চরম মুহুর্ত৴৴৴০২

মনির হোসেন মমি ১৮ আগস্ট ২০১৫, মঙ্গলবার, ০৪:০৪:৩০অপরাহ্ন অন্যান্য, চিকিৎসা ২১ মন্তব্য

img1438103652683স্রষ্টার কাছে  জীবনের রঙ্গ রসের জন্য কিছুই চাইনি চেয়েছি ধরণীতে সাদামাটা নির্ভেজাল একটি সূখী জীবন।ঘটা করে পাতা ঘর সংসারের দীর্ঘ প্রায় বারটি বছর পর প্রথম বাবা ডাক শুনে নিজেকে আটখুড়া অপয়ার সমাজের কুসংস্কার বদনাম হতে বাচলাম।চলছিল জীবন জীবনের নিয়মে বাধাহীন সুখ আর সুখ কখনো ভাবিনি দুঃখ বলে কিছু একটা আছে।
সংসারে একটি সন্তান মানে না থাকারই মতন তাছাড়া এই  সন্তানটির খেলার সাথীর জন্য হলেও আরো একজন নতুন  অতিথীর প্র্রয়োজনীয়তা মনে করি।প্রথম সন্তান ছেলে নাম তার মুহিন বেশ এক রুখা টাইপের।পরবর্তী ছেলে মেয়ে যাই হোক কোনটাই মন্দ নয় তবে মায়ের পরলোক গমনে ভাই বোন  সবার ইচ্ছে ছিল বেহস্তবাসি  মা যেন ফিরে পান।স্রষ্টা সবার ডাকে  সাড়া দিয়েছিল।তবে সমস্যা হলো আগত সন্তানের মায়ের ডায়াবেটিস ছিল ৫/৮ ডাক্তারদের পরামর্শে সে প্রতিদিন দুটো ইনজেকসন নিতো যাতে আগত শিশুটি ডায়াবেটিস মুক্ত হন।খুবই  ভালই ভাল নয়টি মাস অতিবাহিত  হলো, এলো স্বপ্ন পূরণের  দিন…..
IMG_20130101_060754প্রথম মেয়ের বাপ ভাবতেই গা শির শির করে উঠে  অজানা এক বিশেষ সুখায়িত অনুভূতি নাড়া দিল মন।তাছাড়া সে পরলোক গত তার দাদা দাদীর সব  অঙ্গ যেন চুরি করে এনেছে।অপারেসন রুমে দিতে  হলো ৫০০ টাকা বকশিস তখনো ডাঃ কিছুই বলেননি  শুধু বললেন মুখের জিহবায় সামান্য ত্রুটি আছে যা বাহির থেকে বুঝা যায় না।তবে পাচ ছয় মাস বয়স হলে সার্জারী করতে হবে এখন করা  যাবে না।ভাল  অবস্থা দেখে চলে এলাম মা’ হাসপাতাল  থেকে বাসায়  তার পর!!! তার সেই ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া।সেখানে বেবি আই সিও রুমের ডাঃ যা বললেন তাতে ভয় পেয়ে গেলাম।
-{@ ওর জিহবাটা দাতের মাড়ির সাথে জয়েন্ট

দ্বিতীয়ত টাগরার কিছু অংশ কাটা যার কারনে  খাবার গলার ভিতরে দিতে না পারলে খাবার লাঞ্চে চলে গিয়ে শ্বাস নিতে বেশ অসুবিদা হয়।
তাকে এক সাইড কাত অথবা পুরোপুরি উপুরমোড়ি হয়ে শোয়াতে হয় নতুবা জিহবা পেচিয়ে সামনে চলে এসে শ্বাস কষ্ট বেড়ে যায়।
প্রথম দিন ওর মায়ের দুধ অজ্ঞতায় ওর মুখে দিলে তা ফুসফুসে সমস্যার সৃ্ষ্টি করে আই সিওতে তাকে ওয়াস করে সার্জারী বিভাগে যেতে বললেন।সেখানে গেলে ডাঃ তাকে দেখে বললেন এটা আমার কাজ হবে বাচ্চার বয়স যখন আট নয় মাস হবে তখন।কি করি বুঝতে পারছিলাম এ দিকে ওকে যদিও আইসিও ডাঃ তাকে ওয়াস করে দিয়েছেন তবুও ওর শ্বাস কষ্ট ক্রমেই বেড়েই চলছে উপায় না পেয়ে আবারও আইসিও রুমে ডাঃদের কাছে এলাম তখন রাত একটা হবে।ফের আসাতে ডাক্তারনি সাহেবা একটু বিরক্তই হলেন…
-কি হলো আপনাকে না বললাম সার্জারিতে যান।
-গিয়েছিলাম  ম্যাডাম,সে আবার এখানে পাঠিয়েছেন।
-আমি ম্যাডাম নই,
-ওকে আপা
-আপাও নই
-তাহলে!
-ডাক্তার
-ও..ওকে ডাক্তার সাহেবা গিয়েছিলাম, সে আবার এখানে ভর্তির  জন্য পাঠিয়েছেন।সহযোগিতার পাওয়ার জন্য একটু মিথ্যে বললাম।
সে এখন ফ্যাডাপ যেন কাজ করতে করতে হয়রান অবশ্য সেখানে প্রতিমুহুর্তে যে পরিমান রোগী যায় তাতে বিরক্তি আসার কথাই।
-সিটতো নেই,
-একটু চেষ্টা করুন,সার্জন স্যার বড় আশা করে পাঠিয়েছেন।
সে কিছুক্ষণ ভেবে তারপর যা বললেন তা জীবনের প্রথম শুনলাম এবং পালন করলাম।একটি সাদা কাগজে লেখা শিশুটির এখানে অভিবাবক হিসাবে যাই ঘটুক তার সব দায় দায়ীতত্ত্ব আমার ডাক্তারদের প্রতি কোন অভিযোগ থাকবে না আমি তা স্বজ্ঞানে স্বইচ্ছায় সহি করিলাম।প্রথমে মন আতকে উঠলেও পররক্ষণে নিয়তির উপর ছেড়ে দিলাম।দিনের পর দিন গুনতে লাগলাম,মা বিহীন মেয়েটি  কেমন আছে আইসিও রুমে স্বচোক্ষে  দেখার কোন উপায় নেই,যখন ১০নং বেড বলে ডাক দেয় তখন বুকটটা  ধরফর করে আগে কখনো এমন পরিস্থিতে  পড়তে হয়নি বলে,মনে একটু বেশীই টেনসন ছিল।এক সপ্তাহ আইসিওতে  রাখার পর নাকে পাইপ লাগিয়ে দিলেন ওর খাবারের জন্য।এ ভাবেই নাকি সাত আট মাস পালতে হবে  তারপর সার্জারি করা যাবে তার আগে  নয়।

চরম মুহুর্ত৴৴৴০১
সোনেলা ব্লগে অনেক ডাঃ বন্ধু  আছেন ,একটু পরামর্শ চাই -{@

৬২৭জন ৬২৭জন
0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ