
কবি ও চিত্রকর
দালান জাহান
আদিব হাসলো ভালো ছবি আঁকেন। আম আঁকতে গিয়ে কখনো এঁকে ফেলেন মানুষের মুখ। তুলি ঘষতে ঘষতে মূহুর্তেই উপহার দেন জীবন্ত আকাশ। আবার আকাশ-আকাশ আঁকতে-আকতে একে ফেলেন সমুদ্র ভূমি চাঁদ গ্রহ-তারা।
আদিবের রুমমেট পির্জ পার্বেল না ইংরেজ কেউ নন, বাঙালির ইংরেজি নাম আর কি! তিনি আবার কবিতা লিখেন। এ-ই দু’জনের সম্পর্কটা সাদ্দাম-বুশের সম্পর্কের সাথে তুলনা করা যায়। একটা ফুরসত পেলেই হলো পির্জ পার্বেল আদিব হাসলোর চিত্রে ভুল ধরে বসবেন।
আবার আদিব হাসলো ও ভুল ধরেন পিস পার্বেলের কবিতায়। আবার দু’জন একসাথে থাকেন খান ঘুমান কিন্তু সমালোচনাটা কেউ কাউকে ছাড় দেন না। যেমন কারও সাথে দেখা হলে কোন বন্ধু যদি বলেন, আদিব হাসলো ভালো ছবি আঁকেন পিস পার্বেল, তখন বলে বসেন, বাল আঁকে সে!
যে বুঝে-না রাত আর দিনের রঙ যে বুঝে-না আলো আর অন্ধকারের প্রণয় তার আবার আর্ট ! আদিব বলেন, কবিতায় চিত্রপট থাকতে হয় ইন্দ্রিয়কে নাড়া দিতে হয় অনুভূতি দিয়ে ওর কবিতায় কী আছে এ-র কিছু!!
সামনে প্রদর্শনী আছে, গভীর রাত আদিব হাসলো ছবি আঁকতে ব্যস্ত। নির্বাচিত ছবিগুলোতে দিচ্ছে রঙের শেষ আঁচর। এখন যে ছবিটি তার হাতে তাতে
মাটি ভেদ করে মুখ তুলেছে একটি শিশু বৃক্ষ। পাতাগুলো ছড়িয়ে গেছে সবুজ হৃদয়ের মতো , একটি পা আকাশের মতো বড়ো এগিয়ে আসছে এগিয়ে আসছে।
এখন চাপা দিবে প্রায় তখনই শিশু বৃক্ষের কান্নায় মাটি মেলে ধরে হাত আটকে দিয়েছেন বৃহৎ পা-টি। ছবিটির রঙ থেকে ভেসে আসছে আবহ সঙ্গীতে “শুধু বৃক্ষ নয় এভাবেই দলিত হয় দুর্বল দলিতরা।
পিস পার্বেল বারান্দায় বসে কবিতা লিখছেন। পড়ছেন একটু পর পর শব্দ করে।
“রঙ হলো বিধাতার কান্না
উপলক্ষ পেলেই ছুঁয়ে যায় হৃদয়
চিত্রকর হলো সেই সেই চোখ
যে চোখ প্রথম ভিজে ছিলো রক্তে
সারাটি জীবন ধরে একজন চিত্রকর
যা এঁকে যান তা বস্তুত ঈশ্বরের কান্না ছাড়া আর কিছুই নয়।
৭টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
বেশ সুন্দর কথা, ভাল লাগলো লেখাটা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
কবি আর চিত্রকরের খুনসুটি ভালোই লাগলো ভাইয়া। শেষের লাইনটা চমৎকার লিখেছেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভ কামনা অবিরাম
বন্যা লিপি
কবি আর চিত্রকরের যুগলবন্দী! একজন রঙের আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলেন জীবনবোধ……আরেকজন শব্দাক্ষরে লিখে সেই বোধের পূর্ণমাত্রা প্রয়োগ করেন। লেখায় মনমাত। শুভ কামনা।
আলমগীর সরকার লিটন
বাহ চমৎকার———–কবি দা
তৌহিদ
চিত্রকরের মননে কবিত্বের প্রকাশ, এটি অবশ্যই শৈল্পিক চিন্তাধারায় প্রবাহিত হয়, হচ্ছে।
ভালো থাকুন ভাই।
রোকসানা খন্দকার রুকু
কবি আর চিএকরের সমালোচনাটা খুবই জরুরী।পাশের মানুষ গুলো সমালোচনা করলে আমরা মন খারাপ করি।আসলে তা করা উচিত না কারন উপরে ওঠার জন্য নিজেকে চেনার জন্য সমালোচনা জরুরি।
দুজনেই কিন্তু অসাধারণ।
শুভ কামনা ভাই।
কমলিনী
অসম্ভব ভালো লাগা! অত্যন্ত শক্তিশালী তুলি কলম! আভূমি নমন এই সৃজনকে…