আদালতে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে ২২ বছরের যুবক মজনু। সাক্ষির কাঠগড়ায় মজনুর বড় চাচি সায়েরা খাতুন।
“যাহা বলিব সত্য বলিব; সত্য বৈ মিথ্যা বলিবো না!”
চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালেন বাদী পক্ষের আইনজীবী।
– মহামান্য আদালত! আমাদের নৈতিকতা আজ কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে। সম্পত্তি নিয়ে ঝগড়া করে এই নরপশু মজনু নিজের আপন চাচিকে ধর্ষনের চেষ্টা করেছে, মারধর করেছে।”
আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে ফুপিয়ে ওঠেন সায়েরা খাতুন।
-বলুন, আপনার দেবরের ছেলে আপনাকে মেরেছে কি না?
– জ্বি
– রাতের অন্ধকারে আপনার ইজ্জতহানী করতে চেষ্টা করেছে?
স্থির হয়ে থাকে সায়েরা বানু।
– বলুন, এই ছেলে আপনাকে ধর্ষন করতে চেয়েছে?
হাউমাউ করে কেদে ওঠে সায়েরা খাতুন!
– বলুন, চুপ করে থাকবেন না।
উপরে নিচে মাথা দোলায় সায়েরা। “জি” বলেই কাদতে কাদতে কাঠগড়া থেকে নেমে যায়।
মজনু শুধু অস্ফুটে বললো – “বড় মা!!!”
ভিক্টিমের সাক্ষিকে আমলে নিয়ে আদালত ৫ বছরের স্বশ্রম কারাদন্ড দেয় মজনুকে।
মজনুর চাচা বিজয়ীর হাসি হাসতে হাসতে আদালত থেকে বের হয়।
“চলো সায়েরা!”
সায়েরা খাতুন স্বামীর পেছন পেছন বের হয়। এই বয়সে স্বামী তালাক দিলে তার যাওয়ার কোন জায়গা নাই যে!
৩১টি মন্তব্য
নীহারিকা জান্নাত
কি বলবো বুঝতে পারছি না। জানি এমন ঘটনা ঘটে সমাজে কিন্ত মানতে কষ্ট হয়।
আপনার এই অণুগল্পগুলো অসাধারণ।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ আপু
ইঞ্জা
লোভ লালসা বড়ই কঠিন আর আমাদের মতো দেশে তো আরো প্রকট ভাবে আছে এই বিষয়, আপনি যা লিখেছেন তাতেই তো গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেল, মানবতা আজ ভূলুণ্ঠিত, লেখাটি বেশ মন ছুঁয়েছে।
শিপু ভাই!
ভাই শিপু ভাই আবার কি নাম, নাকি আপনি সবার বড় ভাই বলেই এই নাম, হতেও পারেন। :p
শিপু ভাই
ভ্রাতৃত্বের ভাই
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা
শিপু ভাই
(3 -{@
জিসান শা ইকরাম
সায়েরা খাতুনের বোবা কান্নাকে দেখলাম এই গল্পে,
আমাদের সমাজের অসহায় নারীদের প্রতীক এই সায়েরা খাতুনরা।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ মামা 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
হায়রে সমাজ নারীর ধর্ষনের কিচ্ছা কত ভাবেই না প্রমান করতে হয়।গলপ নয় এ ঘূণে ধরা সমাজের প্রতিচ্ছবি। -{@
শিপু ভাই
ধন্যবাদ প্রিয় মমি ভাই
গাজী বুরহান
এ গল্প যেন বাস্থবতার প্রতিচ্ছবি।
শিপু ভাই
থ্যাংকু ভাই
নিতাই বাবু
ভাষা হারিয়ে ফেললাম লেখনী পড়ে । সকল দুঃখ দুর্দশা আর প্রবঞ্চনায় আমাদের এই সমাজ ।
দূর হোক বালামুসিবতের, জয় হোক মানবতার ।
শিপু ভাই
জয় হোক মানবতার!
ধন্যবাদ 🙂
আবু খায়ের আনিছ
আইনোর চোখ অন্ধ, বিচার হয়েছে মানবতার, লালসার বিচার হয়নি। আইন জানে ছেলে নির্দোষ কিন্তু প্রমাণ ভিন্ন কথা বলে।
অসাধারণ ভাই, অনবদ্য লেখা।
হাজার পৃষ্ঠা লেখলেই লেখা হয় না, খুব কম কথায় যে অনেক কিছু লেখা যায় তার একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে সোনেলার ব্লগারদের জন্য এই লেখাটা।
শিপু ভাই
পাঠে কৃতজ্ঞতা ভাই।
শুভকামনা~
নীলাঞ্জনা নীলা
অসাধারণ! শুধু “বড় মা” এই দুটো শব্দ শুনে যে কেউ বুঝবে ছেলেটা নির্দোষ।
বিষয়-সম্পত্তি হলো বিষ। আর নারীদের অসহায় রূপটাও তুলে ধরেছেন দারুণ ভাবে। গল্পে তিনটে ভাগ, সম্পত্তির জন্যে প্রতারণা, নারীর অসহায়ত্ব।
আমি তো আপনার গল্পের ভক্ত হয়ে গেছি শিপু ভাই।
শিপু ভাই
অনুপ্রাণিত হই আপনার মন্তব্যে!
কৃতজ্ঞতা
ছাইরাছ হেলাল
এ বাস্তবতা আমাদের সমাজেরই,
ছোট লেখা ছোট না দেখছি, চলুক নিয়মিত,
উপস্থাপনা সুন্দর, “ছোট মা”।
শিপু ভাই
সোনেলায় আবার নিয়মিত হয়ে বুঝলাম ব্লগ ব্লগই। ফেসবুকের সাথে এর তুলনা চলে না।
ধন্যবাদ মামা!
হ্যাপি ব্লগিং
চাটিগাঁ থেকে বাহার
নির্মম!
শিপু ভাই
হুম 🙁
মোঃ মজিবর রহমান
সায়েরার অস্ফুট কান্নার মাঝে লুকিয়ে আছে মজনু একাজ করেনি, চাচা বাধ্য করেছে।
ভাল গল্প।
শিপু ভাই
থ্যাংকস ভাই
অরণ্য
মানুষের জেতার নেশা বড় খারাপ। হায়রে চাচা! কি খুশি!
গল্পটা ভালো লেগেছে গল্প হিসেবেই।
আমি অন্য ব্যাপার ভাবছি। গল্পে উপন্যাসের সায়েরাদের এই ধরনের নিরুপায়তা কি আমাদেরকে কাছাকাছি কোন পরিস্থিতিতে সায়েরা হয়ে যেতে সাহায্য করে কোনভাবে? কিংবা আমরা নিজেদেরকে সায়েরা করি তুলি? আমি জানিনা এর প্রভাব কতটুকু। আমার মনে হলো তাই শেয়ার করছি।
গল্পটা ছোট কিন্ত ভাববার বিষয় আছে।
মোঃ মজিবর রহমান
আমিও তাই ভেবেছি আমরাই অন্যায়কারী সমাজে তৈরি করেছি নাত।
শিপু ভাই
না, আমি তা মনে করি না। এধরণের গল্পের পজিটিভ প্রভাবই পরে সাধারণত।
শুন্য শুন্যালয়
চমৎকার ছোট একটি গল্প। এই এতটুকুতেই এতকিছু বলা গেলে বেশি বেশি লিখে কী হবে! অনেক কিছু চলে এসেছে লেখায়, সবাই সব আগেই বলে ফেলেছে, আমি আর কী বলি! এগিয়ে চলুন গল্পকার।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ শুন্য শুন্যালয়! -{@
মেহেরী তাজ
সুন্দর ছোট গল্প!
ভালো লাগলো……..
শিপু ভাই
থ্যাংকস 🙂