ক্ষমা করিস

রিমি রুম্মান ১৩ জুলাই ২০১৫, সোমবার, ১১:৩৪:২৬পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৩৪ মন্তব্য

দু’দিন হলিডে গেলো। বিকেলে বাচ্চাদের নিয়ে পার্কে যাই। ওরা খেলা করে। আমি বসে থাকি বেঞ্চিতে। মানুষ দেখি। হাস্যোজ্বল মানুষ। হাসি আনন্দে খেলা করা ছোট ছোট শিশু। ফ্যালফ্যাল করে ভাবলেশহীন চোখে চেয়ে থাকি। অন্যদিনের মতো ভালোলাগায় ছেয়ে থাকে না মন। বুক চিরে বেরিয়ে আসে দীর্ঘ দীর্ঘ শ্বাস …

 

সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে খেলা শেষে পাশের শপিংমলের ফুডকোর্টে বসি। ছেলেদের খাবার দিয়ে চারিদিকে চোখ বুলাই। কোলাহল, হৈচৈ। হাসি, ঠাট্টা’র শব্দ ভেসে আসে কানে। আজ শব্দগুলো কামান দাগার মতো বিঁধে কর্ণকুহরে। ছেলেদের তাগাদা দেই। অস্থির, অশান্ত হয়ে বেরিয়ে আসি। এস্কেলেটরে পা দিয়েই দ্রুত পায়ে উপরে উঠে আসি।

 

রাতটুকু মধ্যরাত অবধি কাটিয়ে দেই প্রিয় জায়গায়। লং আইল্যান্ড সিটি। নদীর ধারে অদ্ভুত এক মনোরম দৃশ্য। এপারে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকি। ওপাড়ে আলো ঝলমলে ম্যানহাটন। এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং আকাশ ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে। এপার থেকে ওপাড়ের দৃশ্য যতো দেখি, ততোই ভালোলাগে। মুগ্ধতা নিয়ে দেখি। বরাবরই সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানাই এমন জায়গা দেখবার, সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছি বলে।

 

কিন্তু আজ এখানে দাঁড়িয়ে বিষাদে ছেয়ে আছে মন। সারাদিন কেবলই মনে হচ্ছিলো কেউ আমার বাংলাদেশকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে আহত করছে। মার খেতে খেতে মুখ থুবড়ে নিস্তেজ পরে আছে সে। আমার বাংলাদেশ যেন অশ্রুজলে আর্তনাদ করে করে বলছে___” আমি মরি যাইরাম… আমারে কেউ বাঁচাও রে বা ” ভিডিওতে শুনা ছেলেটির কান্নার শব্দ, আর্তি, আর্তনাদ__ এসব কোনভাবেই ভুলে থাকতে পারি না। এক মুহূর্তের জন্যেও না। বেঁচে থাকবার তীব্র আকুতি নিয়ে হুহু করে কেঁদে যাওয়া ছেলেটি আর আমার রিয়াসাত যে একই বয়সী !

 

ক্ষমা করিস রাজন। ক্ষমা করিস। আমরা এপারের মানুষেরা মানুষ নই। পশুও নই। জানোয়ারের চেয়েও নিকৃষ্টতম কিছু। ওপাড়ে এর চেয়ে ঢের ভাল থাকবি। সৃষ্টিকর্তা মহান…

৪২৮জন ৪২৮জন
0 Shares

৩৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ