীন মেয়েটি কেমন আছে আইসিও রুমে স্বচোক্ষে দেখার কোন উপায় নেই,যখন ১০নং বেড বলে ডাক দেয় তখন বুকটটা ধরফর করে আগে কখনো এমন পরিস্থিতে পড়তে হয়নি বলে,মনে একটু বেশীই টেনসন ছিল।এক সপ্তাহ আইসিওতে রাখার পর নাকে পাইপ লাগিয়ে দিলেন ওর খাবারের জন্য।এ ভাবেই নাকি সাত আট মাস পালতে হবে তারপর সার্জারি করা যাবে তার আগে নয়।
চরম মুহুর্ত৴৴৴০১
সোনেলা ব্লগে অনেক ডাঃ বন্ধু আছেন ,একটু পরামর্শ চাই -{@
২১টি মন্তব্য
অনিকেত নন্দিনী
সন্তান যখন হাসপাতালের ইনটেনসিভ ইউনিটে থাকে, তখন ডাক্তার রোগীর সাথে কে আছে খোঁজ করলে কেমন লাগে তা খুব ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারি। দুইটাকে নিয়েই ওই রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি পাড়ি দিয়েছি। মঙ্গলময় তার মঙ্গলের ছায়ায় রাখুন ওকে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ দিদি জীবনে প্রথম এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা আমার জন্য কঠিন ছিল।সব স্রষ্টার ইচ্ছে। -{@
অনিকেত নন্দিনী
ভাই রে, ধৈর্য রাখুন। অস্থিরতা থাকবেই। নিজের সন্তান বলে কথা! উপরওয়ালাকে ডাকুন, তাঁর রহমত আর করুণা এখন সবচেয়ে জরুরি আর আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাগুলি তো থাকবেই।
আমি পাপীতাপী মানুষ তবুও তাঁকে সবসময়েই বলি এমন করে চোখের সামনে সন্তানের কষ্ট পাবার দৃশ্য যেনো কোনো বাবা মাকে দেখতে না হয়।
অরণ্য
আমি জানি অনেক ডাক্তার আছেন। তাঁরা পরামর্শ দেবেন। দোয়া এবং শুভ কামনা করছি।
পাশাপাশি যদি জানতাম কোন ডাক্তারের আন্ডারে আছে এবং পেসেন্টের নাম (আপাতত জানলাম শুধু ১০ নং বেড) তাহলে কিছু আমার এক ডাক্তার বন্ধুকে বলতাম। আপনি কিছু মনে না করলে আপনাকে আমি ফোন দিতে পারি (আপনার সেল নম্বর পেলে)।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অনেক ধন্যবাদ 01916371455 ডাঃ আবিদ স্যার ছিলেন তার ঢাকা কলেজ মেডিক্যালের নব জাত আইসিও ডাঃ।রোগী এখন সেখানে নেই রিলেজ দিয়েছেন।নাম বেবি অফ মিনু।আগামী শনিবার ২২/08/15 সেখানে আবার যাবার কথা। -{@
খেয়ালী মেয়ে
পৃথিবীতে আসতে না আসতেই কতোটা কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে এই অবুঝ শিশুটাকে 🙁
কি বলবো বুঝতে পারছি না–শুধু একটাই চাওয়া তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে সে যেন তার বাবা মায়ের বুকে ফিরে যায়–
পারভীন সুলতানা
কাকে দেখিয়েছেন জানিনা । আমি কি আপনার কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে পারি ? আমি ডাক্তার হলেও Pediatric Surgeon নই , কিন্তু জানাশোনা ভাল ডাক্তার আছেন ঢাকা মেডিক্যালে । চেষ্টা করে দেখতে পারি ।আপনার মোবাইল নাম্বারটা কি পেতে পারি ?
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এক কলেজ মেডিক্যাল এর আইসিও রুমের ডাঃ ছাড়া আর কাউকেই এখনো দেখাতে পারিনি।মাত্র আইসিও রুম হতে রিলিজ হয়ে নাকে পাইপ লাগিয়েই খাবার দিচ্ছি।পাইপ ছাড়া খাবার দিলে তার দম বন্ধ হয়ে যায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।টাগরা কাটা থাকায় খাবার সরাসরি দেয়া যায় না দিলে ফুসফুসে বা অন্যত্র চলে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়।ধন্যবাদ আপনাকে,,,,01916371455 আইসিও রুমে যখন ছিল তখন শিশুটির নাম ছিল বেবি অফ মিনু,১০নং বেড।আগামী শনিবার আবার যাবো।এখনো ওর অন্য কোন তেমন সমস্যা নেই শুধু খাবার খাওয়াতে যত সমস্যা।তার জিহবাটি দাতের মাড়ির সাথে ঝট লাগানো এবং মুখের তাউল্লা বা টাগরার কিছু অংশ কাটা। -{@
জিসান শা ইকরাম
আল্লাহ আপনাকে ধৈর্য্য ধারন করার শক্তি দিক।
মেয়ে ভালো হয়ে যাবে ইনশ আল্লাহ
দোয়া করি আন্তরিক ভাবে।
ছাইরাছ হেলাল
প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন আপনাকে সাহায্য করেন।
আপনার মেয়ের আরোগ্য কামনা করছি।
আল্লাহ, সর্বশক্তিমান।
মেহেরী তাজ
দোয়া করি ভাইয়া বাবুটা ভালো হয়ে যাক তারাতারি।
শুন্য শুন্যালয়
অরণ্য আর সুলতানা আপুর সাথে কন্টাক্ট রাখুন, ইনশাল্লাহ ব্যবস্থা হয়ে যাবে। ক্লেফট প্যালেট সমস্যা এখন বড় কিছু নয়, যদিও জানি একটা শিশু আর তার বাবা-মা এর উপর দিয়ে কি যাচ্ছে। আল্লাহ্ আপনাদের সহায় হবেন, ভাইয়া। ঠিক হয়ে যাবে সব।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
হ্যা আপু অরণ্য ভাইয়া এবং সুলতানা আপুর সাথেই কথা বলব।তবে অরণ্য ভাইয়া একজন ডাঃ ফোন নং দিয়েেন দেখি শনিবাার তার সাথে যোগাযোগ করব।
মরুভূমির জলদস্যু
কিছু দিন আগে আমার মেয়েটা এপলো হাসপাতালে ভর্তী ছিলো। প্রথম তিন চারদিন যখনই ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেছি ডাক্তার মেয়েটা এখন কেমন আছে? তখনই ডাক্তার বলেছে আল্লাহর কাছে দোয়া চান।
কি কষ্ট, কি কষ্ট, কি কষ্ট্ অন্যের সময় বুঝা যায় না, নিজের সময়ই বুঝতে হয়।
মরুভূমির জলদস্যু
আল্লাহর কাছে দোয়াই আমরা চাইতে পারি। চিকিৎসা করার ক্ষমতা ডাক্তারের হাতে।
আল্লাহ আনাদের সহায় কোন।
দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক ও।
আজিম
জনাবা শুন্য আপুর মন্তব্য থেকে অসুখের নামটা জানলাম। মনির ভাই, আপনি “Cleft Palate” লিখে নেটে সার্চ দিয়ে দেখুন, বিস্তারিত জানতে পারবেন। সমস্যাটা মারাত্মক নয়, আপনিও যেমনটা শুনেছেন, একটা সার্জারির মাধ্যমে সেরে যাবে ইনশা’ল্লাহ্।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞ সবার কাছে সুন্দর পরামর্শের জন্য।
অলিভার
আল্লাহ্ মা’মনিটার সকল সমস্যা দ্রুত সারানোর ব্যবস্থা করে দিন।
মনির ভাই ধৈর্য ধরুন, আশা করছি দ্রুতই সমাধান পাবেন 🙂
ব্লগার সজীব
আল্লাহ্ সহায় হবেন মনির ভাইয়া।দোয়া করি সুস্থ্য হয়ে উঠুক আপনার বেবি।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আমিন….
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া আপনার মেয়ে অবশ্যই সুস্থ হয়ে উঠবে।